Ajker Patrika

আপনার স্বজন কি ভুলে যাচ্ছে সবকিছু

ডা. নাশিদ ইসলাম 
আপনার স্বজন কি ভুলে যাচ্ছে সবকিছু

ভুলে যাওয়া একটি রোগ। এর নাম ডিমেনশিয়া। তবে সাধারণভাবে কিছু ভুলে যাওয়া রোগ নয়। অবশ্য শুধু ভুলে যাওয়াই নয়। ‘ডিমেনশিয়া’ শব্দটি একগুচ্ছ লক্ষণকে বোঝায়, যাতে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, চিন্তা, মনোযোগ ও ভাষা প্রকাশে সমস্যা হওয়া, ব্যক্তিত্ব ও মেজাজের পরিবর্তন ঘটা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। এই পরিবর্তনগুলো সময়ের সঙ্গে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করতে শুরু করে। 
 
ডিমেনশিয়ার লক্ষণ

  • সাম্প্রতিক ঘটনা, পরিচিত নাম ও চেহারা ভুলে যাওয়া। এমনকি দিন, তারিখ বা সময় সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া।
  • মনোযোগ ধরে রাখা বা সরল সিদ্ধান্ত গ্রহণ কঠিন হয়ে ওঠা।
  • ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন হওয়া।
  • অনুভূতিতে পরিবর্তন ঘটা। যেমন, সহজে বিমর্ষ ও মর্মাহত হয়ে পড়া বা কোনো কিছুর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলা। 


কারণ
অনেক কারণেই ডিমেনশিয়া হয়। তার মধ্যে আলঝেইমার রোগ হলে, স্ট্রোকের পরে, পারকিনসন্স রোগ হলে ডিমেনশিয়া বেশি হয়। 

চিকিৎসা
এখন পর্যন্ত ডিমেনশিয়া নিরাময় অযোগ্য রোগ। ভালো হয়ে যাওয়ার মতো কোনো চিকিৎসা নেই এর। স্বাস্থ্যের পরিচর্যা ও জীবনশৈলীতে পরিবর্তন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন ডিমেনশিয়া রোগী দৈনন্দিন জীবনে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা আর নিজের বাসায় নিরাপদ থাকা কঠিন হতে পারে। এ ক্ষেত্রে বন্ধু আর পরিবারের সম্পূর্ণ সহযোগিতা প্রয়োজন। 

রোগীর যত্ন
যত্নই পারে এ রোগ থেকে রোগীকে কিছুটা ভালো রাখতে। 

  • পরিবেশ বসবাসের উপযোগী রাখুন। আলো-বাতাসপূর্ণ ঘরে রোগীকে থাকতে দিন, যাতে তিনি দিন-রাতের পার্থক্য বুঝতে পারেন। নোটবুক, ডায়েরি বা দেয়াল ক্যালেন্ডার, পারিবারিক ছবির মতো মনে করিয়ে দেওয়ার জিনিসগুলো ঘরে রাখুন। 
  • প্রতিদিনের ব্যবহারযোগ্য জিনিস একই জায়গায় রাখুন। যেমন জামাকাপড়, চশমা, চাবি, পানির গ্লাস এক জায়গায় রাখুন, যাতে তিনি সহজেই খুঁজে পান। 
  • ফোনের পাশে প্রয়োজনীয় টেলিফোন নম্বরের তালিকা রাখুন। 
  • প্রতিদিনের ওষুধ দিন ও সময় হিসেবে লেবেল করে আলাদা করে দিন, যাতে ভুলে না যায় বা একাধিকবার নিয়ে না নেয়। 
  • রোগীর স্মৃতিতে সমস্যা হবে। তাই নমনীয় ও ধৈর্যশীল হন। 
  • রোগী বেশি বিভ্রান্ত বা বিক্ষিপ্ত হয়ে গেলে বা বেশি নিস্তেজ হয়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। 

নিজের যত্ন
ডিমেনশিয়া রোগীর একটানা পরিচর্যা করা সেবাদানকারীর জন্য কঠিন। দীর্ঘদিন এটি করলে অনেক সময় রাগ বা হতাশার জন্ম নেয়। এ জন্য সেবাদানকারীদের শরীর ও মনের যত্ন নেওয়া জরুরি। কিছু দায়িত্ব ভাগ করে নিন পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে।
 
লেখক: প্যালিয়েটিভ মেডিসিন বিভাগ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তৃতীয়বার বিধ্বস্ত হলো বিমানবাহিনীর এফ-৭, এই চীনা যুদ্ধবিমানের বৈশিষ্ট্য কী

উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত: পাইলটসহ নিহত ২১, আহত দেড় শতাধিক, মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় শোক

৯ লাখ টন চাল কিনবে বাংলাদেশ, আশায় বুক বাঁধছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা

উত্তরায় বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত

পাইলটের মা-বাবাকে বিমানবাহিনীর উড়োজাহাজে নেওয়া হলো ঢাকায়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত