Ajker Patrika

বিদ্যালয়ে মিনি শিশুপার্ক

মিজানুর রহমান, তানোর
আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২২, ০৯: ৪৫
Thumbnail image

রাজশাহীর তানোর উপজেলার আটটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আঙিনায় শিশুশিক্ষার্থীদের খেলাধুলার সুবিধার্থে সরকারি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে শেখ রাসেল মিনি শিশুপার্ক। এতে পাল্টে গেছে শিক্ষার পরিবেশ। বিদ্যালয়ে আসার আগ্রহ বেড়ে গেছে শিক্ষার্থীদের।

সরকারের চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) আওতায় তানোর উপজেলার বিল্লী সপ্রাবি, চোরখৈর সপ্রাবি, আকচা সপ্রাবি, কচুয়া-১ সপ্রাবি, গাল্লা সপ্রাবি, কলমা সপ্রাবি, মালবান্ধা সপ্রাবি ও দেউল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি শিশুশিক্ষার্থীদের বিনোদনের ব্যবস্থা করতে সরকার ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়। সেই টাকায় এসব বিদ্যালয়ের সামনেই স্থাপন করা হয়েছে মিনি পার্ক।

সম্প্রতি এসব বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, আটটি বিদ্যালয়ের সামনে মিনি শিশুপার্কে রয়েছে নানা ধরনের খেলার সামগ্রী। ক্লাসের বিরতিতে ছাত্রছাত্রীরা স্লিপারে খেলছে। কেউবা দোলনায় দোল খাচ্ছে, কেউ আবার ব্যালেন্সিং যন্ত্রে ওঠানামা করছে।

উপজেলার দেউল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিপালী রানী দত্ত বলেন, আয়োজনটি চমৎকার। বাচ্চারাও দারুণ মজা পাচ্ছে। লেখাপড়ার চাপে বাচ্চারা অনেক সময় ক্লান্ত হয়ে পড়ে। সে জন্য মনমরা হয়ে থাকে। কিন্তু এখন ক্লাসের ফাঁকে বা টিফিন পিরিয়ডে খেলার সুযোগ পেয়ে শিক্ষার্থীদের মনমরা ভাব কেটে গেছে। সুযোগ পেলেই খেলার জন্য তারা উতলা হয়ে ওঠে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিদ্যালয়ে আসার আগ্রহ কয়েক গুণ বেড়েছে।

উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি এবং মালশিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পীযূষ কান্তি চৌধুরী বলেন, সরকারি বরাদ্দে তানোরের প্রান্তিক এলাকার আটটি বিদ্যালয়ে খেলনাসামগ্রী স্থাপন করা হয়েছে। এতে একসময়ের অনিয়মিত ছাত্রছাত্রীরা নিয়ম করে এখন বিদ্যালয়ে আসছে। করোনা-পরবর্তী সময়ে সারা দেশে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমে গেলেও এসব বিদ্যালয়ে উপস্থিতি খুবই সন্তোষজনক বলে জানা গেছে।

তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী হিয়া, চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসকিরা এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারাবী ও মাহি বলে, বিদ্যালয়ে এসে খেলার সুযোগ পেয়ে তাদের খুব ভালো লাগছে।

সালমা সুলতানা সোমা নামের এক অভিভাবক বলেন, আগে তাঁর সন্তান মাঝেমধ্যে স্কুলে যেত না। কিন্তু খেলার সুযোগ থাকায় এখন স্কুলে না যাওয়া তো দূরের কথা, বিদ্যালয়ে আসার জন্য নিজেই তাগাদা দেয়।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সানাউল্লাহ বলেন, আট বিদ্যালয়ে ‘নিড বেইসড প্লেয়িং এক্সেসরিজ’ স্থাপনা করায় এখন শিশুরা আনন্দে স্কুলে আসছে। হাসছে, খেলছে আর পড়ছে। এই আনন্দঘন পরিবেশে লেখাপড়া করতে পারলে শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ঘটবে। এসব বিদ্যালয় যেন এক একটি মিনি শিশুপার্ক হিসেবে গড়ে উঠেছে। মুজিব বর্ষে তানোরের আটটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্মিত এসব পার্কের স্থানীয়ভাবে নামকরণ করা হয়েছে শেখ রাসেল মিনি শিশুপার্ক। পর্যায়ক্রমে উপজেলার অন্য বিদ্যালয়গুলোতে এসব খেলনাসামগ্রী স্থাপনের মাধ্যমে শেখ রাসেল মিনি শিশুপার্ক নির্মাণ করা হবে বলেও তিনি জানান।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বলেন, আজকের শিশুরা আগামীর ভবিষ্যৎ। শিশুরা যাতে পড়ালেখাকে চাপ মনে না করে, তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম পর্যায়ে তানোরের আটটি বিদ্যালয়ের ছোট্ট শিক্ষার্থীদের জন্য উপহার দিয়েছেন। পর্যায়ক্রমে উপজেলার সব বিদ্যালয়ে এ ধরনের পার্ক হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত