Ajker Patrika

পীরগাছার শিশু রিয়া হত্যায় ২ আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ড

রংপুর ও পীরগাছা প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ৪২
পীরগাছার শিশু রিয়া হত্যায় ২ আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ড

পীরগাছার শিশু রিয়া মনি (৭) হত্যা মামলায় দুই আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে পাঁচ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে-২-এর বিচারক মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন পীরগাছার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের পরান গ্রামের রাসেল মিয়া এবং সালাউদ্দিন তালুদ। রায় ঘোষণার সময় রাসেল আদালতে উপস্থিত থাকলেও সালাউদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে পলাতক। তাঁরা মুক্তিপণের দাবিকৃত টাকা না পেয়ে শিশু রিয়াকে হত্যা করে মরদেহ সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখেন। পরান গ্রামের আবদুর রহিমের মেয়ে রিয়া স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, রিয়া ঘটনার দিন ২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিকেলে বাড়ির সামনে রাস্তায় প্রতিবেশী অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলছিল। এ সময় তাকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখা হয়। এরপর তার বাবার কাছে ফোন করে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।

আবদুর রহিম মেয়েকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে প্রথমে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও পরে ৩১ ডিসেম্বর মামলা করেন। এতে ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত তিন থেকে চারজনকে আসামি করা হয়।

মামলার সূত্র ধরে ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি রাসেলকে গ্রেপ্তারসহ তাঁর কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন জব্দ করে পুলিশ। পরে রাসেলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সালাউদ্দিনকে গ্রেপ্তারসহ মুক্তিপণ চাওয়ার জন্য ব্যবহৃত মোবাইল ও জুসের বোতল জব্দ করা হয়। সেই সঙ্গে সেপটিক ট্যাংক থেকে রিয়ার বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারদের মধ্যে সালাউদ্দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তিনি উল্লেখ করেন, অর্থের লোভে রিয়াকে অপহরণ করে জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। এরপর শ্বাসরোধে হত্যার করে লাশ টয়লেটে গুম করা হয়।

এ ঘটনায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমান তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২২ জুন ওই দুজনসহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। বিচারক ১৪ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গতকাল রায় ঘোষণা করেন। এতে আসামিদের মধ্যে আবুল কালাম, তাঁর স্ত্রী জহিরন বেগম, আবু জাফর জুয়েল, নয়ন মিয়া ও সাগর মিয়াকে খালাস দেওয়া হয়।

রায় ঘোষণার পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন বলেন, ‘বাদীর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

তবে বাদী আবদুর রহিম অসুস্থ থাকায় আদালত চত্বরে তাঁর ছোট ভাই নুর হোসেন বলেন, ‘যে বাড়িতে রিয়া মনিকে হত্যা, মরদেহ ও আলামত উদ্ধার হলো সেই বাড়ির আসামিরা খালাস পেলেন। আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। রায়ের কপি পেলে উচ্চ আদালতে যাব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত