Ajker Patrika

সুরকিতেই আটকা সড়ক পাকাকরণ, চলা দায়

সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি
সুরকিতেই আটকা সড়ক পাকাকরণ, চলা দায়

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার মোল্লার মসজিদ থেকে মৃধাবাড়ি পর্যন্ত তেরো শ মিটার সড়কটি পাকাকরণের কাজ সাড়ে ৪ বছরেও শেষ হয়নি। কাজে গাফিলতির কারণে প্রথম ঠিকাদারের সঙ্গে কার্যাদেশ বাতিলের জন্য আবেদনের পর প্রায় দেড় বছর পেরিয়ে গেছে। নতুন করে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে কাজ শুরু না হওয়ায় ভোগান্তি নিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

উপজেলার বয়রাগাদী ইউনিয়নে একই সময় নেওয়া অন্যান্য সড়কের কাজ শেষ হলেও, মোল্লার মসজিদ থেকে মৃধাবাড়ি পর্যন্ত সড়কটি পড়ে রয়েছে। ইতিমধ্যে ঠিকাদারের বিছানো ইটের খোয়া (সুড়কি) ও বালু পায়ে পায়ে সড়কে মিশে গেছে। এতে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

এলাকাবাসী বলছেন, সড়কের কাজ বন্ধ থাকলে এক সময় ইটের খোয়া (সুরকি) আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাতে আবারও সরকারের অনেক টাকা খরচ হবে। এই দুর্ভোগ লাঘবে আবার কাজ চালু করার দাবি তাঁদের।

উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, বৃহত্তর ঢাকা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-৩-এর আওতায় বয়রাগাদী ইউনিয়নের মোল্লার মসজিদ থেকে মৃধাবাড়ি পর্যন্ত ১ হাজার ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের পাকা (কার্পেটিং) সড়ক নির্মাণকাজ হাতে নেওয়া হয়। ১ কোটি ৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকা বরাদ্দে এই কাজের ঠিকাদারি পায় রাতা কনস্ট্রাকশন। ২০১৮ সালের মে মাসে কাজ শুরুও করে প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে শুরুর কিছুদিন পর অজ্ঞাত কারণে সড়কের কাজ বন্ধ করে রাখেন ঠিকাদার। প্রায় দেড় বছর আগে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে এলজিইডি। নতুন ঠিকাদার নিয়োগ না দেওয়ায় এখনো শেষ হয়নি সড়কের কাজ।

সম্প্রতি বয়রাগাদী ইউনিয়নে দেখা যায়, মোল্লার মসজিদ থেকে মৃধাবাড়ি পর্যন্ত সড়কটি খুঁড়ে সুড়কি ও বালু ফেলে রাখা হয়েছে, কিন্তু পিচঢালাই করা হয়নি। ফলে ভোগান্তির মধ্যেও হেঁটে ইটের খোয়া বিছানো সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।

দক্ষিণ গোবরদী গ্রামের বাসিন্দা মো. মাসুম বলেন, ‘প্রায় ৫ বছর আগে সড়কের কাজ শুরু হয়; কিন্তু সড়ক খুঁড়ে সুড়কি, বালু ফেলে রেখে চলে গেছেন ঠিকাদার। এখন এই রাস্তা দিয়ে গাড়ি, মালামাল বহন, রোগী বা বয়স্ক ব্যক্তিদের যাতায়াতে অনেক অসুবিধা হচ্ছে আমাদের।’ একই গ্রামের আরেক বাসিন্দা মো. আজিম হাওলাদার বলেন, ‘প্রতিদিন এই রাস্তায় আমাদের চলাচল করতে হয়। রাস্তায় খালি পায়ে চলা যায় না, দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি আমরা।’

বয়রাগাদী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সাড়ে ৪ বছর ধরে সড়কটির পাকাকরণ কাজ বন্ধ রয়েছে। উপজেলা মাসিক সভায় বিষয়টি আমি অনেকবার বলেছি; কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। অনেক দুর্ভোগ নিয়ে এলাকাবাসীকে ওই রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত রাস্তাটি পাকাকরণের কাজ শেষ করবে কর্তৃপক্ষ।’

উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘প্রথমে যে ঠিকাদার কাজ পেয়েছিলেন, তিনি ঠিকমতো কাজ না করে ফেলে রাখা ও গাফিলতির কারণে তাঁর সঙ্গে চুক্তি বাতিলের জন্য আমরা আবেদন করেছি। বাতিল হওয়ার পর নতুন করে টেন্ডারের মাধ্যমে অন্য ঠিকাদার দিয়ে কাজ করা হবে। সে ক্ষেত্রে কাজ চালু করতে একটু সময় লাগছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত