Ajker Patrika

দূষণে মরছে মাটিকাটা

আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ১৩
দূষণে মরছে মাটিকাটা

গাজীপুরের শ্রীপুরের বরমী বাজারের চুনিলাল অটোরাইস মিলের (স্বয়ংক্রিয় চালকল) ছাই ও অন্যান্য বর্জ্য সরাসরি ফেলা হচ্ছে মাটিকাটা নদীতে। এতে বরমী পাইটালবাড়ি সংযোগ সেতুর পাশে মাটিকাটা নদীর বেশ কিছু অংশ ভরাট হয়ে গেছে। চালকল কর্তৃপক্ষ গাড়িতে করে এ ছাই নদীর ওই অংশে ফেলে যায়। আর চালকলের ময়লাযুক্ত পানি নালার মাধ্যমে সরাসরি নদীতে ফেলা হয়।

সরেজমিন দেখা যায়, চালকলের ভেতর থেকে একটি নালার মাধ্যমে ময়লাযুক্ত কালো পানি সরাসরি নদীতে যাচ্ছে। ছাইযুক্ত পানি নদীতে মিশে ময়লা পানিতে পরিণত হচ্ছে। পাশাপাশি চালকলের ছাই সরাসরি ফেলা হচ্ছে মাটিকাটা নদীতে। এতে নদীর তীরের বেশ কিছু অংশ ভরাট হয়ে গেছে।

চালকলটির পাশেই রয়েছে একটি ঘাট। আর এ ঘাটে স্থানীয় বাসিন্দারা গোসলসহ নিজেদের অনেক প্রয়োজনীয় কাজ করেন। তবে এ ঘাটের দুই দিকের এক কিলোমিটার অংশের পানি ময়লা হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের সে প্রয়োজনীয় কাজগুলো করতে পারছেন না। বরমী বাজার এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা শ্রাবণী দাস বলেন, ‘নদীর পাড়ের এ ঘাটে আমরা গোসলসহ সংসারের হাঁড়ি-পাতিল ধোয়ামোছার কাজ করতাম। কিন্তু নদীতে সরাসরি ময়লাযুক্ত পানি ছেড়ে দেওয়ায় নদীর পানি দূষিত হয়েছে। এখন শুধু বর্ষাকালে গোসল করা যায়। তখন নদীতে স্রোত থাকায় ময়লা পানি চলে যায়।’

বরমী বাজারের ব্যবসায়ী গোপাল চন্দ্র বলেন, সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে রাইস মিলের ময়লা পানি। এতে পানি দূষিত হওয়ায় আশপাশের মানুষ তা ব্যবহার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

নদী পরিব্রাজক দল শ্রীপুর শাখার সভাপতি মো. সাঈদ চৌধুরী বলেন, ‘নদীর পানিতে এভাবে ময়লা-বর্জ্য ফেলা যাবে না। বিভিন্নভাবে নদীদূষণ হচ্ছে, নদীকে বাঁচিয়ে রাখতে সবার কাজ করতে হবে।’

চুনিলাল অটোরাইস মিলের মালিক রাখাল সাহা বলেন, ‘সব সময় ময়লাযুক্ত পানি আর ছাই নদীতে ফেলা হয় না। কিছুদিন পরপর গাড়িতে করে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা হয়। আজকের পর থেকে আর নদীতে এসব ফেলব না।’

গাজীপুরের জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নয়ন মিয়া বলেন, নদীর মধ্যে কারখানায় বর্জ্য ফেলার কোনো সুযোগ নেই। খোঁজখবর নিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বরমী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. তোফাজ্জল হোসেন জানান, এ বিষয়ে চালকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, রাইস মিলের ছাইসহ ময়লাযুক্ত কালো পানি সরাসরি নদীতে ছাড়ার কোনো সুযোগ নেই। এতে নদী ব্যাপকভাবে দূষণের আশঙ্কা আছে। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত