Ajker Patrika

অবৈধভাবে চলছে স্পিডবোট

সন্দীপ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২২, ১০: ০৬
অবৈধভাবে চলছে স্পিডবোট

শুষ্ক মৌসুমে কুমিরা-গুপ্তছড়া নৌপথে যাত্রীদের প্রধান বাহন হয়ে ওঠে স্পিডবোট। তখন সন্দ্বীপ চ্যানেল শান্ত থাকে। কিন্তু এই নৌপথে স্পিডবোট চলাচলের অনুমতি নেই। এসব স্পিডবোটের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর জন্য সীতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) চিঠি দেওয়া হয় বিআইডব্লিউটিসির পক্ষ থেকে। কিন্তু চিঠি দেওয়ার ৬৩ দিন পার হলেও কোনো অভিযান চালাইনি ইউএনও।

জানা গেছে, অবৈধ স্পিডবোট চলাচলের কারণে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) যাত্রীবাহী জাহাজে উঠতে চায় না মানুষ। এ ছাড়া যাত্রীদের ছোট নৌকা দিয়ে জাহাজে উঠতে হয়। এতে দুর্ভোগে পড়ে যাত্রী। যার কারণে যাত্রী না হওয়ায় লোকসান গুনতে হয় বিআইডব্লিউটিসিকে। এ জন্য গত ৭ ফেব্রুয়ারি অবৈধ নৌযান বিশেষ করে স্পিডবোটের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে সীতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) সংস্থাটির উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম-বাণিজ্য) গোপাল চন্দ্র মজুমদার একটি চিঠি দেন। ওই চিঠি দেওয়ার ৬৩ দিন পার হলেও কোনো অভিযান চালাইনি ইউএনও কিংবা বিআইডব্লিউটিএ।

গোপাল চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘অভিযান পরিচালনার জন্য আমি সরাসরি ইউএনওদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দিলেও এখনো অভিযান হয়েছে কিনা জানি না।’

জানতে চাইলে সীতাকুণ্ডের ইউএনও শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ঘাটের খাস কালেক্টরের কাছে স্পিডবোটসহ ওই নৌপথে চলাচলকারী নৌযানের কাগজপত্র তলব করা হয়েছে। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে যথাযথ না হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বিআইডব্লিউটিসির অবৈধ নৌযান বন্ধের চিঠির জবাবে গত ৯ ফেব্রুয়ারি সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খীসা স্বাক্ষরিত একটি চিঠি বিআইডব্লিটিসিকে পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয় পরিকল্পিত নৌ চ্যানেলের অভাব ও নাব্যতা সংকটের কারণে জাহাজ বিআইডব্লিউটিএর নির্মিত জেটি থেকে প্রায় ২৫০-৩০০ ফুট দূরে মাঝসাগরে অবস্থান করে। ছোট লালবোট দিয়ে যাত্রীদের মাঝসাগরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং টায়ার দিয়ে নির্মিত সিঁড়ি দিয়ে যাত্রীদের ওঠানামা করতে হয়, যা খুব ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপজ্জনক। বৃদ্ধ-নারী-শিশুদের জাহাজে যাতায়াতের ইচ্ছে থাকলেও ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে তাঁরা জাহাজে যাতায়াতে আগ্রহী হচ্ছেন না। পরিকল্পিত ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে জাহাজ চলাচলের উপযোগী করে নৌ চ্যানেল করা হলে সরাসরি জাহাজ জেটিতে নোঙর করতে পারবে। এতে নৌ চলাচল সুষ্ঠু ও নিরাপদ হবে।

এই বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক নয়ন শীল বলেন, ‘ড্রেজিং চলমান রয়েছে। নৌ চলাচল সহজ করতে ড্রেজিং করে খালের ভেতর জাহাজ প্রবেশ করানো যায় কি না আমরা সেটা চেষ্টা করছি। কয়েক মাস আগে যেখানে ড্রেজিং করা হয়েছিল, সেখানে প্রাকৃতিকভাবে কয়েক দিন পর আবার ভরাট হয়ে যায়। কুমিরা-গুপ্তছড়ার দুই পাশে যাত্রী ওঠানামার সুবিধায় পন্টুন দেওয়া যায় কি না সেটাও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।’

উল্লেখ্য, এই রুটে স্পিডবোট চলাচলের অনুমোদন নেই। গত ১৮ মার্চ ইজারাদার স্পিডবোট ভাড়া ৫০ টাকা বৃদ্ধি করে। এতে যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে ঘাট উন্মুক্ত করার দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। স্পিডবোট অবৈধ নৌযান হওয়ায় ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে দায় নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত