Ajker Patrika

কৃষিজমিতে পুকুর খনন

মেহেরাব্বিন সানভী, চুয়াডাঙ্গা
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২১, ১৬: ৩২
কৃষিজমিতে পুকুর খনন

অনুমতি ছাড়া জমির প্রকৃতি পরিবর্তন করা যাবে না, এমন সরকারি নির্দেশ অমান্য করে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন এলাকায় তিন ফসলি কৃষিজমিতে পুকুর কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে জেলায় আশঙ্কাজনক হারে কমছে কৃষিজমি।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, এলাকার একশ্রেণির অসাধু মানুষ কৃষকদের হুমকি দিয়ে কৃষিজমিতে পুকুর খনন করছেন। পুকুর খনন করার পর মাটি ইটভাটায় চড়া দামে বিক্রি করা হয়। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রকাশ্যে এমন অপরাধ করলেও তা বন্ধে প্রশাসন উদ্যোগ নিচ্ছে না।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পুকুর খনন করায় জেলায় প্রতিবছর কৃষিজমির পরিমাণ ২ থেকে ৩ শতাংশ হারে কমছে। এতে কৃষিপণ্য উৎপাদন কম হচ্ছে। খনন করা জমির পাশের অনেক আবাদি জমি প্লাবিত হচ্ছে। কৃষকেরা এ নিয়ে মহাবিপদের মধ্যে আছেন।

ভুক্তভোগী কৃষকেরা অভিযোগ করেন, পুকুর খনন করে মাটি ইটভাটায় বিক্রি করা হয়। যে জমিতে ধান চাষ হতো, সে জমিতে এখন পুকুর কাটা হচ্ছে। পাশের জমির কেউ পুকুর কাটলে আরেক জমির মালিকও আগ্রহী হচ্ছেন। সেচের পানি জমিতে থাকছে না। ফসলি জমির পানি পুকুরে নেমে যাচ্ছে। এতে চাষিরা ভালো করে ধানসহ অন্য ফসলের চাষও করতে পারছেন না। বছরে দুই মৌসুমে ধান চাষ হলেও এখন অর্ধেক জমির ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ভুলটিয়া গ্রামের কৃষক আসাদ বলেন, ‘কৃষিজমিতে পুকুর খনন করে ট্রাক ট্রাক মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এলাকার বিভিন্ন ইটভাটায়। আমাদের মোটা টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ও হুমকি দিয়ে মাটি কাটতে বাধ্য করা হয়।’

কৃষক হামিদুল হক বলেন, ‘ফসলি জমিতে যেভাবে পুকুর খনন করা হয়েছে, তাতে আমাদের কৃষিজমিতে পানি থাকছে না। এতে ফসল উৎপাদনের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।’

চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলা হায়দার গ্রামের কৃষক মজিবার শেখ বলেন, ‘যে জমিতে আগে ধান চাষ করতাম, সেই জমির এক বিঘাতে পুকুর খনন করেছিলাম। পরে পাশের জমি পুকুরে বিলীন হতে শুরু করে। বিলীন হতে হতে আমার পাঁচ বিঘা জমি বিলীন হয়ে গেছে। এভাবে পুকুর খনন চলতে থাকলে মাঠে ফসল উৎপাদন করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপাতদৃষ্টিতে দেখলে মনে হয় পুকুর কাটাতে আমাদের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। যাঁরা পুকুর কাটেন, তাঁরা আমাদের এমনভাবে বোঝান যে, পুকুরে মাছ চাষের মাধ্যমে ফসল চাষের থেকে দ্বিগুণ লাভবান হব। কিন্তু আসলে তেমন কিছুই না। লাভবান হওয়ার বিপরীতে আমরা আমাদের ফসলি জমি হারাচ্ছি। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, এ বিষয়ে এখনো প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামিম ভূঁইয়া বলেন, ‘মাঠের ফসলি জমিতে পুকুর খনন করা পুরোপুরি বেআইনি। জেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি থাকলেই কেবল ফসলি জমিতে পুকুর খনন করা যায়। তাও সেটি নিজের জমিতে হতে হবে। পুকুর খননে যারা জোরজবরদস্তি করছেন, ফসলি জমি বাঁচাতে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গোপনে ফসলি জমিতে পুকুর খননের অভিযোগ পেলেই আইনের আওতায় আনা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩ আগস্ট বিমানবন্দরে বাধা পান তাপস, হাসিনাকে অনুরোধ করেন অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে- অডিও ফাঁস

স্ত্রী রাজি নন, সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে না: পুলিশ

শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালে অবতরণ করল প্রথম ফ্লাইট

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত