Ajker Patrika

১৭ জনের মধ্যে ১৪টিতে নতুন মুখ, ক্ষুব্ধ পুরোনোরা

মিঠাপুকুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ১৩
১৭ জনের মধ্যে ১৪টিতে নতুন মুখ, ক্ষুব্ধ পুরোনোরা

মিঠাপুকুরের ১৭ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নতুন মুখের জয়জয়কার দেখা গেছে। উপজেলার ১৪ ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যানরা দলীয় টিকিট পেতে ব্যর্থ হয়েছেন। দলীয় প্রতীক নৌকা হারিয়ে তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ড গত বৃহস্পতিবার রাতে দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে। ঘোষিত তালিকায় উপজেলার বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানদের মধ্যে মাত্র তিনজনের নাম রয়েছে।

মিঠাপুকুরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি দুই ভাগে বিভক্ত। স্থানীয় সাংসদ এইচ এন আশিকুর রহমান এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকার এই দুই অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ইউপি নির্বাচনে মনোনয়নের বিষয়টি ছিল আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের জন্য এক পরীক্ষা। কোন পক্ষের কতজন মনোনয়ন পাবেন তার দিকে তাকিয়ে ছিলেন সবাই। বিশেষ করে জাকির হোসেনের জন্য এটি ছিল অগ্নিপরীক্ষা। এতে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করেছেন বলে মনে করছেন রাজনীতি সচেতন ব্যক্তিরা।

উপজেলায় ১৭ প্রার্থীর মধ্যে জাকির হোসেনের অনুসারী রয়েছেন সাতজন। তাঁরা হলেন খোড়াগাছে মাহবুবার রহমান বাবলু, ভাংনীতে মোস্তাফিজার রহমান বুলু, লতিবপুরে নেয়ামুল হক মণ্ডল, গোপালপুরে আশরাফ আলী আকন্দ, কাফ্রিখালে খলিলুর রহমান রাজা, চেংমারীতে মাহমুদুল নবী পাপুল ও বালারহাটে মাহবুবার রহমান লাভলু। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন একই পক্ষে থাকা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নিরঞ্জন মহন্ত।

সাংসদ আশিকুরের অনুসারীদের মধ্যে মনোনয়ন পেয়েছেন রানীপুকুরে বর্তমান চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম রাঙ্গা, ময়েনপুরে বর্তমান চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক, বড়বালায় হারুন অর রশীদ, মিলনপুরে আতিয়ার রহমান, দুর্গাপুরে বর্তমান চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান তালুকদার, বড় হযরতপুরে আব্দুল মতিন, মির্জাপুরে আনোয়ার হোসেন মিলু চৌধুরী ও ইমাদপুরে অনিল কুমার গাঙ্গুলী।

পায়রাবন্দে মনোনয়ন পেয়েছেন মনোয়ারা বেগম মলি। তিনি কীভাবে নৌকা প্রতীক পেলেন এ নিয়ে আলোচনা চলছে। আর বালুয়ামাসিমপুরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হচ্ছেন সাইফুল ইসলাম লোটাস পাইকার। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোতাহার হোসেন মণ্ডল মওলার তদবিরে মনোনয়ন পেয়েছেন বলে জানা গেছে।

ভোটের মাঠে নজর রাখা ব্যক্তিদের মতে, মিঠাপুকুরে আওয়ামী লীগে বিভক্তির বিষয়টি দলীয় মনোনয়ন ভাগাভাগিতে ফুটে উঠেছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরাও এই বিভক্তির রাজনীতি মাথায় রেখে নিজেদের হিসাব-নিকাশ করছেন।

নৌকা না পেয়ে মিলনপুরের বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম চৌধুরী গত শুক্রবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে মনোনয়ন বোর্ডে আপিল করেছেন। তিনি বলেন, ২০১৬ সালের আগ পর্যন্ত তাঁর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান ছিল না। ৩০ বছরের রেকর্ড ভেঙে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এবার তাঁর পরিবর্তে যাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তিনি ২০১৬ সালের নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে প্রার্থী হয়ে ৭২ ভোট পেয়েছিলেন।

মনোনয়নবঞ্চিত খোড়াগাছের বর্তমান চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান দাবি করেন, গত পাঁচ বছরে তাঁর এলাকার যে পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে, গত ২০ বছরেও তা হয়নি। অন্য ইউনিয়নের লোকজন তাঁর ইউনিয়ন দেখতে আসেন। তিনি মনোনয়ন পুনরায় বিবেচনা করার জন্য মনোনয়ন বোর্ড প্রধান শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

চেংমারীর চেয়ারম্যান রেজাউল কবীর টুটুল এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও নির্বাচিত হবেন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, কোনো কিছু মূল্যায়ন না করে তাঁর ইউনিয়নে অন্য একজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, সততার মূল্যায়ন করা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত