কামরুল হাসান

ভারি মিষ্টি মুখের এক তরুণী এসেছেন তাঁরই বয়সী এক তরুণকে সঙ্গে নিয়ে। অনেকক্ষণ বসে আছেন অভ্যর্থনার সামনে। একজন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলতে চান। সহকর্মী মর্জিনা বেগম এইটুকু বলে অনুরোধ করলেন, আমি যেন তরুণ-তরুণীর কথাটা শুনি।
হাতে জরুরি কাজ ছিল। সেটা শেষ করে গেলাম মিনিট বিশেক পরে। দেখি অনেকগুলো কাগজ হাতে দুজনে জড়সড় হয়ে বসে আছেন। মনে হলো আমাকে দেখে হালে পানি পেলেন। ছেলেটি বেশ ঋজু আর মেয়েটি সপ্রতিভ। যা বলার মেয়েটিই বলবেন। কথা শুরুর আগে মেয়েটি বললেন, ‘আমার ঘটনাটা অনেক লম্বা। একটু বেশি সময় দিতে হবে।’ বললাম, আচ্ছা বলুন।
মেয়েটা বলে চলেন একেবারে খুঁটিনাটি ধরে ধরে। তার পরও কোথাও একটু ছেদ পড়লে ছেলেটা ধরিয়ে দেন। ছেলেটা কখনো দোহারি করলে মেয়েটি থামিয়ে দিয়ে বলেন…দাঁড়াও আমি সব বলছি। আমি তাঁদের আর থামাতে পারি না, যেন তুফানমেইল। সবই শুনতে হয়। শেষ করি পাক্কা দেড় ঘণ্টায়। এটা ২০০৬ সালের জুন-জুলাইয়ের কথা।
মেয়েটির নাম সুবর্না—সুবর্না সরকার। দুই ভাইয়ের একমাত্র বোন। বাবা নেই, মা একটি ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কাকরাইলের একটি ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছিলেন কম্পিউটার সায়েন্স পড়তে। সেখানে পরিচয় হয় একই ক্লাসে পড়া খ্রিষ্টান যুবক এলিন ববির সঙ্গে। প্রথমে সহপাঠী হলেও পরে দুজনকে দুজনের ভালো লেগে যায়। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করার। দ্বিতীয় বর্ষে উঠে ২০০৫ সালের ১৭ মার্চ হঠাৎ করে দুজনে আদালতে গিয়ে গোপনে বিয়ে করে ফেলেন।
প্রথম কিছুদিন সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। মাস তিনেক পরে মেয়ের চলাফেরা দেখে সুবর্নার মায়ের সন্দেহ হয়। তিনি মেয়েকে জেরা করতে শুরু করেন। সুবর্না সবকিছু আড়াল করে কিছুদিন কাটিয়ে দেন। সুবর্নার ভয়, হিন্দু মেয়ের সঙ্গে খ্রিষ্টান ছেলের বিয়ে মা কিছুতেই মেনে নেবেন না। দুজনে সিদ্ধান্ত নেন একসঙ্গে থাকার। একদিন বিয়ের অ্যাফিডেভিটের কপি বাড়িতে রেখে চুপচাপ ববির বাড়িতে চলে আসেন সুবর্না। প্রথমে ওঠেন ববিদের আরামবাগের বাড়িতে। কিন্তু ববির মা সুবর্নাকে দেখে ভয় পেয়ে যান। কোনো বিপদ হতে পারে ভেবে বাড্ডায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছেলে ও ছেলের বউকে পাঠিয়ে দেন।
সুবর্নার মা সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে মেয়ের বিয়ের কাগজ দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে মেয়েকে ফোন দেন। টেলিফোনে অনেক কান্নাকাটি করেন। মেয়ের সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করেন। সুবর্না ধরে নেন, মেয়ের এই অবাধ্যপনাটা মেনে নিয়েছেন মা।
এভাবে কয়েক দিন যায়। দুই সপ্তাহ পর সুবর্নাকে আবার ফোন করেন তাঁর মা। তিনি মতিঝিলে আসতে বলেন জরুরি কিছু কাগজপত্র নিতে। সুবর্না তাঁর স্বামী ববিকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যাওয়ার পর যে পরিস্থিতির মুখে পড়েন, তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না তাঁরা। মতিঝিল অগ্রণী ব্যাংকের একটি গলির মুখে যাওয়ার পর ৩০-৪০ জন তাঁদের ঘিরে ধরেন। তাঁরা সুবর্নাকে একদিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আর অপহরণকারী বলে ববিকে গণপিটুনি দিতে শুরু করেন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল অপহরণকারী সাজিয়ে গণপিটুনি দিয়ে ববিকে মেরে ফেলা। সুবর্না এটা বুঝতে পেরে দৌড়ে গিয়ে ববিকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করতে থাকেন। একদিকে ভাড়াটে দুর্বৃত্তরা ববিকে টানছেন, অন্যদিকে সুবর্না তাঁকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করছেন।
মুহূর্তে অনেক লোক জড়ো হয়ে যায়। ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্য এগিয়ে আসেন। অবস্থা বেগতিক দেখে সুবর্নার মায়ের লোকেরা সরে পড়েন। সে যাত্রায় ববিকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যান সুবর্না।
মাস তিনেক পর আবার মায়ের ফোন। এবার একেবারে নরম সুর। আগে যা হয়েছে সব ভুলে যেতে বলেন। মেয়েকে তাঁর কর্মস্থলে ডেকে নেন ব্যাংকে ঋণের কিছু কাগজে সই দিতে হবে বলে। সুবর্না মায়ের কথা শুনে সই করে চলে আসেন। কয়েক দিন পর আবার মায়ের ফোন। এবার আবদার, মায়ের বাড়িতে কয়েক দিন কাটাতে হবে। রাজি হন সুবর্না। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর দেখেন পরিস্থিতি অন্য রকম। মায়ের বাড়ির একটি ঘরে তাঁকে আটকে ফেলা হয়, তাঁর ফোনও কেড়ে নেওয়া হয়।
ঋণের কাগজে সই দেওয়ার কথা বলে সুবর্না যে কাগজে সই দিয়েছিলেন, তা দিয়ে ডিভোর্সের কাগজ তৈরি করা হয়। একদিন রাতে সুবর্নাকে জোর করে ঢাকা থেকে নিয়ে যাওয়া হয় মানিকগঞ্জে সুবর্নার খালাতো বোনের বাড়িতে। সেখানেও বন্দিদশা। সবাই নিয়ম করে তাঁকে পাহারা দিতে থাকেন, যাতে পালাতে না পারেন। সেই বাড়িতে থাকার সময় সুবর্না জানতে পারেন ঘুমের ওষুধ দিয়ে অজ্ঞান করে তাঁকে রোগী সাজিয়ে ভারতে পাঠানো হবে। এ জন্য তাঁকে এই বাড়িতে আনা হয়েছে। ভারতে পাঠানোর সব বন্দোবস্ত পাকা—এ কথা কানে আসামাত্র প্রাণপণে দৌড়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে এসে ভুল বাসে উঠে চলে যান পাটুরিয়া ঘাটে। সেখান থেকে ফোন করলে ববি তাঁকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসেন।
কয়েক দিন পর ববিদের আরামবাগের বাড়িতে পুলিশ আসে। অভিযোগ, সুবর্নাকে অপহরণ করার অভিযোগে ববি, তাঁর মাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সুবর্নার মা সেই মামলা করেছেন। পুলিশ ববিকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। সুবর্নাও স্বামীর সঙ্গে থানায় চলে যান। পুলিশ তাঁকে চাপ দিতে থাকে মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য। কিন্তু সুবর্না অটল। পরে পুলিশ ভিকটিম হিসেবে তাঁকে আদালতে সোপর্দ করে।
আদালত ববিকে কারাগারে আর সুবর্নাকে নিরাপদ হেফাজতে পাঠান। ৯ দিন পর জামিনে বেরিয়ে আসেন ববি। সুবর্নাকে নিরাপদ হেফাজতে কাটাতে হয় ২১ দিন। এর মধ্যে নিরাপদ হেফাজতে মায়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাঁদের কথায় রাজি না হলে তাঁরা ববিকে মেরে ফেলবেন। এই হুমকিতেও টলেননি তিনি। এরপর সুবর্নাকে আদালতে নেওয়া হলে নিজেই আদালতে বলেন, তিনি স্বামীর সঙ্গে থাকতে চান। এরপর আদালত তাঁকে স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দেন।
এভাবে মাস তিনেক চলে যায়। হঠাৎ একদিন আদালতে হাজিরা দিতে গেলে জামিন বাতিল করে ববিকে কারাগারে পাঠান আদালত। তিন মাস কয়েদ খেটে বেরিয়ে আসেন ববি।
সুবর্নার ঘণ্টা দেড়েকের নিখুঁত বিবরণ মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনি। মনে হয় কোথাও এতটুকু ফাঁক নেই। মেয়েটির দিকে তাকালে বিস্ময় লাগে। তাঁর দাবি, তাঁকে নিয়ে যেন একটা নিউজ করি। সুবর্নার দাবি মেনে একটি খবর প্রকাশিত হয় প্রথম আলোয়। তাতে অবশ্য কিছুটা লাভ হয় তরুণ দম্পতির। তাঁরা বিচারক ও আইনজীবীদের সহানুভূতি পান।
এর পর থেকে ববি-সুবর্না প্রায়ই ফোন করেন। নানা সুখ-দুঃখের কথা জানান। একদিন প্রথম সন্তানের বাবা হওয়ার খবরও দেন ববি। বাচ্চা প্রসবের জন্য মগবাজারের আদ্-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি হন সুবর্না। তবু বিপদ তাঁদের পিছু ছাড়ে না। প্রথম বাচ্চা জন্মের পরদিন দুপুরে হঠাৎ সুবর্নার ফোন। কান্নাকাটি করে বলছেন, ‘ভাই, এবার র্যাব এসেছে। ববিকে তুলে নিয়ে যেতে চায়।’ হাসপাতালে এক দিনের সন্তান ফেলে স্বামীকে বাঁচাতে র্যাবের মুখোমুখি দাঁড়ান সুবর্না। তারা সুবর্নার কাছে হার মেনে ফিরে যায়।
মামলা চলতেই থাকে। প্রথম সন্তান জন্মের পাঁচ দিনের মাথায় মামলায় হাজিরার দিন। পাঁচ দিনের সন্তান কোলে নিয়ে আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী অপহরণের মামলার হাজিরা দিতে যান সুবর্না। বিচারক সব দেখে নীরব থাকেন। এভাবে মামলা চলে। বিচারক যান বিচারক আসেন, কিন্তু মামলা আর শেষ হয় না। দুই সন্তানের মা হন সুবর্না। একদিন দুই সন্তান সঙ্গে নিয়ে আদালতে হাজিরা দিতে যান। তখন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পিপি আলী আসগর স্বপন সন্তানদের দেখিয়ে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, বলুন কে অপহরণের ভিকটিম, আর কে আসামি?’ সব শুনে আদালত ববিসহ সবাইকে খালাস দেন। কিন্তু তত দিনে হারিয়ে গেছে আটটি বছর।
মামলায় খালাস পেয়ে মিষ্টি হাতে ববি-সুবর্না আসেন প্রথম আলোয়, কৃতজ্ঞতা জানাতে। আমি তাঁর শেষ লড়াই শুনে আবারও আপ্লুত হই। ববি-সুবর্না এখন সাভারে নিজেদের বাড়িতে থাকেন। মায়ের সঙ্গেও মিল হয়েছে তাঁদের। ববি শাশুড়ির আদরের জামাতা। সুবর্নার তিন সন্তানের দুজন স্কুলে যায়। ববি একটি সরকারি ব্যাংকে চড়া বেতনের আইটি কর্মকর্তা। আর সুবর্ণা হলেন ওমর আলীর কবিতা… ‘সে চায় ভালোবাসার উপহার সন্তানের মুখ/এক হাতে আঁতুড়ে শিশু, অন্য হাতে রান্নার উনুন’।
এই লেখার আগে ফোন করেছিলাম সুবর্নাকে। বললেন, ১৭ বছরের সংসারে এখন সুখের বন্যা। জীবনে আর কিছু চাওয়ার নেই তাঁর। ফেলে আসা দিনের কথা এক ফাঁকে মনে করিয়ে দিতেই আবারও দেড় ঘণ্টা সেই পুরোনো কাসুন্দি। তারপর আবদার, ‘ভাই, কবে আসবেন আমাকে দেখতে?’
বললাম, আসব, নিশ্চয় একদিন আসব।

ভারি মিষ্টি মুখের এক তরুণী এসেছেন তাঁরই বয়সী এক তরুণকে সঙ্গে নিয়ে। অনেকক্ষণ বসে আছেন অভ্যর্থনার সামনে। একজন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলতে চান। সহকর্মী মর্জিনা বেগম এইটুকু বলে অনুরোধ করলেন, আমি যেন তরুণ-তরুণীর কথাটা শুনি।
হাতে জরুরি কাজ ছিল। সেটা শেষ করে গেলাম মিনিট বিশেক পরে। দেখি অনেকগুলো কাগজ হাতে দুজনে জড়সড় হয়ে বসে আছেন। মনে হলো আমাকে দেখে হালে পানি পেলেন। ছেলেটি বেশ ঋজু আর মেয়েটি সপ্রতিভ। যা বলার মেয়েটিই বলবেন। কথা শুরুর আগে মেয়েটি বললেন, ‘আমার ঘটনাটা অনেক লম্বা। একটু বেশি সময় দিতে হবে।’ বললাম, আচ্ছা বলুন।
মেয়েটা বলে চলেন একেবারে খুঁটিনাটি ধরে ধরে। তার পরও কোথাও একটু ছেদ পড়লে ছেলেটা ধরিয়ে দেন। ছেলেটা কখনো দোহারি করলে মেয়েটি থামিয়ে দিয়ে বলেন…দাঁড়াও আমি সব বলছি। আমি তাঁদের আর থামাতে পারি না, যেন তুফানমেইল। সবই শুনতে হয়। শেষ করি পাক্কা দেড় ঘণ্টায়। এটা ২০০৬ সালের জুন-জুলাইয়ের কথা।
মেয়েটির নাম সুবর্না—সুবর্না সরকার। দুই ভাইয়ের একমাত্র বোন। বাবা নেই, মা একটি ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কাকরাইলের একটি ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছিলেন কম্পিউটার সায়েন্স পড়তে। সেখানে পরিচয় হয় একই ক্লাসে পড়া খ্রিষ্টান যুবক এলিন ববির সঙ্গে। প্রথমে সহপাঠী হলেও পরে দুজনকে দুজনের ভালো লেগে যায়। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করার। দ্বিতীয় বর্ষে উঠে ২০০৫ সালের ১৭ মার্চ হঠাৎ করে দুজনে আদালতে গিয়ে গোপনে বিয়ে করে ফেলেন।
প্রথম কিছুদিন সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। মাস তিনেক পরে মেয়ের চলাফেরা দেখে সুবর্নার মায়ের সন্দেহ হয়। তিনি মেয়েকে জেরা করতে শুরু করেন। সুবর্না সবকিছু আড়াল করে কিছুদিন কাটিয়ে দেন। সুবর্নার ভয়, হিন্দু মেয়ের সঙ্গে খ্রিষ্টান ছেলের বিয়ে মা কিছুতেই মেনে নেবেন না। দুজনে সিদ্ধান্ত নেন একসঙ্গে থাকার। একদিন বিয়ের অ্যাফিডেভিটের কপি বাড়িতে রেখে চুপচাপ ববির বাড়িতে চলে আসেন সুবর্না। প্রথমে ওঠেন ববিদের আরামবাগের বাড়িতে। কিন্তু ববির মা সুবর্নাকে দেখে ভয় পেয়ে যান। কোনো বিপদ হতে পারে ভেবে বাড্ডায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছেলে ও ছেলের বউকে পাঠিয়ে দেন।
সুবর্নার মা সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে মেয়ের বিয়ের কাগজ দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে মেয়েকে ফোন দেন। টেলিফোনে অনেক কান্নাকাটি করেন। মেয়ের সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করেন। সুবর্না ধরে নেন, মেয়ের এই অবাধ্যপনাটা মেনে নিয়েছেন মা।
এভাবে কয়েক দিন যায়। দুই সপ্তাহ পর সুবর্নাকে আবার ফোন করেন তাঁর মা। তিনি মতিঝিলে আসতে বলেন জরুরি কিছু কাগজপত্র নিতে। সুবর্না তাঁর স্বামী ববিকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যাওয়ার পর যে পরিস্থিতির মুখে পড়েন, তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না তাঁরা। মতিঝিল অগ্রণী ব্যাংকের একটি গলির মুখে যাওয়ার পর ৩০-৪০ জন তাঁদের ঘিরে ধরেন। তাঁরা সুবর্নাকে একদিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আর অপহরণকারী বলে ববিকে গণপিটুনি দিতে শুরু করেন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল অপহরণকারী সাজিয়ে গণপিটুনি দিয়ে ববিকে মেরে ফেলা। সুবর্না এটা বুঝতে পেরে দৌড়ে গিয়ে ববিকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করতে থাকেন। একদিকে ভাড়াটে দুর্বৃত্তরা ববিকে টানছেন, অন্যদিকে সুবর্না তাঁকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করছেন।
মুহূর্তে অনেক লোক জড়ো হয়ে যায়। ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্য এগিয়ে আসেন। অবস্থা বেগতিক দেখে সুবর্নার মায়ের লোকেরা সরে পড়েন। সে যাত্রায় ববিকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যান সুবর্না।
মাস তিনেক পর আবার মায়ের ফোন। এবার একেবারে নরম সুর। আগে যা হয়েছে সব ভুলে যেতে বলেন। মেয়েকে তাঁর কর্মস্থলে ডেকে নেন ব্যাংকে ঋণের কিছু কাগজে সই দিতে হবে বলে। সুবর্না মায়ের কথা শুনে সই করে চলে আসেন। কয়েক দিন পর আবার মায়ের ফোন। এবার আবদার, মায়ের বাড়িতে কয়েক দিন কাটাতে হবে। রাজি হন সুবর্না। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর দেখেন পরিস্থিতি অন্য রকম। মায়ের বাড়ির একটি ঘরে তাঁকে আটকে ফেলা হয়, তাঁর ফোনও কেড়ে নেওয়া হয়।
ঋণের কাগজে সই দেওয়ার কথা বলে সুবর্না যে কাগজে সই দিয়েছিলেন, তা দিয়ে ডিভোর্সের কাগজ তৈরি করা হয়। একদিন রাতে সুবর্নাকে জোর করে ঢাকা থেকে নিয়ে যাওয়া হয় মানিকগঞ্জে সুবর্নার খালাতো বোনের বাড়িতে। সেখানেও বন্দিদশা। সবাই নিয়ম করে তাঁকে পাহারা দিতে থাকেন, যাতে পালাতে না পারেন। সেই বাড়িতে থাকার সময় সুবর্না জানতে পারেন ঘুমের ওষুধ দিয়ে অজ্ঞান করে তাঁকে রোগী সাজিয়ে ভারতে পাঠানো হবে। এ জন্য তাঁকে এই বাড়িতে আনা হয়েছে। ভারতে পাঠানোর সব বন্দোবস্ত পাকা—এ কথা কানে আসামাত্র প্রাণপণে দৌড়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে এসে ভুল বাসে উঠে চলে যান পাটুরিয়া ঘাটে। সেখান থেকে ফোন করলে ববি তাঁকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসেন।
কয়েক দিন পর ববিদের আরামবাগের বাড়িতে পুলিশ আসে। অভিযোগ, সুবর্নাকে অপহরণ করার অভিযোগে ববি, তাঁর মাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সুবর্নার মা সেই মামলা করেছেন। পুলিশ ববিকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। সুবর্নাও স্বামীর সঙ্গে থানায় চলে যান। পুলিশ তাঁকে চাপ দিতে থাকে মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য। কিন্তু সুবর্না অটল। পরে পুলিশ ভিকটিম হিসেবে তাঁকে আদালতে সোপর্দ করে।
আদালত ববিকে কারাগারে আর সুবর্নাকে নিরাপদ হেফাজতে পাঠান। ৯ দিন পর জামিনে বেরিয়ে আসেন ববি। সুবর্নাকে নিরাপদ হেফাজতে কাটাতে হয় ২১ দিন। এর মধ্যে নিরাপদ হেফাজতে মায়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাঁদের কথায় রাজি না হলে তাঁরা ববিকে মেরে ফেলবেন। এই হুমকিতেও টলেননি তিনি। এরপর সুবর্নাকে আদালতে নেওয়া হলে নিজেই আদালতে বলেন, তিনি স্বামীর সঙ্গে থাকতে চান। এরপর আদালত তাঁকে স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দেন।
এভাবে মাস তিনেক চলে যায়। হঠাৎ একদিন আদালতে হাজিরা দিতে গেলে জামিন বাতিল করে ববিকে কারাগারে পাঠান আদালত। তিন মাস কয়েদ খেটে বেরিয়ে আসেন ববি।
সুবর্নার ঘণ্টা দেড়েকের নিখুঁত বিবরণ মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনি। মনে হয় কোথাও এতটুকু ফাঁক নেই। মেয়েটির দিকে তাকালে বিস্ময় লাগে। তাঁর দাবি, তাঁকে নিয়ে যেন একটা নিউজ করি। সুবর্নার দাবি মেনে একটি খবর প্রকাশিত হয় প্রথম আলোয়। তাতে অবশ্য কিছুটা লাভ হয় তরুণ দম্পতির। তাঁরা বিচারক ও আইনজীবীদের সহানুভূতি পান।
এর পর থেকে ববি-সুবর্না প্রায়ই ফোন করেন। নানা সুখ-দুঃখের কথা জানান। একদিন প্রথম সন্তানের বাবা হওয়ার খবরও দেন ববি। বাচ্চা প্রসবের জন্য মগবাজারের আদ্-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি হন সুবর্না। তবু বিপদ তাঁদের পিছু ছাড়ে না। প্রথম বাচ্চা জন্মের পরদিন দুপুরে হঠাৎ সুবর্নার ফোন। কান্নাকাটি করে বলছেন, ‘ভাই, এবার র্যাব এসেছে। ববিকে তুলে নিয়ে যেতে চায়।’ হাসপাতালে এক দিনের সন্তান ফেলে স্বামীকে বাঁচাতে র্যাবের মুখোমুখি দাঁড়ান সুবর্না। তারা সুবর্নার কাছে হার মেনে ফিরে যায়।
মামলা চলতেই থাকে। প্রথম সন্তান জন্মের পাঁচ দিনের মাথায় মামলায় হাজিরার দিন। পাঁচ দিনের সন্তান কোলে নিয়ে আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী অপহরণের মামলার হাজিরা দিতে যান সুবর্না। বিচারক সব দেখে নীরব থাকেন। এভাবে মামলা চলে। বিচারক যান বিচারক আসেন, কিন্তু মামলা আর শেষ হয় না। দুই সন্তানের মা হন সুবর্না। একদিন দুই সন্তান সঙ্গে নিয়ে আদালতে হাজিরা দিতে যান। তখন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পিপি আলী আসগর স্বপন সন্তানদের দেখিয়ে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, বলুন কে অপহরণের ভিকটিম, আর কে আসামি?’ সব শুনে আদালত ববিসহ সবাইকে খালাস দেন। কিন্তু তত দিনে হারিয়ে গেছে আটটি বছর।
মামলায় খালাস পেয়ে মিষ্টি হাতে ববি-সুবর্না আসেন প্রথম আলোয়, কৃতজ্ঞতা জানাতে। আমি তাঁর শেষ লড়াই শুনে আবারও আপ্লুত হই। ববি-সুবর্না এখন সাভারে নিজেদের বাড়িতে থাকেন। মায়ের সঙ্গেও মিল হয়েছে তাঁদের। ববি শাশুড়ির আদরের জামাতা। সুবর্নার তিন সন্তানের দুজন স্কুলে যায়। ববি একটি সরকারি ব্যাংকে চড়া বেতনের আইটি কর্মকর্তা। আর সুবর্ণা হলেন ওমর আলীর কবিতা… ‘সে চায় ভালোবাসার উপহার সন্তানের মুখ/এক হাতে আঁতুড়ে শিশু, অন্য হাতে রান্নার উনুন’।
এই লেখার আগে ফোন করেছিলাম সুবর্নাকে। বললেন, ১৭ বছরের সংসারে এখন সুখের বন্যা। জীবনে আর কিছু চাওয়ার নেই তাঁর। ফেলে আসা দিনের কথা এক ফাঁকে মনে করিয়ে দিতেই আবারও দেড় ঘণ্টা সেই পুরোনো কাসুন্দি। তারপর আবদার, ‘ভাই, কবে আসবেন আমাকে দেখতে?’
বললাম, আসব, নিশ্চয় একদিন আসব।
কামরুল হাসান

ভারি মিষ্টি মুখের এক তরুণী এসেছেন তাঁরই বয়সী এক তরুণকে সঙ্গে নিয়ে। অনেকক্ষণ বসে আছেন অভ্যর্থনার সামনে। একজন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলতে চান। সহকর্মী মর্জিনা বেগম এইটুকু বলে অনুরোধ করলেন, আমি যেন তরুণ-তরুণীর কথাটা শুনি।
হাতে জরুরি কাজ ছিল। সেটা শেষ করে গেলাম মিনিট বিশেক পরে। দেখি অনেকগুলো কাগজ হাতে দুজনে জড়সড় হয়ে বসে আছেন। মনে হলো আমাকে দেখে হালে পানি পেলেন। ছেলেটি বেশ ঋজু আর মেয়েটি সপ্রতিভ। যা বলার মেয়েটিই বলবেন। কথা শুরুর আগে মেয়েটি বললেন, ‘আমার ঘটনাটা অনেক লম্বা। একটু বেশি সময় দিতে হবে।’ বললাম, আচ্ছা বলুন।
মেয়েটা বলে চলেন একেবারে খুঁটিনাটি ধরে ধরে। তার পরও কোথাও একটু ছেদ পড়লে ছেলেটা ধরিয়ে দেন। ছেলেটা কখনো দোহারি করলে মেয়েটি থামিয়ে দিয়ে বলেন…দাঁড়াও আমি সব বলছি। আমি তাঁদের আর থামাতে পারি না, যেন তুফানমেইল। সবই শুনতে হয়। শেষ করি পাক্কা দেড় ঘণ্টায়। এটা ২০০৬ সালের জুন-জুলাইয়ের কথা।
মেয়েটির নাম সুবর্না—সুবর্না সরকার। দুই ভাইয়ের একমাত্র বোন। বাবা নেই, মা একটি ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কাকরাইলের একটি ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছিলেন কম্পিউটার সায়েন্স পড়তে। সেখানে পরিচয় হয় একই ক্লাসে পড়া খ্রিষ্টান যুবক এলিন ববির সঙ্গে। প্রথমে সহপাঠী হলেও পরে দুজনকে দুজনের ভালো লেগে যায়। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করার। দ্বিতীয় বর্ষে উঠে ২০০৫ সালের ১৭ মার্চ হঠাৎ করে দুজনে আদালতে গিয়ে গোপনে বিয়ে করে ফেলেন।
প্রথম কিছুদিন সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। মাস তিনেক পরে মেয়ের চলাফেরা দেখে সুবর্নার মায়ের সন্দেহ হয়। তিনি মেয়েকে জেরা করতে শুরু করেন। সুবর্না সবকিছু আড়াল করে কিছুদিন কাটিয়ে দেন। সুবর্নার ভয়, হিন্দু মেয়ের সঙ্গে খ্রিষ্টান ছেলের বিয়ে মা কিছুতেই মেনে নেবেন না। দুজনে সিদ্ধান্ত নেন একসঙ্গে থাকার। একদিন বিয়ের অ্যাফিডেভিটের কপি বাড়িতে রেখে চুপচাপ ববির বাড়িতে চলে আসেন সুবর্না। প্রথমে ওঠেন ববিদের আরামবাগের বাড়িতে। কিন্তু ববির মা সুবর্নাকে দেখে ভয় পেয়ে যান। কোনো বিপদ হতে পারে ভেবে বাড্ডায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছেলে ও ছেলের বউকে পাঠিয়ে দেন।
সুবর্নার মা সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে মেয়ের বিয়ের কাগজ দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে মেয়েকে ফোন দেন। টেলিফোনে অনেক কান্নাকাটি করেন। মেয়ের সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করেন। সুবর্না ধরে নেন, মেয়ের এই অবাধ্যপনাটা মেনে নিয়েছেন মা।
এভাবে কয়েক দিন যায়। দুই সপ্তাহ পর সুবর্নাকে আবার ফোন করেন তাঁর মা। তিনি মতিঝিলে আসতে বলেন জরুরি কিছু কাগজপত্র নিতে। সুবর্না তাঁর স্বামী ববিকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যাওয়ার পর যে পরিস্থিতির মুখে পড়েন, তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না তাঁরা। মতিঝিল অগ্রণী ব্যাংকের একটি গলির মুখে যাওয়ার পর ৩০-৪০ জন তাঁদের ঘিরে ধরেন। তাঁরা সুবর্নাকে একদিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আর অপহরণকারী বলে ববিকে গণপিটুনি দিতে শুরু করেন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল অপহরণকারী সাজিয়ে গণপিটুনি দিয়ে ববিকে মেরে ফেলা। সুবর্না এটা বুঝতে পেরে দৌড়ে গিয়ে ববিকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করতে থাকেন। একদিকে ভাড়াটে দুর্বৃত্তরা ববিকে টানছেন, অন্যদিকে সুবর্না তাঁকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করছেন।
মুহূর্তে অনেক লোক জড়ো হয়ে যায়। ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্য এগিয়ে আসেন। অবস্থা বেগতিক দেখে সুবর্নার মায়ের লোকেরা সরে পড়েন। সে যাত্রায় ববিকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যান সুবর্না।
মাস তিনেক পর আবার মায়ের ফোন। এবার একেবারে নরম সুর। আগে যা হয়েছে সব ভুলে যেতে বলেন। মেয়েকে তাঁর কর্মস্থলে ডেকে নেন ব্যাংকে ঋণের কিছু কাগজে সই দিতে হবে বলে। সুবর্না মায়ের কথা শুনে সই করে চলে আসেন। কয়েক দিন পর আবার মায়ের ফোন। এবার আবদার, মায়ের বাড়িতে কয়েক দিন কাটাতে হবে। রাজি হন সুবর্না। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর দেখেন পরিস্থিতি অন্য রকম। মায়ের বাড়ির একটি ঘরে তাঁকে আটকে ফেলা হয়, তাঁর ফোনও কেড়ে নেওয়া হয়।
ঋণের কাগজে সই দেওয়ার কথা বলে সুবর্না যে কাগজে সই দিয়েছিলেন, তা দিয়ে ডিভোর্সের কাগজ তৈরি করা হয়। একদিন রাতে সুবর্নাকে জোর করে ঢাকা থেকে নিয়ে যাওয়া হয় মানিকগঞ্জে সুবর্নার খালাতো বোনের বাড়িতে। সেখানেও বন্দিদশা। সবাই নিয়ম করে তাঁকে পাহারা দিতে থাকেন, যাতে পালাতে না পারেন। সেই বাড়িতে থাকার সময় সুবর্না জানতে পারেন ঘুমের ওষুধ দিয়ে অজ্ঞান করে তাঁকে রোগী সাজিয়ে ভারতে পাঠানো হবে। এ জন্য তাঁকে এই বাড়িতে আনা হয়েছে। ভারতে পাঠানোর সব বন্দোবস্ত পাকা—এ কথা কানে আসামাত্র প্রাণপণে দৌড়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে এসে ভুল বাসে উঠে চলে যান পাটুরিয়া ঘাটে। সেখান থেকে ফোন করলে ববি তাঁকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসেন।
কয়েক দিন পর ববিদের আরামবাগের বাড়িতে পুলিশ আসে। অভিযোগ, সুবর্নাকে অপহরণ করার অভিযোগে ববি, তাঁর মাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সুবর্নার মা সেই মামলা করেছেন। পুলিশ ববিকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। সুবর্নাও স্বামীর সঙ্গে থানায় চলে যান। পুলিশ তাঁকে চাপ দিতে থাকে মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য। কিন্তু সুবর্না অটল। পরে পুলিশ ভিকটিম হিসেবে তাঁকে আদালতে সোপর্দ করে।
আদালত ববিকে কারাগারে আর সুবর্নাকে নিরাপদ হেফাজতে পাঠান। ৯ দিন পর জামিনে বেরিয়ে আসেন ববি। সুবর্নাকে নিরাপদ হেফাজতে কাটাতে হয় ২১ দিন। এর মধ্যে নিরাপদ হেফাজতে মায়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাঁদের কথায় রাজি না হলে তাঁরা ববিকে মেরে ফেলবেন। এই হুমকিতেও টলেননি তিনি। এরপর সুবর্নাকে আদালতে নেওয়া হলে নিজেই আদালতে বলেন, তিনি স্বামীর সঙ্গে থাকতে চান। এরপর আদালত তাঁকে স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দেন।
এভাবে মাস তিনেক চলে যায়। হঠাৎ একদিন আদালতে হাজিরা দিতে গেলে জামিন বাতিল করে ববিকে কারাগারে পাঠান আদালত। তিন মাস কয়েদ খেটে বেরিয়ে আসেন ববি।
সুবর্নার ঘণ্টা দেড়েকের নিখুঁত বিবরণ মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনি। মনে হয় কোথাও এতটুকু ফাঁক নেই। মেয়েটির দিকে তাকালে বিস্ময় লাগে। তাঁর দাবি, তাঁকে নিয়ে যেন একটা নিউজ করি। সুবর্নার দাবি মেনে একটি খবর প্রকাশিত হয় প্রথম আলোয়। তাতে অবশ্য কিছুটা লাভ হয় তরুণ দম্পতির। তাঁরা বিচারক ও আইনজীবীদের সহানুভূতি পান।
এর পর থেকে ববি-সুবর্না প্রায়ই ফোন করেন। নানা সুখ-দুঃখের কথা জানান। একদিন প্রথম সন্তানের বাবা হওয়ার খবরও দেন ববি। বাচ্চা প্রসবের জন্য মগবাজারের আদ্-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি হন সুবর্না। তবু বিপদ তাঁদের পিছু ছাড়ে না। প্রথম বাচ্চা জন্মের পরদিন দুপুরে হঠাৎ সুবর্নার ফোন। কান্নাকাটি করে বলছেন, ‘ভাই, এবার র্যাব এসেছে। ববিকে তুলে নিয়ে যেতে চায়।’ হাসপাতালে এক দিনের সন্তান ফেলে স্বামীকে বাঁচাতে র্যাবের মুখোমুখি দাঁড়ান সুবর্না। তারা সুবর্নার কাছে হার মেনে ফিরে যায়।
মামলা চলতেই থাকে। প্রথম সন্তান জন্মের পাঁচ দিনের মাথায় মামলায় হাজিরার দিন। পাঁচ দিনের সন্তান কোলে নিয়ে আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী অপহরণের মামলার হাজিরা দিতে যান সুবর্না। বিচারক সব দেখে নীরব থাকেন। এভাবে মামলা চলে। বিচারক যান বিচারক আসেন, কিন্তু মামলা আর শেষ হয় না। দুই সন্তানের মা হন সুবর্না। একদিন দুই সন্তান সঙ্গে নিয়ে আদালতে হাজিরা দিতে যান। তখন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পিপি আলী আসগর স্বপন সন্তানদের দেখিয়ে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, বলুন কে অপহরণের ভিকটিম, আর কে আসামি?’ সব শুনে আদালত ববিসহ সবাইকে খালাস দেন। কিন্তু তত দিনে হারিয়ে গেছে আটটি বছর।
মামলায় খালাস পেয়ে মিষ্টি হাতে ববি-সুবর্না আসেন প্রথম আলোয়, কৃতজ্ঞতা জানাতে। আমি তাঁর শেষ লড়াই শুনে আবারও আপ্লুত হই। ববি-সুবর্না এখন সাভারে নিজেদের বাড়িতে থাকেন। মায়ের সঙ্গেও মিল হয়েছে তাঁদের। ববি শাশুড়ির আদরের জামাতা। সুবর্নার তিন সন্তানের দুজন স্কুলে যায়। ববি একটি সরকারি ব্যাংকে চড়া বেতনের আইটি কর্মকর্তা। আর সুবর্ণা হলেন ওমর আলীর কবিতা… ‘সে চায় ভালোবাসার উপহার সন্তানের মুখ/এক হাতে আঁতুড়ে শিশু, অন্য হাতে রান্নার উনুন’।
এই লেখার আগে ফোন করেছিলাম সুবর্নাকে। বললেন, ১৭ বছরের সংসারে এখন সুখের বন্যা। জীবনে আর কিছু চাওয়ার নেই তাঁর। ফেলে আসা দিনের কথা এক ফাঁকে মনে করিয়ে দিতেই আবারও দেড় ঘণ্টা সেই পুরোনো কাসুন্দি। তারপর আবদার, ‘ভাই, কবে আসবেন আমাকে দেখতে?’
বললাম, আসব, নিশ্চয় একদিন আসব।

ভারি মিষ্টি মুখের এক তরুণী এসেছেন তাঁরই বয়সী এক তরুণকে সঙ্গে নিয়ে। অনেকক্ষণ বসে আছেন অভ্যর্থনার সামনে। একজন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলতে চান। সহকর্মী মর্জিনা বেগম এইটুকু বলে অনুরোধ করলেন, আমি যেন তরুণ-তরুণীর কথাটা শুনি।
হাতে জরুরি কাজ ছিল। সেটা শেষ করে গেলাম মিনিট বিশেক পরে। দেখি অনেকগুলো কাগজ হাতে দুজনে জড়সড় হয়ে বসে আছেন। মনে হলো আমাকে দেখে হালে পানি পেলেন। ছেলেটি বেশ ঋজু আর মেয়েটি সপ্রতিভ। যা বলার মেয়েটিই বলবেন। কথা শুরুর আগে মেয়েটি বললেন, ‘আমার ঘটনাটা অনেক লম্বা। একটু বেশি সময় দিতে হবে।’ বললাম, আচ্ছা বলুন।
মেয়েটা বলে চলেন একেবারে খুঁটিনাটি ধরে ধরে। তার পরও কোথাও একটু ছেদ পড়লে ছেলেটা ধরিয়ে দেন। ছেলেটা কখনো দোহারি করলে মেয়েটি থামিয়ে দিয়ে বলেন…দাঁড়াও আমি সব বলছি। আমি তাঁদের আর থামাতে পারি না, যেন তুফানমেইল। সবই শুনতে হয়। শেষ করি পাক্কা দেড় ঘণ্টায়। এটা ২০০৬ সালের জুন-জুলাইয়ের কথা।
মেয়েটির নাম সুবর্না—সুবর্না সরকার। দুই ভাইয়ের একমাত্র বোন। বাবা নেই, মা একটি ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কাকরাইলের একটি ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছিলেন কম্পিউটার সায়েন্স পড়তে। সেখানে পরিচয় হয় একই ক্লাসে পড়া খ্রিষ্টান যুবক এলিন ববির সঙ্গে। প্রথমে সহপাঠী হলেও পরে দুজনকে দুজনের ভালো লেগে যায়। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করার। দ্বিতীয় বর্ষে উঠে ২০০৫ সালের ১৭ মার্চ হঠাৎ করে দুজনে আদালতে গিয়ে গোপনে বিয়ে করে ফেলেন।
প্রথম কিছুদিন সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। মাস তিনেক পরে মেয়ের চলাফেরা দেখে সুবর্নার মায়ের সন্দেহ হয়। তিনি মেয়েকে জেরা করতে শুরু করেন। সুবর্না সবকিছু আড়াল করে কিছুদিন কাটিয়ে দেন। সুবর্নার ভয়, হিন্দু মেয়ের সঙ্গে খ্রিষ্টান ছেলের বিয়ে মা কিছুতেই মেনে নেবেন না। দুজনে সিদ্ধান্ত নেন একসঙ্গে থাকার। একদিন বিয়ের অ্যাফিডেভিটের কপি বাড়িতে রেখে চুপচাপ ববির বাড়িতে চলে আসেন সুবর্না। প্রথমে ওঠেন ববিদের আরামবাগের বাড়িতে। কিন্তু ববির মা সুবর্নাকে দেখে ভয় পেয়ে যান। কোনো বিপদ হতে পারে ভেবে বাড্ডায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছেলে ও ছেলের বউকে পাঠিয়ে দেন।
সুবর্নার মা সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে মেয়ের বিয়ের কাগজ দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে মেয়েকে ফোন দেন। টেলিফোনে অনেক কান্নাকাটি করেন। মেয়ের সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করেন। সুবর্না ধরে নেন, মেয়ের এই অবাধ্যপনাটা মেনে নিয়েছেন মা।
এভাবে কয়েক দিন যায়। দুই সপ্তাহ পর সুবর্নাকে আবার ফোন করেন তাঁর মা। তিনি মতিঝিলে আসতে বলেন জরুরি কিছু কাগজপত্র নিতে। সুবর্না তাঁর স্বামী ববিকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যাওয়ার পর যে পরিস্থিতির মুখে পড়েন, তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না তাঁরা। মতিঝিল অগ্রণী ব্যাংকের একটি গলির মুখে যাওয়ার পর ৩০-৪০ জন তাঁদের ঘিরে ধরেন। তাঁরা সুবর্নাকে একদিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আর অপহরণকারী বলে ববিকে গণপিটুনি দিতে শুরু করেন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল অপহরণকারী সাজিয়ে গণপিটুনি দিয়ে ববিকে মেরে ফেলা। সুবর্না এটা বুঝতে পেরে দৌড়ে গিয়ে ববিকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করতে থাকেন। একদিকে ভাড়াটে দুর্বৃত্তরা ববিকে টানছেন, অন্যদিকে সুবর্না তাঁকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করছেন।
মুহূর্তে অনেক লোক জড়ো হয়ে যায়। ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্য এগিয়ে আসেন। অবস্থা বেগতিক দেখে সুবর্নার মায়ের লোকেরা সরে পড়েন। সে যাত্রায় ববিকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যান সুবর্না।
মাস তিনেক পর আবার মায়ের ফোন। এবার একেবারে নরম সুর। আগে যা হয়েছে সব ভুলে যেতে বলেন। মেয়েকে তাঁর কর্মস্থলে ডেকে নেন ব্যাংকে ঋণের কিছু কাগজে সই দিতে হবে বলে। সুবর্না মায়ের কথা শুনে সই করে চলে আসেন। কয়েক দিন পর আবার মায়ের ফোন। এবার আবদার, মায়ের বাড়িতে কয়েক দিন কাটাতে হবে। রাজি হন সুবর্না। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর দেখেন পরিস্থিতি অন্য রকম। মায়ের বাড়ির একটি ঘরে তাঁকে আটকে ফেলা হয়, তাঁর ফোনও কেড়ে নেওয়া হয়।
ঋণের কাগজে সই দেওয়ার কথা বলে সুবর্না যে কাগজে সই দিয়েছিলেন, তা দিয়ে ডিভোর্সের কাগজ তৈরি করা হয়। একদিন রাতে সুবর্নাকে জোর করে ঢাকা থেকে নিয়ে যাওয়া হয় মানিকগঞ্জে সুবর্নার খালাতো বোনের বাড়িতে। সেখানেও বন্দিদশা। সবাই নিয়ম করে তাঁকে পাহারা দিতে থাকেন, যাতে পালাতে না পারেন। সেই বাড়িতে থাকার সময় সুবর্না জানতে পারেন ঘুমের ওষুধ দিয়ে অজ্ঞান করে তাঁকে রোগী সাজিয়ে ভারতে পাঠানো হবে। এ জন্য তাঁকে এই বাড়িতে আনা হয়েছে। ভারতে পাঠানোর সব বন্দোবস্ত পাকা—এ কথা কানে আসামাত্র প্রাণপণে দৌড়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে এসে ভুল বাসে উঠে চলে যান পাটুরিয়া ঘাটে। সেখান থেকে ফোন করলে ববি তাঁকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসেন।
কয়েক দিন পর ববিদের আরামবাগের বাড়িতে পুলিশ আসে। অভিযোগ, সুবর্নাকে অপহরণ করার অভিযোগে ববি, তাঁর মাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সুবর্নার মা সেই মামলা করেছেন। পুলিশ ববিকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। সুবর্নাও স্বামীর সঙ্গে থানায় চলে যান। পুলিশ তাঁকে চাপ দিতে থাকে মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য। কিন্তু সুবর্না অটল। পরে পুলিশ ভিকটিম হিসেবে তাঁকে আদালতে সোপর্দ করে।
আদালত ববিকে কারাগারে আর সুবর্নাকে নিরাপদ হেফাজতে পাঠান। ৯ দিন পর জামিনে বেরিয়ে আসেন ববি। সুবর্নাকে নিরাপদ হেফাজতে কাটাতে হয় ২১ দিন। এর মধ্যে নিরাপদ হেফাজতে মায়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাঁদের কথায় রাজি না হলে তাঁরা ববিকে মেরে ফেলবেন। এই হুমকিতেও টলেননি তিনি। এরপর সুবর্নাকে আদালতে নেওয়া হলে নিজেই আদালতে বলেন, তিনি স্বামীর সঙ্গে থাকতে চান। এরপর আদালত তাঁকে স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দেন।
এভাবে মাস তিনেক চলে যায়। হঠাৎ একদিন আদালতে হাজিরা দিতে গেলে জামিন বাতিল করে ববিকে কারাগারে পাঠান আদালত। তিন মাস কয়েদ খেটে বেরিয়ে আসেন ববি।
সুবর্নার ঘণ্টা দেড়েকের নিখুঁত বিবরণ মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনি। মনে হয় কোথাও এতটুকু ফাঁক নেই। মেয়েটির দিকে তাকালে বিস্ময় লাগে। তাঁর দাবি, তাঁকে নিয়ে যেন একটা নিউজ করি। সুবর্নার দাবি মেনে একটি খবর প্রকাশিত হয় প্রথম আলোয়। তাতে অবশ্য কিছুটা লাভ হয় তরুণ দম্পতির। তাঁরা বিচারক ও আইনজীবীদের সহানুভূতি পান।
এর পর থেকে ববি-সুবর্না প্রায়ই ফোন করেন। নানা সুখ-দুঃখের কথা জানান। একদিন প্রথম সন্তানের বাবা হওয়ার খবরও দেন ববি। বাচ্চা প্রসবের জন্য মগবাজারের আদ্-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি হন সুবর্না। তবু বিপদ তাঁদের পিছু ছাড়ে না। প্রথম বাচ্চা জন্মের পরদিন দুপুরে হঠাৎ সুবর্নার ফোন। কান্নাকাটি করে বলছেন, ‘ভাই, এবার র্যাব এসেছে। ববিকে তুলে নিয়ে যেতে চায়।’ হাসপাতালে এক দিনের সন্তান ফেলে স্বামীকে বাঁচাতে র্যাবের মুখোমুখি দাঁড়ান সুবর্না। তারা সুবর্নার কাছে হার মেনে ফিরে যায়।
মামলা চলতেই থাকে। প্রথম সন্তান জন্মের পাঁচ দিনের মাথায় মামলায় হাজিরার দিন। পাঁচ দিনের সন্তান কোলে নিয়ে আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী অপহরণের মামলার হাজিরা দিতে যান সুবর্না। বিচারক সব দেখে নীরব থাকেন। এভাবে মামলা চলে। বিচারক যান বিচারক আসেন, কিন্তু মামলা আর শেষ হয় না। দুই সন্তানের মা হন সুবর্না। একদিন দুই সন্তান সঙ্গে নিয়ে আদালতে হাজিরা দিতে যান। তখন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পিপি আলী আসগর স্বপন সন্তানদের দেখিয়ে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, বলুন কে অপহরণের ভিকটিম, আর কে আসামি?’ সব শুনে আদালত ববিসহ সবাইকে খালাস দেন। কিন্তু তত দিনে হারিয়ে গেছে আটটি বছর।
মামলায় খালাস পেয়ে মিষ্টি হাতে ববি-সুবর্না আসেন প্রথম আলোয়, কৃতজ্ঞতা জানাতে। আমি তাঁর শেষ লড়াই শুনে আবারও আপ্লুত হই। ববি-সুবর্না এখন সাভারে নিজেদের বাড়িতে থাকেন। মায়ের সঙ্গেও মিল হয়েছে তাঁদের। ববি শাশুড়ির আদরের জামাতা। সুবর্নার তিন সন্তানের দুজন স্কুলে যায়। ববি একটি সরকারি ব্যাংকে চড়া বেতনের আইটি কর্মকর্তা। আর সুবর্ণা হলেন ওমর আলীর কবিতা… ‘সে চায় ভালোবাসার উপহার সন্তানের মুখ/এক হাতে আঁতুড়ে শিশু, অন্য হাতে রান্নার উনুন’।
এই লেখার আগে ফোন করেছিলাম সুবর্নাকে। বললেন, ১৭ বছরের সংসারে এখন সুখের বন্যা। জীবনে আর কিছু চাওয়ার নেই তাঁর। ফেলে আসা দিনের কথা এক ফাঁকে মনে করিয়ে দিতেই আবারও দেড় ঘণ্টা সেই পুরোনো কাসুন্দি। তারপর আবদার, ‘ভাই, কবে আসবেন আমাকে দেখতে?’
বললাম, আসব, নিশ্চয় একদিন আসব।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

ভারি মিষ্টি মুখের এক তরুণী এসেছেন তাঁরই বয়সী এক তরুণকে সঙ্গে নিয়ে। অনেকক্ষণ বসে আছেন অভ্যর্থনার সামনে। একজন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলতে চান। সহকর্মী মর্জিনা বেগম এইটুকু বলে অনুরোধ করলেন, আমি যেন তরুণ-তরুণীর কথাটা শুনি।
২০ নভেম্বর ২০২১
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

ভারি মিষ্টি মুখের এক তরুণী এসেছেন তাঁরই বয়সী এক তরুণকে সঙ্গে নিয়ে। অনেকক্ষণ বসে আছেন অভ্যর্থনার সামনে। একজন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলতে চান। সহকর্মী মর্জিনা বেগম এইটুকু বলে অনুরোধ করলেন, আমি যেন তরুণ-তরুণীর কথাটা শুনি।
২০ নভেম্বর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

ভারি মিষ্টি মুখের এক তরুণী এসেছেন তাঁরই বয়সী এক তরুণকে সঙ্গে নিয়ে। অনেকক্ষণ বসে আছেন অভ্যর্থনার সামনে। একজন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলতে চান। সহকর্মী মর্জিনা বেগম এইটুকু বলে অনুরোধ করলেন, আমি যেন তরুণ-তরুণীর কথাটা শুনি।
২০ নভেম্বর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

ভারি মিষ্টি মুখের এক তরুণী এসেছেন তাঁরই বয়সী এক তরুণকে সঙ্গে নিয়ে। অনেকক্ষণ বসে আছেন অভ্যর্থনার সামনে। একজন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলতে চান। সহকর্মী মর্জিনা বেগম এইটুকু বলে অনুরোধ করলেন, আমি যেন তরুণ-তরুণীর কথাটা শুনি।
২০ নভেম্বর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে