কামরুল হাসান

২০০৩ সালের ১ অক্টোবর, বুধবার। ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়ক থেকে ৩২ নম্বর ব্রিজ পর্যন্ত সর্বত্র অচেনা মানুষের আনাগোনা। কেউ ঝাড়ুদার, কেউ ট্যাক্সিচালক, কেউ বাদাম বিক্রেতা, কেউ-বা ভিক্ষুক। সবাই শ্যেনদৃষ্টিতে অপেক্ষা করছেন।
ছদ্মবেশ নেওয়া সবাই আসলে পুলিশের বিশেষ বাহিনী ‘র্যাট’-এর সদস্য। অভিযানের নেতৃত্বে থাকা সহকারী পুলিশ কমিশনার নাজমুল হাসান ভালো করে দেখে নেন, ৪০ জনের এই দলের সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না। বিকেল ৪টা বেজে কয়েক মিনিট, রুপালি রঙের একটি গাড়ি ধানমন্ডি ২৭ থেকে ৩২ নম্বর সড়কের দিকে মোড় নিচ্ছে। সবাই বুঝতে পারেন, এই গাড়িতেই শিকার। দলের একটি ট্যাক্সিক্যাব কারটি অনুসরণ করতে থাকে। বেতারবার্তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় সবাইকে, যাতে সতর্ক থাকেন।
একটু পর গাড়িটি ৩২ নম্বর সড়কের শেষ মাথা পেরিয়ে ব্রিজের ওপর ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি হলুদ ট্যাক্সিক্যাব এসে সামনে দাঁড়ায়। গাড়িচালক অবস্থা বুঝে ব্যারিকেড দেওয়া গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ততক্ষণে র্যাপিড অ্যাকশন টিমের সদস্যরা চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেন। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরা কয়েকজন পুলিশ কমান্ডো স্টাইলে গাড়ির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। গাড়ি থেকে বের করে আনা হয় যে ব্যক্তিকে, তাঁর নাম লিয়াকত হোসেন। শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে তিনি সরকারের তালিকাভুক্ত। লিয়াকত গ্রেপ্তারের খবর আসে সংবাদপত্র অফিসে। আমরা ছুটে যাই র্যাটের ধানমন্ডির অফিসে। তার আগে র্যাট প্রসঙ্গে একটু বলে রাখি।
২০০৪ সালে র্যাব গঠনের আগে চারদলীয় জোট সরকার আরেকটি বিশেষায়িত বাহিনী তৈরি করেছিল, যার নাম ছিল র্যাট বা র্যাপিড অ্যাকশন টিম। পুলিশ সুপার মাজহারুল হক ছিলেন র্যাটের প্রধান। শুরুতে এই বাহিনী বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু বাহিনীর নাম নিয়ে পুলিশের মধ্যে হাসাহাসি শুরু হয়। পুলিশ কর্মকর্তারা বলতেন ‘ইঁদুর বাহিনী’।
পরে সেই নাম বদলে করা হয় র্যাব। তবে এটা বলা যেতে পারে, র্যাব গঠনের আগে র্যাট ছিল জোট সরকারের ‘টেস্ট কেস’।
তো আমরা র্যাট অফিসে গিয়ে দেখি, লিয়াকতের সঙ্গে তাঁর দেহরক্ষী ও চাচাতো ভাই সোহাগ সর্দার এবং গাড়িচালক বাদল হাওলাদারকে আটক করা হয়েছে। সাংবাদিকদের দাবির মুখে লিয়াকতের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেন র্যাট কর্মকর্তারা।
লিয়াকত হোসেন আমাদের বলেন, অনেক দিন কলকাতায় ছিলেন। এক মাস আগে তাঁর মা মমতাজ বেগম মারা যান। মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি ঢাকায় আসেন। এরপর থেকে মোহাম্মদপুরে বায়তুল আমান হাউজিংয়ে তাঁর খালাতো ভাইয়ের বাসায় ছিলেন। গ্রেপ্তার এড়িয়ে চলার জন্য এত দিন সাবধানে চলাফেরা করেছেন। মুকুল চৌধুরী নামে ধানমন্ডির এক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীর কাছে তিনি টাকা পেতেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি টাকা না দিয়ে টালবাহানা করছিলেন। ঘটনার দিন ওই টাকা দেওয়ার কথা ছিল। টাকা আনতেই তিনি মুকুল চৌধুরীর বাসায় যাচ্ছিলেন। কিন্তু মুকুল তাঁকে ধরিয়ে দেবেন, তা তিনি ধারণাও করতে পারেননি।
লিয়াকত বলেছিলেন, তাঁকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণার পর তিন মাস ঢাকায় ছিলেন। এ সময় তিনি উচ্চ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের চেষ্টা করেন। কিন্তু আইনজীবীরা তাঁকে আশ্বাস না দেওয়ায় আত্মসমর্পণ না করে কলকাতায় চলে যান। সেখানে তিনি গ্রেপ্তার হলেও পরে মামলা থেকে অব্যাহতি পান।
দলের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের জন্য তিনি যথেষ্ট ত্যাগ করেছেন। বছরের পর বছর কারাভোগ করেছেন। বিনিময়ে দল থেকে কিছু পাননি; বরং আওয়ামী লীগই তাঁর নামের সঙ্গে সন্ত্রাসী শব্দটা জুড়ে দিয়েছে। আর বর্তমান জোট সরকার সেই সুযোগ গ্রহণ করছে। এই সুবাদেই আজ তিনি ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর একজন।
লিয়াকতের সেই গ্রেপ্তার বেশ লম্বা হয়েছিল। গ্রেপ্তারের পর র্যাট সদস্যরা জানিয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে হত্যাসহ ৯টি মামলা ও চারটি জিডি আছে। কিন্তু এসব মামলার একটিতেও তাঁকে কখনো গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। গ্রেপ্তারের পর পাঁচ বছরে ২২ দফা আটকাদেশ দিয়ে তাঁকে জেলে রাখা হয়। লিয়াকতের সেই আটকাদেশের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে তাঁর পরিবার রিট করে। ২০০৮ সালের আগস্টে আদালত তাঁর আটকাদেশ অবৈধ ঘোষণা করেন। এরপর ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান লিয়াকত। কারা প্রশাসনের উপমহাপরিদর্শক মেজর সামসুল হায়দার ছিদ্দিকী তাঁর মুক্তির খবর আমাকে দিয়েছিলেন।
কারাগার থেকে বের হওয়ার পর নিজের ইস্কাটনের বাড়ি ছেড়ে ধানমন্ডি ২৭ (পুরাতন) নম্বর রোডে শ্বশুরবাড়িতে ওঠেন লিয়াকত। তিনি কারও সঙ্গে মিশতেন না, টেলিফোনে কথাও বলতেন না। দুই মাস এভাবে থাকার পর একদিন সাদা পোশাকের একদল লোক তাঁকে তুলে নিয়ে যান। সেই গল্পে পরে আসছি।
মাদারীপুরের শিবচরের ভান্ডারিকান্দি গ্রামে সম্ভ্রান্ত পরিবারে লিয়াকতের জন্ম। ছয় ভাই, এক বোন। বাবা ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী। চাচা প্রখ্যাত সাংবাদিক ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর। ছোট ভাই নান্নু নিজ গ্রামে কয়েক দফা ইউপি চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। আরেক ভাই হান্নান যুবলীগের কমিটিতে কেন্দ্রীয় সদস্য ছিলেন। বোন পারুল আখতার যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ছিলেন।
গ্রামের স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তি হতে ঢাকায় আসেন লিয়াকত। এসেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। সে সময় ঢাকা কলেজের ছাত্র না হলেও সঙ্গী হান্নানকে নিয়ে তিনি ঢাকা কলেজ হোস্টেলের দুটি কক্ষ দখল করে থাকতে শুরু করেন। তবে এরশাদ শাসনের আমল পর্যন্ত টানা দুই দশক লিয়াকত ছাত্রলীগকে সংগঠিত করেন। এরপর যুবলীগের হাল ধরেন। ঢাকাসহ দেশব্যাপী তাঁর নিজস্ব কর্মী বাহিনী ছিল। রাজনীতির মাঠেই তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় হেমায়েতউল্লাহ আওরঙ্গ ও আমির হোসেন আমুর।
১৯৯০-এর পরে ঢাকায় নিজস্ব বাহিনী গড়ে তোলেন লিয়াকত। সেই বাহিনীর লোকজন নানা ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে শুরু করে। শুরুতে লিয়াকতের ভাই নান্নু নীলক্ষেত এলাকায় চাঁদাবাজি করতেন। সেটা ধীরে ধীরে এলিফ্যান্ট রোড, কাঁটাবন হয়ে ইস্কাটন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। ইস্কাটনে প্রতিবন্ধী স্কুলের পাশে একটি বাড়ি দখল করে সেখানে ক্লাবঘর করেন। সেই ক্লাবে বসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতেন। পরে থিতু হন বাংলামোটরে হেলেনা সেন্টারে। ইস্কাটনের মোনা টাওয়ারে পরিবার নিয়ে থাকতে শুরু করেন।
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে গিয়ে একপর্যায়ে হুমায়ুন কবির মিলন ওরফে মুরগি মিলনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা হয়। সেই দলে যুক্ত হন মগবাজারের আরমান। তাঁরা বিমানবন্দরের সোনা চোরাচালানেও জড়িয়ে পড়েন। এতে বাদ সাধেন আরেক সন্ত্রাসী টোকাই সাগর। ফলে দুই পক্ষে বিরোধ তুঙ্গে ওঠে। এরপর পাঁচ সন্ত্রাসীকে নিয়ে গড়ে তোলেন ফাইভ স্টার বাহিনী। একে সামাল দিতে টোকাই সাগর ও সুব্রত বাইন মিলে গড়ে তোলেন সেভেন স্টার বাহিনী। এ দুই বাহিনীর মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই গোলাগুলি হতো। সেই বিরোধের মধ্যে ২০০০ সালের ১৮ মে ঢাকার জজকোর্ট এলাকায় খুন হন মুরগি মিলন। এরপর আরমান গা ঢাকা দেন। একা হয়ে যান লিয়াকত। তবে তাঁর এসব কর্মকাণ্ডে বিব্রত ছিল সরকার। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সব রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে তাঁকে নিষিদ্ধ করা হয়। ২০০০ সালের ২০ অক্টোবর রমনা থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। মুক্তি পান ২০০১-এর নির্বাচনের কিছুদিন আগে।
২০০১ সালে দ্বিতীয় দফা ক্ষমতায় আসে বিএনপি। ক্ষমতায় এসে ২০০১ সালের ২৫ ডিসেম্বর ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করে। লিয়াকতকে ধরিয়ে দিতে ঘোষণা করা হয় এক লাখ টাকার পুরস্কার। এই ঘোষণার পর ফেরারি হন লিয়াকত। পাড়ি জমান ভারতে। সেখানে থাকাকালীন কলকাতা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। ২০০২ সালের ১৯ নভেম্বর কলকাতার আদালত তাঁকে জামিনে মুক্তি দেন। ফিরে আসেন ২০০৩ সালে, র্যাটের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার কিছুদিন আগে।
পাঁচ বছর জেল খেটে বের হওয়ার পর ২০০৮ সালের ২৫ নভেম্বর সাদা পোশাকের একদল লোক তাঁকে তুলে নিয়ে যান ধানমন্ডির শ্বশুরবাড়ি থেকে। লিয়াকতের স্ত্রী ফারহানা হোসেন আমাকে বলেছিলেন, ভোর পৌনে ৬টার দিকে সাদা পোশাকধারী ছয়-সাত জন বাসার নিরাপত্তাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে তাঁদের বাসায় আসেন। তাঁরা বাসায় ঢুকে লিয়াকত কোন কক্ষে থাকেন তা জানতে চান। এরপর লিয়াকতকে পেয়েই তাঁর মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে এবং হাত পিছমোড়া বেঁধে দ্রুত একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। লিয়াকতের পাঁচটি মোবাইল ফোনসেটও নিয়ে যান তাঁরা।
সেই যে গেলেন, আর ফিরে আসেননি লিয়াকত। কোথায় হারিয়ে গেলেন ‘ক্ষমতাধর’ লিয়াকত, কেউ জানে না।
আরও পড়ুন:

২০০৩ সালের ১ অক্টোবর, বুধবার। ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়ক থেকে ৩২ নম্বর ব্রিজ পর্যন্ত সর্বত্র অচেনা মানুষের আনাগোনা। কেউ ঝাড়ুদার, কেউ ট্যাক্সিচালক, কেউ বাদাম বিক্রেতা, কেউ-বা ভিক্ষুক। সবাই শ্যেনদৃষ্টিতে অপেক্ষা করছেন।
ছদ্মবেশ নেওয়া সবাই আসলে পুলিশের বিশেষ বাহিনী ‘র্যাট’-এর সদস্য। অভিযানের নেতৃত্বে থাকা সহকারী পুলিশ কমিশনার নাজমুল হাসান ভালো করে দেখে নেন, ৪০ জনের এই দলের সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না। বিকেল ৪টা বেজে কয়েক মিনিট, রুপালি রঙের একটি গাড়ি ধানমন্ডি ২৭ থেকে ৩২ নম্বর সড়কের দিকে মোড় নিচ্ছে। সবাই বুঝতে পারেন, এই গাড়িতেই শিকার। দলের একটি ট্যাক্সিক্যাব কারটি অনুসরণ করতে থাকে। বেতারবার্তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় সবাইকে, যাতে সতর্ক থাকেন।
একটু পর গাড়িটি ৩২ নম্বর সড়কের শেষ মাথা পেরিয়ে ব্রিজের ওপর ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি হলুদ ট্যাক্সিক্যাব এসে সামনে দাঁড়ায়। গাড়িচালক অবস্থা বুঝে ব্যারিকেড দেওয়া গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ততক্ষণে র্যাপিড অ্যাকশন টিমের সদস্যরা চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেন। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরা কয়েকজন পুলিশ কমান্ডো স্টাইলে গাড়ির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। গাড়ি থেকে বের করে আনা হয় যে ব্যক্তিকে, তাঁর নাম লিয়াকত হোসেন। শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে তিনি সরকারের তালিকাভুক্ত। লিয়াকত গ্রেপ্তারের খবর আসে সংবাদপত্র অফিসে। আমরা ছুটে যাই র্যাটের ধানমন্ডির অফিসে। তার আগে র্যাট প্রসঙ্গে একটু বলে রাখি।
২০০৪ সালে র্যাব গঠনের আগে চারদলীয় জোট সরকার আরেকটি বিশেষায়িত বাহিনী তৈরি করেছিল, যার নাম ছিল র্যাট বা র্যাপিড অ্যাকশন টিম। পুলিশ সুপার মাজহারুল হক ছিলেন র্যাটের প্রধান। শুরুতে এই বাহিনী বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু বাহিনীর নাম নিয়ে পুলিশের মধ্যে হাসাহাসি শুরু হয়। পুলিশ কর্মকর্তারা বলতেন ‘ইঁদুর বাহিনী’।
পরে সেই নাম বদলে করা হয় র্যাব। তবে এটা বলা যেতে পারে, র্যাব গঠনের আগে র্যাট ছিল জোট সরকারের ‘টেস্ট কেস’।
তো আমরা র্যাট অফিসে গিয়ে দেখি, লিয়াকতের সঙ্গে তাঁর দেহরক্ষী ও চাচাতো ভাই সোহাগ সর্দার এবং গাড়িচালক বাদল হাওলাদারকে আটক করা হয়েছে। সাংবাদিকদের দাবির মুখে লিয়াকতের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেন র্যাট কর্মকর্তারা।
লিয়াকত হোসেন আমাদের বলেন, অনেক দিন কলকাতায় ছিলেন। এক মাস আগে তাঁর মা মমতাজ বেগম মারা যান। মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি ঢাকায় আসেন। এরপর থেকে মোহাম্মদপুরে বায়তুল আমান হাউজিংয়ে তাঁর খালাতো ভাইয়ের বাসায় ছিলেন। গ্রেপ্তার এড়িয়ে চলার জন্য এত দিন সাবধানে চলাফেরা করেছেন। মুকুল চৌধুরী নামে ধানমন্ডির এক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীর কাছে তিনি টাকা পেতেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি টাকা না দিয়ে টালবাহানা করছিলেন। ঘটনার দিন ওই টাকা দেওয়ার কথা ছিল। টাকা আনতেই তিনি মুকুল চৌধুরীর বাসায় যাচ্ছিলেন। কিন্তু মুকুল তাঁকে ধরিয়ে দেবেন, তা তিনি ধারণাও করতে পারেননি।
লিয়াকত বলেছিলেন, তাঁকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণার পর তিন মাস ঢাকায় ছিলেন। এ সময় তিনি উচ্চ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের চেষ্টা করেন। কিন্তু আইনজীবীরা তাঁকে আশ্বাস না দেওয়ায় আত্মসমর্পণ না করে কলকাতায় চলে যান। সেখানে তিনি গ্রেপ্তার হলেও পরে মামলা থেকে অব্যাহতি পান।
দলের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের জন্য তিনি যথেষ্ট ত্যাগ করেছেন। বছরের পর বছর কারাভোগ করেছেন। বিনিময়ে দল থেকে কিছু পাননি; বরং আওয়ামী লীগই তাঁর নামের সঙ্গে সন্ত্রাসী শব্দটা জুড়ে দিয়েছে। আর বর্তমান জোট সরকার সেই সুযোগ গ্রহণ করছে। এই সুবাদেই আজ তিনি ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর একজন।
লিয়াকতের সেই গ্রেপ্তার বেশ লম্বা হয়েছিল। গ্রেপ্তারের পর র্যাট সদস্যরা জানিয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে হত্যাসহ ৯টি মামলা ও চারটি জিডি আছে। কিন্তু এসব মামলার একটিতেও তাঁকে কখনো গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। গ্রেপ্তারের পর পাঁচ বছরে ২২ দফা আটকাদেশ দিয়ে তাঁকে জেলে রাখা হয়। লিয়াকতের সেই আটকাদেশের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে তাঁর পরিবার রিট করে। ২০০৮ সালের আগস্টে আদালত তাঁর আটকাদেশ অবৈধ ঘোষণা করেন। এরপর ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান লিয়াকত। কারা প্রশাসনের উপমহাপরিদর্শক মেজর সামসুল হায়দার ছিদ্দিকী তাঁর মুক্তির খবর আমাকে দিয়েছিলেন।
কারাগার থেকে বের হওয়ার পর নিজের ইস্কাটনের বাড়ি ছেড়ে ধানমন্ডি ২৭ (পুরাতন) নম্বর রোডে শ্বশুরবাড়িতে ওঠেন লিয়াকত। তিনি কারও সঙ্গে মিশতেন না, টেলিফোনে কথাও বলতেন না। দুই মাস এভাবে থাকার পর একদিন সাদা পোশাকের একদল লোক তাঁকে তুলে নিয়ে যান। সেই গল্পে পরে আসছি।
মাদারীপুরের শিবচরের ভান্ডারিকান্দি গ্রামে সম্ভ্রান্ত পরিবারে লিয়াকতের জন্ম। ছয় ভাই, এক বোন। বাবা ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী। চাচা প্রখ্যাত সাংবাদিক ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর। ছোট ভাই নান্নু নিজ গ্রামে কয়েক দফা ইউপি চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। আরেক ভাই হান্নান যুবলীগের কমিটিতে কেন্দ্রীয় সদস্য ছিলেন। বোন পারুল আখতার যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ছিলেন।
গ্রামের স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তি হতে ঢাকায় আসেন লিয়াকত। এসেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। সে সময় ঢাকা কলেজের ছাত্র না হলেও সঙ্গী হান্নানকে নিয়ে তিনি ঢাকা কলেজ হোস্টেলের দুটি কক্ষ দখল করে থাকতে শুরু করেন। তবে এরশাদ শাসনের আমল পর্যন্ত টানা দুই দশক লিয়াকত ছাত্রলীগকে সংগঠিত করেন। এরপর যুবলীগের হাল ধরেন। ঢাকাসহ দেশব্যাপী তাঁর নিজস্ব কর্মী বাহিনী ছিল। রাজনীতির মাঠেই তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় হেমায়েতউল্লাহ আওরঙ্গ ও আমির হোসেন আমুর।
১৯৯০-এর পরে ঢাকায় নিজস্ব বাহিনী গড়ে তোলেন লিয়াকত। সেই বাহিনীর লোকজন নানা ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে শুরু করে। শুরুতে লিয়াকতের ভাই নান্নু নীলক্ষেত এলাকায় চাঁদাবাজি করতেন। সেটা ধীরে ধীরে এলিফ্যান্ট রোড, কাঁটাবন হয়ে ইস্কাটন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। ইস্কাটনে প্রতিবন্ধী স্কুলের পাশে একটি বাড়ি দখল করে সেখানে ক্লাবঘর করেন। সেই ক্লাবে বসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতেন। পরে থিতু হন বাংলামোটরে হেলেনা সেন্টারে। ইস্কাটনের মোনা টাওয়ারে পরিবার নিয়ে থাকতে শুরু করেন।
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে গিয়ে একপর্যায়ে হুমায়ুন কবির মিলন ওরফে মুরগি মিলনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা হয়। সেই দলে যুক্ত হন মগবাজারের আরমান। তাঁরা বিমানবন্দরের সোনা চোরাচালানেও জড়িয়ে পড়েন। এতে বাদ সাধেন আরেক সন্ত্রাসী টোকাই সাগর। ফলে দুই পক্ষে বিরোধ তুঙ্গে ওঠে। এরপর পাঁচ সন্ত্রাসীকে নিয়ে গড়ে তোলেন ফাইভ স্টার বাহিনী। একে সামাল দিতে টোকাই সাগর ও সুব্রত বাইন মিলে গড়ে তোলেন সেভেন স্টার বাহিনী। এ দুই বাহিনীর মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই গোলাগুলি হতো। সেই বিরোধের মধ্যে ২০০০ সালের ১৮ মে ঢাকার জজকোর্ট এলাকায় খুন হন মুরগি মিলন। এরপর আরমান গা ঢাকা দেন। একা হয়ে যান লিয়াকত। তবে তাঁর এসব কর্মকাণ্ডে বিব্রত ছিল সরকার। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সব রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে তাঁকে নিষিদ্ধ করা হয়। ২০০০ সালের ২০ অক্টোবর রমনা থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। মুক্তি পান ২০০১-এর নির্বাচনের কিছুদিন আগে।
২০০১ সালে দ্বিতীয় দফা ক্ষমতায় আসে বিএনপি। ক্ষমতায় এসে ২০০১ সালের ২৫ ডিসেম্বর ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করে। লিয়াকতকে ধরিয়ে দিতে ঘোষণা করা হয় এক লাখ টাকার পুরস্কার। এই ঘোষণার পর ফেরারি হন লিয়াকত। পাড়ি জমান ভারতে। সেখানে থাকাকালীন কলকাতা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। ২০০২ সালের ১৯ নভেম্বর কলকাতার আদালত তাঁকে জামিনে মুক্তি দেন। ফিরে আসেন ২০০৩ সালে, র্যাটের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার কিছুদিন আগে।
পাঁচ বছর জেল খেটে বের হওয়ার পর ২০০৮ সালের ২৫ নভেম্বর সাদা পোশাকের একদল লোক তাঁকে তুলে নিয়ে যান ধানমন্ডির শ্বশুরবাড়ি থেকে। লিয়াকতের স্ত্রী ফারহানা হোসেন আমাকে বলেছিলেন, ভোর পৌনে ৬টার দিকে সাদা পোশাকধারী ছয়-সাত জন বাসার নিরাপত্তাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে তাঁদের বাসায় আসেন। তাঁরা বাসায় ঢুকে লিয়াকত কোন কক্ষে থাকেন তা জানতে চান। এরপর লিয়াকতকে পেয়েই তাঁর মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে এবং হাত পিছমোড়া বেঁধে দ্রুত একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। লিয়াকতের পাঁচটি মোবাইল ফোনসেটও নিয়ে যান তাঁরা।
সেই যে গেলেন, আর ফিরে আসেননি লিয়াকত। কোথায় হারিয়ে গেলেন ‘ক্ষমতাধর’ লিয়াকত, কেউ জানে না।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

২০০৩ সালের ১ অক্টোবর, বুধবার। ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়ক থেকে ৩২ নম্বর ব্রিজ পর্যন্ত সর্বত্র অচেনা মানুষের আনাগোনা। কেউ ঝাড়ুদার, কেউ ট্যাক্সিচালক, কেউ বাদাম বিক্রেতা, কেউ-বা ভিক্ষুক। সবাই শ্যেনদৃষ্টিতে অপেক্ষা করছেন।
ছদ্মবেশ নেওয়া সবাই আসলে পুলিশের বিশেষ বাহিনী ‘র্যাট’-এর সদস্য। অভিযানের নেতৃত্বে থাকা সহকারী পুলিশ কমিশনার নাজমুল হাসান ভালো করে দেখে নেন, ৪০ জনের এই দলের সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না। বিকেল ৪টা বেজে কয়েক মিনিট, রুপালি রঙের একটি গাড়ি ধানমন্ডি ২৭ থেকে ৩২ নম্বর সড়কের দিকে মোড় নিচ্ছে। সবাই বুঝতে পারেন, এই গাড়িতেই শিকার। দলের একটি ট্যাক্সিক্যাব কারটি অনুসরণ করতে থাকে। বেতারবার্তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় সবাইকে, যাতে সতর্ক থাকেন।
একটু পর গাড়িটি ৩২ নম্বর সড়কের শেষ মাথা পেরিয়ে ব্রিজের ওপর ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি হলুদ ট্যাক্সিক্যাব এসে সামনে দাঁড়ায়। গাড়িচালক অবস্থা বুঝে ব্যারিকেড দেওয়া গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ততক্ষণে র্যাপিড অ্যাকশন টিমের সদস্যরা চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেন। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরা কয়েকজন পুলিশ কমান্ডো স্টাইলে গাড়ির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। গাড়ি থেকে বের করে আনা হয় যে ব্যক্তিকে, তাঁর নাম লিয়াকত হোসেন। শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে তিনি সরকারের তালিকাভুক্ত। লিয়াকত গ্রেপ্তারের খবর আসে সংবাদপত্র অফিসে। আমরা ছুটে যাই র্যাটের ধানমন্ডির অফিসে। তার আগে র্যাট প্রসঙ্গে একটু বলে রাখি।
২০০৪ সালে র্যাব গঠনের আগে চারদলীয় জোট সরকার আরেকটি বিশেষায়িত বাহিনী তৈরি করেছিল, যার নাম ছিল র্যাট বা র্যাপিড অ্যাকশন টিম। পুলিশ সুপার মাজহারুল হক ছিলেন র্যাটের প্রধান। শুরুতে এই বাহিনী বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু বাহিনীর নাম নিয়ে পুলিশের মধ্যে হাসাহাসি শুরু হয়। পুলিশ কর্মকর্তারা বলতেন ‘ইঁদুর বাহিনী’।
পরে সেই নাম বদলে করা হয় র্যাব। তবে এটা বলা যেতে পারে, র্যাব গঠনের আগে র্যাট ছিল জোট সরকারের ‘টেস্ট কেস’।
তো আমরা র্যাট অফিসে গিয়ে দেখি, লিয়াকতের সঙ্গে তাঁর দেহরক্ষী ও চাচাতো ভাই সোহাগ সর্দার এবং গাড়িচালক বাদল হাওলাদারকে আটক করা হয়েছে। সাংবাদিকদের দাবির মুখে লিয়াকতের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেন র্যাট কর্মকর্তারা।
লিয়াকত হোসেন আমাদের বলেন, অনেক দিন কলকাতায় ছিলেন। এক মাস আগে তাঁর মা মমতাজ বেগম মারা যান। মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি ঢাকায় আসেন। এরপর থেকে মোহাম্মদপুরে বায়তুল আমান হাউজিংয়ে তাঁর খালাতো ভাইয়ের বাসায় ছিলেন। গ্রেপ্তার এড়িয়ে চলার জন্য এত দিন সাবধানে চলাফেরা করেছেন। মুকুল চৌধুরী নামে ধানমন্ডির এক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীর কাছে তিনি টাকা পেতেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি টাকা না দিয়ে টালবাহানা করছিলেন। ঘটনার দিন ওই টাকা দেওয়ার কথা ছিল। টাকা আনতেই তিনি মুকুল চৌধুরীর বাসায় যাচ্ছিলেন। কিন্তু মুকুল তাঁকে ধরিয়ে দেবেন, তা তিনি ধারণাও করতে পারেননি।
লিয়াকত বলেছিলেন, তাঁকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণার পর তিন মাস ঢাকায় ছিলেন। এ সময় তিনি উচ্চ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের চেষ্টা করেন। কিন্তু আইনজীবীরা তাঁকে আশ্বাস না দেওয়ায় আত্মসমর্পণ না করে কলকাতায় চলে যান। সেখানে তিনি গ্রেপ্তার হলেও পরে মামলা থেকে অব্যাহতি পান।
দলের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের জন্য তিনি যথেষ্ট ত্যাগ করেছেন। বছরের পর বছর কারাভোগ করেছেন। বিনিময়ে দল থেকে কিছু পাননি; বরং আওয়ামী লীগই তাঁর নামের সঙ্গে সন্ত্রাসী শব্দটা জুড়ে দিয়েছে। আর বর্তমান জোট সরকার সেই সুযোগ গ্রহণ করছে। এই সুবাদেই আজ তিনি ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর একজন।
লিয়াকতের সেই গ্রেপ্তার বেশ লম্বা হয়েছিল। গ্রেপ্তারের পর র্যাট সদস্যরা জানিয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে হত্যাসহ ৯টি মামলা ও চারটি জিডি আছে। কিন্তু এসব মামলার একটিতেও তাঁকে কখনো গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। গ্রেপ্তারের পর পাঁচ বছরে ২২ দফা আটকাদেশ দিয়ে তাঁকে জেলে রাখা হয়। লিয়াকতের সেই আটকাদেশের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে তাঁর পরিবার রিট করে। ২০০৮ সালের আগস্টে আদালত তাঁর আটকাদেশ অবৈধ ঘোষণা করেন। এরপর ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান লিয়াকত। কারা প্রশাসনের উপমহাপরিদর্শক মেজর সামসুল হায়দার ছিদ্দিকী তাঁর মুক্তির খবর আমাকে দিয়েছিলেন।
কারাগার থেকে বের হওয়ার পর নিজের ইস্কাটনের বাড়ি ছেড়ে ধানমন্ডি ২৭ (পুরাতন) নম্বর রোডে শ্বশুরবাড়িতে ওঠেন লিয়াকত। তিনি কারও সঙ্গে মিশতেন না, টেলিফোনে কথাও বলতেন না। দুই মাস এভাবে থাকার পর একদিন সাদা পোশাকের একদল লোক তাঁকে তুলে নিয়ে যান। সেই গল্পে পরে আসছি।
মাদারীপুরের শিবচরের ভান্ডারিকান্দি গ্রামে সম্ভ্রান্ত পরিবারে লিয়াকতের জন্ম। ছয় ভাই, এক বোন। বাবা ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী। চাচা প্রখ্যাত সাংবাদিক ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর। ছোট ভাই নান্নু নিজ গ্রামে কয়েক দফা ইউপি চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। আরেক ভাই হান্নান যুবলীগের কমিটিতে কেন্দ্রীয় সদস্য ছিলেন। বোন পারুল আখতার যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ছিলেন।
গ্রামের স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তি হতে ঢাকায় আসেন লিয়াকত। এসেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। সে সময় ঢাকা কলেজের ছাত্র না হলেও সঙ্গী হান্নানকে নিয়ে তিনি ঢাকা কলেজ হোস্টেলের দুটি কক্ষ দখল করে থাকতে শুরু করেন। তবে এরশাদ শাসনের আমল পর্যন্ত টানা দুই দশক লিয়াকত ছাত্রলীগকে সংগঠিত করেন। এরপর যুবলীগের হাল ধরেন। ঢাকাসহ দেশব্যাপী তাঁর নিজস্ব কর্মী বাহিনী ছিল। রাজনীতির মাঠেই তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় হেমায়েতউল্লাহ আওরঙ্গ ও আমির হোসেন আমুর।
১৯৯০-এর পরে ঢাকায় নিজস্ব বাহিনী গড়ে তোলেন লিয়াকত। সেই বাহিনীর লোকজন নানা ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে শুরু করে। শুরুতে লিয়াকতের ভাই নান্নু নীলক্ষেত এলাকায় চাঁদাবাজি করতেন। সেটা ধীরে ধীরে এলিফ্যান্ট রোড, কাঁটাবন হয়ে ইস্কাটন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। ইস্কাটনে প্রতিবন্ধী স্কুলের পাশে একটি বাড়ি দখল করে সেখানে ক্লাবঘর করেন। সেই ক্লাবে বসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতেন। পরে থিতু হন বাংলামোটরে হেলেনা সেন্টারে। ইস্কাটনের মোনা টাওয়ারে পরিবার নিয়ে থাকতে শুরু করেন।
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে গিয়ে একপর্যায়ে হুমায়ুন কবির মিলন ওরফে মুরগি মিলনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা হয়। সেই দলে যুক্ত হন মগবাজারের আরমান। তাঁরা বিমানবন্দরের সোনা চোরাচালানেও জড়িয়ে পড়েন। এতে বাদ সাধেন আরেক সন্ত্রাসী টোকাই সাগর। ফলে দুই পক্ষে বিরোধ তুঙ্গে ওঠে। এরপর পাঁচ সন্ত্রাসীকে নিয়ে গড়ে তোলেন ফাইভ স্টার বাহিনী। একে সামাল দিতে টোকাই সাগর ও সুব্রত বাইন মিলে গড়ে তোলেন সেভেন স্টার বাহিনী। এ দুই বাহিনীর মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই গোলাগুলি হতো। সেই বিরোধের মধ্যে ২০০০ সালের ১৮ মে ঢাকার জজকোর্ট এলাকায় খুন হন মুরগি মিলন। এরপর আরমান গা ঢাকা দেন। একা হয়ে যান লিয়াকত। তবে তাঁর এসব কর্মকাণ্ডে বিব্রত ছিল সরকার। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সব রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে তাঁকে নিষিদ্ধ করা হয়। ২০০০ সালের ২০ অক্টোবর রমনা থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। মুক্তি পান ২০০১-এর নির্বাচনের কিছুদিন আগে।
২০০১ সালে দ্বিতীয় দফা ক্ষমতায় আসে বিএনপি। ক্ষমতায় এসে ২০০১ সালের ২৫ ডিসেম্বর ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করে। লিয়াকতকে ধরিয়ে দিতে ঘোষণা করা হয় এক লাখ টাকার পুরস্কার। এই ঘোষণার পর ফেরারি হন লিয়াকত। পাড়ি জমান ভারতে। সেখানে থাকাকালীন কলকাতা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। ২০০২ সালের ১৯ নভেম্বর কলকাতার আদালত তাঁকে জামিনে মুক্তি দেন। ফিরে আসেন ২০০৩ সালে, র্যাটের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার কিছুদিন আগে।
পাঁচ বছর জেল খেটে বের হওয়ার পর ২০০৮ সালের ২৫ নভেম্বর সাদা পোশাকের একদল লোক তাঁকে তুলে নিয়ে যান ধানমন্ডির শ্বশুরবাড়ি থেকে। লিয়াকতের স্ত্রী ফারহানা হোসেন আমাকে বলেছিলেন, ভোর পৌনে ৬টার দিকে সাদা পোশাকধারী ছয়-সাত জন বাসার নিরাপত্তাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে তাঁদের বাসায় আসেন। তাঁরা বাসায় ঢুকে লিয়াকত কোন কক্ষে থাকেন তা জানতে চান। এরপর লিয়াকতকে পেয়েই তাঁর মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে এবং হাত পিছমোড়া বেঁধে দ্রুত একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। লিয়াকতের পাঁচটি মোবাইল ফোনসেটও নিয়ে যান তাঁরা।
সেই যে গেলেন, আর ফিরে আসেননি লিয়াকত। কোথায় হারিয়ে গেলেন ‘ক্ষমতাধর’ লিয়াকত, কেউ জানে না।
আরও পড়ুন:

২০০৩ সালের ১ অক্টোবর, বুধবার। ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়ক থেকে ৩২ নম্বর ব্রিজ পর্যন্ত সর্বত্র অচেনা মানুষের আনাগোনা। কেউ ঝাড়ুদার, কেউ ট্যাক্সিচালক, কেউ বাদাম বিক্রেতা, কেউ-বা ভিক্ষুক। সবাই শ্যেনদৃষ্টিতে অপেক্ষা করছেন।
ছদ্মবেশ নেওয়া সবাই আসলে পুলিশের বিশেষ বাহিনী ‘র্যাট’-এর সদস্য। অভিযানের নেতৃত্বে থাকা সহকারী পুলিশ কমিশনার নাজমুল হাসান ভালো করে দেখে নেন, ৪০ জনের এই দলের সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না। বিকেল ৪টা বেজে কয়েক মিনিট, রুপালি রঙের একটি গাড়ি ধানমন্ডি ২৭ থেকে ৩২ নম্বর সড়কের দিকে মোড় নিচ্ছে। সবাই বুঝতে পারেন, এই গাড়িতেই শিকার। দলের একটি ট্যাক্সিক্যাব কারটি অনুসরণ করতে থাকে। বেতারবার্তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় সবাইকে, যাতে সতর্ক থাকেন।
একটু পর গাড়িটি ৩২ নম্বর সড়কের শেষ মাথা পেরিয়ে ব্রিজের ওপর ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি হলুদ ট্যাক্সিক্যাব এসে সামনে দাঁড়ায়। গাড়িচালক অবস্থা বুঝে ব্যারিকেড দেওয়া গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ততক্ষণে র্যাপিড অ্যাকশন টিমের সদস্যরা চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেন। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরা কয়েকজন পুলিশ কমান্ডো স্টাইলে গাড়ির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। গাড়ি থেকে বের করে আনা হয় যে ব্যক্তিকে, তাঁর নাম লিয়াকত হোসেন। শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে তিনি সরকারের তালিকাভুক্ত। লিয়াকত গ্রেপ্তারের খবর আসে সংবাদপত্র অফিসে। আমরা ছুটে যাই র্যাটের ধানমন্ডির অফিসে। তার আগে র্যাট প্রসঙ্গে একটু বলে রাখি।
২০০৪ সালে র্যাব গঠনের আগে চারদলীয় জোট সরকার আরেকটি বিশেষায়িত বাহিনী তৈরি করেছিল, যার নাম ছিল র্যাট বা র্যাপিড অ্যাকশন টিম। পুলিশ সুপার মাজহারুল হক ছিলেন র্যাটের প্রধান। শুরুতে এই বাহিনী বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু বাহিনীর নাম নিয়ে পুলিশের মধ্যে হাসাহাসি শুরু হয়। পুলিশ কর্মকর্তারা বলতেন ‘ইঁদুর বাহিনী’।
পরে সেই নাম বদলে করা হয় র্যাব। তবে এটা বলা যেতে পারে, র্যাব গঠনের আগে র্যাট ছিল জোট সরকারের ‘টেস্ট কেস’।
তো আমরা র্যাট অফিসে গিয়ে দেখি, লিয়াকতের সঙ্গে তাঁর দেহরক্ষী ও চাচাতো ভাই সোহাগ সর্দার এবং গাড়িচালক বাদল হাওলাদারকে আটক করা হয়েছে। সাংবাদিকদের দাবির মুখে লিয়াকতের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেন র্যাট কর্মকর্তারা।
লিয়াকত হোসেন আমাদের বলেন, অনেক দিন কলকাতায় ছিলেন। এক মাস আগে তাঁর মা মমতাজ বেগম মারা যান। মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি ঢাকায় আসেন। এরপর থেকে মোহাম্মদপুরে বায়তুল আমান হাউজিংয়ে তাঁর খালাতো ভাইয়ের বাসায় ছিলেন। গ্রেপ্তার এড়িয়ে চলার জন্য এত দিন সাবধানে চলাফেরা করেছেন। মুকুল চৌধুরী নামে ধানমন্ডির এক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীর কাছে তিনি টাকা পেতেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি টাকা না দিয়ে টালবাহানা করছিলেন। ঘটনার দিন ওই টাকা দেওয়ার কথা ছিল। টাকা আনতেই তিনি মুকুল চৌধুরীর বাসায় যাচ্ছিলেন। কিন্তু মুকুল তাঁকে ধরিয়ে দেবেন, তা তিনি ধারণাও করতে পারেননি।
লিয়াকত বলেছিলেন, তাঁকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণার পর তিন মাস ঢাকায় ছিলেন। এ সময় তিনি উচ্চ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের চেষ্টা করেন। কিন্তু আইনজীবীরা তাঁকে আশ্বাস না দেওয়ায় আত্মসমর্পণ না করে কলকাতায় চলে যান। সেখানে তিনি গ্রেপ্তার হলেও পরে মামলা থেকে অব্যাহতি পান।
দলের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের জন্য তিনি যথেষ্ট ত্যাগ করেছেন। বছরের পর বছর কারাভোগ করেছেন। বিনিময়ে দল থেকে কিছু পাননি; বরং আওয়ামী লীগই তাঁর নামের সঙ্গে সন্ত্রাসী শব্দটা জুড়ে দিয়েছে। আর বর্তমান জোট সরকার সেই সুযোগ গ্রহণ করছে। এই সুবাদেই আজ তিনি ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর একজন।
লিয়াকতের সেই গ্রেপ্তার বেশ লম্বা হয়েছিল। গ্রেপ্তারের পর র্যাট সদস্যরা জানিয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে হত্যাসহ ৯টি মামলা ও চারটি জিডি আছে। কিন্তু এসব মামলার একটিতেও তাঁকে কখনো গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। গ্রেপ্তারের পর পাঁচ বছরে ২২ দফা আটকাদেশ দিয়ে তাঁকে জেলে রাখা হয়। লিয়াকতের সেই আটকাদেশের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে তাঁর পরিবার রিট করে। ২০০৮ সালের আগস্টে আদালত তাঁর আটকাদেশ অবৈধ ঘোষণা করেন। এরপর ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান লিয়াকত। কারা প্রশাসনের উপমহাপরিদর্শক মেজর সামসুল হায়দার ছিদ্দিকী তাঁর মুক্তির খবর আমাকে দিয়েছিলেন।
কারাগার থেকে বের হওয়ার পর নিজের ইস্কাটনের বাড়ি ছেড়ে ধানমন্ডি ২৭ (পুরাতন) নম্বর রোডে শ্বশুরবাড়িতে ওঠেন লিয়াকত। তিনি কারও সঙ্গে মিশতেন না, টেলিফোনে কথাও বলতেন না। দুই মাস এভাবে থাকার পর একদিন সাদা পোশাকের একদল লোক তাঁকে তুলে নিয়ে যান। সেই গল্পে পরে আসছি।
মাদারীপুরের শিবচরের ভান্ডারিকান্দি গ্রামে সম্ভ্রান্ত পরিবারে লিয়াকতের জন্ম। ছয় ভাই, এক বোন। বাবা ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী। চাচা প্রখ্যাত সাংবাদিক ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর। ছোট ভাই নান্নু নিজ গ্রামে কয়েক দফা ইউপি চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। আরেক ভাই হান্নান যুবলীগের কমিটিতে কেন্দ্রীয় সদস্য ছিলেন। বোন পারুল আখতার যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ছিলেন।
গ্রামের স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তি হতে ঢাকায় আসেন লিয়াকত। এসেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। সে সময় ঢাকা কলেজের ছাত্র না হলেও সঙ্গী হান্নানকে নিয়ে তিনি ঢাকা কলেজ হোস্টেলের দুটি কক্ষ দখল করে থাকতে শুরু করেন। তবে এরশাদ শাসনের আমল পর্যন্ত টানা দুই দশক লিয়াকত ছাত্রলীগকে সংগঠিত করেন। এরপর যুবলীগের হাল ধরেন। ঢাকাসহ দেশব্যাপী তাঁর নিজস্ব কর্মী বাহিনী ছিল। রাজনীতির মাঠেই তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় হেমায়েতউল্লাহ আওরঙ্গ ও আমির হোসেন আমুর।
১৯৯০-এর পরে ঢাকায় নিজস্ব বাহিনী গড়ে তোলেন লিয়াকত। সেই বাহিনীর লোকজন নানা ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে শুরু করে। শুরুতে লিয়াকতের ভাই নান্নু নীলক্ষেত এলাকায় চাঁদাবাজি করতেন। সেটা ধীরে ধীরে এলিফ্যান্ট রোড, কাঁটাবন হয়ে ইস্কাটন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। ইস্কাটনে প্রতিবন্ধী স্কুলের পাশে একটি বাড়ি দখল করে সেখানে ক্লাবঘর করেন। সেই ক্লাবে বসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতেন। পরে থিতু হন বাংলামোটরে হেলেনা সেন্টারে। ইস্কাটনের মোনা টাওয়ারে পরিবার নিয়ে থাকতে শুরু করেন।
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে গিয়ে একপর্যায়ে হুমায়ুন কবির মিলন ওরফে মুরগি মিলনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা হয়। সেই দলে যুক্ত হন মগবাজারের আরমান। তাঁরা বিমানবন্দরের সোনা চোরাচালানেও জড়িয়ে পড়েন। এতে বাদ সাধেন আরেক সন্ত্রাসী টোকাই সাগর। ফলে দুই পক্ষে বিরোধ তুঙ্গে ওঠে। এরপর পাঁচ সন্ত্রাসীকে নিয়ে গড়ে তোলেন ফাইভ স্টার বাহিনী। একে সামাল দিতে টোকাই সাগর ও সুব্রত বাইন মিলে গড়ে তোলেন সেভেন স্টার বাহিনী। এ দুই বাহিনীর মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই গোলাগুলি হতো। সেই বিরোধের মধ্যে ২০০০ সালের ১৮ মে ঢাকার জজকোর্ট এলাকায় খুন হন মুরগি মিলন। এরপর আরমান গা ঢাকা দেন। একা হয়ে যান লিয়াকত। তবে তাঁর এসব কর্মকাণ্ডে বিব্রত ছিল সরকার। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সব রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে তাঁকে নিষিদ্ধ করা হয়। ২০০০ সালের ২০ অক্টোবর রমনা থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। মুক্তি পান ২০০১-এর নির্বাচনের কিছুদিন আগে।
২০০১ সালে দ্বিতীয় দফা ক্ষমতায় আসে বিএনপি। ক্ষমতায় এসে ২০০১ সালের ২৫ ডিসেম্বর ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করে। লিয়াকতকে ধরিয়ে দিতে ঘোষণা করা হয় এক লাখ টাকার পুরস্কার। এই ঘোষণার পর ফেরারি হন লিয়াকত। পাড়ি জমান ভারতে। সেখানে থাকাকালীন কলকাতা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। ২০০২ সালের ১৯ নভেম্বর কলকাতার আদালত তাঁকে জামিনে মুক্তি দেন। ফিরে আসেন ২০০৩ সালে, র্যাটের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার কিছুদিন আগে।
পাঁচ বছর জেল খেটে বের হওয়ার পর ২০০৮ সালের ২৫ নভেম্বর সাদা পোশাকের একদল লোক তাঁকে তুলে নিয়ে যান ধানমন্ডির শ্বশুরবাড়ি থেকে। লিয়াকতের স্ত্রী ফারহানা হোসেন আমাকে বলেছিলেন, ভোর পৌনে ৬টার দিকে সাদা পোশাকধারী ছয়-সাত জন বাসার নিরাপত্তাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে তাঁদের বাসায় আসেন। তাঁরা বাসায় ঢুকে লিয়াকত কোন কক্ষে থাকেন তা জানতে চান। এরপর লিয়াকতকে পেয়েই তাঁর মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে এবং হাত পিছমোড়া বেঁধে দ্রুত একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। লিয়াকতের পাঁচটি মোবাইল ফোনসেটও নিয়ে যান তাঁরা।
সেই যে গেলেন, আর ফিরে আসেননি লিয়াকত। কোথায় হারিয়ে গেলেন ‘ক্ষমতাধর’ লিয়াকত, কেউ জানে না।
আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

২০০৩ সালের ১ অক্টোবর, বুধবার। ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়ক থেকে ৩২ নম্বর ব্রিজ পর্যন্ত সর্বত্র অচেনা মানুষের আনাগোনা। কেউ ঝাড়ুদার, কেউ ট্যাক্সিচালক, কেউ বাদাম বিক্রেতা আবার কেউবা ভিক্ষুক। সবারই শিকারি-চোখ, শ্যেন দৃষ্টিতে অপেক্ষা করছেন।
১১ ডিসেম্বর ২০২১
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

২০০৩ সালের ১ অক্টোবর, বুধবার। ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়ক থেকে ৩২ নম্বর ব্রিজ পর্যন্ত সর্বত্র অচেনা মানুষের আনাগোনা। কেউ ঝাড়ুদার, কেউ ট্যাক্সিচালক, কেউ বাদাম বিক্রেতা আবার কেউবা ভিক্ষুক। সবারই শিকারি-চোখ, শ্যেন দৃষ্টিতে অপেক্ষা করছেন।
১১ ডিসেম্বর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

২০০৩ সালের ১ অক্টোবর, বুধবার। ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়ক থেকে ৩২ নম্বর ব্রিজ পর্যন্ত সর্বত্র অচেনা মানুষের আনাগোনা। কেউ ঝাড়ুদার, কেউ ট্যাক্সিচালক, কেউ বাদাম বিক্রেতা আবার কেউবা ভিক্ষুক। সবারই শিকারি-চোখ, শ্যেন দৃষ্টিতে অপেক্ষা করছেন।
১১ ডিসেম্বর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

২০০৩ সালের ১ অক্টোবর, বুধবার। ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়ক থেকে ৩২ নম্বর ব্রিজ পর্যন্ত সর্বত্র অচেনা মানুষের আনাগোনা। কেউ ঝাড়ুদার, কেউ ট্যাক্সিচালক, কেউ বাদাম বিক্রেতা আবার কেউবা ভিক্ষুক। সবারই শিকারি-চোখ, শ্যেন দৃষ্টিতে অপেক্ষা করছেন।
১১ ডিসেম্বর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে