কামরুল হাসান

ভারতের ওডিশা রাজ্যে বন বিভাগের একটি চাকরির জন্য ২৫ কিলোমিটার পথ হেঁটেছিলেন সঞ্জীব পুরোহিত। চাকরির শর্তই ছিল প্রার্থীকে তাঁর যোগ্যতা প্রমাণের জন্য এতটা পথ হেঁটে দেখাতে হবে। সঞ্জীব পুরোহিত সেই যোগ্যতা প্রমাণ করেছিলেন নিজের জীবন দিয়ে। হাঁটতে হাঁটতে ২৫ কিলোমিটার যেখানে শেষ হয়, সেখানে তিনি পড়ে মারা যান।
‘কবীর সুমন’ হিসেবে নাম বদলের আগে গায়ক সুমন চট্টোপাধ্যায় তাঁকে নিয়ে লিখেছিলেন ‘সঞ্জীব পুরোহিত হাঁটলেন চাকরি পাবেন এই ভরসায়...’। আর আমাদের রমিজউদ্দিন কত পথ হেঁটেছেন জানেন? ৪০০ কিলোমিটার! গিনেস বুকে নাম লেখানোর জন্য অনেকে হয়তো এর চেয়েও বেশি পথ হাঁটেন। কিন্তু রমিজউদ্দিন হেঁটেছেন ভিন দেশে, জীবন বাঁচাতে।
নাওয়া নেই, খাওয়া নেই, শোয়ার জায়গা নেই, শুধু হাঁটা আর হাঁটা—যেন সুকান্তের সেই রানারের চলার মতো। ২৬ দিন ধরে তিনি শুধু হেঁটেই চলেছেন। অচেনা কোনো দেশে একজন নিরন্ন মানুষ এত পথ হাঁটলেন কী করে? সতিই বড় বিস্ময়কর।
রমিজউদ্দিনের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল ২০০৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সদর দপ্তরে। তখন পুলিশের আইজি ছিলেন কিশোরগঞ্জ-২ এলাকার বর্তমান সাংসদ নূর মোহাম্মদ। তিনি একদিন ফোন করে আমাকে তাঁর অফিসে আসতে বললেন। বললেন, এলে পাচার হওয়া একজনের দুঃসহ জীবনের গল্প শোনা যাবে। যে লোকটি আফ্রিকার নাইজার, আলজেরিয়া, মরক্কো হয়ে জিব্রাল্টার প্রণালি পেরিয়ে স্পেনে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁর সঙ্গে এই অখ্যাত গ্রাম্য লোকটির যোগাযোগের কাহিনিটি বললেন তিনি। হাতে কোনো কাজ ছিল না, গেলাম পুলিশ সদর দপ্তরে।
আইজি নূর মোহাম্মদের অফিসে সাধারণত দর্শনার্থীর কোনো ভিড় থাকত না। পরিপাটি অফিসরুম সেদিনও ফাঁকা। যে লোকটির সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেবেন, তাঁকে বাইরে বসিয়ে রাখা হয়েছে। আমি যাওয়ার পর তাঁকে ডেকে আনা হলো। দেখি, খুবই সাধারণ একজন মানুষ, কথা বলেন সিলেটি উচ্চারণে। আইজিপির কাছে জানতে চাইলাম, তাঁকে পেলেন কোথায়? বললেন, ২০০৭ সালের ৫ থেকে ৮ নভেম্বর মরক্কোতে ছিলেন ইন্টারপোলের বার্ষিক সাধারণ সভায়। সেই সভায় তাঁর সঙ্গে ছিলেন র্যাবের তখনকার মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকার। তখন বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা রমিজের কথা তাঁকে বলেন। ওই কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, ৪০০ কিলোমিটার পথ হেঁটে রমিজ দূতাবাসে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। দূতাবাস তাঁর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে, কিন্তু দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে পারেনি। নূর মোহাম্মদ দেশে ফিরে রমিজউদ্দিনকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেন। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব মাইগ্রেশনের (আইওএম) সাহায্য নিয়ে ২০০৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর তাঁকে মরক্কো থেকে ঢাকায় আনা হয়।
নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘ওর সঙ্গে কথা বলে চোখের পানি আর ধরে রাখতে পারিনি। একটি মানুষ খালি পেটে হেঁটে ৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারেন, শুনে আমি বিস্মিত হয়ে যাই। প্রথম মনে হয়েছিল লোকটি বানিয়ে বানিয়ে বলছে। পরে তাঁর সব কথা শুনে বিশ্বাস হয়। কারণ, এত দীর্ঘ পথে রমিজ যা দেখেছেন, তার সবকিছুর নিখুঁত বিবরণ দিতে পারেন। রমিজের কথা না শুনলে বোঝা যাবে না কত ভয়ংকর কষ্ট লোকটি সহ্য করেছেন।’ বললেন, লোকটা পথে পথে ভিক্ষা করে নিজের খাবার জোগাড় করেছেন। মানুষের কাছে জানতে চেয়েছেন মরক্কোর রাজধানী কত দূরে, যেখানে বাংলাদেশের দূতাবাস আছে। কেউ দেখিয়ে দিয়েছে, কেউ সহযোগিতা করেছে, আবার কেউ তিরস্কার করেছে। পথে দু-একবার বাসে ওঠার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ভাড়ার টাকা না থাকায় বাসের লোকজন তাঁকে নামিয়ে দিয়েছেন।
আইজিপির সামনে রমিজ তাঁর বেঁচে ফেরার গল্প বলে যান। আর আমি মোবাইল ফোনে রেকর্ড করি। নিজের ভাষায় রমিজ বলেন, ‘আমার বাড়িত সিলটর বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা ইউনিয়নের বড় সালেশ্বর গ্রামত। পিতা মরহুম রওশন মোহাম্মদ। তিন পুউয়া (ছেলে) আর দুই পুরির (মেয়ে) বাপ আমি। দুবাইত কামলার কাম করতাম। আমার চাচা হউর (চাচাশ্বশুর শামসুর রহমান) আদম ব্যাপারী। দেশ থাকি মানুষ বিদেশ পাচার করইন। বিলাত দেড়-দুই লাখ টেখা বেতন পাওয়ার লোভ দেখাইন আমারে তাইন। বেশি রুজির লোভে পইরা বিলাত যাইবার লাগি পেরেশান অই যাই আমি।’
রমিজ বলেন, টানাটানির সংসার, নুন আনতে পান্তা ফুরায়। আশপাশের গ্রামের অনেকেই বিদেশে থাকেন। বিদেশ থেকে তাঁরা কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা পাঠান। সেই টাকা দিয়ে নতুন নতুন বাড়ি ওঠে। প্রতিবেশীদের দেখাদেখি তাঁরও লোভ হয় বিদেশে গিয়ে অনেক টাকা আয় করে নিজের ভাগ্য বদলের। স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন, কিন্তু সাহস পান না। এর মাঝে এক প্রভাবশালী প্রতিবেশী তাঁর বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা ঠুকে দেন। ভয় দেখান, মামলায় রমিজকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হবে। এলাকার লোকজনও তাঁকে ভয় দেখায়, বাকি জীবন জেলে কাটাতে হবে। লোকজনের কথা শুনে ভয়ে কুঁকড়ে যান রমিজ। গ্রাম থেকে কিছুদিন গা-ঢাকা দেন। কিন্তু কত দিন এভাবে থাকবেন? একপর্যায়ে বিদেশে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। রজিমের নিজের ভাই থাকেন দুবাই, তাঁদের কাছে ফোন করে ভিসা পাঠানোর অনুরোধ করেন। কিছুদিন পরে ভাইয়ের পাঠানো ভিসা আসে। সেই ভিসায় ২০০৪ সালে দুবাই চলে যান। সেখানে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। আয়ও মোটামুটি মন্দ নয়। দুবাইতে সবকিছু ভালোই যাচ্ছিল। তবু ইচ্ছে হলো ইউরোপে যাবেন। তাতে বেশি টাকা আয় করতে পারবেন। দুবাইয়ে পরিচয় হয় মানব পাচারকারী শামসুর রহমানের সঙ্গে। তাঁর কথায় প্রলুব্ধ হয়ে ২০০৫ সালের ২৮ মে স্পেনের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। যাত্রাপথ ছিল আফ্রিকার নাইজার, আলজেরিয়া, মরক্কো হয়ে জিব্রাল্টার প্রণালি দিয়ে স্পেন। পুরোটাই অবৈধ উপায়ে।
দুবাই থেকে তাঁরা প্রথমে যান পশ্চিম আফ্রিকার দেশে নাইজারে। সেখানে আমাদাও খালিহা নামের এক (নাইজেরিয়ান নাগরিক) লোক তাঁকে একটি হোটেলে নিয়ে যান, যেখানে আরও ১৩ জন বাংলাদেশি অপেক্ষা করছিলেন। দুই মাস সেখানে থাকার পর সেই দলের আটজনকে নিয়ে বাস রওনা দেয় আলজেরিয়ার উদ্দেশে। যাত্রা শুরুর আগেই আদম ব্যাপারীর লোকেরা তাঁর পাসপোর্ট কেড়ে নেন। বাস থেকে নেমে হাঁটা। ১৫ দিন ধরে মরুভূমির পথে হেঁটে চলতে থাকেন। যাওয়ার সময় সঙ্গে সামান্য যে খাবার ছিল, তা শেষ হয়ে যায়। খিদের জ্বালায় আর চলতে পারেন না। তাঁরা পৌঁছে যান আলজেরিয়া সীমান্তে।
এরপর তাদের তুলে দেওয়া হয় মরক্কোর এক আদম ব্যাপারীর হাতে। উজদা নামের একটি শহরে তাঁদের কিছুদিন রাখা হয়, সেখান থেকে নাদোর হয়ে টিটুয়ান। সেখানে তাঁদের রাখা হয় জঙ্গলে। কয়েক দিন পর সেখানে হামলা করে একদল কৃষ্ণাঙ্গ। তারা সব নিয়ে যায়। একেবারে নিঃস্ব হয়ে যান রমিজউদ্দিন। উপায় না দেখে দিনের আলোয় লোকালয়ে বেরিয়ে আসেন, মরক্কো পুলিশ তাঁদের আটক করে আলজেরিয়ায় ফেরত পাঠায়।
রমিজ জানালেন, এবার সবাই মিলে দেশে ফেরার চিন্তা করেন। কিন্তু কারও পকেটে পয়সা নেই। শুরু করেন হাঁটা। পেটেও দানাপানি নেই। হাঁটতে হাঁটতে একপর্যায়ে রাস্তায় শুয়ে পড়েন। লোকজন দরিদ্র ভেবে ভিক্ষা দিতে শুরু করে।
রজিম বললেন, ‘আমি আর আলমগীর হোসেন নামে এক বাংলাদেশি দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিই। আমরা আবার হাঁটতে শুরু করি। হাঁটতে হাঁটতে ২৬ দিনে ৪০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ২০০৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মরক্কোর রাজধানী রাবায় আসি। দূতাবাসের লোকেরা আমাদের কথা শুনে আশ্রয় দেন। দূতাবাসে আসার আগ পর্যন্ত আড়াই বছর কারও সঙ্গে যোগাযোগ পর্যন্ত করতে পারিনি। পরিবারের লোকজন ভেবেছিল আমি মরে গেছি।’
দেশে ফিরে সোজা গ্রামে চলে যান রমিজ। তাঁকে দেখেই ‘রমিজ আইছে...’ বলে গ্রামে রব পড়ে যায়। ছেলেমেয়েরা স্বপ্নের মতো বাবাকে দেখে। উৎসুক মানুষ ভিড় করেন তাঁর বাড়িতে। আর রমিজ, গল্পের মতো বলে যান সেই দুঃসহ কষ্টের কথা। গ্রামের মানুষ এত দিন রমিজকে নিখোঁজই ভাবতেন। আড়াই বছর খোঁজখবর না থাকা মানুষকে এর চেয়ে আর কী ভাবা যায়?
রমিজ বললেন, এখন তাঁর দিন কাটে গল্প করে। গ্রামের মানুষ সেই গল্পের মুগ্ধ শ্রোতা। রজিমের গল্প ছড়িয়ে পড়ে এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে। সেই গল্পের ডালপালা গজায়। রমিজ সেসব বলেন আর হাসেন, কিন্তু আমরা হাসতে পারি না। একটা অদ্ভুত কষ্ট এসে বুকের ভেতরে আটকে যায়, দেখি আইজিপির চোখেও পানি।
আরও পড়ুন:

ভারতের ওডিশা রাজ্যে বন বিভাগের একটি চাকরির জন্য ২৫ কিলোমিটার পথ হেঁটেছিলেন সঞ্জীব পুরোহিত। চাকরির শর্তই ছিল প্রার্থীকে তাঁর যোগ্যতা প্রমাণের জন্য এতটা পথ হেঁটে দেখাতে হবে। সঞ্জীব পুরোহিত সেই যোগ্যতা প্রমাণ করেছিলেন নিজের জীবন দিয়ে। হাঁটতে হাঁটতে ২৫ কিলোমিটার যেখানে শেষ হয়, সেখানে তিনি পড়ে মারা যান।
‘কবীর সুমন’ হিসেবে নাম বদলের আগে গায়ক সুমন চট্টোপাধ্যায় তাঁকে নিয়ে লিখেছিলেন ‘সঞ্জীব পুরোহিত হাঁটলেন চাকরি পাবেন এই ভরসায়...’। আর আমাদের রমিজউদ্দিন কত পথ হেঁটেছেন জানেন? ৪০০ কিলোমিটার! গিনেস বুকে নাম লেখানোর জন্য অনেকে হয়তো এর চেয়েও বেশি পথ হাঁটেন। কিন্তু রমিজউদ্দিন হেঁটেছেন ভিন দেশে, জীবন বাঁচাতে।
নাওয়া নেই, খাওয়া নেই, শোয়ার জায়গা নেই, শুধু হাঁটা আর হাঁটা—যেন সুকান্তের সেই রানারের চলার মতো। ২৬ দিন ধরে তিনি শুধু হেঁটেই চলেছেন। অচেনা কোনো দেশে একজন নিরন্ন মানুষ এত পথ হাঁটলেন কী করে? সতিই বড় বিস্ময়কর।
রমিজউদ্দিনের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল ২০০৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সদর দপ্তরে। তখন পুলিশের আইজি ছিলেন কিশোরগঞ্জ-২ এলাকার বর্তমান সাংসদ নূর মোহাম্মদ। তিনি একদিন ফোন করে আমাকে তাঁর অফিসে আসতে বললেন। বললেন, এলে পাচার হওয়া একজনের দুঃসহ জীবনের গল্প শোনা যাবে। যে লোকটি আফ্রিকার নাইজার, আলজেরিয়া, মরক্কো হয়ে জিব্রাল্টার প্রণালি পেরিয়ে স্পেনে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁর সঙ্গে এই অখ্যাত গ্রাম্য লোকটির যোগাযোগের কাহিনিটি বললেন তিনি। হাতে কোনো কাজ ছিল না, গেলাম পুলিশ সদর দপ্তরে।
আইজি নূর মোহাম্মদের অফিসে সাধারণত দর্শনার্থীর কোনো ভিড় থাকত না। পরিপাটি অফিসরুম সেদিনও ফাঁকা। যে লোকটির সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেবেন, তাঁকে বাইরে বসিয়ে রাখা হয়েছে। আমি যাওয়ার পর তাঁকে ডেকে আনা হলো। দেখি, খুবই সাধারণ একজন মানুষ, কথা বলেন সিলেটি উচ্চারণে। আইজিপির কাছে জানতে চাইলাম, তাঁকে পেলেন কোথায়? বললেন, ২০০৭ সালের ৫ থেকে ৮ নভেম্বর মরক্কোতে ছিলেন ইন্টারপোলের বার্ষিক সাধারণ সভায়। সেই সভায় তাঁর সঙ্গে ছিলেন র্যাবের তখনকার মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকার। তখন বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা রমিজের কথা তাঁকে বলেন। ওই কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, ৪০০ কিলোমিটার পথ হেঁটে রমিজ দূতাবাসে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। দূতাবাস তাঁর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে, কিন্তু দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে পারেনি। নূর মোহাম্মদ দেশে ফিরে রমিজউদ্দিনকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেন। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব মাইগ্রেশনের (আইওএম) সাহায্য নিয়ে ২০০৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর তাঁকে মরক্কো থেকে ঢাকায় আনা হয়।
নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘ওর সঙ্গে কথা বলে চোখের পানি আর ধরে রাখতে পারিনি। একটি মানুষ খালি পেটে হেঁটে ৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারেন, শুনে আমি বিস্মিত হয়ে যাই। প্রথম মনে হয়েছিল লোকটি বানিয়ে বানিয়ে বলছে। পরে তাঁর সব কথা শুনে বিশ্বাস হয়। কারণ, এত দীর্ঘ পথে রমিজ যা দেখেছেন, তার সবকিছুর নিখুঁত বিবরণ দিতে পারেন। রমিজের কথা না শুনলে বোঝা যাবে না কত ভয়ংকর কষ্ট লোকটি সহ্য করেছেন।’ বললেন, লোকটা পথে পথে ভিক্ষা করে নিজের খাবার জোগাড় করেছেন। মানুষের কাছে জানতে চেয়েছেন মরক্কোর রাজধানী কত দূরে, যেখানে বাংলাদেশের দূতাবাস আছে। কেউ দেখিয়ে দিয়েছে, কেউ সহযোগিতা করেছে, আবার কেউ তিরস্কার করেছে। পথে দু-একবার বাসে ওঠার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ভাড়ার টাকা না থাকায় বাসের লোকজন তাঁকে নামিয়ে দিয়েছেন।
আইজিপির সামনে রমিজ তাঁর বেঁচে ফেরার গল্প বলে যান। আর আমি মোবাইল ফোনে রেকর্ড করি। নিজের ভাষায় রমিজ বলেন, ‘আমার বাড়িত সিলটর বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা ইউনিয়নের বড় সালেশ্বর গ্রামত। পিতা মরহুম রওশন মোহাম্মদ। তিন পুউয়া (ছেলে) আর দুই পুরির (মেয়ে) বাপ আমি। দুবাইত কামলার কাম করতাম। আমার চাচা হউর (চাচাশ্বশুর শামসুর রহমান) আদম ব্যাপারী। দেশ থাকি মানুষ বিদেশ পাচার করইন। বিলাত দেড়-দুই লাখ টেখা বেতন পাওয়ার লোভ দেখাইন আমারে তাইন। বেশি রুজির লোভে পইরা বিলাত যাইবার লাগি পেরেশান অই যাই আমি।’
রমিজ বলেন, টানাটানির সংসার, নুন আনতে পান্তা ফুরায়। আশপাশের গ্রামের অনেকেই বিদেশে থাকেন। বিদেশ থেকে তাঁরা কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা পাঠান। সেই টাকা দিয়ে নতুন নতুন বাড়ি ওঠে। প্রতিবেশীদের দেখাদেখি তাঁরও লোভ হয় বিদেশে গিয়ে অনেক টাকা আয় করে নিজের ভাগ্য বদলের। স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন, কিন্তু সাহস পান না। এর মাঝে এক প্রভাবশালী প্রতিবেশী তাঁর বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা ঠুকে দেন। ভয় দেখান, মামলায় রমিজকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হবে। এলাকার লোকজনও তাঁকে ভয় দেখায়, বাকি জীবন জেলে কাটাতে হবে। লোকজনের কথা শুনে ভয়ে কুঁকড়ে যান রমিজ। গ্রাম থেকে কিছুদিন গা-ঢাকা দেন। কিন্তু কত দিন এভাবে থাকবেন? একপর্যায়ে বিদেশে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। রজিমের নিজের ভাই থাকেন দুবাই, তাঁদের কাছে ফোন করে ভিসা পাঠানোর অনুরোধ করেন। কিছুদিন পরে ভাইয়ের পাঠানো ভিসা আসে। সেই ভিসায় ২০০৪ সালে দুবাই চলে যান। সেখানে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। আয়ও মোটামুটি মন্দ নয়। দুবাইতে সবকিছু ভালোই যাচ্ছিল। তবু ইচ্ছে হলো ইউরোপে যাবেন। তাতে বেশি টাকা আয় করতে পারবেন। দুবাইয়ে পরিচয় হয় মানব পাচারকারী শামসুর রহমানের সঙ্গে। তাঁর কথায় প্রলুব্ধ হয়ে ২০০৫ সালের ২৮ মে স্পেনের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। যাত্রাপথ ছিল আফ্রিকার নাইজার, আলজেরিয়া, মরক্কো হয়ে জিব্রাল্টার প্রণালি দিয়ে স্পেন। পুরোটাই অবৈধ উপায়ে।
দুবাই থেকে তাঁরা প্রথমে যান পশ্চিম আফ্রিকার দেশে নাইজারে। সেখানে আমাদাও খালিহা নামের এক (নাইজেরিয়ান নাগরিক) লোক তাঁকে একটি হোটেলে নিয়ে যান, যেখানে আরও ১৩ জন বাংলাদেশি অপেক্ষা করছিলেন। দুই মাস সেখানে থাকার পর সেই দলের আটজনকে নিয়ে বাস রওনা দেয় আলজেরিয়ার উদ্দেশে। যাত্রা শুরুর আগেই আদম ব্যাপারীর লোকেরা তাঁর পাসপোর্ট কেড়ে নেন। বাস থেকে নেমে হাঁটা। ১৫ দিন ধরে মরুভূমির পথে হেঁটে চলতে থাকেন। যাওয়ার সময় সঙ্গে সামান্য যে খাবার ছিল, তা শেষ হয়ে যায়। খিদের জ্বালায় আর চলতে পারেন না। তাঁরা পৌঁছে যান আলজেরিয়া সীমান্তে।
এরপর তাদের তুলে দেওয়া হয় মরক্কোর এক আদম ব্যাপারীর হাতে। উজদা নামের একটি শহরে তাঁদের কিছুদিন রাখা হয়, সেখান থেকে নাদোর হয়ে টিটুয়ান। সেখানে তাঁদের রাখা হয় জঙ্গলে। কয়েক দিন পর সেখানে হামলা করে একদল কৃষ্ণাঙ্গ। তারা সব নিয়ে যায়। একেবারে নিঃস্ব হয়ে যান রমিজউদ্দিন। উপায় না দেখে দিনের আলোয় লোকালয়ে বেরিয়ে আসেন, মরক্কো পুলিশ তাঁদের আটক করে আলজেরিয়ায় ফেরত পাঠায়।
রমিজ জানালেন, এবার সবাই মিলে দেশে ফেরার চিন্তা করেন। কিন্তু কারও পকেটে পয়সা নেই। শুরু করেন হাঁটা। পেটেও দানাপানি নেই। হাঁটতে হাঁটতে একপর্যায়ে রাস্তায় শুয়ে পড়েন। লোকজন দরিদ্র ভেবে ভিক্ষা দিতে শুরু করে।
রজিম বললেন, ‘আমি আর আলমগীর হোসেন নামে এক বাংলাদেশি দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিই। আমরা আবার হাঁটতে শুরু করি। হাঁটতে হাঁটতে ২৬ দিনে ৪০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ২০০৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মরক্কোর রাজধানী রাবায় আসি। দূতাবাসের লোকেরা আমাদের কথা শুনে আশ্রয় দেন। দূতাবাসে আসার আগ পর্যন্ত আড়াই বছর কারও সঙ্গে যোগাযোগ পর্যন্ত করতে পারিনি। পরিবারের লোকজন ভেবেছিল আমি মরে গেছি।’
দেশে ফিরে সোজা গ্রামে চলে যান রমিজ। তাঁকে দেখেই ‘রমিজ আইছে...’ বলে গ্রামে রব পড়ে যায়। ছেলেমেয়েরা স্বপ্নের মতো বাবাকে দেখে। উৎসুক মানুষ ভিড় করেন তাঁর বাড়িতে। আর রমিজ, গল্পের মতো বলে যান সেই দুঃসহ কষ্টের কথা। গ্রামের মানুষ এত দিন রমিজকে নিখোঁজই ভাবতেন। আড়াই বছর খোঁজখবর না থাকা মানুষকে এর চেয়ে আর কী ভাবা যায়?
রমিজ বললেন, এখন তাঁর দিন কাটে গল্প করে। গ্রামের মানুষ সেই গল্পের মুগ্ধ শ্রোতা। রজিমের গল্প ছড়িয়ে পড়ে এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে। সেই গল্পের ডালপালা গজায়। রমিজ সেসব বলেন আর হাসেন, কিন্তু আমরা হাসতে পারি না। একটা অদ্ভুত কষ্ট এসে বুকের ভেতরে আটকে যায়, দেখি আইজিপির চোখেও পানি।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

ভারতের ওডিশা রাজ্যে বন বিভাগের একটি চাকরির জন্য ২৫ কিলোমিটার পথ হেঁটেছিলেন সঞ্জীব পুরোহিত। চাকরির শর্তই ছিল প্রার্থীকে তাঁর যোগ্যতা প্রমাণের জন্য এতটা পথ হেঁটে দেখাতে হবে। সঞ্জীব পুরোহিত সেই যোগ্যতা প্রমাণ করেছিলেন নিজের জীবন দিয়ে। হাঁটতে হাঁটতে ২৫ কিলোমিটার যেখানে শেষ হয়, সেখানে তিনি পড়ে মারা যান।
‘কবীর সুমন’ হিসেবে নাম বদলের আগে গায়ক সুমন চট্টোপাধ্যায় তাঁকে নিয়ে লিখেছিলেন ‘সঞ্জীব পুরোহিত হাঁটলেন চাকরি পাবেন এই ভরসায়...’। আর আমাদের রমিজউদ্দিন কত পথ হেঁটেছেন জানেন? ৪০০ কিলোমিটার! গিনেস বুকে নাম লেখানোর জন্য অনেকে হয়তো এর চেয়েও বেশি পথ হাঁটেন। কিন্তু রমিজউদ্দিন হেঁটেছেন ভিন দেশে, জীবন বাঁচাতে।
নাওয়া নেই, খাওয়া নেই, শোয়ার জায়গা নেই, শুধু হাঁটা আর হাঁটা—যেন সুকান্তের সেই রানারের চলার মতো। ২৬ দিন ধরে তিনি শুধু হেঁটেই চলেছেন। অচেনা কোনো দেশে একজন নিরন্ন মানুষ এত পথ হাঁটলেন কী করে? সতিই বড় বিস্ময়কর।
রমিজউদ্দিনের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল ২০০৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সদর দপ্তরে। তখন পুলিশের আইজি ছিলেন কিশোরগঞ্জ-২ এলাকার বর্তমান সাংসদ নূর মোহাম্মদ। তিনি একদিন ফোন করে আমাকে তাঁর অফিসে আসতে বললেন। বললেন, এলে পাচার হওয়া একজনের দুঃসহ জীবনের গল্প শোনা যাবে। যে লোকটি আফ্রিকার নাইজার, আলজেরিয়া, মরক্কো হয়ে জিব্রাল্টার প্রণালি পেরিয়ে স্পেনে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁর সঙ্গে এই অখ্যাত গ্রাম্য লোকটির যোগাযোগের কাহিনিটি বললেন তিনি। হাতে কোনো কাজ ছিল না, গেলাম পুলিশ সদর দপ্তরে।
আইজি নূর মোহাম্মদের অফিসে সাধারণত দর্শনার্থীর কোনো ভিড় থাকত না। পরিপাটি অফিসরুম সেদিনও ফাঁকা। যে লোকটির সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেবেন, তাঁকে বাইরে বসিয়ে রাখা হয়েছে। আমি যাওয়ার পর তাঁকে ডেকে আনা হলো। দেখি, খুবই সাধারণ একজন মানুষ, কথা বলেন সিলেটি উচ্চারণে। আইজিপির কাছে জানতে চাইলাম, তাঁকে পেলেন কোথায়? বললেন, ২০০৭ সালের ৫ থেকে ৮ নভেম্বর মরক্কোতে ছিলেন ইন্টারপোলের বার্ষিক সাধারণ সভায়। সেই সভায় তাঁর সঙ্গে ছিলেন র্যাবের তখনকার মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকার। তখন বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা রমিজের কথা তাঁকে বলেন। ওই কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, ৪০০ কিলোমিটার পথ হেঁটে রমিজ দূতাবাসে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। দূতাবাস তাঁর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে, কিন্তু দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে পারেনি। নূর মোহাম্মদ দেশে ফিরে রমিজউদ্দিনকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেন। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব মাইগ্রেশনের (আইওএম) সাহায্য নিয়ে ২০০৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর তাঁকে মরক্কো থেকে ঢাকায় আনা হয়।
নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘ওর সঙ্গে কথা বলে চোখের পানি আর ধরে রাখতে পারিনি। একটি মানুষ খালি পেটে হেঁটে ৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারেন, শুনে আমি বিস্মিত হয়ে যাই। প্রথম মনে হয়েছিল লোকটি বানিয়ে বানিয়ে বলছে। পরে তাঁর সব কথা শুনে বিশ্বাস হয়। কারণ, এত দীর্ঘ পথে রমিজ যা দেখেছেন, তার সবকিছুর নিখুঁত বিবরণ দিতে পারেন। রমিজের কথা না শুনলে বোঝা যাবে না কত ভয়ংকর কষ্ট লোকটি সহ্য করেছেন।’ বললেন, লোকটা পথে পথে ভিক্ষা করে নিজের খাবার জোগাড় করেছেন। মানুষের কাছে জানতে চেয়েছেন মরক্কোর রাজধানী কত দূরে, যেখানে বাংলাদেশের দূতাবাস আছে। কেউ দেখিয়ে দিয়েছে, কেউ সহযোগিতা করেছে, আবার কেউ তিরস্কার করেছে। পথে দু-একবার বাসে ওঠার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ভাড়ার টাকা না থাকায় বাসের লোকজন তাঁকে নামিয়ে দিয়েছেন।
আইজিপির সামনে রমিজ তাঁর বেঁচে ফেরার গল্প বলে যান। আর আমি মোবাইল ফোনে রেকর্ড করি। নিজের ভাষায় রমিজ বলেন, ‘আমার বাড়িত সিলটর বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা ইউনিয়নের বড় সালেশ্বর গ্রামত। পিতা মরহুম রওশন মোহাম্মদ। তিন পুউয়া (ছেলে) আর দুই পুরির (মেয়ে) বাপ আমি। দুবাইত কামলার কাম করতাম। আমার চাচা হউর (চাচাশ্বশুর শামসুর রহমান) আদম ব্যাপারী। দেশ থাকি মানুষ বিদেশ পাচার করইন। বিলাত দেড়-দুই লাখ টেখা বেতন পাওয়ার লোভ দেখাইন আমারে তাইন। বেশি রুজির লোভে পইরা বিলাত যাইবার লাগি পেরেশান অই যাই আমি।’
রমিজ বলেন, টানাটানির সংসার, নুন আনতে পান্তা ফুরায়। আশপাশের গ্রামের অনেকেই বিদেশে থাকেন। বিদেশ থেকে তাঁরা কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা পাঠান। সেই টাকা দিয়ে নতুন নতুন বাড়ি ওঠে। প্রতিবেশীদের দেখাদেখি তাঁরও লোভ হয় বিদেশে গিয়ে অনেক টাকা আয় করে নিজের ভাগ্য বদলের। স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন, কিন্তু সাহস পান না। এর মাঝে এক প্রভাবশালী প্রতিবেশী তাঁর বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা ঠুকে দেন। ভয় দেখান, মামলায় রমিজকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হবে। এলাকার লোকজনও তাঁকে ভয় দেখায়, বাকি জীবন জেলে কাটাতে হবে। লোকজনের কথা শুনে ভয়ে কুঁকড়ে যান রমিজ। গ্রাম থেকে কিছুদিন গা-ঢাকা দেন। কিন্তু কত দিন এভাবে থাকবেন? একপর্যায়ে বিদেশে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। রজিমের নিজের ভাই থাকেন দুবাই, তাঁদের কাছে ফোন করে ভিসা পাঠানোর অনুরোধ করেন। কিছুদিন পরে ভাইয়ের পাঠানো ভিসা আসে। সেই ভিসায় ২০০৪ সালে দুবাই চলে যান। সেখানে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। আয়ও মোটামুটি মন্দ নয়। দুবাইতে সবকিছু ভালোই যাচ্ছিল। তবু ইচ্ছে হলো ইউরোপে যাবেন। তাতে বেশি টাকা আয় করতে পারবেন। দুবাইয়ে পরিচয় হয় মানব পাচারকারী শামসুর রহমানের সঙ্গে। তাঁর কথায় প্রলুব্ধ হয়ে ২০০৫ সালের ২৮ মে স্পেনের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। যাত্রাপথ ছিল আফ্রিকার নাইজার, আলজেরিয়া, মরক্কো হয়ে জিব্রাল্টার প্রণালি দিয়ে স্পেন। পুরোটাই অবৈধ উপায়ে।
দুবাই থেকে তাঁরা প্রথমে যান পশ্চিম আফ্রিকার দেশে নাইজারে। সেখানে আমাদাও খালিহা নামের এক (নাইজেরিয়ান নাগরিক) লোক তাঁকে একটি হোটেলে নিয়ে যান, যেখানে আরও ১৩ জন বাংলাদেশি অপেক্ষা করছিলেন। দুই মাস সেখানে থাকার পর সেই দলের আটজনকে নিয়ে বাস রওনা দেয় আলজেরিয়ার উদ্দেশে। যাত্রা শুরুর আগেই আদম ব্যাপারীর লোকেরা তাঁর পাসপোর্ট কেড়ে নেন। বাস থেকে নেমে হাঁটা। ১৫ দিন ধরে মরুভূমির পথে হেঁটে চলতে থাকেন। যাওয়ার সময় সঙ্গে সামান্য যে খাবার ছিল, তা শেষ হয়ে যায়। খিদের জ্বালায় আর চলতে পারেন না। তাঁরা পৌঁছে যান আলজেরিয়া সীমান্তে।
এরপর তাদের তুলে দেওয়া হয় মরক্কোর এক আদম ব্যাপারীর হাতে। উজদা নামের একটি শহরে তাঁদের কিছুদিন রাখা হয়, সেখান থেকে নাদোর হয়ে টিটুয়ান। সেখানে তাঁদের রাখা হয় জঙ্গলে। কয়েক দিন পর সেখানে হামলা করে একদল কৃষ্ণাঙ্গ। তারা সব নিয়ে যায়। একেবারে নিঃস্ব হয়ে যান রমিজউদ্দিন। উপায় না দেখে দিনের আলোয় লোকালয়ে বেরিয়ে আসেন, মরক্কো পুলিশ তাঁদের আটক করে আলজেরিয়ায় ফেরত পাঠায়।
রমিজ জানালেন, এবার সবাই মিলে দেশে ফেরার চিন্তা করেন। কিন্তু কারও পকেটে পয়সা নেই। শুরু করেন হাঁটা। পেটেও দানাপানি নেই। হাঁটতে হাঁটতে একপর্যায়ে রাস্তায় শুয়ে পড়েন। লোকজন দরিদ্র ভেবে ভিক্ষা দিতে শুরু করে।
রজিম বললেন, ‘আমি আর আলমগীর হোসেন নামে এক বাংলাদেশি দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিই। আমরা আবার হাঁটতে শুরু করি। হাঁটতে হাঁটতে ২৬ দিনে ৪০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ২০০৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মরক্কোর রাজধানী রাবায় আসি। দূতাবাসের লোকেরা আমাদের কথা শুনে আশ্রয় দেন। দূতাবাসে আসার আগ পর্যন্ত আড়াই বছর কারও সঙ্গে যোগাযোগ পর্যন্ত করতে পারিনি। পরিবারের লোকজন ভেবেছিল আমি মরে গেছি।’
দেশে ফিরে সোজা গ্রামে চলে যান রমিজ। তাঁকে দেখেই ‘রমিজ আইছে...’ বলে গ্রামে রব পড়ে যায়। ছেলেমেয়েরা স্বপ্নের মতো বাবাকে দেখে। উৎসুক মানুষ ভিড় করেন তাঁর বাড়িতে। আর রমিজ, গল্পের মতো বলে যান সেই দুঃসহ কষ্টের কথা। গ্রামের মানুষ এত দিন রমিজকে নিখোঁজই ভাবতেন। আড়াই বছর খোঁজখবর না থাকা মানুষকে এর চেয়ে আর কী ভাবা যায়?
রমিজ বললেন, এখন তাঁর দিন কাটে গল্প করে। গ্রামের মানুষ সেই গল্পের মুগ্ধ শ্রোতা। রজিমের গল্প ছড়িয়ে পড়ে এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে। সেই গল্পের ডালপালা গজায়। রমিজ সেসব বলেন আর হাসেন, কিন্তু আমরা হাসতে পারি না। একটা অদ্ভুত কষ্ট এসে বুকের ভেতরে আটকে যায়, দেখি আইজিপির চোখেও পানি।
আরও পড়ুন:

ভারতের ওডিশা রাজ্যে বন বিভাগের একটি চাকরির জন্য ২৫ কিলোমিটার পথ হেঁটেছিলেন সঞ্জীব পুরোহিত। চাকরির শর্তই ছিল প্রার্থীকে তাঁর যোগ্যতা প্রমাণের জন্য এতটা পথ হেঁটে দেখাতে হবে। সঞ্জীব পুরোহিত সেই যোগ্যতা প্রমাণ করেছিলেন নিজের জীবন দিয়ে। হাঁটতে হাঁটতে ২৫ কিলোমিটার যেখানে শেষ হয়, সেখানে তিনি পড়ে মারা যান।
‘কবীর সুমন’ হিসেবে নাম বদলের আগে গায়ক সুমন চট্টোপাধ্যায় তাঁকে নিয়ে লিখেছিলেন ‘সঞ্জীব পুরোহিত হাঁটলেন চাকরি পাবেন এই ভরসায়...’। আর আমাদের রমিজউদ্দিন কত পথ হেঁটেছেন জানেন? ৪০০ কিলোমিটার! গিনেস বুকে নাম লেখানোর জন্য অনেকে হয়তো এর চেয়েও বেশি পথ হাঁটেন। কিন্তু রমিজউদ্দিন হেঁটেছেন ভিন দেশে, জীবন বাঁচাতে।
নাওয়া নেই, খাওয়া নেই, শোয়ার জায়গা নেই, শুধু হাঁটা আর হাঁটা—যেন সুকান্তের সেই রানারের চলার মতো। ২৬ দিন ধরে তিনি শুধু হেঁটেই চলেছেন। অচেনা কোনো দেশে একজন নিরন্ন মানুষ এত পথ হাঁটলেন কী করে? সতিই বড় বিস্ময়কর।
রমিজউদ্দিনের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল ২০০৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সদর দপ্তরে। তখন পুলিশের আইজি ছিলেন কিশোরগঞ্জ-২ এলাকার বর্তমান সাংসদ নূর মোহাম্মদ। তিনি একদিন ফোন করে আমাকে তাঁর অফিসে আসতে বললেন। বললেন, এলে পাচার হওয়া একজনের দুঃসহ জীবনের গল্প শোনা যাবে। যে লোকটি আফ্রিকার নাইজার, আলজেরিয়া, মরক্কো হয়ে জিব্রাল্টার প্রণালি পেরিয়ে স্পেনে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁর সঙ্গে এই অখ্যাত গ্রাম্য লোকটির যোগাযোগের কাহিনিটি বললেন তিনি। হাতে কোনো কাজ ছিল না, গেলাম পুলিশ সদর দপ্তরে।
আইজি নূর মোহাম্মদের অফিসে সাধারণত দর্শনার্থীর কোনো ভিড় থাকত না। পরিপাটি অফিসরুম সেদিনও ফাঁকা। যে লোকটির সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেবেন, তাঁকে বাইরে বসিয়ে রাখা হয়েছে। আমি যাওয়ার পর তাঁকে ডেকে আনা হলো। দেখি, খুবই সাধারণ একজন মানুষ, কথা বলেন সিলেটি উচ্চারণে। আইজিপির কাছে জানতে চাইলাম, তাঁকে পেলেন কোথায়? বললেন, ২০০৭ সালের ৫ থেকে ৮ নভেম্বর মরক্কোতে ছিলেন ইন্টারপোলের বার্ষিক সাধারণ সভায়। সেই সভায় তাঁর সঙ্গে ছিলেন র্যাবের তখনকার মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকার। তখন বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা রমিজের কথা তাঁকে বলেন। ওই কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, ৪০০ কিলোমিটার পথ হেঁটে রমিজ দূতাবাসে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। দূতাবাস তাঁর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে, কিন্তু দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে পারেনি। নূর মোহাম্মদ দেশে ফিরে রমিজউদ্দিনকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেন। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব মাইগ্রেশনের (আইওএম) সাহায্য নিয়ে ২০০৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর তাঁকে মরক্কো থেকে ঢাকায় আনা হয়।
নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘ওর সঙ্গে কথা বলে চোখের পানি আর ধরে রাখতে পারিনি। একটি মানুষ খালি পেটে হেঁটে ৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারেন, শুনে আমি বিস্মিত হয়ে যাই। প্রথম মনে হয়েছিল লোকটি বানিয়ে বানিয়ে বলছে। পরে তাঁর সব কথা শুনে বিশ্বাস হয়। কারণ, এত দীর্ঘ পথে রমিজ যা দেখেছেন, তার সবকিছুর নিখুঁত বিবরণ দিতে পারেন। রমিজের কথা না শুনলে বোঝা যাবে না কত ভয়ংকর কষ্ট লোকটি সহ্য করেছেন।’ বললেন, লোকটা পথে পথে ভিক্ষা করে নিজের খাবার জোগাড় করেছেন। মানুষের কাছে জানতে চেয়েছেন মরক্কোর রাজধানী কত দূরে, যেখানে বাংলাদেশের দূতাবাস আছে। কেউ দেখিয়ে দিয়েছে, কেউ সহযোগিতা করেছে, আবার কেউ তিরস্কার করেছে। পথে দু-একবার বাসে ওঠার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ভাড়ার টাকা না থাকায় বাসের লোকজন তাঁকে নামিয়ে দিয়েছেন।
আইজিপির সামনে রমিজ তাঁর বেঁচে ফেরার গল্প বলে যান। আর আমি মোবাইল ফোনে রেকর্ড করি। নিজের ভাষায় রমিজ বলেন, ‘আমার বাড়িত সিলটর বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা ইউনিয়নের বড় সালেশ্বর গ্রামত। পিতা মরহুম রওশন মোহাম্মদ। তিন পুউয়া (ছেলে) আর দুই পুরির (মেয়ে) বাপ আমি। দুবাইত কামলার কাম করতাম। আমার চাচা হউর (চাচাশ্বশুর শামসুর রহমান) আদম ব্যাপারী। দেশ থাকি মানুষ বিদেশ পাচার করইন। বিলাত দেড়-দুই লাখ টেখা বেতন পাওয়ার লোভ দেখাইন আমারে তাইন। বেশি রুজির লোভে পইরা বিলাত যাইবার লাগি পেরেশান অই যাই আমি।’
রমিজ বলেন, টানাটানির সংসার, নুন আনতে পান্তা ফুরায়। আশপাশের গ্রামের অনেকেই বিদেশে থাকেন। বিদেশ থেকে তাঁরা কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা পাঠান। সেই টাকা দিয়ে নতুন নতুন বাড়ি ওঠে। প্রতিবেশীদের দেখাদেখি তাঁরও লোভ হয় বিদেশে গিয়ে অনেক টাকা আয় করে নিজের ভাগ্য বদলের। স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন, কিন্তু সাহস পান না। এর মাঝে এক প্রভাবশালী প্রতিবেশী তাঁর বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা ঠুকে দেন। ভয় দেখান, মামলায় রমিজকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হবে। এলাকার লোকজনও তাঁকে ভয় দেখায়, বাকি জীবন জেলে কাটাতে হবে। লোকজনের কথা শুনে ভয়ে কুঁকড়ে যান রমিজ। গ্রাম থেকে কিছুদিন গা-ঢাকা দেন। কিন্তু কত দিন এভাবে থাকবেন? একপর্যায়ে বিদেশে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। রজিমের নিজের ভাই থাকেন দুবাই, তাঁদের কাছে ফোন করে ভিসা পাঠানোর অনুরোধ করেন। কিছুদিন পরে ভাইয়ের পাঠানো ভিসা আসে। সেই ভিসায় ২০০৪ সালে দুবাই চলে যান। সেখানে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। আয়ও মোটামুটি মন্দ নয়। দুবাইতে সবকিছু ভালোই যাচ্ছিল। তবু ইচ্ছে হলো ইউরোপে যাবেন। তাতে বেশি টাকা আয় করতে পারবেন। দুবাইয়ে পরিচয় হয় মানব পাচারকারী শামসুর রহমানের সঙ্গে। তাঁর কথায় প্রলুব্ধ হয়ে ২০০৫ সালের ২৮ মে স্পেনের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। যাত্রাপথ ছিল আফ্রিকার নাইজার, আলজেরিয়া, মরক্কো হয়ে জিব্রাল্টার প্রণালি দিয়ে স্পেন। পুরোটাই অবৈধ উপায়ে।
দুবাই থেকে তাঁরা প্রথমে যান পশ্চিম আফ্রিকার দেশে নাইজারে। সেখানে আমাদাও খালিহা নামের এক (নাইজেরিয়ান নাগরিক) লোক তাঁকে একটি হোটেলে নিয়ে যান, যেখানে আরও ১৩ জন বাংলাদেশি অপেক্ষা করছিলেন। দুই মাস সেখানে থাকার পর সেই দলের আটজনকে নিয়ে বাস রওনা দেয় আলজেরিয়ার উদ্দেশে। যাত্রা শুরুর আগেই আদম ব্যাপারীর লোকেরা তাঁর পাসপোর্ট কেড়ে নেন। বাস থেকে নেমে হাঁটা। ১৫ দিন ধরে মরুভূমির পথে হেঁটে চলতে থাকেন। যাওয়ার সময় সঙ্গে সামান্য যে খাবার ছিল, তা শেষ হয়ে যায়। খিদের জ্বালায় আর চলতে পারেন না। তাঁরা পৌঁছে যান আলজেরিয়া সীমান্তে।
এরপর তাদের তুলে দেওয়া হয় মরক্কোর এক আদম ব্যাপারীর হাতে। উজদা নামের একটি শহরে তাঁদের কিছুদিন রাখা হয়, সেখান থেকে নাদোর হয়ে টিটুয়ান। সেখানে তাঁদের রাখা হয় জঙ্গলে। কয়েক দিন পর সেখানে হামলা করে একদল কৃষ্ণাঙ্গ। তারা সব নিয়ে যায়। একেবারে নিঃস্ব হয়ে যান রমিজউদ্দিন। উপায় না দেখে দিনের আলোয় লোকালয়ে বেরিয়ে আসেন, মরক্কো পুলিশ তাঁদের আটক করে আলজেরিয়ায় ফেরত পাঠায়।
রমিজ জানালেন, এবার সবাই মিলে দেশে ফেরার চিন্তা করেন। কিন্তু কারও পকেটে পয়সা নেই। শুরু করেন হাঁটা। পেটেও দানাপানি নেই। হাঁটতে হাঁটতে একপর্যায়ে রাস্তায় শুয়ে পড়েন। লোকজন দরিদ্র ভেবে ভিক্ষা দিতে শুরু করে।
রজিম বললেন, ‘আমি আর আলমগীর হোসেন নামে এক বাংলাদেশি দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিই। আমরা আবার হাঁটতে শুরু করি। হাঁটতে হাঁটতে ২৬ দিনে ৪০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ২০০৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মরক্কোর রাজধানী রাবায় আসি। দূতাবাসের লোকেরা আমাদের কথা শুনে আশ্রয় দেন। দূতাবাসে আসার আগ পর্যন্ত আড়াই বছর কারও সঙ্গে যোগাযোগ পর্যন্ত করতে পারিনি। পরিবারের লোকজন ভেবেছিল আমি মরে গেছি।’
দেশে ফিরে সোজা গ্রামে চলে যান রমিজ। তাঁকে দেখেই ‘রমিজ আইছে...’ বলে গ্রামে রব পড়ে যায়। ছেলেমেয়েরা স্বপ্নের মতো বাবাকে দেখে। উৎসুক মানুষ ভিড় করেন তাঁর বাড়িতে। আর রমিজ, গল্পের মতো বলে যান সেই দুঃসহ কষ্টের কথা। গ্রামের মানুষ এত দিন রমিজকে নিখোঁজই ভাবতেন। আড়াই বছর খোঁজখবর না থাকা মানুষকে এর চেয়ে আর কী ভাবা যায়?
রমিজ বললেন, এখন তাঁর দিন কাটে গল্প করে। গ্রামের মানুষ সেই গল্পের মুগ্ধ শ্রোতা। রজিমের গল্প ছড়িয়ে পড়ে এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে। সেই গল্পের ডালপালা গজায়। রমিজ সেসব বলেন আর হাসেন, কিন্তু আমরা হাসতে পারি না। একটা অদ্ভুত কষ্ট এসে বুকের ভেতরে আটকে যায়, দেখি আইজিপির চোখেও পানি।
আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

ভারতের ওডিশা রাজ্যে বন বিভাগের একটি চাকরির জন্য ২৫ কিলোমিটার পথ হেঁটে ছিলেন সঞ্জীব পুরোহিত। চাকরির শর্তই ছিল প্রার্থীকে তাঁর যোগ্যতা প্রমাণের জন্য এতটা পথ হেঁটে দেখাতে হবে। সঞ্জীব পুরোহিত সে যোগ্যতা প্রমাণ করেছিলেন নিজের জীবন দিয়ে। হাঁটতে হাঁটতে ২৫ কিলোমিটার যেখানে শেষ হয়, সেখানে তিনি পড়ে মারা যান।
০৮ জানুয়ারি ২০২২
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

ভারতের ওডিশা রাজ্যে বন বিভাগের একটি চাকরির জন্য ২৫ কিলোমিটার পথ হেঁটে ছিলেন সঞ্জীব পুরোহিত। চাকরির শর্তই ছিল প্রার্থীকে তাঁর যোগ্যতা প্রমাণের জন্য এতটা পথ হেঁটে দেখাতে হবে। সঞ্জীব পুরোহিত সে যোগ্যতা প্রমাণ করেছিলেন নিজের জীবন দিয়ে। হাঁটতে হাঁটতে ২৫ কিলোমিটার যেখানে শেষ হয়, সেখানে তিনি পড়ে মারা যান।
০৮ জানুয়ারি ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

ভারতের ওডিশা রাজ্যে বন বিভাগের একটি চাকরির জন্য ২৫ কিলোমিটার পথ হেঁটে ছিলেন সঞ্জীব পুরোহিত। চাকরির শর্তই ছিল প্রার্থীকে তাঁর যোগ্যতা প্রমাণের জন্য এতটা পথ হেঁটে দেখাতে হবে। সঞ্জীব পুরোহিত সে যোগ্যতা প্রমাণ করেছিলেন নিজের জীবন দিয়ে। হাঁটতে হাঁটতে ২৫ কিলোমিটার যেখানে শেষ হয়, সেখানে তিনি পড়ে মারা যান।
০৮ জানুয়ারি ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

ভারতের ওডিশা রাজ্যে বন বিভাগের একটি চাকরির জন্য ২৫ কিলোমিটার পথ হেঁটে ছিলেন সঞ্জীব পুরোহিত। চাকরির শর্তই ছিল প্রার্থীকে তাঁর যোগ্যতা প্রমাণের জন্য এতটা পথ হেঁটে দেখাতে হবে। সঞ্জীব পুরোহিত সে যোগ্যতা প্রমাণ করেছিলেন নিজের জীবন দিয়ে। হাঁটতে হাঁটতে ২৫ কিলোমিটার যেখানে শেষ হয়, সেখানে তিনি পড়ে মারা যান।
০৮ জানুয়ারি ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে