জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাব সমাজের সর্বস্তরে গভীরভাবে অনুভূত হচ্ছে এবং এটি শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ের ওপর প্রভাব ফেলেছে। সম্প্রতি স্কুলশিক্ষার্থীদের ব্যাংকিং কার্যক্রমে কিছুটা মন্দাভাব লক্ষ করা গেছে, যেখানে হিসাবের আমানত কমেছে। মূল্যস্ফীতির চাপ ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কারণে গত বছরের শুরু থেকে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ের হার হ্রাস পেতে থাকে, যা নভেম্বরে পৌঁছানোর পরও চলতে থাকে। তবে ডিসেম্বরে এসে পরিস্থিতি কিছুটা পাল্টে যায় এবং ব্যাংকিং হিসাবের সংখ্যা ও আমানত বৃদ্ধি পেতে থাকে, যা আশার আলো দেখায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উঠে আসা তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীদের আমানতের পরিমাণ প্রায় ৩০ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তাদের হিসাবের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৩৭ হাজার ৯০০টি।
হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীদের মোট ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৩ লাখ ৮০ হাজার ১৫৯টি, যা তার আগের মাস নভেম্বরে ছিল ৪৩ লাখ ৪২ হাজার ২৫৯। ফলে এক মাসের ব্যবধানে ৩৭ হাজার ৯০০টি নতুন হিসাব খোলা হয়েছে। এর মধ্যে ছেলেদের হিসাবের সংখ্যা ২২ লাখ ৩২ হাজার ৬৭২, যা নভেম্বরের তুলনায় ২৬ হাজার ৬৮৮টি বেশি। অন্যদিকে মেয়েদের হিসাবের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ লাখ ৪৭ হাজার ৮৮৭, যা আগের মাসের তুলনায় ১১ হাজার ২১২টি বেশি।
শিক্ষার্থীদের সঞ্চয় কমার কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, বছরের শেষ দিকে সাধারণত অনেকে ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলন করেন। বছরের শেষ মাসগুলোতে বেড়ানোর প্রবণতা বেড়ে যায়। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বকেয়া পরিশোধের কারণে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয় কমতে দেখা যায়। তবে চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে শিক্ষার্থীদের আমানতের নিম্নগামী প্রবণতা সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে হতে পারে।
ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীদের ব্যাংক আমানতের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭১ কোটি টাকা, যা নভেম্বরে ছিল ২ হাজার ৪১ কোটি। অর্থাৎ এক মাসে আমানত বেড়েছে ৩০ কোটি টাকা। তবে আগের বছর ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীদের আমানতের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা, যা বর্তমান ডিসেম্বরে এসে ১০৮ কোটি টাকা কমেছে। অর্থবছরের শুরুতে জুলাইয়ে এই পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা, যা আগস্টে কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ১৭২ কোটি, সেপ্টেম্বরে ২ হাজার ১৩৫ কোটি ও অক্টোবরে আরও কমে ২ হাজার ৮৭ কোটি টাকায় নেমে আসে। ডিসেম্বরে এসে সঞ্চয়ে কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গেলেও সার্বিক পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি আশাব্যঞ্জক নয়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মুস্তফা কে মুজেরী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংক খাতের প্রতি মানুষের আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছিল, যার প্রভাব স্কুল ব্যাংকিংয়েও পড়েছে। তবে এই আস্থাহীনতা ধীরে ধীরে কাটছে, যা ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ের বৃদ্ধি থেকে বোঝা যায়। ব্যাংকগুলোর উচিত এখন জনসচেতনতা বাড়িয়ে শিক্ষার্থীদের আরও বেশি ব্যাংকিং কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা।
বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে ২০১০ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে। বর্তমানে দেশের ৫৯টি ব্যাংক শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সের শিক্ষার্থীরা এই বিশেষ হিসাব খুলতে পারে, যেখানে মাত্র ১০০ টাকা আমানত রেখে হিসাব খোলা যায়।
সাম্প্রতিক প্রবণতা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীদের ব্যাংকিং কার্যক্রম কিছুটা পুনরুদ্ধার ঘটেছে। তবে সার্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ, মূল্যস্ফীতি ও ব্যয় সংকোচনের কারণে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ের পরিমাণ দীর্ঘ মেয়াদে কীভাবে প্রভাবিত হবে, তা সময় বলে দেবে।
আরও খবর পড়ুন:
উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাব সমাজের সর্বস্তরে গভীরভাবে অনুভূত হচ্ছে এবং এটি শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ের ওপর প্রভাব ফেলেছে। সম্প্রতি স্কুলশিক্ষার্থীদের ব্যাংকিং কার্যক্রমে কিছুটা মন্দাভাব লক্ষ করা গেছে, যেখানে হিসাবের আমানত কমেছে। মূল্যস্ফীতির চাপ ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কারণে গত বছরের শুরু থেকে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ের হার হ্রাস পেতে থাকে, যা নভেম্বরে পৌঁছানোর পরও চলতে থাকে। তবে ডিসেম্বরে এসে পরিস্থিতি কিছুটা পাল্টে যায় এবং ব্যাংকিং হিসাবের সংখ্যা ও আমানত বৃদ্ধি পেতে থাকে, যা আশার আলো দেখায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উঠে আসা তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীদের আমানতের পরিমাণ প্রায় ৩০ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তাদের হিসাবের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৩৭ হাজার ৯০০টি।
হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীদের মোট ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৩ লাখ ৮০ হাজার ১৫৯টি, যা তার আগের মাস নভেম্বরে ছিল ৪৩ লাখ ৪২ হাজার ২৫৯। ফলে এক মাসের ব্যবধানে ৩৭ হাজার ৯০০টি নতুন হিসাব খোলা হয়েছে। এর মধ্যে ছেলেদের হিসাবের সংখ্যা ২২ লাখ ৩২ হাজার ৬৭২, যা নভেম্বরের তুলনায় ২৬ হাজার ৬৮৮টি বেশি। অন্যদিকে মেয়েদের হিসাবের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ লাখ ৪৭ হাজার ৮৮৭, যা আগের মাসের তুলনায় ১১ হাজার ২১২টি বেশি।
শিক্ষার্থীদের সঞ্চয় কমার কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, বছরের শেষ দিকে সাধারণত অনেকে ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলন করেন। বছরের শেষ মাসগুলোতে বেড়ানোর প্রবণতা বেড়ে যায়। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বকেয়া পরিশোধের কারণে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয় কমতে দেখা যায়। তবে চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে শিক্ষার্থীদের আমানতের নিম্নগামী প্রবণতা সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে হতে পারে।
ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীদের ব্যাংক আমানতের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭১ কোটি টাকা, যা নভেম্বরে ছিল ২ হাজার ৪১ কোটি। অর্থাৎ এক মাসে আমানত বেড়েছে ৩০ কোটি টাকা। তবে আগের বছর ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীদের আমানতের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা, যা বর্তমান ডিসেম্বরে এসে ১০৮ কোটি টাকা কমেছে। অর্থবছরের শুরুতে জুলাইয়ে এই পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা, যা আগস্টে কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ১৭২ কোটি, সেপ্টেম্বরে ২ হাজার ১৩৫ কোটি ও অক্টোবরে আরও কমে ২ হাজার ৮৭ কোটি টাকায় নেমে আসে। ডিসেম্বরে এসে সঞ্চয়ে কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গেলেও সার্বিক পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি আশাব্যঞ্জক নয়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মুস্তফা কে মুজেরী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংক খাতের প্রতি মানুষের আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছিল, যার প্রভাব স্কুল ব্যাংকিংয়েও পড়েছে। তবে এই আস্থাহীনতা ধীরে ধীরে কাটছে, যা ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ের বৃদ্ধি থেকে বোঝা যায়। ব্যাংকগুলোর উচিত এখন জনসচেতনতা বাড়িয়ে শিক্ষার্থীদের আরও বেশি ব্যাংকিং কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা।
বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে ২০১০ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে। বর্তমানে দেশের ৫৯টি ব্যাংক শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সের শিক্ষার্থীরা এই বিশেষ হিসাব খুলতে পারে, যেখানে মাত্র ১০০ টাকা আমানত রেখে হিসাব খোলা যায়।
সাম্প্রতিক প্রবণতা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীদের ব্যাংকিং কার্যক্রম কিছুটা পুনরুদ্ধার ঘটেছে। তবে সার্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ, মূল্যস্ফীতি ও ব্যয় সংকোচনের কারণে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ের পরিমাণ দীর্ঘ মেয়াদে কীভাবে প্রভাবিত হবে, তা সময় বলে দেবে।
আরও খবর পড়ুন:
দীর্ঘ এক দশক ধরে চলা বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যহীনতার পর দেশের অর্থনীতিতে ঘটেছে নাটকীয় এক পালাবদল। একসময় যেখানে রপ্তানির চেয়ে বহুগুণে বাড়তি আমদানি, বৈধ রেমিট্যান্সের জায়গা দখল করে নিচ্ছিল হুন্ডি, আর মুদ্রার প্রবাহ ছিনিয়ে নিচ্ছিল ইনভয়েসিং কারচুপি; সেই জটিল বাস্তবতায় এবার ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত...
৫ ঘণ্টা আগেজাতীয় কার্ড স্কিম ‘টাকা পে’র নামে একটি ভুয়া ওয়েবসাইট চালু করে প্রতারণার মাধ্যমে জনসাধারণের কাছ থেকে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। এতে আর্থিক প্রতারণার ঝুঁকি রয়েছে বলে সতর্ক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
৫ ঘণ্টা আগেচলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাসেই দেশের রপ্তানিতে চমকপ্রদ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। জুলাই মাসে পণ্য রপ্তানি আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, মাসজুড়ে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৪৭৭ কোটি ৫ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলারে...
৯ ঘণ্টা আগেসার্ফ এক্সেলের নতুন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ব্রাজিলের ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও ইংল্যান্ডের বুকায়ো সাকার পথ ধরে তিনিও সার্ফ এক্সেলের মুখ হয়ে উঠলেন।
৯ ঘণ্টা আগে