Ajker Patrika

সারের দাম বাড়ায় কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২৩, ২১: ২১
সারের দাম বাড়ায় কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ

জ্বালানি তেলের পর রাসায়নিক সারের দাম বাড়ায় রাজশাহীর কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। কৃষকেরা বলছেন, সারের দাম বাড়ার কারণে ফসলের উৎপাদন খরচ বাড়বে। কিন্তু সেই তুলনায় ফসলের দাম না বাড়লে লোকসান গুনতে হবে তাঁদের।

তবে কৃষি বিভাগ বলছে, সারের দাম বাড়ানো হয়েছে সামান্যই। এতে খুব বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার গোলাই গ্রামের কৃষক আকবর আলী বলেন, খরার কারণে ঘন ঘন জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে। অন্য এলাকার তুলনায় বরেন্দ্র এলাকার চাষিদের ধান চাষে খরচ বেশি। এর মধ্যে সারের দাম বাড়ল। দাম বাড়ার আগেই জমিতে সার দেওয়া হয়েছে। তা না হলে খরচ আরও বেড়ে যেত। তবে অন্য ফসল চাষে এখন গুনতে হবে বাড়তি খরচ।

কৃষকেরা জানান, জমিতে ধান লাগানোর জন্য জমি প্রস্তুতের সময়ই বিঘাপ্রতি পাঁচ কেজি ইউরিয়া এবং এক কেজি করে পটাশ ও টিএসপি সার দিতে হয়। জমিতে ধানগাছের বয়স ২৫ থেকে ৩০ দিন হলেই প্রয়োজন হয় অন্তত ৪০ কেজি ইউরিয়া। এর সঙ্গে এক কেজি দস্তা।

একসঙ্গে সব ধরনের রাসায়নিক সারে কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা বাড়ায় অনেক বেশি বলে মনে করছেন কৃষকেরা।

পুঠিয়ার হাড়োগাথী গ্রামের বাসিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য আবদুস সাত্তার বলেন, ‘একসঙ্গে পাঁচ টাকা দাম বেড়ে যাওয়া অনেক বেশি কৃষকের জন্য। চাষাবাদে খুব সমস্যা হবে। সারের দাম বাড়ার পাশাপাশি ফসলের ন্যায্যমূল্য সরকার যদি নিশ্চিত করতে পারে তাহলে কৃষকের সমস্যা হবে না।’ 

পুঠিয়ার সাধনপুর গ্রামের চাষি মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার সারের দাম বাড়িয়েছে বলে টিভিতে খবরে দেখলাম।’

জাহাঙ্গীর আরও বলেন, ‘সরকার যে দাম বাড়ায়, এর চেয়েও বেশি দামে বিক্রি হয় খুচরা পর্যায়ে। সরকারকে ভালোভাবে নজরদারি করতে হবে যেন খুচরা পর্যায়ে দাম আরও বেশি না বেড়ে যায়।’

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় কৃষক ও ডিলার পর্যায়ে রাসায়নিক সারের দাম প্রতি কেজিতে পাঁচ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

১০ এপ্রিল থেকে সব ধরনের রাসায়নিক সারের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা বাড়িয়ে আদেশ জারি করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। কৃষক পর্যায়ে প্রতি কেজি ইউরিয়া ও টিএসপির দাম ২২ থেকে ২৭ টাকা, ডিএপি ১৬ থেকে বেড়ে ২১, এমওপির দাম ১৫ থেকে ২০ টাকা নির্ধারণ হয়েছে। সারের নতুন দাম ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে। 

তানোরের পাঁচন্দর গ্রামের কৃষক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘ফসলের দাম কম, সারের দাম বেশি। এই কারণে তো কৃষকের চিন্তা। এখন যে ফসলে সার কম লাগে, সেটা বেশি করে করতে হবে। সারের দাম বাড়ানোর আগে কৃষকদের মনের কথাটাও একটা জানা দরকার ছিল।’

তবে কৃষি বিভাগ মনে করছে, ‘সারের দাম যা বাড়ানো হয়েছে তা যৌক্তিক। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, বস্তায় ২৫০ টাকা দাম বেড়েছে, এটা খুব বেশি না। কারও তেমন কোনো সমস্যা হবে না। যৌক্তিকভাবেই দাম বাড়ানো হয়েছে। এটা যুক্তিসংগত।’

 ‘দাম বাড়ার কারণে একরকম ভালোই হয়েছে। কৃষকেরা পরিমিত সার ব্যবহার করবে। দাম কম হলে তো ইচ্ছেমতো ব্যবহার করে।’ যুক্ত করেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইতিহাস দরজায় কড়া নেড়ে বলছে, ১৯৭১ থেকে পাকিস্তান কি শেখেনি কিছুই

‘আমাদের মরদেহ বাড়িতে নিয়ো না’

কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের খামারবাড়ি অবরোধের ঘোষণা

মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীর পিঠে পাড়া দিয়ে অটোরিকশায় শহর ঘোরাল ছাত্রদল, সঙ্গে উচ্চ স্বরে গান

যশোরে আত্মগোপনে থাকা আ.লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বাড়িতে পুলিশের অভিযান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত