Ajker Patrika

‘চাঁদা না পেয়ে’ ১০ দোকানে তালা, জামায়াত নেতা ও বিএনপির কর্মীসহ গ্রেপ্তার ৪

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি 
নাটোরের বড়াইগ্রামে চাঁদা না পেয়ে ১০টি দোকানে তালা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার আসামিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নাটোরের বড়াইগ্রামে চাঁদা না পেয়ে ১০টি দোকানে তালা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার আসামিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাটোরের বড়াইগ্রামে চাঁদা না পেয়ে ১০টি দোকানে তালা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা ও বিএনপির কর্মীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা উপজেলার আহম্মেদপুর বাজারে এই ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন জামায়াতে ইসলামীর জোয়াড়ী ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি ও আহম্মেদপুর এলাকার বাসিন্দা রুহুল আমিন (৪৫), তাঁর ভাই জামায়াতের কর্মী আজিমুদ্দিন (৪০), বিএনপির কর্মী হায়দার আলী (৪৮) ও তাঁর বাবা মুজিবর রহমান (৭০)।

চাঁদা দাবি ও দোকানে তালা দেওয়ার ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলম নামের এক দোকানি বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে বড়াইগ্রাম থানায় মামলা করেছেন। মামলায় তিনি এবং নওপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কোরবান আলী, শাহ আলম হোসেন ও মোতালেব হোসেন ওই জমির মালিক হিসেবে দাবি করেছেন। সেখানে তাঁদের ১০টি দোকান রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘অনেক দিন ধরে আহম্মেদপুর বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করেন রুহুল আমিন ও তাঁর ভাইয়েরা। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাঁরা ৪০ থেকে ৫০ জন লোক নিয়ে গতকাল বেলা ১১টার দিকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের মারধর করেন। একপর্যায়ে তাঁরা তালা দিয়ে আমাদের ১০টি দোকান বন্ধ করে দেন। আমরা নিরুপায় হয়ে পাঁচ হাজার টাকা করে চাঁদা দিয়ে রক্ষা পেয়েছি।’

আরেক দোকানি কোরবান আলী বলেন, ‘বিকেলে সেনাবাহিনী ও বড়াইগ্রাম থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় তাঁরা ১০টি দোকানের তালা খুলে ব্যবসা করার ব্যবস্থা করে দেন।’

এদিকে গ্রেপ্তারের আগে চাঁদা চাওয়ার কথা অস্বীকার করে জামায়াত নেতা রুহুল আমিন বলেন, ‘ওই জমি আমাদের। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা (দোকানি) জমি দখল করে রেখেছেন। জমি ফেরত চাইলে তাঁরা দোকান ছাড়ছেন না। এ বিষয়ে আমরা আদালতে মামলা করেছি। তবে এভাবে দোকানে তালা দেওয়া আমাদের ঠিক হয়নি।’

বিএনপি কর্মী হায়দার আলী বলেন, ‘উপজেলা জামায়াত ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক ও জোয়াড়ী ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি আব্দুল মালেকের নেতৃত্ব ঘটনাটি সমাধান করার জন্য একটি কমিটি করা হয়। সেখানে উভয় পক্ষই জামানত বাবদ ১৫ হাজার করে টাকা জমা দেয়। কিন্তু তাঁরা (দোকানিরা) তা মানেন না। তাই আমরা দখল করেছি। কিন্তু সেটি আমাদের ঠিক হয়নি।’

জোয়াড়ী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মালেক বলেন, ‘রুহুল আমিন জামায়াতে ইসলামী জোয়াড়ী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে সভাপতি ও তার ভাই কর্মী। দলের ঊর্ধ্বতন নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক গোলাম সারোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চাঁদা না দেওয়ায় ১০টি দোকানে তালা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলম নামের এক ভুক্তভোগী থানায় মামলা করেছেন। আসামিদের আজ মঙ্গলবার আদালতে সোপর্দ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত