Ajker Patrika

সমন্বয়ক বেড়ে যাওয়ায় নাটোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

নাটোর প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২৪, ১৭: ২৮
সমন্বয়ক বেড়ে যাওয়ায় নাটোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

সমন্বয়ক বেড়ে যাওয়ায় নাটোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে শহরের কানাইখালী পুরোনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা সমাবেশ ডেকে এ ঘোষণা দেন।

আজ রোববার সকাল থেকে নাটোর জেলার প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শত শত ছাত্র-ছাত্রী সমাবেশে যোগ দেন। সমাবেশে আসা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে সমাবেশ চত্বর। সমাবেশে শিক্ষার্থী ছাড়াও অভিভাবকেরা উপস্থিত হন। উপস্থিত ছিলেন ১৮ জুলাই গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী রাহি। এ সময় বক্তব্য দেন শিক্ষার্থী রনি, শিশির মাহমুদ, ইসাহাক, মুসা, জনি, সাংবাদিক নেতা নাজমুল হাসানসহ শিক্ষক ও অভিভাবকেরা। এ সময় ছাত্রদের ওপর গুলি চালানোর দায়ে নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) তারিকুল ইসলাম ও অসহযোগিতার দায়ে এন এস সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর জহিরুল ইসলামের পদত্যাগ ও বিচার দাবি করা হয়।

জুলাইয়ে নাটোর শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রথম যখন দানা বাঁধে তখন রাজপথে নেমেছিলেন অন্যূন অর্ধশত শিক্ষার্থী। তাঁরা রীতি মেনে পুলিশের বিশেষ শাখার অনুমতি নিয়ে দুই দিন শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছিলেন। ১৮ জুলাই শহরে পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষের পর আর রাস্তায় নামতে পারেননি শিক্ষার্থীরা। তবে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে নাটোরে বেড়ে চলেছে আন্দোলন সমন্বয়কের সংখ্যা। তাতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিভক্ত হয়ে শৃঙ্খলাহীন যাতে না হন, সে লক্ষ্যে নাটোরে শিক্ষার্থীদের সব আন্দোলন সমন্বয়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন শিক্ষার্থীরা।

সমাবেশে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা দেশের জন্য তাজা রক্ত দিয়েছি। আমাদের ভাই-বোনেরা নিজের জীবন উৎসর্গ করেছে। শিক্ষার্থীদের রক্তের বিনিময়ে আজ আমরা নতুনভাবে স্বাধীনতা পেয়েছি। শেখ হাসিনাকে পতন করে আমরা ঘরে ফিরেছি। আমাদের আন্দোলন সফল হয়েছে। তবে এই আন্দোলন দমাতে আমাদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে। ১৮ জুলাই শহরের ছায়াবাণী ও মাদ্রাসা মোড়ে আমাদের ওপর গুলি চালায় পুলিশ। এই গুলি চালানোর নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম। এই গুলিবর্ষণের সঙ্গে জড়িত সকল পুলিশ সদস্যের বিচার দাবি করছি।’

সংঘর্ষের দিন গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী রাহি বলেন, ‘১৮ তারিখ ও এর আগে আমরা মাত্র কয়েকজন সাহস নিয়ে রাজপথে দাঁড়িয়েছিলাম। সেদিন আমাদের পাশে কেউ ছিল না। অথচ আজ আন্দোলনকারী ও সমন্বয়কের দাবিদারের অভাব নেই। আমরা কিছু পাওয়ার লোভে পুলিশের সামনে বুক পেতে দিইনি। আমরা যাদের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিলাম, তাঁদের এই উপলব্ধি থাকা উচিত।’

সদ্য বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক শিশির মাহমুদ বলেন, ‘আজ থেকে নাটোরে কোনো সমন্বয়ক কমিটি নেই। কেউ আর সমন্বয়ক না। আমরা সবাই সমান। আজ থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো দল নেই। আজ থেকে আমরা শুধু সাধারণ শিক্ষার্থী পরিচয় নিয়ে চলব।’

শিশির মাহমুদ আরও বলেন, ‘এ আন্দোলনে কারও অবদানই কম নয়, সবার অবদান রয়েছে। প্রত্যেকের অবদানই সমানভাবে স্বীকার করি। এখন থেকে আমরা অন্যায়, নির্যাতন ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সব সময় রুখে দাঁড়াব। আমরা সকলে মিলে নতুন করে বাংলাদেশ সংস্কার করব।’ 

সাংবাদিক নেতা নাজমুল হাসান বলেন, নাটোরের সর্বস্তরের গণমাধ্যমকর্মী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন। কোটা আন্দোলনের সব শিক্ষার্থী যেন সাংবাদিকদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ না করে, ভবিষ্যতে সহযোগিতা অব্যাহত রাখেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত