Ajker Patrika

৫ বছরের সন্তানকে নির্যাতনের ভিডিও প্রবাসী মাকে পাঠালেন যুবক

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ মে ২০২৩, ১৬: ৩৩
Thumbnail image

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ৫ বছর বয়সী এক কন্যাশিশুকে অমানবিক নির্যাতন করেছেন তার বাবা। সম্প্রতি সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। শিশুটির সৎমায়ের সহযোগিতায় তার বাবা এই কাজ করেছেন বলে অভিযোগ প্রতিবেশীদের। এ ঘটনায় ওই ব্যক্তির শাস্তিও দাবি করেছেন এলাকাবাসী। 

এ বিষয়ে পুলিশ বলছে, পুলিশ সুপারের নির্দেশে ওই ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা চলছে। 

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বাঘরাইট শিমুলতলী এলাকায়। অভিযুক্ত ব্যক্তি ইকবাল (৩৮) হোসেন ওই এলাকার নিজামুদ্দিনের ছেলে। বেশ কিছুদিন আগে এ ঘটনা ঘটলেও গতকাল সোমবার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। 

ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ৫ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, প্রথম ২ সেকেন্ডে শোনা যায় ইকবাল তার নিজের মোবাইল ফোনটি ভিডিও রেকর্ড চালু করে কাউকে বলছেন—‘এভাবে ধরে রেকর্ড কর।’ 

এরপর ভিডিওর অর্ধেক অংশে দেখা যায় শিশুটি আতঙ্কে, অনুনয় করে বলছে—‘আব্বা আর কইতাম না, কইতাম না।’ এর পরও ইকবাল তার শিশুকন্যাকে নির্যাতন করেই যাচ্ছেন। ভিডিওটির একপর্যায়ে দেখা যায়, ইকবাল তাঁর পা দিয়ে শিশুটির মুখে চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা করছেন। এ সময় এক নারী এসে ওই শিশুকে উদ্ধার করে নিয়ে যান। 

স্থানীয়রা বলছেন, ইকবালের দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী মারধরের কারণে তাঁকে ছেড়ে চলে যান। সেই স্ত্রীর চার সন্তান রয়েছে। প্রথম স্ত্রী সৌদি আরবে প্রবাসী। ইকবাল তাঁর মোবাইল ফোনের ভিডিও ক্যামেরা চালু করেন দ্বিতীয় স্ত্রী রাবেয়ার হাতে দিয়ে, প্রথম স্ত্রীর তৃতীয় সন্তান স্বর্ণাকে নির্যাতন করেন। পরে সেই ভিডিও প্রথম স্ত্রী হালিমার ইমোতে পাঠান। এরপর হালিমা তাঁর সন্তানের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে প্রবাসী বাংলাদেশি একজনের সহযোগিতায় ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করেন। পরে সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। 

প্রতিবেশীরা বলছেন, শিশুসন্তানকে মারধর এটাই প্রথম ঘটনা নয়, এর আগেও সন্তানদের মারধর করেছেন ইকবাল। প্রথম স্ত্রীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছেন। এমনকি প্রথম স্ত্রীকে পিটিয়ে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রেখেছিলেন। তাই প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে। 

স্থানীয় কাউন্সিলর মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমান মিঠু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মারধরের ঘটনা নতুন নয়। ভিডিওতে যে নির্মমভাবে মারধর করা হয়েছে, এটা তো কিছুই না। এর থেকে নির্মমভাবে এদের প্রায় মারধর করা হয়। এসব মারধরের জন্য প্রশাসনকে নিয়ে বিচারও করেছি, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। শুধু তাঁর মারধর সহ্য করতে না পেরে প্রথম স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে প্রবাসে পাড়ি দিয়েছেন।’ 

এ বিষয়ে কটিয়াদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শাহাদাৎ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পুলিশ সুপারের কাছ থেকে একটি ভিডিও পেয়ে ঘটনার সত্যতা পায় পুলিশ। তারপর থেকে পুলিশ সুপারের নির্দেশে অভিযুক্ত বাবা ইকবালকে ধরতে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত