Ajker Patrika

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পিছিয়ে গেছে হালদায় মা মাছের ডিম দেওয়া

প্রতিনিধি
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পিছিয়ে গেছে হালদায় মা মাছের ডিম দেওয়া

রাউজান (চট্টগ্রাম): সাধারণত মৌসুমের প্রথম বজ্রসহ ভারী বৃষ্টির সময়ই হালদায় ডিম দেয় মা মাছেরা। এপ্রিলের শেষ নাগাদ বা মে মাসের বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢল নামলে রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালবাউশ জাতীয় মাছ ডিম ছাড়ে। কিন্তু এ বছর মে মাস শেষ হতে চলল তবুও কোনো মা মাছ ডিম দেয়নি। দাবদাহ, বৃষ্টি না হওয়া, বিরূপ আবহাওয়ার পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবের কারণে এ মাসে ডিম দেওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও গত বছর মে মাসে রেকর্ড পরিমান ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, করোনা মহামারিতে মানুষের তৎপরতা কমে যাওয়া পরিবেশের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। যেখানে শিল্পকারখানা ও বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বিভিন্ন ধরনের কারখানার বর্জ্যে দূষিত হালদা থেকে প্রত্যাশিত রেণু পাওয়া যাচ্ছিল না।

কিন্তু এ বছর প্রত্যাশিত সময়ে মা মাছেরা ডিম না দেওয়ায় শঙ্কিত হালদা নদীর ডিম সংগ্রহকারীরা। গতকাল সোমবার পর্যন্ত ডিম ছাড়েনি। তবে ২৪ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত বজ্রবৃষ্টি থাকলেও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

ডিম সংগ্রহকারী কামাল উদ্দিন সওদাগর জানান, গত বছর এপ্রিল মাসে ডিম ছাড়লেও এবার এখনো ডিম ছাড়েনি। বৃষ্টি না হওয়া, বিরূপ আবহাওয়া ও ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কার মধ্যে এই মাসের ডিম দেওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। গতকাল রাতেও মা মাছ নমুনা ডিম দিয়েছে ভেবে অনেকে নদীতে নৌকা নিয়ে যায়। কিন্তু পরে দেখা যায় মা মাছ নমুনা ডিম দেয়নি।

রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জোনায়েদ কবির সোহাগ বলেন, হালদা নদীর সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। হালদা নদীর রাউজান অংশে মাছ চুরি, বালু উত্তোলনসহ দুষ্কৃতকারীদের অপতৎপরতা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়েছে। এরপরও আমরা মৎস্য বিভাগ, র‍্যাব, পুলিশ, আনসার ও এনজিও সংস্থার সহযোগিতায় অভিযান অব্যাহত রেখেছি। গত রোববারও দুটি অবৈধ ইঞ্জিন চালিত নৌকা ধ্বংস করা হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় মা মাছ ডিম ছাড়েনি। বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে জেনেছি, ঘূর্ণিঝড়ে মা মাছ ডিম ছাড়ে না। হালদা নদীর জীব-বৈচিত্র্য তথা মা মাছ রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন তৎপর রয়েছে।

এবার মা মাছ ডিম ছাড়তে দেরি করার কারণ জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা গবেষক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া বলেন, হালদায় মা মাছ ডিম ছাড়ার ক্ষেত্রে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়ে। ঘূর্ণিঝড় রেশ কেটে না যাওয়া পর্যন্ত ডিম ছাড়বে না। অতীতে ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে ডিম ছাড়ার রেকর্ড নেই। আমরা ধারণা করছি, সম্প্রতি সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি ২৬ / ২৭ তারিখের মধ্যে উপকূল এলাকা অতিক্রম করবে। সে ক্ষেত্রে ঝুম বৃষ্টি হলে ২৮ / ২৯ তারিখের দিকে ডিম ছাড়বে মা মাছ। ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমের ক্ষেত্রে আগে বা পরে হলে সময়ের পরিবর্তন হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে অনুকূল পরিবেশে ডিম ছাড়বে মা মাছ।

উল্লেখ্য, দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী থেকে কার্প জাতীয় মাছের (রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউশ) নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়। গত বছর ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়েছিল। এটি এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ আহরণ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউটিউবে ১০০০ ভিউতে আয় কত

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে সরকার, ভয়ে কলকাতায় দিলীপ কুমারের আত্মহত্যা

স্ত্রী রাজি নন, সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে না: পুলিশ

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত