Ajker Patrika

মসজিদে বসেই ঘুষ লেনদেন, অধ্যক্ষ বরখাস্ত

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি
Thumbnail image

গাজীপুরের কালীগঞ্জে মাদ্রাসার সহকারী গ্রন্থাগার নিয়োগকে কেন্দ্র করে মসজিদে বসে ঘুষ লেনদেন হয়। পরে এ সংক্রান্ত অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্ত অধ্যক্ষকে বরখাস্ত করে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড।

সম্প্রতি বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নির্দেশে রেজিস্ট্রার মো. সিদ্দিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গত ২৫ ডিসেম্বর বরখাস্ত পত্রটি হাতে পান অধ্যক্ষ। 

চিঠি থেকে পাওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, গত ২৮ জুলাই অনুষ্ঠিত বোর্ডের আপিল ও সালিস কমিটির সভায় অভিযুক্ত আ. ছাত্তারকে চাকরি থেকে বরখাস্তের বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়। সালিস কমিটির সভায় বাদী-বিবাদী উভয় উপস্থিত ছিলেন। পরে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে অভিযোগ প্রমাণিত হলে চাকরি থেকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২৫ ডিসেম্বর বরখাস্ত পত্রটি হাতে পান অধ্যক্ষ। 

এর আগে আর্থিক লেনদেনের কথোপকথনের অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর মাদ্রাসার গভর্নিং বডি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি পর্যবেক্ষণ করে ঘটনার সত্যতা প্রমাণ পায়। এর মধ্যে মসজিদে বসেও ঘুষ লেনদেন করা হয়। পরে ঘুষ লেনদেনের দায় স্বীকার ও ক্ষমা প্রার্থনা করে গভর্নিং বডির কাছে লিখিত জবানবন্দি দেন অভিযুক্ত অধ্যক্ষ। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে মাদ্রাসার গভর্নিং বডি তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পায়। বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদনের অনুলিপি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), কালীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান এবং কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবর দাখিল করা হয়। 

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী জাকারিয়া হাবিব বলেন, ‘অর্থ হাতিয়ে নিলেও নিয়োগ না দেওয়ায় অধ্যক্ষকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য লিগ্যাল নোটিশ পাঠাই। তা পাঠানোর পর তড়িঘড়ি করে অস্থায়ী ভিত্তিতে ২ বছরের জন্য একটি নিয়োগপত্র দেন অধ্যক্ষ। ওই নিয়োগপত্রে ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি উল্লেখ করা হয়েছিল। এরপর আমি যোগদান করি। এর এক বছর পার হলেও বেতন-ভাতা পাওয়ার কোনো প্রক্রিয়া (এমপিওভুক্ত) করেননি অধ্যক্ষ আ. সাত্তার। এ বিষয়ে অধ্যক্ষকে একাধিকবার অনুরোধ করা হলেও তিনি কোনো পদক্ষেপও নেননি।’

জাকারিয়া হাবিব আরও বলেন, ‘এর প্রতিকার চেয়ে এবং অধ্যক্ষকে দেওয়া ৮ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের বিষয় উল্লেখ করে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করি।’ 

জামালপুর ইউপি চেয়ারম্যান খাইরুল আলম বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৭ মার্চ স্থানীয়দের উপস্থিতিতে অধ্যক্ষ আ. সাত্তার ও জাকারিয়া হাবিবের বক্তব্য শোনা হয়। সে সময় অধ্যক্ষ জাকারিয়া হাবিবের কাছ থেকে অর্থ লেনদেনের বিষয়টি স্বীকার করে। পরে ভুক্তভোগী জাকারিয়া হাবিবকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দেওয়া হয়। 

কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নূর-ই-জান্নাত বলেন, অধ্যক্ষ আ. ছাত্তারকে চাকরি থেকে বরখাস্তের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য মাদ্রাসার গভর্নিং বডিকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত