দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে ক্লান্ত
রোকন উদ্দীন, ঢাকা
বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে সম্মেলন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। অথচ এ দেশে আসা এক জাপানি বিনিয়োগকারী চরম প্রতারণা ও বিচারিক দীর্ঘসূত্রতার শিকার হয়ে বিনিয়োগ গুটিয়ে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছেন।
প্রতারণা ও হয়রানির শিকার জাপানি বিনিয়োগকারীর নাম কাওরি ফুনাহাশি। তিনি একজন নারী উদ্যোক্তা। জাপানি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান নিপ্পন এয়ারকন্ডিশনিং সার্ভিসের একজন পরিচালক তিনি। নিপ্পন এয়ারকন্ডিশনিংয়ের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হিসেবে কাওরি ফুনাহাশি এনএসিএস বিডি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান খুলেছিলেন বাংলাদেশে। এনএসিএস বিডির চেয়ারম্যান হন কাওরি। এই প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও কারখানায় সেন্ট্রাল এয়ারকন্ডিশন সরবরাহ ও স্থাপনের কাজ করে আসছে।
জাপানি নাগরিক কাওরি ফুনাহাশি এনএসিএস বিডি লিমিটেডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকলেও স্থানীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশি নাগরিক খোরশেদ আলম মাইকেলকে। প্রণোদনা হিসাবে প্রথমে তাঁকে কোম্পানির ১ শতাংশ শেয়ারও দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও মামলার নথিপত্র সূত্রে জানা যায়, শুরুর দিকে সব কার্যক্রম ভালোভাবে চললেও দুই বছরের মাথায় এসে প্রশ্নবিদ্ধ তৎপরতা শুরু করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদ আলম। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অফিসের জন্য ফ্ল্যাট কেনার কথা বলে তিনি কোম্পানির ব্যাংক হিসাব থেকে ৬০ লাখ টাকা তোলেন। কিন্তু ফ্ল্যাটের বুকিং দেন নিজের মেয়ের নামে। অবশ্য বিরোধের বিষয়টি জেনে পরে ডেভেলপার কোম্পানি আমিন ল্যান্ডস্কেপ খোরশেদ বা তাঁর মেয়ের নামে ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রি করা স্থগিত রেখেছে। অন্যদিকে খোরশেদ কোম্পানির ২৩ মাসের বাড়িভাড়া বাবদ ১১ লাখ টাকা তুলে ‘ব্যক্তিগত কাজে’ ব্যয় করেন। অভিযোগ করা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানের নামে জমি কেনার কথা বলে আরও ১ কোটি টাকা তুলে নিয়ে কর্তৃপক্ষকে একটি জাল দলিল ধরিয়ে দেন তিনি। এ ছাড়া কোম্পানির অনুমোদন ছাড়া ১৪টি গাড়ি কেনার নাম করে ‘কার কালেকশন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু কোম্পানি কোনো গাড়ি পায়নি। পরিশোধ করা টাকাও ফেরত আসেনি। এভাবে বহু আশা নিয়ে বাংলাদেশে আসা জাপানি বিনিয়োগকারীকে তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেন।
কাওরি ফুনাহাশি ২০২২ সালে রাজধানীর ভাটারা থানায় প্রতিকার চেয়ে মামলা করেন। মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তদন্তে বেরিয়ে আসে খোরশেদ আলম জালিয়াতি ও প্রতারণা করে কাওরির প্রতিষ্ঠিত এনএসিএস বিডি লিমিটেড কোম্পানির ৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকার অর্থসম্পদ আত্মসাৎ করেছেন। মামলা করার পর তিন বছরের বেশি সময় চলছে আইনি লড়াই।
আইনি লড়াইয়ে ক্লান্ত বিদেশি উদ্যোক্তা
পিবিআইয়ের অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। তবে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে কোম্পানির সঙ্গে মীমাংসা করে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আদালত থেকে জামিন পান খোরশেদ। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন, জামিনে বের হওয়ার পর তিনি আর কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগই করেননি। মূল কোম্পানির চেয়ারম্যান কাওরি ফুনাহাশি এত দিন জাপান থেকে বারবার এসে আদালতে হাজিরা দিয়ে গেছেন। কিন্তু বাংলাদেশি বিচারপ্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা ও সার্বিক অনিশ্চয়তার কারণে তিনি হতাশ। আপাতত তিনি ফিরে গেছেন জাপানে। এনএসিএস বিডি লিমিটেড আগের বনানীর অফিস ছেড়ে দিয়ে কয়েকজন কর্মী নিয়ে আফতাবনগরে অফিস খুলে কার্যক্রম চালাচ্ছে। আফতাবনগরের অফিসে প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হোসেন আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘জাপানি নাগরিকেরা এ দেশের বিচারিকপ্রক্রিয়ার সঙ্গে মোটেই অভ্যস্ত নন। এত দিন ধরে লড়েও তেমন কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় কাওরি ভেঙে পড়েছেন।’
ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হোসেন জানান, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে তাঁদের প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে বিষয়টি জানিয়েছে। কাওরি ফুনাহাশি ৮ মে বিডার চেয়ারম্যানকে একটি চিঠি দিয়েছেন।
অভিযুক্ত খোরশেদের বক্তব্য
জাপানি বিনিয়োগকারীর সঙ্গে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে এ প্রতিবেদক গত রোববার খোরশেদ আলমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। খোরশেদ এ সময় বলেন, ‘আমি তো নিজেই এই কোম্পানির মালিক ছিলাম। আমি কারও সঙ্গে প্রতারণা করি নাই। আমি ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলব।’ শেষ বাক্যটি বলে খোরশেদ ফোন কেটে দেন। এরপর থেকে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
খোরশেদ আলম নিজেকে কোম্পানির মালিক দাবি করলেও পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে তাঁকে বেতনভুক কর্মকর্তা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, খোরশেদের নামে ১ শতাংশ (১০ হাজার) শেয়ার বরাদ্দ থাকলেও ২০২১ সালের নভেম্বরে তাঁর চাকরিচ্যুতির সঙ্গে সঙ্গে তা ফেরত নেওয়া হয়।
বসুন্ধরার ‘ডি’ ব্লকের একটি ভবনে খোরশেদের ঠিকানা। গত বুধবার গিয়ে জানা যায়, তিনি অনেক দিন ধরেই সেখানে থাকেন না। বাড়িটির কেয়ারটেকার মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘শুনেছি তিনি জাপানে থাকেন।’
বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে উদ্বেগ
এনএসিএস বিডির স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, নিপ্পন এয়ারকন্ডিশনিং সার্ভিস কোনো ছোটখাটো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নয়। এটি ৪০টির বেশি দেশে ব্যবসা পরিচালনা করা আন্তর্জাতিক কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটি জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সদস্য। জাপানের মতো দেশের এমন একটি কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে বিনিয়োগ গুটিয়ে নিলে তার কিছুটা হলেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বাংলাদেশের ওপর বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থার ক্ষতি হতে পারে বিষয়টি প্রচার পেলে।
এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) নির্বাহী পরিচালক নূরুল কবির বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো অসাধু ব্যক্তির এমন আচরণ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থায় চিড় ধরাবে। আদালতের পাশাপাশি বিডা ও জাপানি দূতাবাসেও বিষয়টি জানানো উচিত। আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’
কাওরি ফুনাহাশির মামলাটি এখনো চলছে। বিচারক আগামী ২২ জুনের মধ্যে উভয় পক্ষকে বিষয়টির সুরাহা করতে বলেছেন। কাওরির কোম্পানি এনএসিএস বিডির প্রত্যাশা, দেশের সুনামের স্বার্থে বিচারিকপ্রক্রিয়া দ্রুত ও যথাযথভাবে সম্পন্ন হওয়ার মধ্য দিয়ে তারা আত্মসাৎ করা অর্থ, জমি ও ফ্ল্যাট ফিরে পাবে।
আরও খবর পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে সম্মেলন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। অথচ এ দেশে আসা এক জাপানি বিনিয়োগকারী চরম প্রতারণা ও বিচারিক দীর্ঘসূত্রতার শিকার হয়ে বিনিয়োগ গুটিয়ে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছেন।
প্রতারণা ও হয়রানির শিকার জাপানি বিনিয়োগকারীর নাম কাওরি ফুনাহাশি। তিনি একজন নারী উদ্যোক্তা। জাপানি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান নিপ্পন এয়ারকন্ডিশনিং সার্ভিসের একজন পরিচালক তিনি। নিপ্পন এয়ারকন্ডিশনিংয়ের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হিসেবে কাওরি ফুনাহাশি এনএসিএস বিডি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান খুলেছিলেন বাংলাদেশে। এনএসিএস বিডির চেয়ারম্যান হন কাওরি। এই প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও কারখানায় সেন্ট্রাল এয়ারকন্ডিশন সরবরাহ ও স্থাপনের কাজ করে আসছে।
জাপানি নাগরিক কাওরি ফুনাহাশি এনএসিএস বিডি লিমিটেডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকলেও স্থানীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশি নাগরিক খোরশেদ আলম মাইকেলকে। প্রণোদনা হিসাবে প্রথমে তাঁকে কোম্পানির ১ শতাংশ শেয়ারও দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও মামলার নথিপত্র সূত্রে জানা যায়, শুরুর দিকে সব কার্যক্রম ভালোভাবে চললেও দুই বছরের মাথায় এসে প্রশ্নবিদ্ধ তৎপরতা শুরু করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদ আলম। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অফিসের জন্য ফ্ল্যাট কেনার কথা বলে তিনি কোম্পানির ব্যাংক হিসাব থেকে ৬০ লাখ টাকা তোলেন। কিন্তু ফ্ল্যাটের বুকিং দেন নিজের মেয়ের নামে। অবশ্য বিরোধের বিষয়টি জেনে পরে ডেভেলপার কোম্পানি আমিন ল্যান্ডস্কেপ খোরশেদ বা তাঁর মেয়ের নামে ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রি করা স্থগিত রেখেছে। অন্যদিকে খোরশেদ কোম্পানির ২৩ মাসের বাড়িভাড়া বাবদ ১১ লাখ টাকা তুলে ‘ব্যক্তিগত কাজে’ ব্যয় করেন। অভিযোগ করা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানের নামে জমি কেনার কথা বলে আরও ১ কোটি টাকা তুলে নিয়ে কর্তৃপক্ষকে একটি জাল দলিল ধরিয়ে দেন তিনি। এ ছাড়া কোম্পানির অনুমোদন ছাড়া ১৪টি গাড়ি কেনার নাম করে ‘কার কালেকশন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু কোম্পানি কোনো গাড়ি পায়নি। পরিশোধ করা টাকাও ফেরত আসেনি। এভাবে বহু আশা নিয়ে বাংলাদেশে আসা জাপানি বিনিয়োগকারীকে তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেন।
কাওরি ফুনাহাশি ২০২২ সালে রাজধানীর ভাটারা থানায় প্রতিকার চেয়ে মামলা করেন। মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তদন্তে বেরিয়ে আসে খোরশেদ আলম জালিয়াতি ও প্রতারণা করে কাওরির প্রতিষ্ঠিত এনএসিএস বিডি লিমিটেড কোম্পানির ৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকার অর্থসম্পদ আত্মসাৎ করেছেন। মামলা করার পর তিন বছরের বেশি সময় চলছে আইনি লড়াই।
আইনি লড়াইয়ে ক্লান্ত বিদেশি উদ্যোক্তা
পিবিআইয়ের অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। তবে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে কোম্পানির সঙ্গে মীমাংসা করে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আদালত থেকে জামিন পান খোরশেদ। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন, জামিনে বের হওয়ার পর তিনি আর কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগই করেননি। মূল কোম্পানির চেয়ারম্যান কাওরি ফুনাহাশি এত দিন জাপান থেকে বারবার এসে আদালতে হাজিরা দিয়ে গেছেন। কিন্তু বাংলাদেশি বিচারপ্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা ও সার্বিক অনিশ্চয়তার কারণে তিনি হতাশ। আপাতত তিনি ফিরে গেছেন জাপানে। এনএসিএস বিডি লিমিটেড আগের বনানীর অফিস ছেড়ে দিয়ে কয়েকজন কর্মী নিয়ে আফতাবনগরে অফিস খুলে কার্যক্রম চালাচ্ছে। আফতাবনগরের অফিসে প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হোসেন আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘জাপানি নাগরিকেরা এ দেশের বিচারিকপ্রক্রিয়ার সঙ্গে মোটেই অভ্যস্ত নন। এত দিন ধরে লড়েও তেমন কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় কাওরি ভেঙে পড়েছেন।’
ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হোসেন জানান, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে তাঁদের প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে বিষয়টি জানিয়েছে। কাওরি ফুনাহাশি ৮ মে বিডার চেয়ারম্যানকে একটি চিঠি দিয়েছেন।
অভিযুক্ত খোরশেদের বক্তব্য
জাপানি বিনিয়োগকারীর সঙ্গে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে এ প্রতিবেদক গত রোববার খোরশেদ আলমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। খোরশেদ এ সময় বলেন, ‘আমি তো নিজেই এই কোম্পানির মালিক ছিলাম। আমি কারও সঙ্গে প্রতারণা করি নাই। আমি ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলব।’ শেষ বাক্যটি বলে খোরশেদ ফোন কেটে দেন। এরপর থেকে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
খোরশেদ আলম নিজেকে কোম্পানির মালিক দাবি করলেও পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে তাঁকে বেতনভুক কর্মকর্তা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, খোরশেদের নামে ১ শতাংশ (১০ হাজার) শেয়ার বরাদ্দ থাকলেও ২০২১ সালের নভেম্বরে তাঁর চাকরিচ্যুতির সঙ্গে সঙ্গে তা ফেরত নেওয়া হয়।
বসুন্ধরার ‘ডি’ ব্লকের একটি ভবনে খোরশেদের ঠিকানা। গত বুধবার গিয়ে জানা যায়, তিনি অনেক দিন ধরেই সেখানে থাকেন না। বাড়িটির কেয়ারটেকার মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘শুনেছি তিনি জাপানে থাকেন।’
বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে উদ্বেগ
এনএসিএস বিডির স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, নিপ্পন এয়ারকন্ডিশনিং সার্ভিস কোনো ছোটখাটো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নয়। এটি ৪০টির বেশি দেশে ব্যবসা পরিচালনা করা আন্তর্জাতিক কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটি জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সদস্য। জাপানের মতো দেশের এমন একটি কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে বিনিয়োগ গুটিয়ে নিলে তার কিছুটা হলেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বাংলাদেশের ওপর বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থার ক্ষতি হতে পারে বিষয়টি প্রচার পেলে।
এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) নির্বাহী পরিচালক নূরুল কবির বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো অসাধু ব্যক্তির এমন আচরণ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থায় চিড় ধরাবে। আদালতের পাশাপাশি বিডা ও জাপানি দূতাবাসেও বিষয়টি জানানো উচিত। আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’
কাওরি ফুনাহাশির মামলাটি এখনো চলছে। বিচারক আগামী ২২ জুনের মধ্যে উভয় পক্ষকে বিষয়টির সুরাহা করতে বলেছেন। কাওরির কোম্পানি এনএসিএস বিডির প্রত্যাশা, দেশের সুনামের স্বার্থে বিচারিকপ্রক্রিয়া দ্রুত ও যথাযথভাবে সম্পন্ন হওয়ার মধ্য দিয়ে তারা আত্মসাৎ করা অর্থ, জমি ও ফ্ল্যাট ফিরে পাবে।
আরও খবর পড়ুন:
বিশ্বজুড়ে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ নিরাপদ হলেও দেশের পরিস্থিতি ভিন্ন। এ খাতে বিনিয়োগ করে মুনাফা দূরে থাক, মূলধন ফেরত পাওয়া নিয়েই দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে নতুন মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালা হচ্ছে। এই বিধিমালা অনুযায়ী, ভবিষ্যতে আর কোনো ক্লোজ এন্ড বা মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড বাজারে আসতে দেওয়া
৮ ঘণ্টা আগেনিরাপদ ও স্বস্তিকর ব্যবসার পরিবেশ দাবি করেছেন দেশের গাড়ি ব্যবসায়ীরা। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন গাড়ি বিক্রয়কেন্দ্রে চাঁদাবাজি ও হামলার ঘটনা ঘটছে, কিন্তু অপরাধীরা ধরা পড়ছে না। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আগামী মাস থেকে গাড়ি ছাড়, নিবন্ধন ও সরকারকে রাজস্ব প্রদান বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দ
১০ ঘণ্টা আগেআগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে প্রশাসনিক ব্যস্ততা বাড়বে, মাঠের কাজে মনোযোগ কমবে, এমন আশঙ্কা থেকেই সরকার এবার আগেভাগে পদক্ষেপ নিয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পের গতি ধরে রাখতে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা আরএডিপি প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে ছয় মাস আগেই।
১০ ঘণ্টা আগেদেশের বাজারে সোনার দাম নতুন ইতিহাস গড়ছে। সবশেষ আজ রোববার (১৯ অক্টোবর) রাতে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে সোনার দাম বাড়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। আগামীকাল সোমবার থেকে বাজুসের ঘোষিত নতুন দাম কার্যকর হবে। বাজুসের তথ্য অনুযায়ী, নতুন দরে প্রতি ভরিতে সোনার দাম বেড়েছে ১ হাজার ৫০ টাকা।
১২ ঘণ্টা আগে