Ajker Patrika

যমজ বোনের মরদেহ বাড়িতে, কান্নার লোক নেই

খাইরুল ইসলাম আকাশ, তালতলী (বরগুনা) 
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২১, ২১: ০৫
যমজ বোনের মরদেহ বাড়িতে, কান্নার লোক নেই

মা ও দাদির সঙ্গে লঞ্চে করে ঢাকা থেকে বরগুনা ফিরছিল যমজ দুই বোন লামিয়া ও সামিয়া। কিন্তু তাদের আর বাড়িতে জীবিত ফেরা হয়নি। সুগন্ধা নদীতে অভিযান-১০ লঞ্চে আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে কফিনে ফিরতে হয়েছে তাদের। কিন্তু বাড়ি পুরো খাঁ-খাঁ করছে। তাদের মৃত্যুতে শোকের মাতম করারও কোনো লোক নেই। 

আজ শনিবার সকালে জেলা প্রশাসন থেকে দুই বোনের মরদেহ শনাক্ত করা হয়।

যমজ দুই বোনের মা এখনো নিখোঁজ। মাকে হন্যে হয়ে খুঁজছেন তাদের বাবা। আর পঞ্চাশোর্ধ্ব দাদি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে প্রহর ঘুনছেন। বাড়িতে রয়েছেন শুধু তাদের সত্তরোর্ধ্ব বয়সী দাদা আব্দুল আজিজ। কান্না করতে করতে তাঁর চোখের পানি শুকিয়ে গেছে। বাকরুদ্ধ হয়ে বাড়ির এক কোণে পড়ে আছেন তিনি।

জানা গেছে, আব্দুল আজিজের ছেলে রবিউল ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করেন। তাঁর দুই নাতনি তাঁর কাছেই থাকতেন। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে দুই নাতনি লামিয়া ও সামিয়া (৫), ছেলের বউ শিমু আক্তার (২৬) এবং স্ত্রী দুলু বেগম (৫৫) ঢাকা থেকে বরগুনা আসছিলেন। তারা অভিযান-১০ লঞ্চে উঠেছিলেন বলে জানতে পারেন আবদুল আজিজ। এরপর খবর পান লঞ্চে আগুন লেগেছে। ওই আগুনে আব্দুল আজিজের দুই নাতনি পুড়ে মারা গেছেন। তাঁর ছেলের বউকে খুঁজে পাচ্ছেন না। স্ত্রী বরিশালের হাসপাতালে ভর্তি। 

সরেজমিনে আবদুল আজিজের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, দুই নাতনি হারানোর শোকে পাথর হয়ে গেছেন তিনি। বাড়ির উঠানে নাতনিদের মরদেহ এলে কিছুই বলতে পারছেন না। আশপাশের লোকজন এসে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

এদিকে যমজ দুই বোনের মরদেহ দেখতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজবি উল কবির জোমাদ্দার আবদুল আজিজের বাড়িতে যান। এ সময় আজিজের পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি। 

উল্লেখ্য, এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বরগুনা জেলা প্রশাসনের কাছে ৩৭টি মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ৭ জনের মরদেহ শনাক্ত করে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে জেলা প্রশাসন। বাকি ৩০ জনের মরদেহের বেলা ১১টার দিকে গণজানাজা পড়ানো হয়। জানাজার পরে আরও ৩ জনের মরদেহ শনাক্ত করে তাদের পরিবার। এই ৩ জনের মরদেহও পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাকি ২৭ জনকে পৌরসভার পোটকাখালী কবরস্থানে দাফন করা হয়।

জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ৩০ জনের জানাজা পড়ানো হয়। পরে তিনটি মরদেহ তাদের পরিবার শনাক্ত করলে সেগুলো এখানে (পোটকাখালী কবরস্থান) দাফন করা হয়নি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মুসলিম থেকে খ্রিষ্টান হওয়া ইরানি নারী এখন পানামার জঙ্গলে

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত