Ajker Patrika

শাড়ি

নুসরৎ নওরিন
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২২: ১৪
শাড়ি

‘বৃষ্টি হলেই আমার একজনের কথা মনে পড়ে।’ 
‘বিশেষ কেউ?’
লোকটা এক মুহূর্ত চিন্তা করল। যেন বিশেষ কেউ কি না—এ ব্যাপারে নিশ্চিত সিদ্ধান্তে আসতে পারছে না। তারপর দ্বিধা কাটিয়ে বলল, ‘হ্যাঁ, বিশেষ তো অবশ্যই... বৃষ্টির মতো সুন্দর সময়ে কারও কথা মনে পড়লে সে তো বিশেষই, তাই না?’
আমি বুঝতে পারলাম না, শেষের কথাটায় আমার অনুমোদন জরুরি কেন। তবু ভদ্রতাবশত হালকা মাথা ঝাঁকালাম।

লোকটা বলল, ‘তবে যতটা বিশেষ হয়ে উঠতে পারত, শেষমেশ তা হয়নি। আমিই হতে দিইনি। সত্যি বলতে কি, আমার জীবনে সবচেয়ে বিশেষ মানুষ হওয়ার কথা ছিল তারই।’

কী বলা উচিত বুঝলাম না। বলাটা জরুরিও মনে হলো না। কারণ, লোকটা কথা চালিয়ে যাচ্ছে মোটামুটি একাই। পেটে তিন পেগ পড়াটাই হয়তো কারণ। অনেক চাপা স্বভাবের লোকও দু-তিন পেগের পর বেশ দিলখোলা হয়ে ওঠে। জীবনের সব গল্প বলে দিতে চায়। অন্যদিকে, হাসিখুশি কেউ কেউ মুখে কঠিন কুলুপ এঁটে বসে থাকে। এই অভিজ্ঞতা প্রথম নয়।

আমি যা ভেবেছিলাম তা হলো না অবশ্য। লোকটা গড়গড় করে সেই বিশেষ মানুষের প্রসঙ্গে গেল না, বরং গ্লাসের দিকে স্বপ্নময় চোখে তাকিয়ে থাকল। একসময় গুনগুন করে পরিচিত একটা গানের সুর ভাজতে লাগল। মনে হলো, গ্লাসের মধ্যে কোনো মুখ দেখা যাচ্ছে। সেদিকে তাকিয়েই গান। অনেকটা ‘এক ঘর বানাউঙ্গা তেরে ঘরকে সামনে’র মতো।

লোকটা কী সুর ভাজছিল, এখন আমার ঠিক মনে পড়ছে না। তবে এটুকু মনে আছে, জানালার কাচে বৃষ্টির ফোঁটা ধীরে ধীরে নামছিল। ঠান্ডা আবহাওয়া। পরদিন ছুটি। কাজের তাড়া নেই। সব মিলিয়ে সেই বিকেলে পৃথিবীটাকে খুব শান্ত, সুন্দর মনে হচ্ছিল।

একসময় গুনগুন থামিয়ে বলল, ‘বৃষ্টি হলেই মনে হয় মেয়েটা ওই শাড়িটা পরেছে... ও বলত, ওই শাড়িটা ও যেদিন পরে, সেদিনই বৃষ্টি নামে।’
আমি কিছু বললাম না। পৃথিবীতে কত পাগল আছে! এ কথা যখন ভাবছি, তখনই লোকটা বলল, ‘আমিও আপনার মতো কথাটা শুনে প্রথম ওকে পাগল ভেবেছিলাম। তবে তত দিনে আমাদের সম্পর্কটা অনেক দূর এগিয়ে গেছে।

আপনি থেকে তুমিতে নেমে গেছি। তাই পাগল ভাবলেও সেটাকে খুব বেশিক্ষণ মনের মধ্যে জায়গা দিইনি। তার পরও খেয়াল না করে উপায় ছিল না যে ব্যাপারটা উদ্ভট।’

কথাটা বলে লোকটা একটা চুমুক দিয়ে আবার গ্লাসের দিকে তাকিয়ে থাকল। আমি পরের কথাটা শোনার অপেক্ষায় তাকিয়ে থাকলাম। লোকটা যেন ভুলেই গিয়েছিল। বলল, ‘ওহ, হ্যাঁ... আচ্ছা। এরপর... আমি তো কথাটা হেসে উড়িয়ে দিলাম। ও বেশ সিরিয়াস হয়ে গেল। বলল, আমার কথার গুরুত্ব দিচ্ছ না তুমি। তোমাকে প্রমাণ করে দেখাব।’

আমি কৌতূহলী হয়ে বললাম, ‘প্রমাণ করতে পেরেছিল?’

‘এগুলো কী প্রমাণ হয় রে ভাই? একটা আজগুবি ক্লেইম। কয়েক দিন সকালে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় নিজের ছবি পাঠাল। প্রতিটা ছবিতে ওই ছাইরঙা শাড়িটা পরা। অফিসে বসা। ওই দিনগুলোতে দুপুরের দিকে ঘন বৃষ্টি নেমেছে। সকালে বৃষ্টির ছিটেফোঁটা ছিল না। ওই মাসের অন্য দিনগুলোতে বৃষ্টি হয়নি, তা না। হয়েছে। কিন্তু ওর কথা হলো, ও যেদিন শাড়িটা পরেছে, সেদিন অবশ্যই বৃষ্টি হয়েছে, মিস হয়নি।’

‘তাহলে তো প্রমাণ হয়েই গেল।’
‘হা হা হা। তাতে প্রমাণ হয় না মোটেই। শাড়িটা পরা অবস্থায়ও ওর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। আমি হাত দিয়ে ধরে দেখেছি। হিসাব করে দেখেছি, ব্যাপারটা খুব সোজা। অরণি, মানে আমার সেই প্রেমিকার নাম অরণি। অরণির অফিসে শাড়ি হলো ফরমাল ড্রেস। সপ্তাহে চার দিন শাড়ি পরতে হয়। জুলাই, আগস্ট মিলিয়ে পাঁচ দিন শাড়িটা পরেছিল ও। ওই কদিনই রাত থেকে প্রচণ্ড গরম পড়েছিল। ভ্যাপসা গরম। বাতাসে প্রচুর আর্দ্রতা।

ওর অন্য শাড়িগুলোর তুলনায় ওই শাড়িটা খুব মিহি, আরামদায়ক। গরমে কমফোর্টেবল বলেই ও বেছে বেছে ওটা পরত। ওই রকম ওয়েদারে বৃষ্টি নামাটাই স্বাভাবিক।’

‘ওহ। ...তো, আপনি কী করলেন? কথাটা তাকে বললেন?’
‘প্রথমেই বলিনি। প্রথম প্রথম মজা করতাম। বলতাম, অরণি, আজ খুব গরম পড়েছে। তোমার বেদেনী শাড়িটা পর তো!’
‘বেদেনী?’

‘ওহ। বলা হয় নাই, তাই না? বেদেনী শাড়ি বলার কারণ, শাড়িটা কেনার ইতিহাস ছিল। তখন নতুন নতুন অফিসে জয়েন করেছে। আলমারিতে তত শাড়ি নেই। যেখানেই যায়, শাড়ি কেনে। এই সময়েই ফুটপাতে একদিন এক বেদেনীর সঙ্গে দেখা। সাপের খেলা দেখাচ্ছিল, সঙ্গে ছোট একটা বাচ্চা... অন্য গল্পে চলে যাচ্ছি, ভাই। আসলে অরণির এত গল্প জমা আমার কাছে! গল্পগুলো কাউকে বলা হয় নাই।’

সেই মুহূর্তে লোকটাকে খুব দুঃখী মনে হলো আর অ্যালকোহলের প্রভাবেই মনে হয় আমি একটা বেমানান উত্তর দিলাম। থেমে থেমে বললাম, ‘আমাকে বলতে পারেন। আমি খুব...ভালো...শুনতে পারি।’

কী যেন চিন্তা করে নিয়ে লোকটা একটা নিশ্বাস ফেলল। তারপর বলল, ‘কথাগুলো ওকে বললাম। হ্যাঁ। তবে... আসলে এত খোলাখুলি না বললেও পারতাম।

কষ্ট পেল, কেঁদে ফেলল। ইগোতে লেগেছিল তো! তারপর একসময় শান্ত হলো। বলল, মন থেকে যেদিন ইচ্ছা হয় সেদিনই সে শাড়িটা পরে। আমি বোঝালাম, মন সেদিনই চায়, যেদিন সত্যি খুব গরম পড়ে। বৃষ্টির সঙ্গে গরমের সম্পর্ক থাকতে পারে, শাড়ির না। জিজ্ঞেস করলাম, ‘তুমি কি কখনো শীত কিংবা সুদিং ওয়েদারে শাড়িটা পরেছ?’ সে একটু চিন্তাভাবনা করে উত্তর দিল, ‘না।’

‘যাই হোক। সেবারের মতো ব্যাপারটা মিটমাট হলো। কারণ, অরণি খুব ইজিগোয়িং মেয়ে ছিল। তাই সব স্বাভাবিক হয়ে এল। কয়েক দিন পর আমরা আউটিংয়ের একটা প্ল্যান করলাম। প্ল্যানটা তারই। বলল, “আসো পূজার ছুটিতে একদিন আমরা সারা দিন নৌকায় ঘুরব। চরের দোকানে চা খাব। বালুতে গড়াগড়ি দেব, সাঁতার কাটব। ব্যাগে কাপড়-চোপড় নিয়ে যাব। পোলাপানের মতো যা মনে আসে করব...।”’

প্রাপ্তবয়স্ক দুজন প্রেমিক-প্রেমিকা পোলাপানের মতো কী করতে পারে ভাবতে ভাবতে বললাম, ‘তারপর?’
‘ঘোরা হয় নাই, ভাই।’
‘কেন?’
‘সেদিন ওয়েদার নরমাল ছিল। অক্টোবরের ৩ তারিখ। বাতাসে হিউমিডিটি নাই। গরম নাই। বৃষ্টির কোনো ফোরকাস্ট নাই। সকালে দুজন রেডি হয়ে বের হব, তখন অঝোরধারায় বৃষ্টি নামতে শুরু করল। সেই বৃষ্টি থামাথামির কোনো খবর নাই। বাসার সামনে নৌকা চালানোর মতো পানি জমে গেল। অরণির বাসার অবস্থা আরও খারাপ। এত বৃষ্টিতে কেন সে বাইরে যাবে, সেই প্রশ্নের কোনো যুক্তিসংগত উত্তর নাই। আমার সঙ্গে যখন ফোনে কথা হলো, তখন জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কি আজ ওই শাড়িটা পরেছ? অরণি বলল, “হ্যাঁ।”’
‘বাহ!’
‘হুমম...তবে শাড়ির সঙ্গে এটার কোনো সম্পর্ক নাই। আশ্বিন মাসে ঝড়বৃষ্টি খুব সাধারণ ব্যাপার।’
‘আচ্ছা... তারপর? আরেক দিন ছুটি কাটালেন আপনারা?’

‘না। আমাদের আর একসঙ্গে কোনো দিন কাটানো হয় নাই। পরপর কয়েকটা ডেট ক্যানসেল হওয়ার পর একসময় প্রেমটাই ভেঙে যায়।’ কথাটা বলে লোকটা আবার কিছু একটা নিয়ে গভীর ভাবনায় ডুবে গেল। তারপর বলল, ‘আসলে কী জানেন? জীবনে আমরা ম্যাজিক্যাল ব্যাপার-স্যাপার আশা করি।

কিন্তু সত্যিকারের ম্যাজিক্যাল ব্যাপার-স্যাপার আমাদের হজম হয় না। অরণির শাড়ির ব্যাপারটা আমার মধ্যে একটা অস্বস্তি তৈরি করেছিল। আধ্যাত্মিকতার প্রতি ওর খুব ঝোঁক ছিল। আমাকেও ও নিজের জীবনে বিরাট একটা প্রাপ্তি মনে করত। হরোস্কোপ নিয়ে মেতে থাকত। এগুলো যে আমার খুব ভালো লাগত, তা না।’

আমি বুঝতে পারলাম না কেউ কাউকে প্রাপ্তি মনে করলে এমন কী সমস্যা। লোকটা তখন বলছে, ‘...কিন্তু আমি অরণিকে খুব মিস করি। বৃষ্টি হলেই গত পাঁচ বছর ধরে প্রথমে আমার মাথায় যে জিনিসটা কাজ করে সেটা হলো, অরণি কি আজ ওই শাড়িটা পরেছে? আরও অনেক কথা মাথায় আসে। বিশেষ করে...’ 
আমি অপেক্ষায় থাকি। ‘বিশেষ করে’ কথাটা লোকটা আর শেষ করে না। সেদিন সারা সন্ধ্যা আর কোনো কথা হয়নি আমাদের। তার সঙ্গে ওই দিনের আগে আমার মাত্র এক বা দুবার দেখা হয়েছিল। এরপর আর দেখা হয়নি। কিন্তু আমার মাথায় অরণি নামের একটা মেয়েকে ঢুকিয়ে দিয়ে গেছে সে। এখন বৃষ্টি হলেই আমি একটা মেঘরং শাড়ি পরা মেয়ের কথা ভাবি। তার মুখ অবশ্য দেখতে পাই না। 

পৃথিবী ঠান্ডা হয়ে আসা দিনগুলোতে ভাবি, এই বৃষ্টিটা কার? মেঘের, নাকি অরণির? আরও ভাবি, মানুষ প্রেমের মতো যাদুকরি জিনিস পেয়েও কী সব তুচ্ছ কারণে তাকে দূরে ঠেলে দেয়!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গবেষণায় বেরিয়ে এল আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’র গল্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।

প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।

কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।

জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’

গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।

ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলারের ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। ছবি: দ্য ন্যাশনাল
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলারের ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। ছবি: দ্য ন্যাশনাল

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’

মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’

মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান। ছবি: সংগৃহীত
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান। ছবি: সংগৃহীত

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।

রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।

মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’

১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ। ছবি: সংগৃহীত
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ। ছবি: সংগৃহীত

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।

মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।

নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।

বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল যেন তাঁর দীর্ঘ কোনো বাক্যের সমাপ্তি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
লাসলো ক্রাসনাহোরকাই। ছবি: সংগৃহীত
লাসলো ক্রাসনাহোরকাই। ছবি: সংগৃহীত

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।

সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।

১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।

তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।

ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।

তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।

২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।

চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।

তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের কলম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ০০: ১০
সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের কলম

হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

আধুনিক হাঙ্গেরীয় সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব লাসলো। অভিনব শৈলীর পাশাপাশি দার্শনিক গভীরতার জন্য তাঁর সাহিত্য সমাদৃত হয়েছে। তাঁকে ফ্রানৎস কাফকা ও স্যামুয়েল বেকেটের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের মধ্যেও শিল্পের লেলিহান ঔজ্জ্বল্য ফুটে ওঠে লাসলোর লেখায়। তাই যুদ্ধবিধ্বস্ত সময়ের বুকে ফুলের মতো স্থান করে নিল তাঁর সাহিত্য।

লাসলোর জন্য সাহিত্যে এটা প্রথম পুরস্কার নয়, ২০১৪ সালে সাহিত্যকর্মের জন্য ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার পান তিনি। এ পুরস্কার বিশ্বসাহিত্যে তাঁর অবস্থানকে সুদৃঢ় করে।

লাসলোর সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো—স্বতন্ত্র শৈলী ও গঠন। উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হলো—মানবতার অবক্ষয়, ধ্বংসের অনিবার্যতা ও আধুনিক জীবনের লক্ষ্যহীন চলন। তাঁর চরিত্রদের মধ্যে প্রায়ই একধরনের হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা দেখা যায়; তারা এমন এক জগতের পথিক, যেখানে নৈতিকতা ও আশা বিলীনপ্রায়।

১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ‘স্যাটানটাঙ্গো’ নামে প্রথম উপন্যাস লিখেই খ্যাতি পান লাসলো। এই উপন্যাসে বিচ্ছিন্ন ও পতিত এক কৃষি সমবায় গ্রামের জীবন তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে একধরনের বিভ্রম ও আশার জন্ম দেয় এক রহস্যময় আগন্তুকের আগমনে। এই উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে সাত ঘণ্টার কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন বিখ্যাত পরিচালক বেলা টর।

লাসলোর আরেকটি ফিকশন উপন্যাস হলো— ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’। হাঙ্গেরির এক কাল্পনিক শহরের জীবন ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। সামুদ্রিক প্রাণী হাঙরের প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যকার উন্মাদনা, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও একনায়কতন্ত্রের উত্থানের চিত্র আঁকা হয়েছে তাতে।

‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ লাসলোর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস। লম্বা লম্বা বাক্যে লেখা এই উপন্যাস লাসলোর শৈলী নিয়ে পাঠকদের নতুন করে ভাবায়। উপন্যাসের নায়ক একটি পাণ্ডুলিপি রক্ষা করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়ায়। বিশ্বের চূড়ান্ত ধ্বংসের একটি কাব্যিক বর্ণনা পাওয়া যায় এই উপন্যাসে।

এবার লাসলোকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার নেপথ্যে নোবেল কমিটির বড় কারণ ছিল তাঁর সাহিত্যে শিল্পের জয়ধ্বনি তোলার প্রচেষ্টা। যখন সারা বিশ্বের বেশ কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত বা যুদ্ধের জন্য উৎসুক, তখন বারবার শিল্পের মোহিনী প্রেম ও বন্ধনের কথা মনে করিয়ে দিতে চায় লাসলোর সাহিত্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত