অনলাইন ডেস্ক
১৯৭৭ সালের মে মাসে চীনে এক ঐতিহাসিক সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ঘটে। দীর্ঘ এক দশকের নিষেধাজ্ঞার পর উইলিয়াম শেকসপিয়ারের সাহিত্যকর্মের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় কমিউনিস্ট সরকার। এই সিদ্ধান্ত শুধু সাহিত্যের স্বাধীনতার ইঙ্গিতই ছিল না, বরং সাংস্কৃতিক বিপ্লব-পরবর্তী চীনের নতুন দৃষ্টিভঙ্গিরও প্রতিফলন বলে মনে করেন অনেকে।
১৯৬৬ সালে কমিউনিস্ট নেতা মাও সেতুং চীনে সাংস্কৃতিক বিপ্লব শুরু করেন। এর উদ্দেশ্য ছিল কমিউনিজমের প্রতি জনগণের আস্থা ও উৎসাহ ফিরিয়ে আনা। তাঁর স্ত্রী চিয়াং চিংকে চীনের অনানুষ্ঠানিক সংস্কৃতি সচিব হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে বাস্তবে এই সাংস্কৃতিক বিপ্লব হয়ে ওঠে দমন-পীড়নের এক হাতিয়ার। সরকারের আদর্শের সঙ্গে না মিললেই রাষ্ট্রবিরোধী আখ্যা দিয়ে বহু লেখককে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে যেসব গান, সাহিত্য, চলচ্চিত্রে এমন মতাদর্শের ইঙ্গিত থাকে যা কমিউনিস্ট আদর্শ থেকে বিচ্যুতি বলে সরকারের মনে হতো, সেগুলো নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। যেসব শিল্প-সাহিত্য সরকারের মতাদর্শে পুরোপুরি খাপ খেত না, সেগুলো কঠোরভাবে দমন করা হতো। সেই নিষিদ্ধের তালিকায় ছিলেন শেকসপিয়ারের মতো সাহিত্যিকও।
তখন সামগ্রিকভাবে পশ্চিমা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও শিল্পকর্মকে ‘বুর্জোয়া’ ও ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ বলে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ করা হয় চীনে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই শেকসপিয়ারের সব সাহিত্যকর্ম—যেমন হ্যামলেট, ম্যাকবেথ, রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট, ওথেলো ইত্যাদি—চীনে নিষিদ্ধ হয়, কারণ সেগুলোতে চীনা কমিউনিস্ট আদর্শের ‘সঠিক রাজনৈতিক বার্তা’ ছিল না।
তাই শেকসপিয়ার নিষিদ্ধ হয়েছিলেন মূলত তাঁর পশ্চিমা পরিচয় এবং লেখায় মানবিক, ব্যক্তিকেন্দ্রিক, নৈতিক দ্বন্দ্ব ও ভালোবাসার মতো ‘অরাজনৈতিক’ বা ‘বিপজ্জনক’ ভাবনার কারণে, যা সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় চীনা কমিউনিস্ট নীতিবিরোধী বলে বিবেচিত হতো।
তবে সময়ের পরিক্রমায় চীন বুঝতে পারে, পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছাড়া তাদের ভবিষ্যৎ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। বাণিজ্যের পথ খুলতে এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবিলায় তারা কূটনৈতিকভাবে আরও উদার হতে চায়। এই পটভূমিতেই ১৯৭২ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের ঐতিহাসিক চীন সফর হয়, যা পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে চীনের সম্পর্কোন্নয়নে মাইলফলক হয়ে ওঠে।
সাংস্কৃতিক বিপ্লবের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তির এক বছর পর, ১৯৭৭ সালের আজকের এই দিনে (২৫ মে) শেকসপিয়ারের সাহিত্যকর্মের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা আসে। এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে জানানো হয়, তাঁর রচনাবলি খুব শিগগিরই চীনা ভাষায় অনুবাদ করে প্রকাশ করা হবে।
শেকসপিয়ারের প্রতি এই নতুন দৃষ্টিভঙ্গি শুধু পশ্চিমাদের সঙ্গে সেতুবন্ধন গড়ার কৌশল ছিল না, বরং চীনের নিজস্ব সাংস্কৃতিক দর্শনে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ও বটে। এটি মূলত একটি প্রতীকী ঘোষণা ছিল। যার বার্তা ছিল—চীন আর আগের মতো রুদ্ধদ্বার নয়, বরং বিশ্ব-সাহিত্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে আবারও যুক্ত হতে চায় তারা।
১৯৭৭ সালের মে মাসে চীনে এক ঐতিহাসিক সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ঘটে। দীর্ঘ এক দশকের নিষেধাজ্ঞার পর উইলিয়াম শেকসপিয়ারের সাহিত্যকর্মের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় কমিউনিস্ট সরকার। এই সিদ্ধান্ত শুধু সাহিত্যের স্বাধীনতার ইঙ্গিতই ছিল না, বরং সাংস্কৃতিক বিপ্লব-পরবর্তী চীনের নতুন দৃষ্টিভঙ্গিরও প্রতিফলন বলে মনে করেন অনেকে।
১৯৬৬ সালে কমিউনিস্ট নেতা মাও সেতুং চীনে সাংস্কৃতিক বিপ্লব শুরু করেন। এর উদ্দেশ্য ছিল কমিউনিজমের প্রতি জনগণের আস্থা ও উৎসাহ ফিরিয়ে আনা। তাঁর স্ত্রী চিয়াং চিংকে চীনের অনানুষ্ঠানিক সংস্কৃতি সচিব হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে বাস্তবে এই সাংস্কৃতিক বিপ্লব হয়ে ওঠে দমন-পীড়নের এক হাতিয়ার। সরকারের আদর্শের সঙ্গে না মিললেই রাষ্ট্রবিরোধী আখ্যা দিয়ে বহু লেখককে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে যেসব গান, সাহিত্য, চলচ্চিত্রে এমন মতাদর্শের ইঙ্গিত থাকে যা কমিউনিস্ট আদর্শ থেকে বিচ্যুতি বলে সরকারের মনে হতো, সেগুলো নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। যেসব শিল্প-সাহিত্য সরকারের মতাদর্শে পুরোপুরি খাপ খেত না, সেগুলো কঠোরভাবে দমন করা হতো। সেই নিষিদ্ধের তালিকায় ছিলেন শেকসপিয়ারের মতো সাহিত্যিকও।
তখন সামগ্রিকভাবে পশ্চিমা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও শিল্পকর্মকে ‘বুর্জোয়া’ ও ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ বলে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ করা হয় চীনে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই শেকসপিয়ারের সব সাহিত্যকর্ম—যেমন হ্যামলেট, ম্যাকবেথ, রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট, ওথেলো ইত্যাদি—চীনে নিষিদ্ধ হয়, কারণ সেগুলোতে চীনা কমিউনিস্ট আদর্শের ‘সঠিক রাজনৈতিক বার্তা’ ছিল না।
তাই শেকসপিয়ার নিষিদ্ধ হয়েছিলেন মূলত তাঁর পশ্চিমা পরিচয় এবং লেখায় মানবিক, ব্যক্তিকেন্দ্রিক, নৈতিক দ্বন্দ্ব ও ভালোবাসার মতো ‘অরাজনৈতিক’ বা ‘বিপজ্জনক’ ভাবনার কারণে, যা সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় চীনা কমিউনিস্ট নীতিবিরোধী বলে বিবেচিত হতো।
তবে সময়ের পরিক্রমায় চীন বুঝতে পারে, পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছাড়া তাদের ভবিষ্যৎ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। বাণিজ্যের পথ খুলতে এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবিলায় তারা কূটনৈতিকভাবে আরও উদার হতে চায়। এই পটভূমিতেই ১৯৭২ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের ঐতিহাসিক চীন সফর হয়, যা পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে চীনের সম্পর্কোন্নয়নে মাইলফলক হয়ে ওঠে।
সাংস্কৃতিক বিপ্লবের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তির এক বছর পর, ১৯৭৭ সালের আজকের এই দিনে (২৫ মে) শেকসপিয়ারের সাহিত্যকর্মের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা আসে। এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে জানানো হয়, তাঁর রচনাবলি খুব শিগগিরই চীনা ভাষায় অনুবাদ করে প্রকাশ করা হবে।
শেকসপিয়ারের প্রতি এই নতুন দৃষ্টিভঙ্গি শুধু পশ্চিমাদের সঙ্গে সেতুবন্ধন গড়ার কৌশল ছিল না, বরং চীনের নিজস্ব সাংস্কৃতিক দর্শনে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ও বটে। এটি মূলত একটি প্রতীকী ঘোষণা ছিল। যার বার্তা ছিল—চীন আর আগের মতো রুদ্ধদ্বার নয়, বরং বিশ্ব-সাহিত্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে আবারও যুক্ত হতে চায় তারা।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তর হয়ে রক্তক্ষয়ী জুলাই গণ-অভ্যুত্থান, বিপ্লবী—এই পথপরিক্রমায় যাঁর কবিতা মুক্তিকামী গণমানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে, তিনি সবুজের কবি আল মাহমুদ। দ্রোহ, প্রেম, প্রকৃতি ও প্রার্থনার কবি আল মাহমুদের ৯০তম জন্মদিন আজ শুক্রবার (১১ জুলাই)।
৪ দিন আগেপৃথিবীর বিস্ময় ডোনাল্ড ট্রাম্প। জীবনে হননি কী! তিনবারের স্বামী, পাঁচবার বাবা, কয়েকবার বিলিয়নিয়ার, দুবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও হাজারো টুইটের কবি। কিন্তু এত প্রাপ্তির মাঝেও রয়ে গেছে এক শূন্যতা। তাঁর ঝুলিতে এখনো নেই নোবেল শান্তি পুরস্কার। ‘হিংসুটে’ নোবেল কমিটির কারণেই তাঁর জীবনে আজও এই অপ্রাপ্তি।
৫ দিন আগেবাংলা সাহিত্যের নক্ষত্র, নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৩৫টি হাতে লেখা চিঠি ও ১৪টি খাম আগামী সপ্তাহে নিলামে উঠছে। এর আনুমানিক মূল্য ধরা হয়েছে ৫-৭ কোটি রুপি। মূল্য ও ব্যাপ্তির দিক থেকে কবির সৃষ্টিকর্মের সবচেয়ে বড় নিলাম হতে চলেছে এটি। এই ঐতিহাসিক নিলামটি ২৬-২৭ জুন অনলাইনে আয়োজন করবে মুম্বাইভিত্তিক
২৩ দিন আগেকবি নজরুল ইসলামের বহুল পরিচিতি ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে, কিন্তু নজরুল উঁচুমার্গের ‘সাম্যবাদী কবি’ও বটেন। নজরুলের সাম্যচিন্তা তাঁর জীবনের বাস্তবতা থেকে উদ্ভূত। তাঁর শৈশব-কৈশোরের জীবন-অভিজ্ঞতা, তাঁর যৌবনের যাপিত জীবন তাঁকে বাস্তব পৃথিবীর দারিদ্র্য, অসমতা ও অসাম্যের সঙ্গে পরিচিত করেছে অত্যন্ত নগ্নভাবে...
২৫ মে ২০২৫