Ajker Patrika

তৃতীয় মেয়াদে সি পড়বেন যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে

এএফপি, বেইজিং
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২৩, ০৯: ৫৪
তৃতীয় মেয়াদে সি পড়বেন যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে

রেকর্ড ভেঙে তৃতীয় মেয়াদের জন্য চীনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন সি চিন পিং। গতকাল শুক্রবার চীনের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের (এনপিসি) প্রায় তিন হাজার সদস্যের সবাই ‘গ্রেট হল অব দ্য পিপলে’ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সির পক্ষে ভোট দেন। এর মধ্য দিয়ে ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পাশাপাশি তিনি পার্লামেন্ট সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে তৃতীয় মেয়াদের জন্য দেশটির কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হন। তবে এখন তাঁর সামনে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান।

মন্থর অর্থনীতি 
এসব চ্যালেঞ্জের শীর্ষে থাকছে অর্থনীতির ধারাবাহিকতা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী পাঁচ বছরে চীনের অর্থনীতির গতি হবে ধীর।  
গত তিন বছরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিটি মাত্র ৩ শতাংশ বেড়েছে। ২০২৩ সালের জন্য বেইজিং প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে কেবল ৫ শতাংশ, যা কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম।

এদিকে সরকারি শীর্ষ পদে সির অনুগতদের নিয়ে আসার বিষয়টি ইঙ্গিত দেয় যে এত দিন অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়ায় ভূমিকা রাখা উদারবাদীদের দিন শেষ। আবার ভারী শিল্প ও বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ওপর তাঁর খড়্গহস্ত হওয়ার বিষয়টি ইঙ্গিত দেয়, ব্যক্তি খাতের বিকাশের চেয়ে আগামী দিনে আরও রাষ্ট্রচালিত কৌশল বজায় রাখা হবে। 

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা 
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যকার সম্পর্কের ধারাবাহিক অবনমন ঘটে চলেছে। বাণিজ্য, মানবাধিকার, কোভিড-১৯ ভাইরাসের উৎপত্তিসহ বেশ কিছু বিষয়ে দুই দেশই বর্তমানে বিবদমান অবস্থানে রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে চীনা বেলুনের ইস্যুতে গত মাসে একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন তাঁর পরিকল্পিত বেইজিং সফর বাতিল করেন। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, বেলুনটি নজরদারির উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছিল। তবে বেইজিং তা তীব্রভাবে অস্বীকার করেছে।

তার পর থেকেই চীনা কূটনীতিকেরা ধারাবাহিকভাবে মার্কিনবিরোধী সমালোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে এ সপ্তাহে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন, ওয়াশিংটন অবস্থান না বদলালে এই পারস্পরিক সংঘাত বিপর্যয়কর পরিণামের দিকে এগোবে।

তাইওয়ান ইস্যু
তাইওয়ানের সঙ্গে চীনের উত্তেজনা বেড়ে চলছে। এই প্রেক্ষাপটে সি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, বেইজিংয়ের স্বশাসিত গণতান্ত্রিক দ্বীপটি দখল করার দীর্ঘস্থায়ী উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণ করার এটিই সঠিক সময়।

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি গত বছর তাইওয়ান সফর করেছিলেন। এ সফরকে কেন্দ্র করে দ্বীপটির চারপাশে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়ার আয়োজন করা হয়েছিল।

এ ছাড়া গত অক্টোবরে কমিউনিস্ট পার্টির গঠনতন্ত্রে প্রথমবারের মতো তাইওয়ানের স্বাধীনতার বিরোধিতার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর মানে তাইওয়ানে আক্রমণ চালাতেও পিছপা হবে না বেইজিং। 

মানবাধিকার 
সির অধীনে চীনে নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলো প্রায় উবে গেছে। এসব সংগঠনের অনেক কাজ বাইরে স্থানান্তরিত হয়েছে। দেশটিতে সরকারের বিরোধিতা প্রায় রুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

অধিকারবিষয়ক কর্মীরা বলছেন, পশ্চিমের জিনজিয়াং প্রদেশে ১০ লাখের বেশি উইঘুর মুসলিমসহ সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে বন্দী করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য কিছু পশ্চিমা দেশের আইনপ্রণেতারা এটিকে ‘গণহত্যার’ সঙ্গে তুলনা করেছেন। কাজেই মানবাধিকারের উন্নতিও সির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত