আন্তর্জাতিক নারী
ফিচার ডেস্ক
সুতার নাম কেভলার। সুতি বা কটন, রেশম, রেয়ন ইত্যাদি সুতার কথা আমরা জানি। সেগুলো দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ধরনের পোশাক ব্যবহারও করি। কিন্তু কেভলার? না, সাধারণ মানুষ এই সুতায় তৈরি পোশাক ব্যবহার করে না। বিশেষ অবস্থার জন্য বিশেষ ধরনের পোশাক তৈরিতেই শুধু এই কেভলার ফাইবার ব্যবহার করা হয়।
বুলেটপ্রুফ ও ফায়ারপ্রুফ জ্যাকেটের কথা এখন আমরা সবাই জানি। সাধারণত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা বুলেটপ্রুফ আর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ফায়ারপ্রুফ অর্থাৎ আগুন প্রতিরোধী পোশাক পরেন। জীবন বাঁচাতে এই দুই ধরনের জ্যাকেট বিশেষ অবস্থায় ব্যবহার করা হয়। এই সুরক্ষা আবরণগুলো তৈরিতে ব্যবহার করা হয় কেভলার ফাইবার বা সুতা।
যে বিজ্ঞানীর ল্যাবে এই সুতা আবিষ্কার করা হয়েছিল, তাঁর নাম স্টেফানি লুইস।
একটি বিশ্বযুদ্ধের দুঃসহ স্মৃতি, অভিবাসনের যন্ত্রণাময় অভিজ্ঞতা ও বিজ্ঞানপ্রীতি—একজীবনে এই তিন অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ ছিল স্টেফানির জীবন। ফলে মানুষের জীবন বাঁচানোর এক প্রবল প্রচেষ্টা ছিল তাঁর। সে কারণেই তিনি আবিষ্কার করেছিলেন এই কেভলার সুতা, যা দিয়ে পরবর্তী সময়ে তৈরি করা হয় বুলেটপ্রুফ ও ফায়ারপ্রুফ পোশাক।
১৯২৩ সালের ৩১ জুলাই, পোল্যান্ডে জন্ম স্টেফানি লুইসের। তাঁর মূল নাম স্টেফানি কোয়ালেক। বাবা ছিলেন একজন প্রকৃতিবিশারদ ও বইপ্রেমী। তাঁর কাছেই ছোটবেলায় স্টেফানি গাছপালা, পোকামাকড় ও প্রকৃতি সম্পর্কে জেনেছিলেন। বাবার অকালমৃত্যু এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে তাঁদের পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে বাধ্য হয়। মা চাইতেন, মেয়ে যেন নার্স হয়। তবে স্টেফানি হৃদয়ে পুষে রেখেছিলেন বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন। এই স্বপ্ন তাঁকে নিয়ে যায় কার্নেগি ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে, যা বর্তমান কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটি নামে পরিচিত। সেখানে তিনি রসায়নে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৪৬ সালে স্টেফানি যোগ দেন ডু পন্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠানে। শুরুতে এটি ছিল সাময়িক চাকরি। সে সময় তিনি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ষাটের দশকে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন কারণে উচ্চ শক্তি সহনশীল তন্তুর প্রয়োজন বাড়তে থাকে। সে সময় স্টেফানি একটি নতুন পলিমার তৈরির গবেষণায় নিযুক্ত হন। সে গবেষণা করতে গিয়েই একদিন তিনি তৈরি করে ফেলেন এমন এক ধরনের তন্তু, যা ছিল হালকা অথচ ইস্পাতের চেয়ে পাঁচ গুণ শক্তিশালী। তিনি এর নাম দেন পলি-প্যারাফেনিলিন টেরেফথালামাইড। এই বিশেষ ফাইবার বা তন্তুই হলো কেভলার।
কেভলার আবিষ্কারের আগে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট তৈরি করা ছিল দুরূহ ও কঠিন কাজ। কিন্তু হালকা এবং দৃঢ় এই নতুন তন্তু সে কাজ সহজ করে দিয়েছে। এর ফলে কেভলার দ্রুত পুলিশ, সেনা, ফায়ার সার্ভিস ও উদ্ধারকর্মীদের নিরাপত্তা সরঞ্জাম তৈরিতে অপরিহার্য হয়ে ওঠে। আজকের দিনে কেভলার শুধু বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটেই নয়, ব্যবহৃত হচ্ছে হেলমেট, আগুন প্রতিরোধী পোশাক, উচ্চ তাপ প্রতিরোধী কেব্ল ও গিয়ার, আকাশযান এবং গাড়ি নির্মাণে।
এই মহামূল্যবান তন্তুর আবিষ্কারক হিসেবে স্টেফানির পথ খুব মসৃণ ছিল না। পুরুষপ্রধান গবেষণার জগতে কাজ করে যেতে তাঁকে প্রতিনিয়ত প্রমাণ করতে হয়েছে নিজেকে। স্বীকৃতি হিসেবে তিনি পেয়েছেন অসংখ্য সম্মাননা। এগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ছিল ১৯৯৬ সালে পাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল মেডেল অব টেকনোলজি।
স্টেফানি লুইস বিয়ে করেননি। তিনি ২০১৪ সালে ৯০ বছর বয়সে মারা যান। আজকের এই যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীতে মানুষ হন্যে হয়ে খুঁজছে নিজের সুরক্ষা সরঞ্জাম। স্টেফানি লুইসের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর ক্ষেত্রে এর চেয়ে ভালো সময় আর কী হতে পারে।
সূত্র: ন্যাশনাল ইনভেন্টরস হল অব ফেম, সায়েন্টিফিক আমেরিকান
সুতার নাম কেভলার। সুতি বা কটন, রেশম, রেয়ন ইত্যাদি সুতার কথা আমরা জানি। সেগুলো দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ধরনের পোশাক ব্যবহারও করি। কিন্তু কেভলার? না, সাধারণ মানুষ এই সুতায় তৈরি পোশাক ব্যবহার করে না। বিশেষ অবস্থার জন্য বিশেষ ধরনের পোশাক তৈরিতেই শুধু এই কেভলার ফাইবার ব্যবহার করা হয়।
বুলেটপ্রুফ ও ফায়ারপ্রুফ জ্যাকেটের কথা এখন আমরা সবাই জানি। সাধারণত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা বুলেটপ্রুফ আর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ফায়ারপ্রুফ অর্থাৎ আগুন প্রতিরোধী পোশাক পরেন। জীবন বাঁচাতে এই দুই ধরনের জ্যাকেট বিশেষ অবস্থায় ব্যবহার করা হয়। এই সুরক্ষা আবরণগুলো তৈরিতে ব্যবহার করা হয় কেভলার ফাইবার বা সুতা।
যে বিজ্ঞানীর ল্যাবে এই সুতা আবিষ্কার করা হয়েছিল, তাঁর নাম স্টেফানি লুইস।
একটি বিশ্বযুদ্ধের দুঃসহ স্মৃতি, অভিবাসনের যন্ত্রণাময় অভিজ্ঞতা ও বিজ্ঞানপ্রীতি—একজীবনে এই তিন অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ ছিল স্টেফানির জীবন। ফলে মানুষের জীবন বাঁচানোর এক প্রবল প্রচেষ্টা ছিল তাঁর। সে কারণেই তিনি আবিষ্কার করেছিলেন এই কেভলার সুতা, যা দিয়ে পরবর্তী সময়ে তৈরি করা হয় বুলেটপ্রুফ ও ফায়ারপ্রুফ পোশাক।
১৯২৩ সালের ৩১ জুলাই, পোল্যান্ডে জন্ম স্টেফানি লুইসের। তাঁর মূল নাম স্টেফানি কোয়ালেক। বাবা ছিলেন একজন প্রকৃতিবিশারদ ও বইপ্রেমী। তাঁর কাছেই ছোটবেলায় স্টেফানি গাছপালা, পোকামাকড় ও প্রকৃতি সম্পর্কে জেনেছিলেন। বাবার অকালমৃত্যু এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে তাঁদের পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে বাধ্য হয়। মা চাইতেন, মেয়ে যেন নার্স হয়। তবে স্টেফানি হৃদয়ে পুষে রেখেছিলেন বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন। এই স্বপ্ন তাঁকে নিয়ে যায় কার্নেগি ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে, যা বর্তমান কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটি নামে পরিচিত। সেখানে তিনি রসায়নে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৪৬ সালে স্টেফানি যোগ দেন ডু পন্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠানে। শুরুতে এটি ছিল সাময়িক চাকরি। সে সময় তিনি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ষাটের দশকে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন কারণে উচ্চ শক্তি সহনশীল তন্তুর প্রয়োজন বাড়তে থাকে। সে সময় স্টেফানি একটি নতুন পলিমার তৈরির গবেষণায় নিযুক্ত হন। সে গবেষণা করতে গিয়েই একদিন তিনি তৈরি করে ফেলেন এমন এক ধরনের তন্তু, যা ছিল হালকা অথচ ইস্পাতের চেয়ে পাঁচ গুণ শক্তিশালী। তিনি এর নাম দেন পলি-প্যারাফেনিলিন টেরেফথালামাইড। এই বিশেষ ফাইবার বা তন্তুই হলো কেভলার।
কেভলার আবিষ্কারের আগে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট তৈরি করা ছিল দুরূহ ও কঠিন কাজ। কিন্তু হালকা এবং দৃঢ় এই নতুন তন্তু সে কাজ সহজ করে দিয়েছে। এর ফলে কেভলার দ্রুত পুলিশ, সেনা, ফায়ার সার্ভিস ও উদ্ধারকর্মীদের নিরাপত্তা সরঞ্জাম তৈরিতে অপরিহার্য হয়ে ওঠে। আজকের দিনে কেভলার শুধু বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটেই নয়, ব্যবহৃত হচ্ছে হেলমেট, আগুন প্রতিরোধী পোশাক, উচ্চ তাপ প্রতিরোধী কেব্ল ও গিয়ার, আকাশযান এবং গাড়ি নির্মাণে।
এই মহামূল্যবান তন্তুর আবিষ্কারক হিসেবে স্টেফানির পথ খুব মসৃণ ছিল না। পুরুষপ্রধান গবেষণার জগতে কাজ করে যেতে তাঁকে প্রতিনিয়ত প্রমাণ করতে হয়েছে নিজেকে। স্বীকৃতি হিসেবে তিনি পেয়েছেন অসংখ্য সম্মাননা। এগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ছিল ১৯৯৬ সালে পাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল মেডেল অব টেকনোলজি।
স্টেফানি লুইস বিয়ে করেননি। তিনি ২০১৪ সালে ৯০ বছর বয়সে মারা যান। আজকের এই যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীতে মানুষ হন্যে হয়ে খুঁজছে নিজের সুরক্ষা সরঞ্জাম। স্টেফানি লুইসের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর ক্ষেত্রে এর চেয়ে ভালো সময় আর কী হতে পারে।
সূত্র: ন্যাশনাল ইনভেন্টরস হল অব ফেম, সায়েন্টিফিক আমেরিকান
চব্বিশের জুলাই। ৩১ দিনে নয়, শেষ হয়েছিল ৩৬ দিনে। সেই উত্তাল সময় তৈরি করেছে নানা আনন্দের স্মৃতি ও বেদনার ক্ষত। তৈরি হয়েছে এক ঐতিহাসিক অধ্যায়। কেউ কেউ জীবনের পরোয়া না করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন সে সময়। কেউ পানি দিয়েছিলেন, কেউ আহত ব্যক্তিদের নিজের রিকশায় নিয়ে গিয়েছিলেন হাসপাতালে...
১৭ ঘণ্টা আগে৩০ বছর ধরে পাঁপড় বানিয়ে চলেছেন! সেই পাঁপড় বিক্রি করে চলছে সংসার, প্রতিবন্ধী মেয়ের চিকিৎসা ও ছেলের পড়াশোনা। বলছি মাদারীপুর শহরের পাকদি এলাকার হারুন-অর-রশীদ (৬৫) ও মজিদা বেগম (৫০) দম্পতির গল্প।
১৭ ঘণ্টা আগেঅতিরিক্ত রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় কী। রাগের কারণে সবার সঙ্গে বাজে ব্যবহার করি, সব থেকে বেশি আমার পার্টনারের সঙ্গে। রাগের মাথায় যেটা বলব, সেটাই করতে হবে! সে সময় সে ঠান্ডা মাথায় আমার সঙ্গে কথা বলে। কিন্তু আমি তখনো শান্ত হতে পারি না। তবে আমার রাগ বেশিক্ষণ থাকে না। ১০-১৫ মিনিট পরে সব থেমে যায়। আমার
১৯ ঘণ্টা আগেরংপুরের গঙ্গাচড়ায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে এক কিশোরকে গ্রেপ্তারের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)। সংগঠনটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, দায়ী ব্যক্তিদের বিচার, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বাসনের...
২০ ঘণ্টা আগে