শাকেরা তাসনীম ইরা, ঢাকা
গ্রামে ঢোকার পথে একটা বিশাল ফটক। তার ওপর বড় করে লেখা ‘জিন ওয়ার’। সেই ফটকের দুই পাশে বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে আছেন একদল নারী। এই পাহারা মূলত আইএস জঙ্গিদের আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষার জন্য। তবে পুরুষদের জন্যও এই গ্রামে গ্রামে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার উত্তর–পূর্ব অঞ্চলের কুর্দি অধ্যুষিত এলাকার জিন ওয়ার গ্রামে পুরুষ থাকার অনুমতি নেই। সে গ্রামের সব বাসিন্দাই নারী। সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলের নির্যাতিত নারীরা পুনর্বাসিত হয়েছেন জিন ওয়ার নামের সেই গ্রামটিতে। তাঁরা কেউ কেউ আইএস জঙ্গিদের হাতে দীর্ঘদিন যৌনদাসী হয়ে অত্যাচারিত হয়েছেন। কেউ জঙ্গি হামলায় হারিয়েছেন স্বামী–সন্তান। কেউবা দিনের পর দিন ধর্ষিত হয়ে সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েছিলেন।
তবে জীবনের গল্পে ভিন্নতা থাকলেও জিন ওয়ার গ্রামের নারীরা যে আইএস আসার আগেও একটা সময় পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় অত্যাচারিত, নির্যাতিত ও অবহেলিত ছিলেন সেটি অকপটে বলে থাকেন জিন ওয়ার গ্রামের নারীরা।
আশার কথা হলো, সমস্ত নির্যাতন–অত্যাচারকে পেছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন এই নারীরা। নিজেদের সুরক্ষার জন্য হাতে তুলে নিয়েছেন অস্ত্র। সব বাধা ছিন্ন করে পৃথক হয়েছেন পুরুষদের কাছ থেকে। ২০১৮ সালের শেষের দিকে সিরিয়ার উত্তর–পূর্ব অঞ্চলের প্রত্যন্ত আল–দিরবাসিয়েহের পাশের গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল জিন ওয়ার নামের গ্রামটি। কুর্দি ভাষায় জিন অর্থ নারী এবং ওয়ার অর্থ স্থান বা জায়গা। পুরুষ বিবর্জিত বলে সে গ্রামের নাম হয়েছে ‘জিন ওয়ার’।
স্থানীয় নারী ও আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্য নিয়ে তৈরি হয়েছে গ্রামটি। সেখানে রয়েছে একটি প্রশাসনিক ভবন। সেখান থেকেই কয়েকজন সমন্বয়কের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হয় গ্রামের সব কর্মকাণ্ড। সেখানকার সব কাজ একা হাতেই করেন নারীরা। কৃষিকাজ থেকে স্কুলে পড়ানো, সব কাজেই পারদর্শী তাঁরা। অবসর সময়ে ঘরের দেয়ালে তাঁরা ছবি আঁকেন।
তবে সে গ্রামটি যে শুধু বিধবা বা তালাকপ্রাপ্ত বা পুরুষের সঙ্গে থাকতে না চাওয়া নারীদের জন্য– তেমনটা নয়। জিন ওয়ার গ্রাম এক কথায় মেয়েদের মুক্ত ভাবে বাঁচার গ্রাম। এখন বিভিন্ন গ্রাম থেকে পুরুষদের নিপীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে পড়া নারীরাও এসে বসবাস করেন গ্রামটিতে।
জিন ওয়ার পার হলেই যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার সীমানা। আইএস জঙ্গিদের মুহুর্মুহু গ্রেনেড বিস্ফোরণে যেন শ্মশান হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ছোট্ট দেশটি। এরই মধ্যে একদল নারী প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছেন একটি সুরক্ষিত গ্রাম। অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে হটিয়ে দিয়েছেন জঙ্গিদের। জিন ওয়ার গ্রামটি যেন দুর্দান্ত এক চপেটাঘাত করেছে যুদ্ধ বিগ্রহ এবং বিভিন্ন ভাবে অত্যাচারের সঙ্গে যুক্ত পুরুষতান্ত্রিক সমাজের প্রাগৈতিহাসিক গালে।
সিরিয়ার গ্রামটি নারীশক্তি উদ্যাপনে বিশ্বের চোখে অনন্য হলেও সেখানকার নারীরা এখনো বিপদ কাটিয়ে উঠতে পারেননি বলে মনে করেন মনোবিজ্ঞানী জুয়ানা বারাকাত। তিনি, গ্রামটি যারা প্রতিষ্ঠা করেছেন তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বটে। একই সঙ্গে এও বলেছেন, জিন ওয়ারের নারীরা এখনো পুরোপুরি নিরাপদ নন। গ্রামটি নির্যাতিত নারীদের মুক্তির স্বাদ দিয়েছে, এ কথা সত্যি। কিন্তু মানুষের শারীরিক ও মানসিক শক্তিরও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সে গ্রামের নারীরা নানা শারীরিক নির্যাতন ও যুদ্ধকালীন নির্যাতনের ধকল কাটিয়ে উঠতে পারেননি, মানসিকভাবে অনেকটা বিপর্যস্ত। তার ওপর নিজেদের পাশাপাশি সন্তানদের প্রতি মা ও বাবা উভয়েরই দায়িত্ব আছে। সেটা একলা সামাল দেওয়া কঠিন। এটি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলে তার নেতিবাচক প্রভাব এখানকার নারী ও শিশুদের ওপর পড়বে। ভবিষ্যতে সে প্রক্রিয়া সেখানকার নারী ও শিশুদের মনস্তাত্ত্বিক সমস্যার কারণ হতে পারে।
নারীরা যে চাইলেই যেকোনো বাধা ডিঙাতে পারে তা প্রমাণ করেছেন জিন ওয়ারের নারীরা। সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য তাই এখন শুধু সেখানকার নারীদের মনস্তত্ত্বের নিয়মিত পর্যালোচনা প্রয়োজন বলে মনে করেন মনোবিজ্ঞানী জুয়ানা বারাকাত।
সিরিয়ান ফিমেল জার্নালিস্টস নেটওয়ার্ক–এ প্রকাশিত নিবন্ধ থেকে অনূদিত
গ্রামে ঢোকার পথে একটা বিশাল ফটক। তার ওপর বড় করে লেখা ‘জিন ওয়ার’। সেই ফটকের দুই পাশে বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে আছেন একদল নারী। এই পাহারা মূলত আইএস জঙ্গিদের আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষার জন্য। তবে পুরুষদের জন্যও এই গ্রামে গ্রামে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার উত্তর–পূর্ব অঞ্চলের কুর্দি অধ্যুষিত এলাকার জিন ওয়ার গ্রামে পুরুষ থাকার অনুমতি নেই। সে গ্রামের সব বাসিন্দাই নারী। সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলের নির্যাতিত নারীরা পুনর্বাসিত হয়েছেন জিন ওয়ার নামের সেই গ্রামটিতে। তাঁরা কেউ কেউ আইএস জঙ্গিদের হাতে দীর্ঘদিন যৌনদাসী হয়ে অত্যাচারিত হয়েছেন। কেউ জঙ্গি হামলায় হারিয়েছেন স্বামী–সন্তান। কেউবা দিনের পর দিন ধর্ষিত হয়ে সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েছিলেন।
তবে জীবনের গল্পে ভিন্নতা থাকলেও জিন ওয়ার গ্রামের নারীরা যে আইএস আসার আগেও একটা সময় পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় অত্যাচারিত, নির্যাতিত ও অবহেলিত ছিলেন সেটি অকপটে বলে থাকেন জিন ওয়ার গ্রামের নারীরা।
আশার কথা হলো, সমস্ত নির্যাতন–অত্যাচারকে পেছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন এই নারীরা। নিজেদের সুরক্ষার জন্য হাতে তুলে নিয়েছেন অস্ত্র। সব বাধা ছিন্ন করে পৃথক হয়েছেন পুরুষদের কাছ থেকে। ২০১৮ সালের শেষের দিকে সিরিয়ার উত্তর–পূর্ব অঞ্চলের প্রত্যন্ত আল–দিরবাসিয়েহের পাশের গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল জিন ওয়ার নামের গ্রামটি। কুর্দি ভাষায় জিন অর্থ নারী এবং ওয়ার অর্থ স্থান বা জায়গা। পুরুষ বিবর্জিত বলে সে গ্রামের নাম হয়েছে ‘জিন ওয়ার’।
স্থানীয় নারী ও আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্য নিয়ে তৈরি হয়েছে গ্রামটি। সেখানে রয়েছে একটি প্রশাসনিক ভবন। সেখান থেকেই কয়েকজন সমন্বয়কের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হয় গ্রামের সব কর্মকাণ্ড। সেখানকার সব কাজ একা হাতেই করেন নারীরা। কৃষিকাজ থেকে স্কুলে পড়ানো, সব কাজেই পারদর্শী তাঁরা। অবসর সময়ে ঘরের দেয়ালে তাঁরা ছবি আঁকেন।
তবে সে গ্রামটি যে শুধু বিধবা বা তালাকপ্রাপ্ত বা পুরুষের সঙ্গে থাকতে না চাওয়া নারীদের জন্য– তেমনটা নয়। জিন ওয়ার গ্রাম এক কথায় মেয়েদের মুক্ত ভাবে বাঁচার গ্রাম। এখন বিভিন্ন গ্রাম থেকে পুরুষদের নিপীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে পড়া নারীরাও এসে বসবাস করেন গ্রামটিতে।
জিন ওয়ার পার হলেই যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার সীমানা। আইএস জঙ্গিদের মুহুর্মুহু গ্রেনেড বিস্ফোরণে যেন শ্মশান হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ছোট্ট দেশটি। এরই মধ্যে একদল নারী প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছেন একটি সুরক্ষিত গ্রাম। অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে হটিয়ে দিয়েছেন জঙ্গিদের। জিন ওয়ার গ্রামটি যেন দুর্দান্ত এক চপেটাঘাত করেছে যুদ্ধ বিগ্রহ এবং বিভিন্ন ভাবে অত্যাচারের সঙ্গে যুক্ত পুরুষতান্ত্রিক সমাজের প্রাগৈতিহাসিক গালে।
সিরিয়ার গ্রামটি নারীশক্তি উদ্যাপনে বিশ্বের চোখে অনন্য হলেও সেখানকার নারীরা এখনো বিপদ কাটিয়ে উঠতে পারেননি বলে মনে করেন মনোবিজ্ঞানী জুয়ানা বারাকাত। তিনি, গ্রামটি যারা প্রতিষ্ঠা করেছেন তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বটে। একই সঙ্গে এও বলেছেন, জিন ওয়ারের নারীরা এখনো পুরোপুরি নিরাপদ নন। গ্রামটি নির্যাতিত নারীদের মুক্তির স্বাদ দিয়েছে, এ কথা সত্যি। কিন্তু মানুষের শারীরিক ও মানসিক শক্তিরও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সে গ্রামের নারীরা নানা শারীরিক নির্যাতন ও যুদ্ধকালীন নির্যাতনের ধকল কাটিয়ে উঠতে পারেননি, মানসিকভাবে অনেকটা বিপর্যস্ত। তার ওপর নিজেদের পাশাপাশি সন্তানদের প্রতি মা ও বাবা উভয়েরই দায়িত্ব আছে। সেটা একলা সামাল দেওয়া কঠিন। এটি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলে তার নেতিবাচক প্রভাব এখানকার নারী ও শিশুদের ওপর পড়বে। ভবিষ্যতে সে প্রক্রিয়া সেখানকার নারী ও শিশুদের মনস্তাত্ত্বিক সমস্যার কারণ হতে পারে।
নারীরা যে চাইলেই যেকোনো বাধা ডিঙাতে পারে তা প্রমাণ করেছেন জিন ওয়ারের নারীরা। সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য তাই এখন শুধু সেখানকার নারীদের মনস্তত্ত্বের নিয়মিত পর্যালোচনা প্রয়োজন বলে মনে করেন মনোবিজ্ঞানী জুয়ানা বারাকাত।
সিরিয়ান ফিমেল জার্নালিস্টস নেটওয়ার্ক–এ প্রকাশিত নিবন্ধ থেকে অনূদিত
মৃত্যুদণ্ড দিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করা যায়, এমন প্রমাণাদি নেই বলে মন্তব্য করেছেন ব্লাস্টের (বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট) নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে লিঙ্গভিত্তিক...
৪ দিন আগেশিশুদের সাইকোলজি আগে বুঝতে হবে—যতটা সরলীকরণ করা যায়। পরের পাতায় কী আছে, এ রকম একটা কৌতূহল রাখি। রংটা খুব উজ্জ্বল থাকে। সামাজিক সচেতনতা বাড়ায়, চিন্তার বিকাশ ঘটায়—এমন কাজ করি। চরিত্রদের এক্সপ্রেশনে ব্যাপক ফান থাকতে হবে।
৫ দিন আগে‘বাংলাদেশের মেয়েরা সুযোগ পেলে সকলেই হিমালয় জয় করতে পারে।’ নিজেদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে এমন কথাই জানিয়েছেন পাঁচ নারী পর্বতারোহী। ‘সুলতানার স্বপ্ন অবারিত: তরুণীর অগ্রযাত্রা’ বিষয়ে এক আলাপচারিতায় এ কথা বলেন তাঁরা। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি অভিজ্ঞতা বিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তাঁরা
৫ দিন আগেআমার লেখার ক্ষেত্রে কোনো বিষয়ের প্রতি আগ্রহ কিংবা স্বতঃস্ফূর্ততাকে প্রাধান্য দিই। শব্দ আমার কাছে স্রোতস্বিনী নদীর মতো। আমি অনেকের লেখা পড়ি। তবে বাংলাদেশের জনপ্রিয় থ্রিলার লেখক মোহাম্মদ নাজিমুদ্দিন ভাইয়ের থ্রিলার ভাবনার আড্ডাগুলো থ্রিলার লেখার ক্ষেত্রে বেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আমি তাঁর লেখার ভক্ত।
১২ দিন আগে