Ajker Patrika

দুই হাজার ইউরোর ফুলদানি কেন ৮০ লাখ ইউরোয় বিক্রি হলো? 

দুই হাজার ইউরোর ফুলদানি কেন ৮০ লাখ ইউরোয় বিক্রি হলো? 

মাত্র দুই হাজার ইউরো দামের একটি চীনা ফুলদানি ৮০ লাখ ইউরোতে বিক্রির মতো বিস্ময়কর ঘটনা ঘটেছে ফ্রান্সের ফন্টেনব্ল্যুর ওসেনট নিলাম ঘরে। কি ছিল ওই ফুলদানিতে? ঘটনার পেছনের ঘটনা খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে এল আরও এক মজার ঘটনা। 

ঘটনার সূত্রপাত এ বছরের শুরুতে। ফরাসি এক নারী ব্রিটানিতে তাঁর প্রয়াত মায়ের বাড়ি থেকে বেশ কিছু আসবাবপত্র এবং অন্যান্য জিনিস বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এসব আসবাবের মধ্যে ওই নারীর দাদির আমলের ফুলদানিটিও ছিল। আসবাব বিক্রির দায়িত্ব ওসেনটকে দেওয়া হলে তারা সরঞ্জামগুলো ‘আসবাব ও শিল্পকর্ম’ নামের বাক্সে ভরে তা প্যারিসে পাঠিয়ে দেয়। উল্লেখ্য, বাক্সের মধ্যে রাখা আসবাবগুলোর কোনটির মূল্যই ৮ হাজার ইউরোর বেশি ছিল না। 

পরে গত শনিবার (১ অক্টোবর) চীনা সেই ফুলদানিটি ওসেনট নিলামের জন্য প্রদর্শনীতে রাখা হয়। প্রদর্শনীতে রাখা ক্যাটালগে লেখা ছিল, ‘লট নম্বর ৩৬-পোর্সেলিন ও পলিক্রোম এনামেলের তৈরি নীল ও সাদা রঙের একটি বড় চীনা ফুলদানি। এটির আকৃতি গোল, সঙ্গে লম্বা সিলিন্ডার আকৃতির গলা। ড্রাগন ও মেঘের ডিজাইনে সজ্জিত ফুলদানিটি ভালো অবস্থায় আছে।’ 

তবে শিল্পকর্ম বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ফুলদানিটি মোটেও দুষ্প্রাপ্য নয়। এর মূল্য বড়জোর দেড় থেকে দুই হাজার ইউরো হবে, এর বেশি না। 

তাহলে কীভাবে এত দামে বিক্রি হলো এই ফুলদানিটি? এর উত্তর হচ্ছে ‘একটি মারাত্মক ভুলের’ কারণে। 

এ বিষয়ে ওসেনট থেকে জানানো হয়েছে, ‘আমাদের নিলামের কাজে নিয়োজিত এক কর্মী তাঁর দায়িত্ব পালনে ভুল করেছেন। ফুলদানিটি কিনতে আগ্রহী ৩০০ চীনা ক্রেতাদের বিরুদ্ধে একা এক ব্যক্তি সঠিক হতে পারে না। তাঁর এই ভুলের কারণে আমরা তাকে ছাঁটাই করেছি।’ 

তারা আরও জানায়, ক্যাটালগটি যখন অনলাইনে গিয়েছিল এবং বিক্রির ১৫ দিন আগে নিলাম প্রাক প্রদর্শনী ছিল, তখন ৩০০ থেকে ৪০০ আগ্রহী ক্রেতাদের ভিড় দেখে তাদের মনে সন্দেহ জাগে। 

পরে নিলাম অনুষ্ঠানে ফুলদানিটি নিয়ে আসা হলে ১ লাখ ইউরো থেকে নিলাম ডাকা শুরু হয় এবং তা খুব দ্রুতই বাড়তে থাকে। নিলামের একপর্যায়ে হঠাৎ এক ক্রেতা ‘২ মিলিয়ন’ বলে চিৎকার করলে সঙ্গে সঙ্গে নিলামের ডাক ৫ মিলিয়নে পৌঁছে যায়। সর্বশেষ ৭ দশমিক ৭ মিলিয়ন ইউরোতে (প্রায় ৮০ লাখ ইউরো) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চীনা ক্রেতা নিলামে জয়ী হন। 

নিলাম ঘরটির এশীয় শিল্প বিভাগের পরিচালক সেড্রিক লেবারডে এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নন যে তাদের নিলামের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিটির ভুল ছিল। 

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না ফুলদানিটি পুরোনো কি না বা কেন এটি এত দামে বিক্রি হয়েছে। হয়তো আমরা কখনোই জানতে পারব না।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত