নদীভাঙন

সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বাড়ছেই। একই সঙ্গে বাড়তে শুরু করেছে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানি। ফলে বন্যার আশঙ্কা করছে নদীতীরবর্তী অঞ্চলের মানুষ। পানি বাড়ার কারণে এনায়েতপুরে তীব্র নদীভাঙন শুরু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে এনায়েতপুরের ব্রাহ্মণগ্রাম এলাকায় ১৮টি ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে আরও স্

নাগরপুর উপজেলার তিন ইউনিয়নে বর্ষার আগেই ভাঙন দেখা দিয়েছে। যমুনার ভাঙনের ফলে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। সহায়-সম্বল হারিয়ে পরিবার নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে অনেকে। আবার চরম অনিশ্চয়তায় অনেকের দিন কাটছে...

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে ধলেশ্বরী নদীর ভাঙন রোধে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। গত বুধবার সকাল থেকে উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নের তুলসীখালী ব্রিজ-সংলগ্ন এলাকা থেকে ডাকেরহাটি গ্রামের ৬৫ মিটার এলাকায় ৬ হাজার ৪০০ জিও ব্যাগ ফেলার কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান...

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরমধুয়া ইউনিয়নে নির্মাণাধীন গ্রাম রক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত মঙ্গলবার বেলা ১টার দিকে বীর চরমধুয়া গ্রামের ১০০ মিটার বাঁধ ভেঙে ঈদগাসহ ছয় বিঘা জমি মেঘনায় বিলীন হয়ে গেছে। হুমকিতে রয়েছে বাঁধসংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, ঈদগা ও মসজিদসহ কয়েক শ বাড়িঘর। ভাঙনরোধে

বিশ্বনাথ উপজেলার মাকুন্দা নদী অপরিকল্পিতভাবে খনন করা হচ্ছে। এর ফলে রামপাশা ইউনিয়নের রামপাশা বাজার থেকে আশুগঞ্জ বাজার পর্যন্ত সড়ক ভেঙে নদীতে পড়ছে। অর্ধেক অংশ দিয়ে মানুষ হেঁটে চলাচল করলেও যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মোল্লারহাট বাজার রক্ষার কাজ শুরু হলেও ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে তিন কিলোমিটার এলাকা। এতে ব্রহ্মপুত্র নদ ও ধরলা নদীতীরের বাসিন্দারা আতঙ্কে দিন পার করছেন।

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর কালকিনি ইউনিয়নের তালতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে কয়েক হাত দূরে মেঘনা নদী। বিদ্যালয়টি ১০ বছরে পাঁচবার ভাঙনের কবলে পড়েছে। সর্বশেষ গত পাঁচ বছর এটি তিনবার সরিয়ে নিতে হয়েছে। এতে ঝরে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।

উজানের ঢলে নদ-নদীতে হঠাৎ করেই বাড়ছে পানি। ইতিমধ্যে পাবনার চাটমোহরের চলনবিল অংশে নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে কৃষকের স্বপ্ন সোনালি ধান। সীমাহীন দুর্ভোগ কাটিয়ে উঠতে রীতিমতো যুদ্ধ করছেন তাঁরা। ঠিক সেই মুহূর্তে শুরু হয়েছে নদীভাঙন।

স্বামীর মাত্র ৬ শতাংশ জমি ছিল জয়ন্তী নদীর পাড়ে। সেই জমির সাড়ে ৫ শতাংশ ইতিমধ্যে নদীভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। বাকি আধা শতাংশও নদীগর্ভে যাওয়ার পথে। সেখানেই বাস করছেন স্বামীহারা মাহমুদা বেগম। যেকোনো সময় হারিয়ে যেতে পারে বসতভিটা। তাই নতুন করে থাকার জন্য মাথা গোঁজার ঠাঁই চান তিনি।

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার আমিনবাজার থেকে জনতাঘাট পর্যন্ত মেঘনা নদীর ভাঙনে গত ১২ বছরে ৩০ হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসা, হাটবাজারসহ কৃষিজমি বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের কবলে সবকিছু হারিয়ে বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছে অসহায় পরিবারগুলো।

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় যমুনা নদীর বাম তীর সংরক্ষণ বাঁধে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং কাজ শেষ হওয়ার আগেই আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত ২০ দিনে যমুনার পানি বেড়ে কয়েক দফা ভাঙনে বাঁধের কুলকান্দী হার্ডপয়েন্টে ধসে গেছে বাঁধের অন্তত ৫০ মিটার এলাকা। ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে বিভিন্ন স্

নদী ভাঙন চিরাচরিত নিয়ম উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, নদী ভাঙন রোধে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সমীক্ষাও চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যে ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। চলতি বন্যার পানি কমে গেলে কাজ শুরু হবে।

ভূঞাপুরে যমুনার পূর্ব পাড় এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। কয়েক দিনের ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে বেশ কিছু ঘরবাড়ি। এভাবে প্রতিবছর নদীভাঙনের শিকার হচ্ছেন উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের খানুরবাড়ি, কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া ও চিতুলিয়াপাড়ার বাসিন্দারা। কয়েক বছরের ভাঙনে....

‘টিকে থাকব বলে এত দিন আশা আশায় ছিলাম, এখন বুঝি আর শেষ রক্ষা হয় না! টিকে থাকার লড়াইয়ে হার মেনে শেষমেশ হয়তো এখান থেকে বাড়িঘর নিয়ে সরে যেতেই হবে।’ এভাবে হতাশা ব্যক্ত করে কথা গুলো বলছিলেন গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার মুন্সিরহাট এলাকার যমুনা নদী ভাঙনের শিকার মানুষ।

উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন তীব্র হচ্ছে। ভাঙনে ইতিমধ্যে শতাধিক পরিবারের বাড়িঘর নদে চলে গেছে।  হুমকির মুখে রয়েছে আরও ৫ শতাধিক পরিবারের বাড়িঘর। ভাঙনে বাড়িঘর হারানো শতাধিক পরিবার দিশেহারা হয়ে পরেছেন।

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বাড়তে থাকায় ভাঙন তীব্র হচ্ছে। এতে শতাধিক বসতবাড়িসহ ৫০ হেক্টর কৃষিজমি বিলীন হয়েছে। অনেকে বসতবাড়ি হারিয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

গাইবান্ধার ফুলছড়িতে নদীভাঙন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি, আবাদি জমিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর উড়িয়া গ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনকবলিত তীরে শতাধিক মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেন।