Ajker Patrika

যমুনা গিলছে ভিটা ফসলি জমি

নাগরপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ জুন ২০২২, ১৪: ৫৭
যমুনা গিলছে ভিটা ফসলি জমি

নাগরপুর উপজেলার তিন ইউনিয়নে বর্ষার আগেই ভাঙন দেখা দিয়েছে। যমুনার ভাঙনের ফলে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। সহায়-সম্বল হারিয়ে পরিবার নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে অনেকে। আবার চরম অনিশ্চয়তায় অনেকের দিন কাটছে খোলা আকাশের নিচে। ভাঙন হুমকির মধ্যে রয়েছে মসজিদ, ঈদগা মাঠ ও ইউনিয়ন পরিষদ ভবনসহ বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

এদিকে ভাঙন প্রতিরোধে জনপ্রতিনিধিরা প্রতিবছর নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও স্থায়ী সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেই। আর পানি উন্নয়ন বোর্ড বর্ষা মৌসুমে শুধু জিও ব্যাগ ফেলে দায় সারছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তাঁরা বলছেন, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে এমনিতেই যমুনার ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে অসংখ্য পরিবার। কিন্তু এ বছর অসময়ের ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তাঁরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হঠাৎ যমুনা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় আকস্মিক ভাঙন দেখা দিয়েছে নাগরপুর উপজেলার সলিমাবাদ ইউনিয়নের পাইশা মাইঝাইল, খাষ ঘূনিপাড়া, চরসলিমাবাদ, ভূতের মোড়, ভারড়া ইউনিয়নের শাহজানি, মারমা, উলাডাব, মোকনা এবং দপ্তিয়র ইউনিয়নের নিশ্চিতপুর, কাটি নিশ্চিতপুর, বাঁক কাটারীসহ বিভিন্ন গ্রামে। এতে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বেশ কিছু বসতভিটা, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি। হুমকিতে রয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি।

ভাঙন কবলিত এলাকার হোসনে আরা, জহিরন বেগম, আনোয়ার মিয়া ও একলাছ জানান, তাঁদের ঘরবাড়ি, ফসলি জমি সব নদীতে চলে গেছে। এখন তাঁদের সহযোগিতা করবে কে। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারের কাছে দাবি করে আসছেন একটি বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য।

খাষ তেবাড়িয়া গ্রামের কৃষক মো. রহমান মিয়া বলেন, ‘২ বছরে আমি ছয়বার বাড়ি সরিয়ে নিয়েছি। এখন আমার যাবার মতো আর কোনো জায়গা নেই।’ একই গ্রামের আলতাব হোসেন বলেন, ‘এবার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার বাড়ি ভেঙে গেছে।’

ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ছোট বেলা থেকে শুনে আসছেন এ নদীতে বেড়িবাঁধ দেওয়া হবে। কিন্তু এত বয়স হলো আজও বাঁধের এক অংশও দেখতে পারেননি তাঁরা। আর কবে দেবে প্রশ্ন তাঁদের। ইতিমধ্যে নদীর ভাঙনে বাড়িঘর সব শেষ তাঁদের। এখন যেটুকু আছে তা এ ভাঙনে শেষ হয়ে যাবে বলে ভয় তাঁদের।

তাঁরা আরও জানান, গত বছর নদীতে ভাঙন দেখা দিলে পানি উন্নয়ন বোর্ড নাম মাত্র জিও ব্যাগ ফেলে যায়। তা কোনো কাজেই আসেনি তাঁদের। এখন আবার অসময়ে যমুনা নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীর তীরে যদি বাঁধ থাকত তাহলে তাঁদের বাড়িঘর ও ফসলি জমি হারাতে হতো না।

এ বিষয়ে সলিমাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীদুল ইসলাম অপু বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানানো হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে ভাঙন প্রতিরোধে ইতিমধ্যে একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের টাঙ্গাইল জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের মধ্য দিয়ে যমুনা পাড়ের হাজারো মানুষের দুঃখ-দুর্দশা চিরতরে দূর করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফালোনোর কাজ চলছে। স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণের বিকল্প নেই। তবে নদীভাঙন কবলিত এলাকার জনসাধারণের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পুনর্বাসন সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত ৭৬টি পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে ৩৮ লাখ টাকার চেক বিতরণ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

১০-১২তম গ্রেডে নিয়োগ: প্রতি পদের বিপরীতে দুজন থাকবেন অপেক্ষমাণ

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

র‍্যাবকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার ঠেকাতে হচ্ছে নতুন আইন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত