জমি

দুই বছর আগে জমির আইল নিয়ে সৃষ্টি হয় পক্ষ-বিপক্ষ। এরপর উভয় পক্ষ গ্রামে আধিপত্য নিয়ে বাড়তে থাকে বিরোধ। শুরু হয় হামলা-পাল্টা হামলা, বাড়ি ভাঙচুর-লুটপাট, মামলা। একপর্যায়ে খুন, পাল্টা খুন। হামলা ও মামলার ভয়ে গ্রাম ছেড়েছেন অনেকেই। দুই বছর ধরে এমন উত্তেজনা আর আতঙ্কে দিন কাটছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সদক

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার তিন ইউনিয়নে চলতি বর্ষায় যমুনার ভাঙনে সহস্রাধিক বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকিতে রয়েছে নদীতীরবর্তী চিতুলিয়াপাড়া গ্রাম, নদী রক্ষা বাঁধ, উঁচু সড়কসহ অন্যান্য স্থাপনা।

জ্বালানি তেল ও ইউরিয়া সারের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে ফসল উৎপাদনে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করতে খরচ আগের চেয়ে বেড়েছে। আর জমিতে ব্যবহারের জন্য ইউরিয়া সার আগের চেয়ে কেজিপ্রতি ছয় টাকা বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। এ কারণে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। আবার জমিতে সেচ দিতে হয় ডিজেলচালিত মেশিন দিয়ে।

সারা দেশে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। এতে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার বিভিন্ন বাজারে এসে দিশেহারা ক্রেতা সাধারণ। অপরদিকে মরিচের ভালো দাম পাওয়ায় উপজেলার চাষিদের মুখে ফুটেছে হাসি। চাষিরা বলছেন, এ উপজেলার মরিচের খেতগুলো উঁচু থাকায় পানিতে তলিয়ে যায় নি। ফলে তাঁরা এখন লাভের মুখ দেখছেন।

খুলনার পাইকগাছায় আষাঢ় মাস থেকে শ্রাবণের মাঝামাঝি পর্যন্ত বৃষ্টির তেমন দেখা মেলেনি। অনেক কৃষকের চারা বীজতলাতেই নষ্ট হয়ে গেছে। তবে কেউ কেউ বাড়তি খরচ করে শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে সেচ দিয়ে আমনের চারা রোপণ করেছেন।

পটুয়াখালী সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের কৃষক আলমগীর গাজী (৫২)। নিজের জমি ছাড়াও অন্যের জমিতে চুক্তিতে পাওয়ার টিলার (ট্রাক্টর) দিয়ে চাষ করে থাকেন। হঠাৎ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় আগের চুক্তিতে নেওয়া জমি চাষ নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। একদিকে জমির মালিক চুক্তির বাইরে অতিরিক্ত টাকা দিতে রাজি হচ্ছে না, অন্যদিকে দ

লঘুচাপের প্রভাবে বরিশালে তলিয়ে গেছে ফসলের খেত। বিশেষ করে সদ্য রোপণ করা আমনখেতের বড় অংশ এখন পানির নিচে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ১৫-১৬ শতাংশ জমিতে ইতিমধ্যে আমন চাষ করা হয়েছে। সবই এখন পানির নিচে। আবহাওয়া অফিসের আশঙ্কা, লঘুচাপের প্রভাবে এই অঞ্চলে ২ থেকে ৪ ফুট উচ্চতায় পানি বেড়ে যেতে পারে।

ভরা বর্ষাতেও বৃষ্টির দেখা নেই। তাই নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায় আমন ধান চাষাবাদ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বাধ্য হয়ে সেচযন্ত্রে পানি দিয়ে জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করছেন উপজেলার কৃষকেরা।

আমন ধানের মাঠ ডুবে আছে পানিতে। জমি থেকে পানি নিষ্কাশন করে আমন চাষাবাদের উপযোগী করার দাবিতে মৌলভীবাজারের কাওয়াদিঘি হাওর পাড়ের কৃষকেরা সমাবেশ করেছেন।

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় আমন রোপণের ধুম পড়েছে। আমনের ভালো ফলনের আশা করছেন উপজেলার কৃষকেরা। ইতিমধ্যে কৃষকেরা তীব্র গরম উপেক্ষা করে জমি প্রস্তুত করে পুরোদমে আমন রোপণ করছেন। এবার বন্যায় আউশ ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমন থেকে সেই ক্ষতি পোষানোর আশা চাষিদের।

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় পতিত জমিতে প্রথমবারের মতো পানিকচু চাষে সফল হয়েছেন আলী হোসেন। ৩৫ শতক জমিতে উন্নত জাতের পানিকচু চাষে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। কৃষি বিভাগ জানায়, এই এলাকায় প্রথমবারের মতো পানিকচুর চাষ হয়েছে। এ সফলতা দেখে অন্য চাষিদের কচু চাষে আগ্রহ বেড়েছে।

গাজীপুরের শ্রীপুরে মেঘনা গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান জলাধার বন্ধ করে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করায় ২০ বিঘা জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে। এতে ২ গ্রামের ২০ বিঘা জমির আমন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করেও সমাধান পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী কৃষকেরা। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, তাঁদের জমি

মাঠে মাঠে রোপা আমন ধান রোপণের প্রস্তুতি। এর মধ্যে হঠাৎ বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। সারের দাম বেড়েছে কদিন আগেই। মৌসুমের শুরুতেই অতিরিক্ত খরচের বোঝা নিয়ে কৃষকদের নামতে হচ্ছে জমিতে। এমন অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সখীপুরের প্রায় ২০ হাজার কৃষক।

অধিক লাভের আশায় তিন ধরনের সবজি চাষ করছেন তিনি। এ কারণে সাড়ে ছয় বিঘা জমির পাঁচ বিঘাতে ধান চাষ করলেও দেড় বিঘা জমিতে শসা, করলা ও তরমুজের চাষ করছেন। স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে ‘পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্য’ এবং ‘খাদ্যনিরাপত্তা’ কর্মসূচির আওতায় এ কাজ করেছেন জয়পুরহাট সদর উপজেলার কোমর গ্রামের কৃষক ওয়ারেছ। একসঙ্গ

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেই মাঠের পর মাঠজুড়ে শোভা পাচ্ছে পাটখেত। পাট কাটার উপযোগী হলেও পানির অভাবে বেশির ভাগ জমির পাট কাটা শুরু হয়নি। বৃষ্টি না হওয়ায় খাল, বিল, ডোবায় পানি জমেনি। রোদে পাট নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অনেকে পাট কেটে জমিতেই রেখে দিচ্ছেন। অপেক্ষা করছেন বৃষ্টির জন্য।

গ্রামের প্রাথমিক বিদ্য়ালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। পরিবারে অভাব আর বাবার অসুস্থতার কারণে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি। সংসারের হাল ধরতে গিয়ে জড়িয়ে পড়েন কৃষিকাজে। এরপর এই কৃষিই তাঁর সব ধ্যানজ্ঞান। কিন্তু কৃষকের মুখে কি আর হাসি থাকে।

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় ৩৫ শতক বা এক কানি জমি চাষ করতে এখন থেকে কৃষকদের গুনতে হবে ৬০০ টাকা। কয়েক দিন আগেও ছিল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপজেলার ট্রাক্টর মালিকেরা।