আফগানিস্তান ক্রিকেট

বয়স সবে ২৪। এই বয়সে অনেকের ক্যারিয়ারও শুরু হয় না। কিন্তু এখনই ওয়ানডে ক্যারিয়ারকে বিদায় জানাচ্ছেন নাভিন-উল-হক। সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আফগানিস্তানের পেসার। 

দলের বিপর্যয়ে সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের বুক চিতিয়ে লড়াই করার ঘটনা কম নয়। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে দলের কঠিন চাপের সময় আজও তেমন এক দৃষ্টান্ত রাখলেন এই দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ ৪৭ রান তুলতেই হারিয়েছিল ৪ উইকেট।

আফগানিস্তানের গল্পটা বীরত্বের হতে পারত। সঙ্গে এশিয়া কাপের সুপার ফোরও নিশ্চিত হতো। কিন্তু তা না হয়ে হতাশাকে সঙ্গে নিয়ে বিদায় নিতে হলো মোহাম্মদ নবী–রশিদ খানদের।

মুজিব উর রহমান আউট হওয়ার পরও সুযোগ ছিল আফগানিস্তানের। সমীকরণ ছিল ধনঞ্জয়ার ডি সিলভার পরের তিন বলে ছয় রান লাগবে। তখন আফগানিস্তানের রান দাঁড়াত ২৯৫। সে ক্ষেত্রে নেট রান রেটে শ্রীলঙ্কাকে ছাড়িয়ে সুপার ফোরে বাংলাদেশের সঙ্গী হতে পারত আফগানরা।

‘এ’ গ্রুপ থেকে এশিয়া কাপের সুপার ফোর নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান ও ভারত। ‘বি’ গ্রুপ থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে আফগানিস্তান নাকি শ্রীলঙ্কা উঠছে সুপার ফোরে? এর উত্তর পাওয়া যাবে কিছুক্ষণ পরই। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং করে আফগানিস্তানকে ২৯২ রানের লক্ষ্য দিয়েছে দাসুন শানাকার দল। 

আফগানিস্তানের জন্য এই ম্যাচ জেতার বিকল্প নেই। শুধু জিতলেও অবশ্য হবে না, শ্রীলঙ্কাকে বড় ব্যবধানে হারালেই কেবল মিলবে সুপার ফোরের টিকিট। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গী হতে পারবে আফগানরা। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে হওয়া ম্যাচে লঙ্কানদের অবশ্য এত সমীকরণের মারপ্যাঁচে না গেলেও চলবে। 

আফগানিস্তান ম্যাচের আগে বেশ চাপে ছিল বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বের সেই ম্যাচ জিতে চাপমুক্ত মিরাজ-শান্ত-সাকিবরা। ‘হারলেই বিদায়’-এর সেই চাপ এখন আফগানদের কাঁধে। আজ লাহোরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মুখোমুখি হবে তারা। এই ম্যাচে শুধু জিতলেই হবে না, সুপার ফোরে উঠতে জিততে হবে বড় ব্যবধানে। 

তাঁদের দুজনের পরিচয় কত দিনের? এক যুগ তো হবেই। সেই বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকে এক সঙ্গে খেলছেন মেহেদী হাসান মিরাজ আর নাজমুল হোসেন শান্ত। অনূর্ধ্ব-১৯ দলে দুজনই ছিলেন লিডারশিপ গ্রুপে।

জেতা ছাড়া বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের হাতে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জিতে নিজেদের কাজটা ভালোভাবেই করে রেখেছে বাংলাদেশ। ৩৩৪ রানের বড় সংগ্রহের পর আফগানদের ২৪৫ রানে অলআউট করেছে সাকিব আল হাসানের দল। ৮৯ রানে জিতে সুপার ফোরের আশা বাঁচিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ। 

জমে গেছে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচ। নাজিবুল্লাহ জাদরানকে নিয়ে লড়াই জমিয়ে তুলেছেন অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদী। ১৩১ রানে ৩ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। এই প্রতিবেদন লেখার সময় অবশ্য নাজিবউল্লাহ ও হাশমতউল্লাহ দুজনেরই উইকেট তুলে নিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে বাংলাদেশ। 

সুযোগ পেলে বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও ভালো অবদান রাখতে পারেন মেহেদী হাসান মিরাজ, এমন দৃষ্টান্ত অনেকবারই দেখিয়েছেন তিনি। ক্যারিয়ারের এ পর্যন্ত অধিকাংশ ম্যাচেই তাঁর ব্যাটিং পজিশনটা লোয়ার অর্ডারে। তবে দলের প্রয়োজনে মাঝে মাঝে ওপেনিংয়েও ব্যাটিং করেছেন এই অলরাউন্ডার।

বাংলাদশের জন্য এই ম্যাচের সমীকরণ শুধু একটাই, জিততেই হবে। তিন পরিবর্তন নিয়ে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। শ্রীলঙ্কা ম্যাচের হতাশা ভুলতে এই ম্যাচে ব্যাটারদের কাছে বড় স্কোরের আশা প্রকাশ করেছিলেন সাকিব। 

ওপেনিং থেকে ৬০ রান। ৩ রানের মধ্যে আউট হন তিনে নামা তাওহীদ হৃদয়। এরপর জুটি বাঁধেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাজমুল হোসেন শান্ত। দুজনের চতুর্থ উইকেট জুটিতে ছুটছে বাংলাদেশ। এই প্রতিবেদন লেখার সময় দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটি থেকে এসেছে ১৬১ রান।

২০১৮ এশিয়া কাপের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে চোটে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়লেন তামিম ইকবাল। লিগ পর্বে আর সুপার ফোরে অবশ্য ‘মেক শিফট’ ওপেনারের পথে হাঁটেনি বাংলাদেশ। 

সুপার ফোরে যেতে হলে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ের কোনো বিকল্পই ছিল না বাংলাদেশের সামনে। লাহোরে আজ বাঁচা-মরার ম্যাচে বাংলাদেশ উড়িয়ে দিয়েছে আফগানদের। ৮৯ রানের জয়ে সুপার ফোরের আশা বাঁচিয়ে রাখল সাকিব আল হাসানের দল।  ৩৩৫ রানের লক্ষ্যে ১ রানেই উইকেট হারায় আফগানিস্তান। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে রহমানুল্লাহ গুর

বাঁচা-মরার ম্যাচে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আজ বাংলাদেশের জন্য কী অপেক্ষা করছে, সময়ই বলে দেবে। মাঠের লড়াইয়ে অবশ্য কেউ কাউকে এক বিন্দু ছাড় দেওয়ার কথা নয়। বাংলাদেশের সামনে ‘জিততেই হবে’ সমীকরণ। আর আফগানরা এশিয়া কাপ অভিযান জয় দিয়ে শুরু করতে চাইবে।

প্রথম ম্যাচে হেরে এশিয়া কাপে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ এখনই অনেকটা ‘যদি-কিন্তু’র সামনে। সুপার ফোরে যেতে হলে আগামীকাল লাহোরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় ছাড়া বিকল্প উপায় নেই তাদের। আফগানদের বিপক্ষে জিতলেও পরের রাউন্ডে যাওয়ার পথটা মসৃণ হবে না সাকিব আল হাসানদের।