হাজার হাজার বছরের চেষ্টার পর ১০ হাজার বছর আগে মানুষ বুনো শস্যের চাষাবাদ শুরু করে। এর আগে মানুষকে খাবারের জন্য নির্ভর করতে হতো বনের ফলমূল, বুনো শস্য ও পশু–পাখি শিকারের ওপর। মানুষ তখন ছিল যাযাবর। চাষাবাদের কৌশল আবিষ্কারের পর থেকেই মানুষ নির্দিষ্ট স্থানে থিতু হতে শুরু করে। চাষ করা ফসলই হয়ে ওঠে মানুষের অন্যতম প্রধান খাদ্য।
মানুষের সেই হাজার বছরের প্রচেষ্টাকে কয়েক বছরেই অর্জন করতে নানা পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন চীনের বেইজিংয়ের ইনস্টিটিউট অব জেনেটিকস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টাল বায়োলজির উদ্ভিদ জেনেটিক বিশেষজ্ঞ জিয়াইয়াং লি। জিন পরিবর্তনের মাধ্যমে তিনি এক বুনো প্রজাতির ধান চাষযোগ্য করে তোলার চেষ্টা করছেন।
লি দক্ষিণ আমেরিকার এক বুনো প্রজাতির ধান অরিজা আল্টা নিয়ে কাজ করছেন। এ ধান থেকে খাওয়ার যোগ্য পুষ্টিকর শস্য পাওয়া যায়। তবে এটি ফসল হিসেবে চাষ করা যায় না কারণ পাকার পরই এর বীজ ঝরে যায়। এ শস্যটি চাষযোগ্য করার জন্য লি ও তাঁর সহকর্মীরা দ্রুত বীজ ঝরে যাওয়াসহ আরও কিছু বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করার চেষ্টা করছেন।
শুধু ধানই নয় আরও অনেক বুনো শস্যই জলদি চাষযোগ্য করার জন্য জিনের পরিবর্তন করা হচ্ছে। বুনো প্রজাতির শস্যের সঙ্গে চাষযোগ্য শস্যের জিন প্রতিস্থাপন করার মাধ্যমে নতুন শস্য তৈরির এ প্রক্রিয়াকে ‘দে নভো ডমেস্টিকেশন’ বলা হয়। শস্যে এ ধরনের পরিবর্তন আনার জন্য মানুষের ইতিহাসে প্রথম দিককার কৃষকদের কয়েক হাজার বছর লেগে গিয়েছিল।
লি বলেন, এর মাধ্যমে বিশ্বে খাদ্য সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব হতে পারে। আমাদের প্রধান খাদ্যশস্যের নিকটবর্তী এমন অনেক প্রজাতি রয়েছে যা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্ব কৃষিতে বিরূপ প্রভাব পড়লে বিকল্প হিসেবে কাজে লাগানো যেতে পারে। যেমন, অরিজা আল্টাতে লবণাক্ততা ও খরার বিরুদ্ধে এবং বেশ কয়েকটি মারাত্মক রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা রয়েছে।
এটা শুনতে যত সহজ বাস্তবায়ন ততটাই জটিল। বেশির ভাগ বুনো শস্য নিয়েই তেমন কোনো গবেষণা নেই। এ শস্যগুলোর মৌলিক জীববিজ্ঞান বোঝা ছাড়া, জিন পরিবর্তন করেই এগুলোকে চাষযোগ্য করে তোলা সম্ভব নয়। এ ধরনের জিন পরিবর্তনের জন্য ক্রিসপার–ক্যাস৯–এর মতো জিন এডিটিং টুল ব্যবহার করা যায়। তবে এ পদ্ধতি ব্যবহার করেও হাজার বছরের অসংখ্য পরিবর্তনের মাধ্যমে বর্তমান রূপ নেওয়া আধুনিক শস্যের মতো করা সম্ভব নয়।
ক্রিসপার হলো ব্যাকটেরিয়া এবং আর্কিয়ার মতো প্রোক্যারিওটিক জীবের (এককোষী আদিপ্রাণ) জিনোমে পাওয়া ডিএনএ সিকোয়েন্সের একটি পরিবার। এই সিকোয়েন্সগুলো ব্যাকটেরিওফাজের ডিএনএর অংশ থেকে উদ্ভূত যা আগে প্রোক্যারিওটকে সংক্রামিত করেছিল। এগুলো পরবর্তী সংক্রমণের সময় অনুরূপ ব্যাকটেরিওফাজগুলোর ডিএনএ শনাক্ত করতে এবং এগুলোকে ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয়। ফলে এগুলো প্রোক্যারিওটের ভাইরাল বিরোধী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় মুখ্য ভূমিকা রাখে।
আর ক্যাস ৯ (Cas9) হলো ক্রিসপার সংশ্লিষ্ট একটি প্রোটিন। এটি মূলত এনজাইম যা ক্রিসপার সিকোয়েন্সগুলোকে নির্দেশনা দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়। এটি ডিএনএর নির্দিষ্ট ধরন চিনতে এবং উন্মুক্ত করতে পারে। ক্রিসপার সিকোয়েন্সের সঙ্গে ক্যাস ৯ এনজাইম মিলিয়ে তৈরি করা হয় ক্রিসপার ক্যাস৯। এই প্রযুক্তি কোনো জীবের মধ্যে জিন সম্পাদনা করা যায়। এই সম্পাদনা প্রক্রিয়ায় মৌলিক জৈবিক গবেষণা, জৈবপ্রযুক্তিগত পণ্যের উন্নয়ন এবং চিকিৎসাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায়। ক্রিসপার ক্যাস ৯ জিনোম সম্পাদনা কৌশল উদ্ভাবন ও উন্নয়নের জন্য ২০২০ সালে রসায়নে নোবেল পান ইমানুয়েল কার্পেন্টিয়ার এবং জেনিফার ডুডনা।
দে নভো ডমেস্টিকেশনের অপব্যবহারও হতে পারে। অনেক বুনো উদ্ভিদ সম্পর্কে কেবল আদিবাসী জনগোষ্ঠীগুলোই জানে। তাঁরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এসব উদ্ভিদ সম্পর্কিত জ্ঞান বহন করছেন। বহু বছর ধরেই ঔপনিবেশিকেরা আদিবাসীদের এ জ্ঞান চুরি ও অপব্যবহার করে আসছে। দক্ষিণ আফ্রিকার চা জাতীয় উদ্ভিদ রুইবোসও (আসপালাথাস লাইনিয়ারিস) আগে বুনো উদ্ভিদই ছিল।
ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস আমহের্স্টের উদ্ভিদবিদ ম্যাডেলিন বার্টলেট বলেন, ‘আমি অতীতের ভুলের সম্ভাব্য পুনরাবৃত্তি নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন।’
হাজার হাজার বছরের চেষ্টার পর ১০ হাজার বছর আগে মানুষ বুনো শস্যের চাষাবাদ শুরু করে। এর আগে মানুষকে খাবারের জন্য নির্ভর করতে হতো বনের ফলমূল, বুনো শস্য ও পশু–পাখি শিকারের ওপর। মানুষ তখন ছিল যাযাবর। চাষাবাদের কৌশল আবিষ্কারের পর থেকেই মানুষ নির্দিষ্ট স্থানে থিতু হতে শুরু করে। চাষ করা ফসলই হয়ে ওঠে মানুষের অন্যতম প্রধান খাদ্য।
মানুষের সেই হাজার বছরের প্রচেষ্টাকে কয়েক বছরেই অর্জন করতে নানা পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন চীনের বেইজিংয়ের ইনস্টিটিউট অব জেনেটিকস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টাল বায়োলজির উদ্ভিদ জেনেটিক বিশেষজ্ঞ জিয়াইয়াং লি। জিন পরিবর্তনের মাধ্যমে তিনি এক বুনো প্রজাতির ধান চাষযোগ্য করে তোলার চেষ্টা করছেন।
লি দক্ষিণ আমেরিকার এক বুনো প্রজাতির ধান অরিজা আল্টা নিয়ে কাজ করছেন। এ ধান থেকে খাওয়ার যোগ্য পুষ্টিকর শস্য পাওয়া যায়। তবে এটি ফসল হিসেবে চাষ করা যায় না কারণ পাকার পরই এর বীজ ঝরে যায়। এ শস্যটি চাষযোগ্য করার জন্য লি ও তাঁর সহকর্মীরা দ্রুত বীজ ঝরে যাওয়াসহ আরও কিছু বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করার চেষ্টা করছেন।
শুধু ধানই নয় আরও অনেক বুনো শস্যই জলদি চাষযোগ্য করার জন্য জিনের পরিবর্তন করা হচ্ছে। বুনো প্রজাতির শস্যের সঙ্গে চাষযোগ্য শস্যের জিন প্রতিস্থাপন করার মাধ্যমে নতুন শস্য তৈরির এ প্রক্রিয়াকে ‘দে নভো ডমেস্টিকেশন’ বলা হয়। শস্যে এ ধরনের পরিবর্তন আনার জন্য মানুষের ইতিহাসে প্রথম দিককার কৃষকদের কয়েক হাজার বছর লেগে গিয়েছিল।
লি বলেন, এর মাধ্যমে বিশ্বে খাদ্য সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব হতে পারে। আমাদের প্রধান খাদ্যশস্যের নিকটবর্তী এমন অনেক প্রজাতি রয়েছে যা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্ব কৃষিতে বিরূপ প্রভাব পড়লে বিকল্প হিসেবে কাজে লাগানো যেতে পারে। যেমন, অরিজা আল্টাতে লবণাক্ততা ও খরার বিরুদ্ধে এবং বেশ কয়েকটি মারাত্মক রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা রয়েছে।
এটা শুনতে যত সহজ বাস্তবায়ন ততটাই জটিল। বেশির ভাগ বুনো শস্য নিয়েই তেমন কোনো গবেষণা নেই। এ শস্যগুলোর মৌলিক জীববিজ্ঞান বোঝা ছাড়া, জিন পরিবর্তন করেই এগুলোকে চাষযোগ্য করে তোলা সম্ভব নয়। এ ধরনের জিন পরিবর্তনের জন্য ক্রিসপার–ক্যাস৯–এর মতো জিন এডিটিং টুল ব্যবহার করা যায়। তবে এ পদ্ধতি ব্যবহার করেও হাজার বছরের অসংখ্য পরিবর্তনের মাধ্যমে বর্তমান রূপ নেওয়া আধুনিক শস্যের মতো করা সম্ভব নয়।
ক্রিসপার হলো ব্যাকটেরিয়া এবং আর্কিয়ার মতো প্রোক্যারিওটিক জীবের (এককোষী আদিপ্রাণ) জিনোমে পাওয়া ডিএনএ সিকোয়েন্সের একটি পরিবার। এই সিকোয়েন্সগুলো ব্যাকটেরিওফাজের ডিএনএর অংশ থেকে উদ্ভূত যা আগে প্রোক্যারিওটকে সংক্রামিত করেছিল। এগুলো পরবর্তী সংক্রমণের সময় অনুরূপ ব্যাকটেরিওফাজগুলোর ডিএনএ শনাক্ত করতে এবং এগুলোকে ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয়। ফলে এগুলো প্রোক্যারিওটের ভাইরাল বিরোধী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় মুখ্য ভূমিকা রাখে।
আর ক্যাস ৯ (Cas9) হলো ক্রিসপার সংশ্লিষ্ট একটি প্রোটিন। এটি মূলত এনজাইম যা ক্রিসপার সিকোয়েন্সগুলোকে নির্দেশনা দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়। এটি ডিএনএর নির্দিষ্ট ধরন চিনতে এবং উন্মুক্ত করতে পারে। ক্রিসপার সিকোয়েন্সের সঙ্গে ক্যাস ৯ এনজাইম মিলিয়ে তৈরি করা হয় ক্রিসপার ক্যাস৯। এই প্রযুক্তি কোনো জীবের মধ্যে জিন সম্পাদনা করা যায়। এই সম্পাদনা প্রক্রিয়ায় মৌলিক জৈবিক গবেষণা, জৈবপ্রযুক্তিগত পণ্যের উন্নয়ন এবং চিকিৎসাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায়। ক্রিসপার ক্যাস ৯ জিনোম সম্পাদনা কৌশল উদ্ভাবন ও উন্নয়নের জন্য ২০২০ সালে রসায়নে নোবেল পান ইমানুয়েল কার্পেন্টিয়ার এবং জেনিফার ডুডনা।
দে নভো ডমেস্টিকেশনের অপব্যবহারও হতে পারে। অনেক বুনো উদ্ভিদ সম্পর্কে কেবল আদিবাসী জনগোষ্ঠীগুলোই জানে। তাঁরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এসব উদ্ভিদ সম্পর্কিত জ্ঞান বহন করছেন। বহু বছর ধরেই ঔপনিবেশিকেরা আদিবাসীদের এ জ্ঞান চুরি ও অপব্যবহার করে আসছে। দক্ষিণ আফ্রিকার চা জাতীয় উদ্ভিদ রুইবোসও (আসপালাথাস লাইনিয়ারিস) আগে বুনো উদ্ভিদই ছিল।
ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস আমহের্স্টের উদ্ভিদবিদ ম্যাডেলিন বার্টলেট বলেন, ‘আমি অতীতের ভুলের সম্ভাব্য পুনরাবৃত্তি নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন।’
নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের (জেডব্লিউএসটি) মাধ্যমে মহাবিশ্বের সবচেয়ে বড় মানচিত্র তৈরি করলেন করেছেন বিজ্ঞানীরা। এই মানচিত্রটি মহাবিশ্বের একটি ছোট অংশজুড়ে বিস্তৃত, যেখানে প্রায় আট লাখ গ্যালাক্সি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে এমন গ্যালাক্সিও আছে, যা এত দূরে অবস্থিত যে সেগুলো মহাবিশ্বের শৈশবের সময়কার,
২১ ঘণ্টা আগেআধুনিক জীবনে প্লাস্টিকের ব্যবহার এড়িয়ে চলা প্রায় অসম্ভব। তবে এই বহুল ব্যবহৃত উপাদানটিই আজ পরিবেশের জন্য এক ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বছরের পর বছর ধরে এই প্লাস্টিক জমে থাকছে নদী-নালা, সাগর ও মাটির গভীরে, যা জলজ প্রাণী থেকে শুরু করে মানবস্বাস্থ্যের ওপর ফেলছে মারাত্মক প্রভাব। বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা
২ দিন আগেবিশ্বব্রহ্মাণ্ডে প্রতি মুহূর্তে ঘটছে অসংখ্য শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটছে। নক্ষত্রগুলো জ্বলছে বিশাল পরমাণু বিক্রিয়ার শক্তিতে, আর বিশাল উল্কাপিণ্ড ছুটে এসে ধাক্কা দিচ্ছে গ্রহে গ্রহে। তবে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এমন এক ধরনের মহাজাগতিক বিস্ফোরণ শনাক্ত করেছেন, যা এই সব কিছুকেই পেছনে ফেলে দিয়েছে। তাদের দাবি, মহাকা
৩ দিন আগেআমাদের গ্রহে প্রাণের বিকাশ ও প্রাচুর্য টিকে আছে অক্সিজেনের কল্যাণে। কিন্তু পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল সব সময় এমন ছিল না। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, ভবিষ্যতে আমাদের বায়ুমণ্ডলে আবারও মিথেনের আধিক্য হবে এবং অক্সিজেনবিহীন অবস্থায় ফিরে যাবে। তবে এখনই ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
৪ দিন আগে