Ajker Patrika

নাসারও আছে নিজস্ব যুদ্ধবিমানের বহর, কী কাজে ব্যবহার করে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২৫, ১৪: ৫২
দীর্ঘদিন ধরে নাসা সামরিক ধাঁচের বিমান ব্যবহার করে আসছে। ছবি: উইকিপিডিয়া
দীর্ঘদিন ধরে নাসা সামরিক ধাঁচের বিমান ব্যবহার করে আসছে। ছবি: উইকিপিডিয়া

আমরা যখন ‘নাসা’ নিয়ে ভাবি, তখন আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে রকেট আর মহাকাশ অভিযান। এটিই স্বাভাবিক, কারণ মহাকাশ-সংক্রান্ত নাসার অন্যান্য অর্জনই সংবাদমাধ্যমে বেশি প্রকাশ পায়। তবে অনেকেই জানেন না, নাসার রকেট বা মহাকাশযানের পাশাপাশি নিজস্ব যুদ্ধবিমানের বহর রয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে নাসা সামরিক ধাঁচের বিমান ব্যবহার করে আসছে, যেমন—এফ-১৫ ইগল ও এফ/এ-১৮ হর্নেট। ২০১৫ সালে নাসা একটি ভিডিও প্রকাশ করে। ভিডিওতে দেখা যায়, মাঝ আকাশে পাইলট এফ-১৫ডি ইগল যুদ্ধবিমানে কেসি-১৩৫ ট্যাংকার থেকে জ্বালানি ভরছেন। চ্যালেঞ্জিং এই কার্যক্রম কেবল পাইলটের দক্ষতাই নয়, বরং এই যুদ্ধবিমানগুলোর ক্ষমতা সম্পর্কেও একটি ধারণা দেয়।

নাসা এই যুদ্ধবিমানগুলোকে ডাকে ‘চেজ প্লেন’ নামে। এদের গতি অনেক বেশি। এগুলো তৈরি হয়েছে মার্কিন বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী ও মেরিন বাহিনীর জন্য যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে। তবে নাসা এই বিমানগুলোকে যুদ্ধের জন্য নয়, বরং তার মহাকাশযানের বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণ ও তথ্য নথিভুক্তকরণের জন্য ব্যবহার করে। পরীক্ষামূলক উড্ডয়নের সময় মহাকাশযানগুলোর পাশাপাশি উড়ে এসব যুদ্ধবিমান। আর সেগুলো মহাকাশযানগুলো পর্যবেক্ষণ করে।

নাসা সাধারণত পুরোনো যুদ্ধবিমানকেই পুনর্ব্যবহার করে। তাই এর বহরে সাম্প্রতিক সময়ের বহুল ব্যবহৃত নতুন ফাইটার জেট দেখা যায় না। সর্বশেষ ২০২১ সালে নাসা মার্কিন নৌবাহিনী থেকে একটি এফ/এ-১৮ সংগ্রহ করে। এটি এখন ব্যবহৃত হচ্ছে নাসার শব্দহীন সুপারসনিক এক্স-৫৯ বিমানের ফ্লাইট পর্যবেক্ষণ ও রেকর্ডিংয়ে।

নাসার কার্যক্রম কেবল যুদ্ধবিমানেই সীমাবদ্ধ নয়। সংস্থাটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা, পরিবহন এবং প্রশিক্ষণের জন্য নানা ধরনের ফাইটার জেট পরিচালনা করে। হিউস্টনের জনসন স্পেস সেন্টারসহ নাসার অন্য স্থাপনাগুলোতে ফাইটার জেটগুলো সংরক্ষণ করা হয়। প্রয়োজন হলে অতিরিক্ত মালামাল পরিবহন, বায়ুমণ্ডল গবেষণা বা নভোচারীদের প্রশিক্ষণের জন্য এগুলো ব্যবহৃত হয়।

নাসার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হলো ‘এয়ারবর্ন সায়েন্স প্রোগ্রাম’। এই প্রোগ্রামের আওতায় এয়ারক্রাফটে বিভিন্ন ধরনের বিশেষায়িত সেন্সর ও যন্ত্রপাতি যুক্ত করে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ও পরিবেশ (যেমন—সমুদ্রের বরফস্তর ও হিমবাহ) নিয়ে গবেষণা চালানো হয়। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে পৃথিবীর আকাশ থেকে জলবায়ু পরিবর্তন, মৌসুমি বৈচিত্র্যসহ নানা তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

এ ছাড়া, নাসা নিজেই পরীক্ষামূলক এয়ারক্রাফট তৈরি করে। যেগুলো মূলত নতুন ধারণা, স্বয়ংক্রিয় ক্ষেপণাস্ত্র বা উন্নত উড়োজাহাজ প্রযুক্তির পরীক্ষা চালানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। এসব প্রকল্প প্রমাণ করে, নাসা কেবল মহাকাশেই নয়, পৃথিবীতেও সমান সক্রিয়।

২০২৫ সালের জুলাই মাসেই নাসা দুটি বড় পরীক্ষামূলক প্রকল্প চালিয়েছে এর কিছু বিমান ব্যবহার করে। এর মধ্যে একটি পরীক্ষা ছিল—মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রযুক্তিকে ভবিষ্যতের বিমান চলাচল ব্যবস্থার সহায়ক হিসেবে ব্যবহার করা। আর অন্যটি ছিল—যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ খনিজের সম্ভাব্য উৎস অনুসন্ধান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত