Ajker Patrika

২০১ কার্ড চেয়ারম্যানের কবজায়

মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি
২০১ কার্ড চেয়ারম্যানের কবজায়

নরসিংদীর মনোহরদীতে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড আটকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার বিকেলে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড ফেরত চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এস এম কাসেম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে চরমান্দালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনিছ উদ্দিন শাহিন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ২০১ জন উপকারভোগীর কার্ড আটকে দেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, চরমান্দালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত আনিছ উদ্দিন শাহিন স্বতন্ত্র নির্বাচন করেন। নির্বাচনে যারা তাঁর পক্ষে কাজ করেননি, ভোটে জেতার পর খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কিছু উপকারভোগীদের কার্ড নিয়ে নেন তিনি।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে চরমান্দালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আনিছ উদ্দিন শাহিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ ওঠানো হয়েছে। কারও কার্ড বাতিল করার সুযোগ আমার নেই।’

জানা গেছে, গত ১৫ জুন উপজেলার চরমান্দালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোট হয়। ৭ জুলাই দায়িত্ব নেন নতুন চেয়ারম্যান আনিছ উদ্দিন শাহিন। তিনি কৌশলে ডিলারের কাছে থাকা ২০১ জনের কার্ড নিয়ে নেন, যা ফেরত দেননি।

উত্তর চরমান্দালিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান, মতিউর রহমান, রতন মিয়া, আব্দুর রহিম, রবিউল আউয়াল, হাছেন উদ্দিন ফকির, আব্দুল কাদির, হনুফা ও জাহেরা জানান, হতদরিদ্রদের জন্য সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে কার্ডের মাধ্যমে প্রতি মাসে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়া হয়। ইউপি নির্বাচনে যাঁরা শাহিনের পক্ষে কাজ করেননি, ভোটে জিতে যাওয়ার পর সেই পরিবারগুলোর কার্ড নিয়ে নেন তিনি।

উত্তর চারমান্দালিয়া গ্রামের দিনমজুর মতিউর রহমান বলেন, ‘আমি ২ বছর ধরে ৩০০ টাকা দিয়ে ৩০ কেজি চাল পাচ্ছি। আমাদের চাল উত্তোলনের কার্ড ডিলারের কাছে ছিল। সেখান থেকে চেয়ারম্যান আমার কার্ড নিয়ে গেছেন। পরে চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কার্ড বাতিল করা হয়েছে বলে জানান। এখন তাদের কার্ড, চাল কোনোটাই দেওয়া হচ্ছে না।’ আব্দুর রহিম অভিযোগ করে বলেন, ‘নির্বাচনে আমি নৌকার পক্ষে ছিলাম। তাই চেয়ারম্যানের বিরোধিতা করায় কার্ড রেখে দিয়েছেন তিনি। আমরা গরিব মানুষ। এখন আমরা কী করব।’ 
রিকশাচালক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘১০ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি চাল পেতাম। বর্তমান চেয়ারম্যান আনিছ উদ্দিন শাহিন নতুন করে কার্ড দেওয়ার নামে আমার কার্ড নিয়ে গেছে। কার্ড ফেরত চাইলে চেয়ারম্যান ধমক দেয়।’ 
ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সদস্য ও ডিলার ইমরান হোসেন পাভেল বলেন, ‘নতুন চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেওয়ার পর কার্ডগুলো দেখার জন্য নেন। পরে ফেরত চাইলে আর দেননি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত