Ajker Patrika

এই বাজেট কৃষক-শ্রমিকদের বাঁচার পথ দেখাতে পারেনি: জাফরুল্লাহ চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১০ জুন ২০২২, ১৬: ৩১
এই বাজেট কৃষক-শ্রমিকদের বাঁচার পথ দেখাতে পারেনি: জাফরুল্লাহ চৌধুরী

বাজেট কৃষক-শ্রমিকদের বাঁচার পথ দেখাতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর পল্টনে গণতান্ত্রিক গার্মেন্টস শ্রমিক ফোরাম আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বাজেট প্রসঙ্গে বলেন, ‘জনপ্রশাসন, আমলা, সামরিক ও পুলিশ বাহিনীর জন্য ব্যয় হবে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। চোখ বন্ধ করে বিভিন্ন দেশ থেকে যে ধার করেছেন, সেই ধার বাবদ যাবে প্রায় ১৬ শতাংশ। এর সবই শ্রমিক-কৃষকদের টাকা থেকে যাবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে বলব, বাজেটে শ্রমিক-কৃষকের কথা না বলায়, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কথা না থাকায় আন্দোলন অব্যাহত রাখুন। কারণ কৃষক-শ্রমিকের মুক্তি না হলে দেশের মুক্তি হবে না। বাজেটে কৃষকের জন্য, শ্রমিকের জন্য কোথায় বরাদ্দ? উচ্চ পর্যায়ের অফিসারদের ঠিকই বরাদ্দ দিয়েছেন। এই বাজেট কৃষক-শ্রমিকদের বাঁচার পথ দেখাতে পারেনি।’ 

জাফরুল্লাহ বলেন, ‘দেশের প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়েছে। ঢাকায় বাবা-মা-সন্তানসহ তিন জনের পরিবারের খাবার খরচ যায় মাসে ২১ হাজার টাকা। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন, সরকারি মাস্তানের খরচ—এই সব মিলিয়ে কত টাকা লাগে, তা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয় বোঝেন।’ 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন উল্লেখ করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি বলেন, ‘সম্প্রতি একটা স্বপ্ন পূরণ হয়েছে, পদ্মা। আপনি পরিশ্রমে এত ক্লান্ত, তার ওপর আবার তাহাজ্জুদের নামাজ পড়েন। এই ক্লান্তির কারণে সম্প্রতি আপনি গার্মেন্টস শ্রমিকদের সঙ্গে কী করেছেন তা কি একবার ভেবে দেখেছেন? বেতন বৃদ্ধি চাইলে আমও যাবে ছালাও যাবে, শ্রমিকদের আম-ছালা যাবে, কিন্তু আপনার মসনদ থাকবে তো?’

এ সময় জাফরুল্লাহ শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা যেভাবে দেশকে ভালোবাসেন, দেশের জন্য শ্রম দেন, কিন্তু আপনারা কীভাবে চলাফেরা করেন সে ব্যাপারে সরকার বিন্দুমাত্র চিন্তা করে না। শ্রমিকদের শুধু ২০ হাজার টাকা বেতন দিলে হবে না। আপনার সন্তানকে বিনা বেতনে শিক্ষা দিতে হবে। পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে। আমি দুই বছর ধরে বলছি শ্রমিকদের রেশন দেন ,যে রেশন আপনি সামরিক বাহিনীতে দিয়ে যাচ্ছেন। যে রেশন পুলিশ-গোয়েন্দা বাহিনীকে দিয়ে যাচ্ছেন।’ 

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে জাফরুল্লাহ আরও বলেন, ‘আপনার নোবেল পুরস্কার পাওয়ার স্বপ্ন। নোবেল পুরস্কার পেতে হলে আপনাকে বহুবার বলেছি, আমাদের সুপারিশ সুচিন্তিতভাবে আপনাকে গ্রহণ করতে হবে। সেগুলো হচ্ছে শ্রমিকদের বেতন, বাড়িভাড়ার সাবসিডি, চিকিৎসা ভাতা, তাঁদের সন্তানদের শিক্ষা খরচ দিতে হবে। তাহলে পৃথিবী বুঝবে আপনি কার পক্ষের লোক, এখন পৃথিবী জানে আপনি করপোরেট শক্তির লোক।’ 

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর জন্য অবশ্যই অভিনন্দন জানাই, তবে খোলা মনে অভিনন্দনটা জানাতে পারছি না। ১০ হাজার কোটি টাকার সেতু হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকায়। হতে পারে খরচ বেড়েছে, জীবনযাত্রার সবকিছুরই দাম বেড়েছে। কিন্তু অনুগ্রহ করে হিসাবটা দেন।’ 

গণতান্ত্রিক গার্মেন্টস শ্রমিক ফোরামের সভাপতি আব্দুল আলীম স্বপনের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য নঈম জাহাঙ্গীর, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মিন্টু মিয়া প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত