Ajker Patrika

তাজরীনের দেলোয়ারকেই সভাপতি রাখল মৎস্যজীবী লীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২২, ২১: ৩৪
তাজরীনের দেলোয়ারকেই সভাপতি রাখল মৎস্যজীবী লীগ

২০১২ সালে আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশনসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান ১১১ জন শ্রমিক। সেই মামলার মূল আসামি প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দেলোয়ার হোসেন। এত দিনেও মামলার সুরাহা না হলেও দেলোয়ারকে ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি নির্বাচিত করেছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন মৎস্যজীবী লীগ। 

গত ১১ মে সংগঠনটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দেলোয়ার হোসেন সভাপতি ও আবদুল জলিল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। নতুন কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তদের তালিকা গণমাধ্যমে প্রকাশের পরই সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ নিয়ে কথা বলেন খোদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। 

গত ২২ মে মৎস্যজীবী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের কমিটি নিয়ে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে।’ 

আজ বৃহস্পতিবার দেলোয়ার হোসেনকে সভাপতি ও আবদুল জলিলকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি অনুমোদন করেছে মৎস্যজীবী লীগ। সংগঠনের সভাপতি সায়ীদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আজগর লস্কর ও কার্যকরী সভাপতি সাইফুল আলম মানিক স্বাক্ষরিত এ চিঠিতে দুই নেতাকে আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে ৮৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে তা কেন্দ্রে জমা দিতে বলা হয়েছে।

মৎস্যজীবী লীগের নেতারা জানান, দেলোয়ার হোসেন রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকলেও সংগঠনের সভাপতি সায়ীদুর রহমানের পছন্দের লোক। এর আগে ২০১৮ সালে তাঁকে ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক করা হয়। সেই সময় মৎস্যজীবী লীগ লীগ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছিল না। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সম্মেলনে সংগঠনটিকে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন করা হয়।

এত সমালোচনার পরও দেলোয়ার হোসেনকে কেন সভাপতি পদে রাখা হলো তা জানতে সাধারণ সম্পাদক আজগর লস্করের নম্বরে একাধিকবার কল করা হলো তিনি জবাব দেননি। কার্যকরী সভাপতি সাইফুল আলম মানিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আপনি বিষয়টি নিয়ে সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করেন।’ সায়ীদুর রহমানের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে কয়েকবার কল করা হয়। তিনবার কল ধরে ‘হ্যালো’ ‘হ্যালো’ বলেন। আর কোনো কথা বলেননি। ওপাশ থেকে শুধু অন্যদের কথা শোনা যায়। 

২০১২ সালে আশুলিয়ায় তাজরীন ফ্যাশনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১১ জন পোশাকশ্রমিক আগুনে পুড়ে মারা যান। এরপর আওয়ামী লীগ সরকারকে দেশে-বিদেশে বেশ সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। তৈরি পোশাক খাত থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করে। পরে নানা কমপ্লায়েন্সের শর্ত দেয় তারা। 

অগ্নিদুর্ঘটনার পরের বছর অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। অভিযোগপত্র আসামিরা হলেন—তাজরীনের এমডি দেলোয়ার হোসেন, তাঁর স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার, প্রকৌশলী এম মাহবুবুল মোর্শেদ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা দুলাল, স্টোর ইনচার্জ হামিদুল ইসলামসহ ১৩ জন। বর্তমানে আসামিরা সবাই জামিনে মুক্ত আছেন। মামলার সাক্ষী ১০৪ জন। 

তাজরীনের ঘটনায় ২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটির এমডিসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়। তবে সাক্ষী হাজির করতে না পেরে বারবার সময় চেয়ে নেয় রাষ্ট্রপক্ষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত