সম্পাদকীয়
তিনি নির্বিকারভাবেই বললেন। এর আগে কেউ এভাবে বলেননি। আগে যাঁরাই ওই চেয়ারে ছিলেন, তাঁরা একটু হলেও সংকোচ করতেন, মুখে লজ্জা ও বিব্রতবোধ ফুটিয়ে তুলে বলতেন। তিনি বললেন, সরাসরি এবং স্পষ্টভাবে। হ্যাঁ, তিনি বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গত বুধবার তিনি জানান, দেশে যত দিন অপ্রদর্শিত আয় থাকবে, তত দিন পর্যন্ত তা বৈধ করার সুযোগ থাকবে! কী সাংঘাতিক! মানে অবৈধ আয় বৈধ করতে আর কোনো টেনশন নেই! যেভাবেই হোক টাকা কামাই করে মাত্র ১০ শতাংশ কর দিলেই সরকার বাহাদুর খুশি! কোনো প্রশ্ন হবে না। কোনো জবাবদিহি নেই। আগের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সময়ও অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ ছিল। তবে তা নিয়মিত করের সঙ্গে বাড়তি জরিমানাসহ। সুযোগ এভাবে অবারিত ছিল না, এক বছর বা বেশি হলে দুই বছর। জরিমানা দিয়ে সুযোগ সারাজীবন দিলেও কোনো প্রশ্ন নেই। কারণ, সাধারণ মানুষ যে হারে কর দেন, সেটা এর থেকে বেশি। আর বর্তমান আইনে মাত্র ১০ শতাংশ কর দিলেই সব বৈধ। তাহলে কেন বেশি কর দিতে যাবেন মানুষ? সব আয়কে অপ্রদর্শিত দেখিয়ে মাত্র ১০ শতাংশ কর দিলেই তো দফারফা।
সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক দেশে, যেখানে নাগরিকের সবার সমান অধিকার—সেখানে একটি গোষ্ঠী যাঁরা ঘুষ, দুর্নীতি, লুটপাটের মাধ্যমে টাকা কামাবে, আর বিনা প্রশ্নে ১০ শতাংশ কর দিয়ে তা বৈধ করবে—এটা কেমন আইন? এটা সাধারণ সৎ করদাতাদের সঙ্গে রীতিমতো তামাশা। এবং বৈষম্য তো অবশ্যই। সংবিধানের সঙ্গেও তা সাংঘর্ষিক। এটা কোনোভাবেই হতে পারে না।
সরকার চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণায় বলেছিল, যাতে বিদেশে টাকা পাচার না হয়, সে জন্য এ সুযোগ দিচ্ছে। আর এ বছর বলছে, যত দিন অর্থনীতিতে অপ্রদর্শিত আয় থাকবে, তত দিন সুযোগ থাকবে। এটা হওয়া উচিত নয়। একই দেশে দুই রকমের নীতি থাকতে পারে না। খবর হয়েছে যে, টাকাওয়ালা ব্যক্তিরা এ সুযোগ লুফে নিচ্ছেন। তাঁরা গণহারে ১০ শতাংশ কর দিয়ে তাঁদের অবৈধ আয় বৈধ করিয়ে নিচ্ছেন। বাজেটে ব্যাংক আমানতে, নগদ টাকা, ফ্ল্যাট কেনাসহ সব ক্ষেত্রে বিনা প্রশ্নে টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। শেয়ারবাজারেও অবাধ সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এখন শেয়ার কিনে যেমন টাকা সাদা করা যাবে, তেমনি অতীতে অর্থাৎ কয়েক বছর আগে শেয়ার কেনা থাকলেও তা সাদা করা যাবে। সব মিলিয়ে অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ১০ হাজার কোটি টাকা সাদা হয়েছে। এই সুযোগ ৩০ জুন, চলতি অর্থবছরে শেষ হচ্ছে। যদি এখানেই সরকার ক্ষান্ত দিত, তাহলে অন্তত মানা যেত। কিন্তু না, সরকার তা অব্যাহত রাখতে চাইছে।
এভাবে চলতে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই সৎ করদাতা, যাঁরা কষ্ট করে আয় করেন, তাঁরা কর দেওয়ার উৎসাহ হারিয়ে ফেলবেন। যেহেতু অর্থমন্ত্রী নিজেই কথাটি বলেছেন। তার মানে—আসছে বাজেটে নিশ্চয়ই আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি এ ঘোষণা দেবেন। তবে আমরা মনে করি, এ সুযোগ আর দেওয়া ঠিক হবে না। এতে সমাজে বাজে উদাহরণ তৈরি হবে। মানুষের অবৈধ আয় ও সম্পদ গড়ার মানসিকতা বাড়বে, নীতি–নৈতিকতা ও মূল্যবোধের ওপর আঘাত আসবে, ঘুষ, দুর্নীতি ও লুটপাট করে টাকা কামাইয়ের অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। সরকার যে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের পরিকল্পনা করছে, তা ব্যাহত হবে। এটা যেন না হয়। আসছে বাজেটে এ সুযোগ আর না দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।
তিনি নির্বিকারভাবেই বললেন। এর আগে কেউ এভাবে বলেননি। আগে যাঁরাই ওই চেয়ারে ছিলেন, তাঁরা একটু হলেও সংকোচ করতেন, মুখে লজ্জা ও বিব্রতবোধ ফুটিয়ে তুলে বলতেন। তিনি বললেন, সরাসরি এবং স্পষ্টভাবে। হ্যাঁ, তিনি বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গত বুধবার তিনি জানান, দেশে যত দিন অপ্রদর্শিত আয় থাকবে, তত দিন পর্যন্ত তা বৈধ করার সুযোগ থাকবে! কী সাংঘাতিক! মানে অবৈধ আয় বৈধ করতে আর কোনো টেনশন নেই! যেভাবেই হোক টাকা কামাই করে মাত্র ১০ শতাংশ কর দিলেই সরকার বাহাদুর খুশি! কোনো প্রশ্ন হবে না। কোনো জবাবদিহি নেই। আগের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সময়ও অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ ছিল। তবে তা নিয়মিত করের সঙ্গে বাড়তি জরিমানাসহ। সুযোগ এভাবে অবারিত ছিল না, এক বছর বা বেশি হলে দুই বছর। জরিমানা দিয়ে সুযোগ সারাজীবন দিলেও কোনো প্রশ্ন নেই। কারণ, সাধারণ মানুষ যে হারে কর দেন, সেটা এর থেকে বেশি। আর বর্তমান আইনে মাত্র ১০ শতাংশ কর দিলেই সব বৈধ। তাহলে কেন বেশি কর দিতে যাবেন মানুষ? সব আয়কে অপ্রদর্শিত দেখিয়ে মাত্র ১০ শতাংশ কর দিলেই তো দফারফা।
সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক দেশে, যেখানে নাগরিকের সবার সমান অধিকার—সেখানে একটি গোষ্ঠী যাঁরা ঘুষ, দুর্নীতি, লুটপাটের মাধ্যমে টাকা কামাবে, আর বিনা প্রশ্নে ১০ শতাংশ কর দিয়ে তা বৈধ করবে—এটা কেমন আইন? এটা সাধারণ সৎ করদাতাদের সঙ্গে রীতিমতো তামাশা। এবং বৈষম্য তো অবশ্যই। সংবিধানের সঙ্গেও তা সাংঘর্ষিক। এটা কোনোভাবেই হতে পারে না।
সরকার চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণায় বলেছিল, যাতে বিদেশে টাকা পাচার না হয়, সে জন্য এ সুযোগ দিচ্ছে। আর এ বছর বলছে, যত দিন অর্থনীতিতে অপ্রদর্শিত আয় থাকবে, তত দিন সুযোগ থাকবে। এটা হওয়া উচিত নয়। একই দেশে দুই রকমের নীতি থাকতে পারে না। খবর হয়েছে যে, টাকাওয়ালা ব্যক্তিরা এ সুযোগ লুফে নিচ্ছেন। তাঁরা গণহারে ১০ শতাংশ কর দিয়ে তাঁদের অবৈধ আয় বৈধ করিয়ে নিচ্ছেন। বাজেটে ব্যাংক আমানতে, নগদ টাকা, ফ্ল্যাট কেনাসহ সব ক্ষেত্রে বিনা প্রশ্নে টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। শেয়ারবাজারেও অবাধ সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এখন শেয়ার কিনে যেমন টাকা সাদা করা যাবে, তেমনি অতীতে অর্থাৎ কয়েক বছর আগে শেয়ার কেনা থাকলেও তা সাদা করা যাবে। সব মিলিয়ে অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ১০ হাজার কোটি টাকা সাদা হয়েছে। এই সুযোগ ৩০ জুন, চলতি অর্থবছরে শেষ হচ্ছে। যদি এখানেই সরকার ক্ষান্ত দিত, তাহলে অন্তত মানা যেত। কিন্তু না, সরকার তা অব্যাহত রাখতে চাইছে।
এভাবে চলতে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই সৎ করদাতা, যাঁরা কষ্ট করে আয় করেন, তাঁরা কর দেওয়ার উৎসাহ হারিয়ে ফেলবেন। যেহেতু অর্থমন্ত্রী নিজেই কথাটি বলেছেন। তার মানে—আসছে বাজেটে নিশ্চয়ই আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি এ ঘোষণা দেবেন। তবে আমরা মনে করি, এ সুযোগ আর দেওয়া ঠিক হবে না। এতে সমাজে বাজে উদাহরণ তৈরি হবে। মানুষের অবৈধ আয় ও সম্পদ গড়ার মানসিকতা বাড়বে, নীতি–নৈতিকতা ও মূল্যবোধের ওপর আঘাত আসবে, ঘুষ, দুর্নীতি ও লুটপাট করে টাকা কামাইয়ের অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। সরকার যে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের পরিকল্পনা করছে, তা ব্যাহত হবে। এটা যেন না হয়। আসছে বাজেটে এ সুযোগ আর না দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।
গত সংখ্যায় লিখেছিলাম, এখন আর ছাত্র খুঁজে পাওয়া যায় না, চারদিকে পরীক্ষার্থী। কিন্তু দ্রুতই দেখা যাচ্ছে, ছাত্র এবং পরীক্ষার্থী কাউকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ছাত্রদের একটা বৃহদাংশ রাজনীতিবিদে পরিণত হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, তাদের অঙ্গুলি হেলনে বড় বড় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তও হয়ে যাচ্ছে। ভেবেছিলাম প্রাথমিক শিক্ষা
২১ ঘণ্টা আগেবিজ্ঞানীরা বিংশ শতাব্দীজুড়ে বহির্জাগতিক প্রাণ অনুসন্ধানের চেষ্টা চালিয়েছেন। খুঁজেছেন কার্বনভিত্তিক, সিলিকনভিত্তিক বা অ্যামোনিয়া যৌগনির্ভর প্রাণ। এটা আমাদের জানা জরুরি যে প্রাণের প্রকৃতি, আর অন্য জায়গায় প্রাণ আছে কি না, তা আসলে একই প্রশ্নের দুটো দিক। তা হলো, ‘কেন আমরা এখানে?’ বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে,
২১ ঘণ্টা আগেপরিবার হলো মূলত রক্ত-সম্পর্কিত ব্যক্তিদের সংগঠন, যেখানে সব সদস্যের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, নিরাপত্তা এবং বিনোদনের আয়োজন হয়ে থাকে। পরিবার কখন কী কারণে গড়ে উঠেছে, তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। বেশির ভাগের মত হলো, মানুষ সমতলে বসবাস করার সময় কৃষিকাজ শিখে ফেলে। কৃষিজাত পণ্য সংরক্ষণের জন্য গোলাঘর
২১ ঘণ্টা আগেনিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেশি, এ কথা নতুন নয়। এবং এ ব্যাপারে প্রমাণের অভাব নেই। একটা কিছু নিষিদ্ধ করলেই যে তা ব্যবহার করা বন্ধ হয়ে যাবে, এমন ভাবাটাই ভুল। ধরুন, একটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলে সেই দলটি যে ছদ্মবেশে বা তলে তলে রাজনীতি করবে না, সেই গ্যারান্টি কে দিতে পারে? তেমনি কেউ
১ দিন আগে