সম্পাদকীয়
আজ মহান একুশে ফেব্রুয়ারি। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে এই আন্দোলন গড়ে উঠলেও এ ছিল গণতন্ত্র ও ন্যায়ের সংগ্রামের পথে যাত্রার অঙ্গীকার। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের আমলানির্ভর সরকার ও প্রশাসনের চাপিয়ে দেওয়া একমাত্র রাষ্ট্রভাষা উর্দুর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল বাংলার জনগণ। বাঙালির চাওয়া ছিল গণতান্ত্রিক। পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যার অধিকারী হয়েও বাংলার নেতৃত্ব সেদিন বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে দাবি করেছিল, একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে নয়। কিন্তু সেই দাবিও মানতে চায়নি সরকার। ২১ ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন রফিক, বরকত, জব্বার। গুরুতর আহত সালাম মারা গিয়েছিলেন ৭ এপ্রিল। ২২ ফেব্রুয়ারিও মিছিলে চলেছিল গুলি। ঝরে গিয়েছিল শফিউর রহমানসহ আরও কয়েকটি তাজা প্রাণ। পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ১৯৫৬ সালে বাংলা ভাষা পেয়েছিল স্বীকৃতি।
বাংলার ভাষা ও সংস্কৃতি হৃদয়ে ধারণ করে এই জাতি স্বাধিকার আন্দোলনের পথে হেঁটেছে এবং ছিনিয়ে এনেছে স্বাধীনতা। এই পুরো পথটা তৈরি করেছে একুশের আত্মদান। একুশের উৎস থেকেই জেগে উঠেছিল গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন। একুশ হয়ে উঠেছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন জাতির ভাষার অধিকার অর্জনের পথিকৃৎ।
বাঙালির অমর একুশ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি অর্জন করেছে—এ বড় গর্বের কথা। একুশ সর্বজনীন ভাষাসংগ্রামের বার্তাই দিয়েছিল। এ শুধু বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না; যারা বঞ্চিত, অবহেলিত, তাদেরও নিজ ভাষা ও সংস্কৃতির স্বীকৃতির প্রক্রিয়ায় বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের অনুপ্রেরণা কাজ করে।
দুঃখের বিষয়, শুধু ফেব্রুয়ারি মাস এলেই সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু করার ব্যাপারে সোচ্চার হয় সরকার, মিডিয়া ইত্যাদি। উচ্চশিক্ষা কিংবা উচ্চ আদালতে বাংলার যেটুকু প্রচলন আছে, তা গর্ব করার মতো নয়। বাঙালি ছাড়াও আমাদের ভূখণ্ডে বিভিন্ন ভাষাভাষী যেসব মানুষ আছে, তাদের ভাষার অধিকার সংরক্ষণের জন্য খুব বেশি কাজ হয়নি। বৈশ্বিক অবস্থা বিবেচনায় ব্যবসা-বাণিজ্য, উচ্চশিক্ষা, গবেষণায় ইংরেজি ভাষার প্রাধান্য লক্ষ করা যায়। কিন্তু নিজ ভাষায় পোক্ত না হয়ে শুধু ইংরেজির দিকে ঝোঁক থাকলে তা দেশের মর্যাদা বাড়ায় না। ভাবনার এই অঞ্চলকে কীভাবে একটি নির্দিষ্ট রূপ দেওয়া যায়, তা নিয়ে ভাবা দরকার। এ জন্য আমাদের প্রয়োজন জাতীয় ভাষা-পরিকল্পনা।
‘দেশপ্রেম’ মুখে বলার বিষয় নয়, কাজে করে দেখানোর বিষয়। দেশের শিল্প-সংস্কৃতি বিকশিত না হলে, সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের ওপর আঘাত এলে, নারীমুক্তির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিলে গণতন্ত্রও থাকে না, স্বাভাবিক বিকাশও থাকে না। নিজ সংস্কৃতি চিনে নেওয়ার ক্ষেত্রেও রয়েছে দোদুল্যমানতা। এখন স্বভাবতই প্রশ্ন আসে, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন নিজ ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি যে আন্তরিকতা দেখিয়েছিল, সে বিষয়ে কি আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে? হয়ে থাকলে কারা সেই সংকট তৈরি করছে, তা শনাক্ত করে একুশের ভাবনাকে সমুন্নত করতে হবে। কোনো ধরনের উসকানি কিংবা ঔদ্ধত্যের কাছে মাথা নত করা যাবে না। একুশ মানে মাথা নত না করা।
আজ মহান একুশে ফেব্রুয়ারি। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে এই আন্দোলন গড়ে উঠলেও এ ছিল গণতন্ত্র ও ন্যায়ের সংগ্রামের পথে যাত্রার অঙ্গীকার। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের আমলানির্ভর সরকার ও প্রশাসনের চাপিয়ে দেওয়া একমাত্র রাষ্ট্রভাষা উর্দুর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল বাংলার জনগণ। বাঙালির চাওয়া ছিল গণতান্ত্রিক। পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যার অধিকারী হয়েও বাংলার নেতৃত্ব সেদিন বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে দাবি করেছিল, একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে নয়। কিন্তু সেই দাবিও মানতে চায়নি সরকার। ২১ ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন রফিক, বরকত, জব্বার। গুরুতর আহত সালাম মারা গিয়েছিলেন ৭ এপ্রিল। ২২ ফেব্রুয়ারিও মিছিলে চলেছিল গুলি। ঝরে গিয়েছিল শফিউর রহমানসহ আরও কয়েকটি তাজা প্রাণ। পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ১৯৫৬ সালে বাংলা ভাষা পেয়েছিল স্বীকৃতি।
বাংলার ভাষা ও সংস্কৃতি হৃদয়ে ধারণ করে এই জাতি স্বাধিকার আন্দোলনের পথে হেঁটেছে এবং ছিনিয়ে এনেছে স্বাধীনতা। এই পুরো পথটা তৈরি করেছে একুশের আত্মদান। একুশের উৎস থেকেই জেগে উঠেছিল গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন। একুশ হয়ে উঠেছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন জাতির ভাষার অধিকার অর্জনের পথিকৃৎ।
বাঙালির অমর একুশ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি অর্জন করেছে—এ বড় গর্বের কথা। একুশ সর্বজনীন ভাষাসংগ্রামের বার্তাই দিয়েছিল। এ শুধু বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না; যারা বঞ্চিত, অবহেলিত, তাদেরও নিজ ভাষা ও সংস্কৃতির স্বীকৃতির প্রক্রিয়ায় বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের অনুপ্রেরণা কাজ করে।
দুঃখের বিষয়, শুধু ফেব্রুয়ারি মাস এলেই সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু করার ব্যাপারে সোচ্চার হয় সরকার, মিডিয়া ইত্যাদি। উচ্চশিক্ষা কিংবা উচ্চ আদালতে বাংলার যেটুকু প্রচলন আছে, তা গর্ব করার মতো নয়। বাঙালি ছাড়াও আমাদের ভূখণ্ডে বিভিন্ন ভাষাভাষী যেসব মানুষ আছে, তাদের ভাষার অধিকার সংরক্ষণের জন্য খুব বেশি কাজ হয়নি। বৈশ্বিক অবস্থা বিবেচনায় ব্যবসা-বাণিজ্য, উচ্চশিক্ষা, গবেষণায় ইংরেজি ভাষার প্রাধান্য লক্ষ করা যায়। কিন্তু নিজ ভাষায় পোক্ত না হয়ে শুধু ইংরেজির দিকে ঝোঁক থাকলে তা দেশের মর্যাদা বাড়ায় না। ভাবনার এই অঞ্চলকে কীভাবে একটি নির্দিষ্ট রূপ দেওয়া যায়, তা নিয়ে ভাবা দরকার। এ জন্য আমাদের প্রয়োজন জাতীয় ভাষা-পরিকল্পনা।
‘দেশপ্রেম’ মুখে বলার বিষয় নয়, কাজে করে দেখানোর বিষয়। দেশের শিল্প-সংস্কৃতি বিকশিত না হলে, সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের ওপর আঘাত এলে, নারীমুক্তির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিলে গণতন্ত্রও থাকে না, স্বাভাবিক বিকাশও থাকে না। নিজ সংস্কৃতি চিনে নেওয়ার ক্ষেত্রেও রয়েছে দোদুল্যমানতা। এখন স্বভাবতই প্রশ্ন আসে, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন নিজ ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি যে আন্তরিকতা দেখিয়েছিল, সে বিষয়ে কি আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে? হয়ে থাকলে কারা সেই সংকট তৈরি করছে, তা শনাক্ত করে একুশের ভাবনাকে সমুন্নত করতে হবে। কোনো ধরনের উসকানি কিংবা ঔদ্ধত্যের কাছে মাথা নত করা যাবে না। একুশ মানে মাথা নত না করা।
সংবাদপত্রের পাতায় প্রকাশিত কোনো কোনো শিরোনাম ও সংবাদ বিশেষ আগ্রহ নিয়ে পড়তে চান পাঠক। আজকের পত্রিকায় ৩১ মে প্রকাশিত প্রধান শিরোনাম, ‘৬ মাসের টানাটানিতে ভোট’ শীর্ষক সংবাদটি সম্পর্কে আমাকে একজন সম্পাদক ফোন করে প্রশংসা করলেন। আমি বুঝতে পারলাম শিরোনামটি যথেষ্ট প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ভোট নিয়ে জনগণের আগ
১৪ ঘণ্টা আগেঈদ—এই শব্দটির সঙ্গে অগণিত মানুষের হৃদয়ে যে অনুভব জাগে, তা আনন্দ, উৎসব আর মিলনের। ঘরে ঘরে নতুন জামা, সুস্বাদু খাবার, কোলাকুলি আর রঙিন খুশির চিত্র যেন ঈদের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে সেই পরিচিত দৃশ্যের বাইরে যে একটা বড় প্রশ্ন থেকে যায়, তা হলো—ঈদ কি সবার জন্য একরকম? ঈদের দিন কি সকলের মুখেই সমান হাসি? ঈদের আনন
১৪ ঘণ্টা আগে১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ঈদ এসেছিল। সেই ঈদের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে একটা বিশেষ নাটক লিখেছিলাম। যুদ্ধরত শিল্পীদের অভিনয়ে সমৃদ্ধ হয়ে নাটকটি প্রচারিত হয়েছিল ঈদের আগের দিন। নাটকটির নাম ছিল ‘চান্দের তলোয়ার’। ঈদের চাঁদ সাধারণত আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। খুশির এই ঈদের বড় প্রতীক হলো চাঁদ।
১৪ ঘণ্টা আগেদরজায় কড়া নাড়ছে মুসলমানদের দ্বিতীয় প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। প্রতিবছর আরবি বর্ষপঞ্জির ১০ জিলহজ ঈদের নামাজ ও পশু কোরবানির মাধ্যমে উদ্যাপিত হয় এই উৎসব। আনন্দ-উল্লাসের পাশাপাশি এই উৎসবের লক্ষ্য—ত্যাগের মহিমায় সমাজটা সুন্দর করে তোলা, স্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জনে সৃষ্টির জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া।
১৪ ঘণ্টা আগে