বিভুরঞ্জন সরকার
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনের অবসানের পর বাংলাদেশের মানুষ একটি ভালো পরিবর্তনের আশা করেছিল। মানুষ চেয়েছিল একটি দায়িত্বশীল, সৎ ও বৈষম্যহীন সরকার। যেহেতু কোনো বিশেষ বা একক রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে নয়, পরিবর্তনটা এসেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে, সেহেতু পরিবর্তিত বাস্তবতায় ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার বিষয়টি অগ্রাধিকার পাবে বলে আশাবাদী হওয়ার কারণও ছিল। কিন্তু ৯ মাস পর এখন আর কারও মুখ থেকেই কোনো আশার কথা শোনা যায় না। মানুষ দেখছে, শাসক দলের পরিবর্তন হয়েছে ঠিকই, শাসনের ধারা বদল হয়নি। লঙ্কায় গেলে রাবণ হওয়াটাই যেন স্বাভাবিক।
দেশটি কেমন চলছে তা বোঝানোর জন্য আলোচনায় যাওয়ার আগে ২৭ মে মঙ্গলবারের আজকের পত্রিকার প্রথম পাতার কয়েকটি শিরোনাম উল্লেখ করছি। ‘সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে কোনো বিভেদ নেই’—সেনাসদরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করা হয়েছে। ‘গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রশ্নে এখনো মতানৈক্য’—জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ‘সচিবালয়ে আজও বিক্ষোভের ডাক, দর্শনার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা’—সরকারি চাকরি অধ্যাদেশকে কেন্দ্র করে সচিবালয়ে দুই দিন ধরে যে আন্দোলন চলছে, তার রেশ। ‘কলমবিরতিতে ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা’। ‘স্কুলে গেলেও ক্লাস নেননি শিক্ষকেরা’। ‘পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে’। ‘সরকারকে জিম্মি করলে পরিস্থিতি ভালো হবে না—কর্মকর্তাদের হাসনাত’।
পরিস্থিতি যে স্বাভাবিক নেই, উত্তেজনা না কমে যে তা বাড়ছে, সেটা এই কয়টি খবরের শিরোনাম পড়লেই বুঝতে কষ্ট হয় না।
সপ্তাহখানেক ধরে দেশে নানা গুজব ভেসে বেড়াচ্ছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরকারের মতভিন্নতার খবরে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। তবে সেনাসদর থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, সরকার ও সেনাবাহিনী একে অপরের বিপরীতে দাঁড়ায়নি এবং একসঙ্গে কাজ করছে। ২৬ মে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানিয়েছে সেনাসদর। ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনসের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা এবং সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশনস শাখার স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম।
মিয়ানমারের রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়, এমন কোনো কাজে সেনাবাহিনী সম্পৃক্ত হবে না।’
করিডর নিয়ে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, ‘যেভাবে কথা আসছে যে সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর বিশাল মতপার্থক্য হয়েছে, বিভেদ রয়েছে, মিডিয়াতে বিষয়টি যেভাবে আসছে, এ রকম আসলেই কিছু হয়নি। আমরা একে অপরের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে সুন্দরভাবে কাজ করছি। এটা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করার কোনো সুযোগ নেই।’
বিষয়গুলো জটিলভাবে চিন্তা না করে সহজভাবে ভাবার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যেন বিষয়টিকে এমনভাবে না দেখি যে সরকার ও সেনাবাহিনী ভিন্ন ভিন্ন চিন্তা করছে এবং একে অপরের বিপরীতে দাঁড়িয়ে আছে। এটা কখনোই নয়। সরকার ও সেনাবাহিনী একসঙ্গে কাজ করছে। ভবিষ্যতেও আমরা একসঙ্গে কাজ করে যাব বলে সুদৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’
যাক, বিষয়টি যতটা জটিলভাবে সামনে আনা হয়েছিল, সেটা যে ঠিক নয়, এটা জেনে স্বস্তি অনুভব না করার কোনো কারণ নেই।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের অভিপ্রায় ব্যক্ত হওয়ার খবরটিও দেশবাসীর কম মন খারাপের কারণ হয়নি। তাঁর পদত্যাগের দাবি কেউ করেনি, তারপরও ওই রকম একটি খবর তাঁর বিশ্বস্ত তরুণ নেতা নাহিদ ইসলামকে উদ্ধৃত করে বিবিসিতে প্রচার হওয়ার পর দেশজুড়ে ‘কী হয় কী হয়’ অবস্থা! শুরু হয় নানা জল্পনা-কল্পনা এবং উদ্যোগ আয়োজন। তবে এটা যে একটি ‘নাটক’, সেটা বুঝতে খুব বেগ পেতে হয়নি। আর যা-ই হোক, ‘পদত্যাগ’ করার মতো দুর্বলচিত্তের মানুষ ড. ইউনূস নন। দেখে আলাভোলা মনে হলেও তিনি যে লড়তে জানেন, তা কি শেখ হাসিনার আমলে এত এত মামলা-মোকদ্দমা মোকাবিলা করে বুঝিয়ে দেননি?
মানুষ দুশ্চিন্তায় চোখের পাতা এক করতে পারছে না দেখে সরকার এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব আর চুপচাপ বসে থাকতে না পেরে ২৪-২৫ মে পরপর দুই দিন ‘যমুনা’য় বৈঠকের পর বৈঠক করে দেশের মানুষের উদ্বেগ দূর করলেন। বড় দল, ছোট দল, নতুন দল, পুরোনো দল, বাম নেতা, ডান নেতা—অনেকেই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করলেন। তারপর বোঝা গেল, প্রধান উপদেষ্টা যাচ্ছেন না, তিনি থাকছেন।
প্রশ্ন হলো, তিনি তো থাকছেন, কিন্তু এবার দেশের মানুষ কী পাচ্ছেন? দুই দিনের ধারাবাহিক বৈঠক থেকে আসলে কী পাওয়া গেল, অর্থাৎ বৈঠকের ফলাফল কী তা কি কেউ পরিষ্কার করে বলতে পারছেন?
না, কেউ ঝেড়ে কাশছেন না। তবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন দেখার প্রত্যাশার কথা জানিয়ে বলেছেন, সরকারের মান-অভিমান বা রাগ-বিরাগের কোনো সুযোগ নেই। ২৫ মে একটি আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান বলেন, জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত সরকার, অন্তর্বর্তী সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার হোক, নাগরিকদের সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা জারি রাখতে হবে। দেশের জনগণ সরকারের করুণার পাত্র নয়। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে বিএনপি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা কি বিএনপিকে ওই সময়ের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছেন? না, তিনি আছেন ‘ভদ্রলোকের এক কথা’য়। তিনি বলেছেন, কম সংস্কার হলে নির্বাচন ডিসেম্বরে আর বেশি সংস্কার হলে জুনে হবে। সংস্কার কি আর কেউ কম চাইবেন? বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যেমন অস্থির, তেমনি অন্য অনেকেই তো ড. ইউনূসকে ক্ষমতায় রাখার জন্য ব্যাকুল।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান সংস্কার প্রসঙ্গে ভালো কথা বলেছেন। সংস্কারের নামে সরকার মুখে ফেনা তুলছে উল্লেখ করে রাশেদ খান বলেন, ‘জনগণ এখনো ধোঁয়াশায় রয়েছে। সরকার বারবার সংলাপ করছে। কিন্তু এই সংলাপের ফলাফল কী, আমরা কেউই জানি না। জাতীয় নেতৃবৃন্দকে ডেকে কোনো সিদ্ধান্ত না দিতে পারলে এ ধরনের সংলাপের কোনো প্রয়োজন নেই। এটা চা-শিঙাড়ার সংলাপ।’
আবার বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, সরকার অনেক ধরনের সংস্কারের কথা বললেও এখনো দৃশ্যমান কিছুই দেখা যায়নি। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন কমিশন দুর্নীতির শ্বেতপত্র দিয়েছে। কিন্তু সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেই। যারা ছয় মাসে কিছু করতে পারেনি, তারা ছয় বছরে কিছু করতে পারবে, এটা আমরা বিশ্বাস করতে পারি না।’
প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যাশা কতটা পূরণ করতে পারবেন, সে বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘তিনি ফ্রান্সের তিনজন চিত্রকর এলে সম্ভবত এক ঘণ্টা সময় দেন। চা খাবেন, ছবি তুলবেন। কিন্তু দেশের দুইজন রাজনীতিবিদ গেলে তাঁদের সঙ্গে ১০ মিনিটের বেশি সময় দিতে পারবেন না। আমি অধ্যাপক ইউনূসের মনস্তাত্ত্বিক ভাবনার কথা বলছি। এই বক্তব্যকে সমালোচনা হিসেবে নিলে সমালোচনা হবে। কিন্তু এই বাস্তবতা মাথায় রেখেই আমাদের রাজনৈতিক বন্দোবস্ত নিশ্চিত করতে হবে।’
কোন রাজনৈতিক ব্যবস্থা দেশে নিশ্চিত হবে, সেটা কি কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেন? তবে আমরা একটু শ্রীলঙ্কা ঘুরে আসতে পারি। আমরা জানি, ২০২২ সালের ১৩ জুলাই হাজার হাজার মানুষ শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের বাসভবন দখলে নিয়ে তাঁকে দেশত্যাগে বাধ্য করেন। তখনকার শ্রীলঙ্কা ছিল বাংলাদেশের তুলনায়ও বেশি বিপর্যস্ত—দেউলিয়া অর্থনীতি, খালি কোষাগার, চরম মূল্যস্ফীতি, খাদ্য ও বিদ্যুৎ-সংকট—সবকিছু একসঙ্গে।
কিন্তু সেই সংকটের মুহূর্তে শ্রীলঙ্কা সিদ্ধান্ত নেয় দেশকে আগে বাঁচাতে হবে। রাজনীতিকে নয়, দেশকে প্রাধান্য দিতে হবে। তখন গঠিত হয় একটি অন্তর্বর্তী সরকার—যারা বিলাসিতা পরিহার করে, অপ্রয়োজনীয় বিদেশসফর বন্ধ করে, সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন পর্যন্ত সাময়িকভাবে স্থগিত করে দেয়। তারা মিডিয়ায় প্রচারের বদলে নীরবে দেশ গড়ার কাজে নেমে পড়ে। শুধু তা-ই নয়, আন্দোলনের তরুণেরাও দায়িত্ব নিয়ে নিজ নিজ অবস্থানে ফিরে যায়। ফলে কোনো মব জাস্টিস হয়নি, কেউ সরকারি অফিসে আগুন দেয়নি, কেউ বিচার নিজের হাতে তুলে নেয়নি। ফলে কী হয়েছে? সেই শ্রীলঙ্কা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মূল্যস্ফীতি কমেছে, আন্তর্জাতিক আস্থা ফিরেছে, প্রশাসনে এসেছে স্বচ্ছতা।
জর্জিয়ার কথাও প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায়। ২০০৩ সালে ‘রোজ রেভল্যুশন’-এর মাধ্যমে দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের পতন ঘটিয়ে নতুনভাবে রাষ্ট্র গঠন করে। তারা শুধু নেতৃত্ব বদলায়নি। তারা সংবিধান, পুলিশ, বিচারব্যবস্থা—সবকিছু সংস্কার করেছে। আজ তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের দোরগোড়ায়।
এই দুটি দেশ প্রমাণ করেছে, গণ-অভ্যুত্থান নিজে কিছু নয়। সেটা কেবল একটি সুযোগ। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে দরকার হয় আত্মশুদ্ধি, যোগ্য নেতৃত্ব ও সততা।
আমরা বাংলাদেশে কী প্রমাণ করছি?
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দেশের মানুষ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম এবং আন্তর্জাতিক মহলের অনেকেই ভেবেছিলেন, এবার হয়তো দেশের রাজনীতিতে নতুন একটা দিগন্ত খুলবে। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে, সেই আশার জায়গাগুলো ক্রমে ঘোলাটে হয়ে উঠছে।
ড. ইউনূসের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিকভাবে উজ্জ্বল হলেও দেশের রাজনীতিতে তিনি বিতর্কের বাইরের কেউ নন। গত এক যুগে আওয়ামী লীগ তাঁকে যেভাবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে তুলে ধরেছে, তাতে করে তাঁর নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ বলেই অনেকের মনে হয়। তবু অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুততম সময়ে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ইনক্লুসিভ নির্বাচন আয়োজন করলে প্রশংসিত হতো। কিন্তু সেই লক্ষ্য এখন অনেক দূরের পথ বলে মনে হচ্ছে।
বাংলাদেশের মানুষ অনেক ধাক্কা খেয়ে শিখেছে। তারা যুদ্ধ করেছে, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে, রক্ত দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়েছে। তারা আর নতুন করে শঙ্কা চায় না, অনিশ্চয়তা চায় না। তারা চায় ভোট দিতে, মত প্রকাশ করতে, ভবিষ্যৎ নিয়ে নির্ভার থাকতে। এখন সময় সেই প্রত্যাশাকে সম্মান জানানোর।
আরও খবর পড়ুন:
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনের অবসানের পর বাংলাদেশের মানুষ একটি ভালো পরিবর্তনের আশা করেছিল। মানুষ চেয়েছিল একটি দায়িত্বশীল, সৎ ও বৈষম্যহীন সরকার। যেহেতু কোনো বিশেষ বা একক রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে নয়, পরিবর্তনটা এসেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে, সেহেতু পরিবর্তিত বাস্তবতায় ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার বিষয়টি অগ্রাধিকার পাবে বলে আশাবাদী হওয়ার কারণও ছিল। কিন্তু ৯ মাস পর এখন আর কারও মুখ থেকেই কোনো আশার কথা শোনা যায় না। মানুষ দেখছে, শাসক দলের পরিবর্তন হয়েছে ঠিকই, শাসনের ধারা বদল হয়নি। লঙ্কায় গেলে রাবণ হওয়াটাই যেন স্বাভাবিক।
দেশটি কেমন চলছে তা বোঝানোর জন্য আলোচনায় যাওয়ার আগে ২৭ মে মঙ্গলবারের আজকের পত্রিকার প্রথম পাতার কয়েকটি শিরোনাম উল্লেখ করছি। ‘সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে কোনো বিভেদ নেই’—সেনাসদরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করা হয়েছে। ‘গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রশ্নে এখনো মতানৈক্য’—জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ‘সচিবালয়ে আজও বিক্ষোভের ডাক, দর্শনার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা’—সরকারি চাকরি অধ্যাদেশকে কেন্দ্র করে সচিবালয়ে দুই দিন ধরে যে আন্দোলন চলছে, তার রেশ। ‘কলমবিরতিতে ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা’। ‘স্কুলে গেলেও ক্লাস নেননি শিক্ষকেরা’। ‘পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে’। ‘সরকারকে জিম্মি করলে পরিস্থিতি ভালো হবে না—কর্মকর্তাদের হাসনাত’।
পরিস্থিতি যে স্বাভাবিক নেই, উত্তেজনা না কমে যে তা বাড়ছে, সেটা এই কয়টি খবরের শিরোনাম পড়লেই বুঝতে কষ্ট হয় না।
সপ্তাহখানেক ধরে দেশে নানা গুজব ভেসে বেড়াচ্ছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরকারের মতভিন্নতার খবরে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। তবে সেনাসদর থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, সরকার ও সেনাবাহিনী একে অপরের বিপরীতে দাঁড়ায়নি এবং একসঙ্গে কাজ করছে। ২৬ মে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানিয়েছে সেনাসদর। ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনসের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা এবং সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশনস শাখার স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম।
মিয়ানমারের রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়, এমন কোনো কাজে সেনাবাহিনী সম্পৃক্ত হবে না।’
করিডর নিয়ে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, ‘যেভাবে কথা আসছে যে সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর বিশাল মতপার্থক্য হয়েছে, বিভেদ রয়েছে, মিডিয়াতে বিষয়টি যেভাবে আসছে, এ রকম আসলেই কিছু হয়নি। আমরা একে অপরের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে সুন্দরভাবে কাজ করছি। এটা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করার কোনো সুযোগ নেই।’
বিষয়গুলো জটিলভাবে চিন্তা না করে সহজভাবে ভাবার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যেন বিষয়টিকে এমনভাবে না দেখি যে সরকার ও সেনাবাহিনী ভিন্ন ভিন্ন চিন্তা করছে এবং একে অপরের বিপরীতে দাঁড়িয়ে আছে। এটা কখনোই নয়। সরকার ও সেনাবাহিনী একসঙ্গে কাজ করছে। ভবিষ্যতেও আমরা একসঙ্গে কাজ করে যাব বলে সুদৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’
যাক, বিষয়টি যতটা জটিলভাবে সামনে আনা হয়েছিল, সেটা যে ঠিক নয়, এটা জেনে স্বস্তি অনুভব না করার কোনো কারণ নেই।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের অভিপ্রায় ব্যক্ত হওয়ার খবরটিও দেশবাসীর কম মন খারাপের কারণ হয়নি। তাঁর পদত্যাগের দাবি কেউ করেনি, তারপরও ওই রকম একটি খবর তাঁর বিশ্বস্ত তরুণ নেতা নাহিদ ইসলামকে উদ্ধৃত করে বিবিসিতে প্রচার হওয়ার পর দেশজুড়ে ‘কী হয় কী হয়’ অবস্থা! শুরু হয় নানা জল্পনা-কল্পনা এবং উদ্যোগ আয়োজন। তবে এটা যে একটি ‘নাটক’, সেটা বুঝতে খুব বেগ পেতে হয়নি। আর যা-ই হোক, ‘পদত্যাগ’ করার মতো দুর্বলচিত্তের মানুষ ড. ইউনূস নন। দেখে আলাভোলা মনে হলেও তিনি যে লড়তে জানেন, তা কি শেখ হাসিনার আমলে এত এত মামলা-মোকদ্দমা মোকাবিলা করে বুঝিয়ে দেননি?
মানুষ দুশ্চিন্তায় চোখের পাতা এক করতে পারছে না দেখে সরকার এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব আর চুপচাপ বসে থাকতে না পেরে ২৪-২৫ মে পরপর দুই দিন ‘যমুনা’য় বৈঠকের পর বৈঠক করে দেশের মানুষের উদ্বেগ দূর করলেন। বড় দল, ছোট দল, নতুন দল, পুরোনো দল, বাম নেতা, ডান নেতা—অনেকেই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করলেন। তারপর বোঝা গেল, প্রধান উপদেষ্টা যাচ্ছেন না, তিনি থাকছেন।
প্রশ্ন হলো, তিনি তো থাকছেন, কিন্তু এবার দেশের মানুষ কী পাচ্ছেন? দুই দিনের ধারাবাহিক বৈঠক থেকে আসলে কী পাওয়া গেল, অর্থাৎ বৈঠকের ফলাফল কী তা কি কেউ পরিষ্কার করে বলতে পারছেন?
না, কেউ ঝেড়ে কাশছেন না। তবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন দেখার প্রত্যাশার কথা জানিয়ে বলেছেন, সরকারের মান-অভিমান বা রাগ-বিরাগের কোনো সুযোগ নেই। ২৫ মে একটি আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান বলেন, জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত সরকার, অন্তর্বর্তী সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার হোক, নাগরিকদের সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা জারি রাখতে হবে। দেশের জনগণ সরকারের করুণার পাত্র নয়। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে বিএনপি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা কি বিএনপিকে ওই সময়ের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছেন? না, তিনি আছেন ‘ভদ্রলোকের এক কথা’য়। তিনি বলেছেন, কম সংস্কার হলে নির্বাচন ডিসেম্বরে আর বেশি সংস্কার হলে জুনে হবে। সংস্কার কি আর কেউ কম চাইবেন? বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যেমন অস্থির, তেমনি অন্য অনেকেই তো ড. ইউনূসকে ক্ষমতায় রাখার জন্য ব্যাকুল।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান সংস্কার প্রসঙ্গে ভালো কথা বলেছেন। সংস্কারের নামে সরকার মুখে ফেনা তুলছে উল্লেখ করে রাশেদ খান বলেন, ‘জনগণ এখনো ধোঁয়াশায় রয়েছে। সরকার বারবার সংলাপ করছে। কিন্তু এই সংলাপের ফলাফল কী, আমরা কেউই জানি না। জাতীয় নেতৃবৃন্দকে ডেকে কোনো সিদ্ধান্ত না দিতে পারলে এ ধরনের সংলাপের কোনো প্রয়োজন নেই। এটা চা-শিঙাড়ার সংলাপ।’
আবার বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, সরকার অনেক ধরনের সংস্কারের কথা বললেও এখনো দৃশ্যমান কিছুই দেখা যায়নি। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন কমিশন দুর্নীতির শ্বেতপত্র দিয়েছে। কিন্তু সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেই। যারা ছয় মাসে কিছু করতে পারেনি, তারা ছয় বছরে কিছু করতে পারবে, এটা আমরা বিশ্বাস করতে পারি না।’
প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যাশা কতটা পূরণ করতে পারবেন, সে বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘তিনি ফ্রান্সের তিনজন চিত্রকর এলে সম্ভবত এক ঘণ্টা সময় দেন। চা খাবেন, ছবি তুলবেন। কিন্তু দেশের দুইজন রাজনীতিবিদ গেলে তাঁদের সঙ্গে ১০ মিনিটের বেশি সময় দিতে পারবেন না। আমি অধ্যাপক ইউনূসের মনস্তাত্ত্বিক ভাবনার কথা বলছি। এই বক্তব্যকে সমালোচনা হিসেবে নিলে সমালোচনা হবে। কিন্তু এই বাস্তবতা মাথায় রেখেই আমাদের রাজনৈতিক বন্দোবস্ত নিশ্চিত করতে হবে।’
কোন রাজনৈতিক ব্যবস্থা দেশে নিশ্চিত হবে, সেটা কি কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেন? তবে আমরা একটু শ্রীলঙ্কা ঘুরে আসতে পারি। আমরা জানি, ২০২২ সালের ১৩ জুলাই হাজার হাজার মানুষ শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের বাসভবন দখলে নিয়ে তাঁকে দেশত্যাগে বাধ্য করেন। তখনকার শ্রীলঙ্কা ছিল বাংলাদেশের তুলনায়ও বেশি বিপর্যস্ত—দেউলিয়া অর্থনীতি, খালি কোষাগার, চরম মূল্যস্ফীতি, খাদ্য ও বিদ্যুৎ-সংকট—সবকিছু একসঙ্গে।
কিন্তু সেই সংকটের মুহূর্তে শ্রীলঙ্কা সিদ্ধান্ত নেয় দেশকে আগে বাঁচাতে হবে। রাজনীতিকে নয়, দেশকে প্রাধান্য দিতে হবে। তখন গঠিত হয় একটি অন্তর্বর্তী সরকার—যারা বিলাসিতা পরিহার করে, অপ্রয়োজনীয় বিদেশসফর বন্ধ করে, সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন পর্যন্ত সাময়িকভাবে স্থগিত করে দেয়। তারা মিডিয়ায় প্রচারের বদলে নীরবে দেশ গড়ার কাজে নেমে পড়ে। শুধু তা-ই নয়, আন্দোলনের তরুণেরাও দায়িত্ব নিয়ে নিজ নিজ অবস্থানে ফিরে যায়। ফলে কোনো মব জাস্টিস হয়নি, কেউ সরকারি অফিসে আগুন দেয়নি, কেউ বিচার নিজের হাতে তুলে নেয়নি। ফলে কী হয়েছে? সেই শ্রীলঙ্কা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মূল্যস্ফীতি কমেছে, আন্তর্জাতিক আস্থা ফিরেছে, প্রশাসনে এসেছে স্বচ্ছতা।
জর্জিয়ার কথাও প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায়। ২০০৩ সালে ‘রোজ রেভল্যুশন’-এর মাধ্যমে দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের পতন ঘটিয়ে নতুনভাবে রাষ্ট্র গঠন করে। তারা শুধু নেতৃত্ব বদলায়নি। তারা সংবিধান, পুলিশ, বিচারব্যবস্থা—সবকিছু সংস্কার করেছে। আজ তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের দোরগোড়ায়।
এই দুটি দেশ প্রমাণ করেছে, গণ-অভ্যুত্থান নিজে কিছু নয়। সেটা কেবল একটি সুযোগ। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে দরকার হয় আত্মশুদ্ধি, যোগ্য নেতৃত্ব ও সততা।
আমরা বাংলাদেশে কী প্রমাণ করছি?
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দেশের মানুষ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম এবং আন্তর্জাতিক মহলের অনেকেই ভেবেছিলেন, এবার হয়তো দেশের রাজনীতিতে নতুন একটা দিগন্ত খুলবে। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে, সেই আশার জায়গাগুলো ক্রমে ঘোলাটে হয়ে উঠছে।
ড. ইউনূসের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিকভাবে উজ্জ্বল হলেও দেশের রাজনীতিতে তিনি বিতর্কের বাইরের কেউ নন। গত এক যুগে আওয়ামী লীগ তাঁকে যেভাবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে তুলে ধরেছে, তাতে করে তাঁর নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ বলেই অনেকের মনে হয়। তবু অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুততম সময়ে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ইনক্লুসিভ নির্বাচন আয়োজন করলে প্রশংসিত হতো। কিন্তু সেই লক্ষ্য এখন অনেক দূরের পথ বলে মনে হচ্ছে।
বাংলাদেশের মানুষ অনেক ধাক্কা খেয়ে শিখেছে। তারা যুদ্ধ করেছে, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে, রক্ত দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়েছে। তারা আর নতুন করে শঙ্কা চায় না, অনিশ্চয়তা চায় না। তারা চায় ভোট দিতে, মত প্রকাশ করতে, ভবিষ্যৎ নিয়ে নির্ভার থাকতে। এখন সময় সেই প্রত্যাশাকে সম্মান জানানোর।
আরও খবর পড়ুন:
এক অস্থির ও অনিশ্চিত সময় কাটছে দেশবাসীর। কয়েক দিন ধরে চলেছে প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগবিষয়ক ঘটনা। নানা গুজব, প্রচার-অপপ্রচার, শালীন, অশালীন নানা মন্তব্যে ভরে উঠছে ফেসবুক আর ইউটিউবের পাতা। মানুষের মনে স্বস্তি নেই, তবু অদ্ভুত এক জীবনচর্চার মধ্যে তারা ঢুকে গেছে। এখানে-সেখানে সমাবেশ হচ্ছে, কোথাও গরম পানির
১৫ ঘণ্টা আগে‘অতি যত্নের সঙ্গে, প্রভূত সম্মানের সঙ্গে এবং অনেক ভালোবাসায় মানুষটিকে আমরা এইখানেই সমাহিত করেছি। আপনাদের দেশের ছেলেটি আমাদের দেশের মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত’, বলতে বলতে বৃদ্ধের গলা ধরে আসে। আমি সমাধির শ্বেতপাথরের ফলকের দিকে তাকাই। ঠাস বুনোনো লেখা, অনেক অক্ষরের কালো অংশ উঠে গেছে, তবু পড়া যায়।
১৬ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশে ট্রেন দুর্ঘটনা এবং ট্রেন থেকে তেল চুরির ঘটনা প্রায়ই ঘটে। কিন্তু এবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রেললাইনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—সিগন্যালের সরঞ্জাম চুরির ঘটনা। ট্রেনের সিগন্যালের সরঞ্জাম চুরি নিয়ে ২৭ মে আজকের পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
১৬ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা আজ এক গভীর সংকটে নিপতিত, যেখানে শিক্ষাবৈষম্য কেবল আর্থিক সামর্থ্যের নয়, বরং সামাজিক শ্রেণি, অবস্থান ও সংস্কৃতি দ্বারা পরিচালিত একটি গভীর রূপ ধারণ করেছে। যে শিক্ষা একসময় একটি সমতার হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত হতো, তা এখন একশ্রেণির মানুষের জন্য দুর্লভ ও ব্যয়বহুল পণ্য হয়ে
২ দিন আগে