অরুণ কর্মকার
আমাদের দেশে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদসংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট কোনো আইনকানুন কিংবা বিধিবিধান নেই। তাহলে এই সরকারের মেয়াদ কত দিন হবে? একটি সফল গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে, সেই অভ্যুত্থানের চালিকাশক্তির আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী এই সরকার গঠিত ও ক্ষমতায়িত হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের যেমন একটি লক্ষ্য ছিল, তেমনি অভ্যুত্থানের পর সেই শক্তির তথা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী রাষ্ট্রের কিছু সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন সরকারের অ্যাজেন্ডাভুক্ত হয়েছে। সুতরাং ধরে নেওয়া যায়, ওই অ্যাজেন্ডাগুলো বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় থাকবে। কিন্তু তা কি অনির্দিষ্টকাল হতে পারে?
এটা সবাই বোঝেন যে কোনো সরকারের মেয়াদই অনির্দিষ্টকাল হতে পারে না। সে জন্যই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ দেশের রাজনীতিতে একটি প্রধান ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ইস্যুটি নিয়ে বর্তমান সরকারের শুরু থেকেই সব মহলে আলোচনা, মতামত চলে এসেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের মেয়াদ এবং সাধারণ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় সম্পর্কে শুরু থেকেই ‘২০২৬ সালের জুনের মধ্যে’ বলে আসা হচ্ছে। কিন্তু তারপরও সরকারের মেয়াদ এবং নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে বিভিন্ন সময় সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের নানা রকম বক্তব্য নির্বাচন নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি করেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন,...এটা হতে পারে এক বছর। আবার হতে পারে চার বছরও। সেই সাক্ষাৎকারে তাঁর এই বক্তব্য প্রকাশের আগে থেকেই দেশের মধ্যে গুজব ছিল যে শেখ হাসিনার শেষ মেয়াদের চার বছর আগেই তাঁর পতন ঘটেছে, অন্তর্বর্তী সরকার সেই চার বছর ক্ষমতায় থাকবে। প্রধান উপদেষ্টার ওই সাক্ষাৎকারের পর সেই গুজব একটা ভিত্তি পেয়েছিল। যদিও তিনি পরে বহুবার বলেছেন ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা।
দিন কয়েক আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান সংগঠক এবং নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রথম সারির নেতা সারজিস আলম নিজের ফেসবুক পেজে বলেন, তাঁর নিজের আকাঙ্ক্ষা হলো ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকুক। বক্তব্যটি ব্যক্তিগত অনুভূতির প্রকাশ হলেও তিনি যেহেতু সর্বজনবিদিত একজন নেতা, তাই বক্তব্যটি আর ব্যক্তিগত থাকেনি। তখন সেই বক্তব্যটি নিয়ে এমনভাবে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়, যাতে মনে হচ্ছিল যেন অন্তর্বর্তী সরকারই পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে।
এরপরে সরকারের দায়িত্বশীলদের কেউ কেউ এমন কিছু কথা বলেছেন, যাকে বলা যায় হাটুরে কথা। মানে অনেক লোক হাটে যাওয়ার সময় রাস্তায় যেভাবে অসংলগ্ন কিছু কথাবার্তা বলে সেই রকম। যেমন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ১০ এপ্রিল সুনামগঞ্জ সফরে গিয়ে সেখানে সাংবাদিকদের কাছে বলেছেন, ‘ওই রাস্তা থেকে আমারে বলতেছিল, আপনারা আরও পাঁচ বছর থাকেন।’ তাঁর এই বক্তব্য ঘিরে আরও একবার সরকারের মেয়াদ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। রাজনৈতিক নেতারা আবারও এই প্রশ্ন তোলার সুযোগ পান যে অন্তর্বর্তী সরকার পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে চায় কি না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে এ কথাও বলেন যে ‘দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকতে চাইলে নির্বাচিত হয়ে আসেন। অনির্বাচিত কাউকে দেশের মানুষ দীর্ঘ সময় মেনে নেবে না।’
বিএনপি নেতার ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ১২ এপ্রিল ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বললেন, ‘আমরা অনির্বাচিত—এই কথা কে বলল? আমাদের তো ছাত্র-জনতা যারা নাকি এই পরিবর্তনটা এনে দিয়েছে, তারাই সরকার গঠন করেছে, তাদের দ্বারা নির্বাচিত আমরা।’ এসব বক্তব্য অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে বিতর্ক বা আলোচনা আরও বহুগুণে উসকে দেয়। সর্বোপরি বর্তমানে দেশের প্রধান ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দল বিএনপি বারবার দাবি করার পরও অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা না করায়, এমনকি বিএনপির এই দাবির বিষয়ে সরকারের বক্তব্য বা অবস্থান কী, সেটাও জনসমক্ষে স্পষ্ট করার কোনো প্রয়াস না নেওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার বিষয়টি এবং আগামী সাধারণ নির্বাচনের সময় নিয়ে রাজনৈতিক মহলের অবিশ্বাস জনমনেও বদ্ধমূল হতে শুরু করেছে। নির্বাচন নিয়ে সরকারের প্রতি সন্দেহ যেমন বাড়ছে, তেমনি সরকারের সঙ্গে অংশীজনদের এবং সর্বোপরি দেশের রাজনীতিতে সন্দেহ-অবিশ্বাস ও বিভাজন বা দূরত্ব বৃদ্ধির আশঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা।
১৬ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধিদলের আলোচনা এবং সফররত মার্কিন কূটনীতিকদের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপির প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ ও আলোচনা শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ এবং নির্বাচনের সময় নিয়ে অবিশ্বাস নতুন মাত্রায় উন্নীত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেছেন, তাঁদের বারবার দাবি সত্ত্বেও নির্বাচনের রোডম্যাপ না দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় তাঁরা মোটেই সন্তুষ্ট নন। তাঁরা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চান। কেননা, সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর মতৈক্যের ভিত্তিতে যেসব সংস্কার করার কথা বলছে, তা দুই-এক মাসের মধ্যেই সম্পন্ন করা সম্ভব। কাজেই ডিসেম্বরে নির্বাচন দিতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
জামায়াতে ইসলামীও কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের বলেছে, তারা আগামী রমজানের আগেই নির্বাচন চায়। অর্থাৎ ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান তাদের দাবি। যদিও জামায়াত এর আগে নির্বাচনের কোনো সময়ের কথা বলেনি। সব সময় বলেছে প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দিতে চায়। জামায়াতের এই অবস্থান পরিবর্তনে দলের শীর্ষ নেতার সাম্প্রতিক ইউরোপ সফর এবং লন্ডনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাতের কোনো ভূমিকা থাকতে পারে বলে অনেক পর্যবেক্ষকের ধারণা।
অন্যদিকে, কূটনীতিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছেন, রাষ্ট্রের কোনো ধরনের পরিবর্তন বা মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের দিকে গেলে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। সেই নির্বাচনে এনসিপি অংশগ্রহণ করবে কি না, সেটাও তাঁদের বিবেচনাধীন থাকবে। তিনি আরও বলেছেন, দেশের অনেক জায়গায় প্রশাসন বিএনপির পক্ষ নিচ্ছে। তাদের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ প্রশাসন নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া নির্বাচনের আগে গণহত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিও রয়েছে এনসিপির। তাদের এই অবস্থান অব্যাহত থাকলে তা নির্বাচনের সময়কে প্রভাবিত ও বিলম্বিত করতে পারে।
আমাদের দেশে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদসংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট কোনো আইনকানুন কিংবা বিধিবিধান নেই। তাহলে এই সরকারের মেয়াদ কত দিন হবে? একটি সফল গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে, সেই অভ্যুত্থানের চালিকাশক্তির আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী এই সরকার গঠিত ও ক্ষমতায়িত হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের যেমন একটি লক্ষ্য ছিল, তেমনি অভ্যুত্থানের পর সেই শক্তির তথা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী রাষ্ট্রের কিছু সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন সরকারের অ্যাজেন্ডাভুক্ত হয়েছে। সুতরাং ধরে নেওয়া যায়, ওই অ্যাজেন্ডাগুলো বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় থাকবে। কিন্তু তা কি অনির্দিষ্টকাল হতে পারে?
এটা সবাই বোঝেন যে কোনো সরকারের মেয়াদই অনির্দিষ্টকাল হতে পারে না। সে জন্যই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ দেশের রাজনীতিতে একটি প্রধান ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ইস্যুটি নিয়ে বর্তমান সরকারের শুরু থেকেই সব মহলে আলোচনা, মতামত চলে এসেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের মেয়াদ এবং সাধারণ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় সম্পর্কে শুরু থেকেই ‘২০২৬ সালের জুনের মধ্যে’ বলে আসা হচ্ছে। কিন্তু তারপরও সরকারের মেয়াদ এবং নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে বিভিন্ন সময় সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের নানা রকম বক্তব্য নির্বাচন নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি করেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন,...এটা হতে পারে এক বছর। আবার হতে পারে চার বছরও। সেই সাক্ষাৎকারে তাঁর এই বক্তব্য প্রকাশের আগে থেকেই দেশের মধ্যে গুজব ছিল যে শেখ হাসিনার শেষ মেয়াদের চার বছর আগেই তাঁর পতন ঘটেছে, অন্তর্বর্তী সরকার সেই চার বছর ক্ষমতায় থাকবে। প্রধান উপদেষ্টার ওই সাক্ষাৎকারের পর সেই গুজব একটা ভিত্তি পেয়েছিল। যদিও তিনি পরে বহুবার বলেছেন ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা।
দিন কয়েক আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান সংগঠক এবং নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রথম সারির নেতা সারজিস আলম নিজের ফেসবুক পেজে বলেন, তাঁর নিজের আকাঙ্ক্ষা হলো ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকুক। বক্তব্যটি ব্যক্তিগত অনুভূতির প্রকাশ হলেও তিনি যেহেতু সর্বজনবিদিত একজন নেতা, তাই বক্তব্যটি আর ব্যক্তিগত থাকেনি। তখন সেই বক্তব্যটি নিয়ে এমনভাবে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়, যাতে মনে হচ্ছিল যেন অন্তর্বর্তী সরকারই পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে।
এরপরে সরকারের দায়িত্বশীলদের কেউ কেউ এমন কিছু কথা বলেছেন, যাকে বলা যায় হাটুরে কথা। মানে অনেক লোক হাটে যাওয়ার সময় রাস্তায় যেভাবে অসংলগ্ন কিছু কথাবার্তা বলে সেই রকম। যেমন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ১০ এপ্রিল সুনামগঞ্জ সফরে গিয়ে সেখানে সাংবাদিকদের কাছে বলেছেন, ‘ওই রাস্তা থেকে আমারে বলতেছিল, আপনারা আরও পাঁচ বছর থাকেন।’ তাঁর এই বক্তব্য ঘিরে আরও একবার সরকারের মেয়াদ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। রাজনৈতিক নেতারা আবারও এই প্রশ্ন তোলার সুযোগ পান যে অন্তর্বর্তী সরকার পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে চায় কি না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে এ কথাও বলেন যে ‘দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকতে চাইলে নির্বাচিত হয়ে আসেন। অনির্বাচিত কাউকে দেশের মানুষ দীর্ঘ সময় মেনে নেবে না।’
বিএনপি নেতার ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ১২ এপ্রিল ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বললেন, ‘আমরা অনির্বাচিত—এই কথা কে বলল? আমাদের তো ছাত্র-জনতা যারা নাকি এই পরিবর্তনটা এনে দিয়েছে, তারাই সরকার গঠন করেছে, তাদের দ্বারা নির্বাচিত আমরা।’ এসব বক্তব্য অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে বিতর্ক বা আলোচনা আরও বহুগুণে উসকে দেয়। সর্বোপরি বর্তমানে দেশের প্রধান ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দল বিএনপি বারবার দাবি করার পরও অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা না করায়, এমনকি বিএনপির এই দাবির বিষয়ে সরকারের বক্তব্য বা অবস্থান কী, সেটাও জনসমক্ষে স্পষ্ট করার কোনো প্রয়াস না নেওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার বিষয়টি এবং আগামী সাধারণ নির্বাচনের সময় নিয়ে রাজনৈতিক মহলের অবিশ্বাস জনমনেও বদ্ধমূল হতে শুরু করেছে। নির্বাচন নিয়ে সরকারের প্রতি সন্দেহ যেমন বাড়ছে, তেমনি সরকারের সঙ্গে অংশীজনদের এবং সর্বোপরি দেশের রাজনীতিতে সন্দেহ-অবিশ্বাস ও বিভাজন বা দূরত্ব বৃদ্ধির আশঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা।
১৬ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধিদলের আলোচনা এবং সফররত মার্কিন কূটনীতিকদের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপির প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ ও আলোচনা শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ এবং নির্বাচনের সময় নিয়ে অবিশ্বাস নতুন মাত্রায় উন্নীত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেছেন, তাঁদের বারবার দাবি সত্ত্বেও নির্বাচনের রোডম্যাপ না দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় তাঁরা মোটেই সন্তুষ্ট নন। তাঁরা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চান। কেননা, সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর মতৈক্যের ভিত্তিতে যেসব সংস্কার করার কথা বলছে, তা দুই-এক মাসের মধ্যেই সম্পন্ন করা সম্ভব। কাজেই ডিসেম্বরে নির্বাচন দিতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
জামায়াতে ইসলামীও কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের বলেছে, তারা আগামী রমজানের আগেই নির্বাচন চায়। অর্থাৎ ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান তাদের দাবি। যদিও জামায়াত এর আগে নির্বাচনের কোনো সময়ের কথা বলেনি। সব সময় বলেছে প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দিতে চায়। জামায়াতের এই অবস্থান পরিবর্তনে দলের শীর্ষ নেতার সাম্প্রতিক ইউরোপ সফর এবং লন্ডনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাতের কোনো ভূমিকা থাকতে পারে বলে অনেক পর্যবেক্ষকের ধারণা।
অন্যদিকে, কূটনীতিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছেন, রাষ্ট্রের কোনো ধরনের পরিবর্তন বা মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের দিকে গেলে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। সেই নির্বাচনে এনসিপি অংশগ্রহণ করবে কি না, সেটাও তাঁদের বিবেচনাধীন থাকবে। তিনি আরও বলেছেন, দেশের অনেক জায়গায় প্রশাসন বিএনপির পক্ষ নিচ্ছে। তাদের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ প্রশাসন নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া নির্বাচনের আগে গণহত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিও রয়েছে এনসিপির। তাদের এই অবস্থান অব্যাহত থাকলে তা নির্বাচনের সময়কে প্রভাবিত ও বিলম্বিত করতে পারে।
রুমিন ফারহানা বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ, আইনজীবী ও রাজনীতি বিশ্লেষক। তিনি সংরক্ষিত নারী আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন। তিনি বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
১৫ ঘণ্টা আগেদেশে প্রতিবছর বহু প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। বাস্তবায়নের সময় মাঝে মাঝে সংবাদ চোখে পড়ে যে প্রকল্পের ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে গাছ কাটা পড়ছে, বনভূমি উজাড় হচ্ছে, খাল ও জলাভূমি ভরাট হচ্ছে, নির্মাণস্থলে নির্মাণকাজের ফলে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, এমনকি কোনো কোনো প্রকল্প গ্রহণের ফলে পরিবেশের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব...
১৫ ঘণ্টা আগেপাহাড় রক্ষা করা যখন খুবই জরুরি, তখন সে পাহাড় কেটে গোটা অঞ্চলের জন্য বিপদ ডেকে আনছে একদল দুর্বৃত্ত। খাগড়াছড়ির পানছড়ি এলাকায় অবাধে পাহাড় কাটা হচ্ছে, অথচ সরকারি কর্মকর্তারা এ বিষয়ে দায়সারা বক্তব্য দিয়ে নিজেদের ব্যর্থতাকে ঢাকার চেষ্টা করছেন।
১৫ ঘণ্টা আগে১৯৪৯ সালের ২৩ জুন মওলানা ভাসানীকে সভাপতি এবং শামসুল হককে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত হয়েছিল আওয়ামী লীগ। তখন শেখ মুজিবুর রহমান জেলে ছিলেন, তাঁকে করা হয়েছিল দলের যুগ্ম সম্পাদক। পরবর্তী সময়ে শামসুল হক অপ্রকৃতিস্থ হয়ে যাওয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানকে দলের সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
২ দিন আগে