সম্পাদকীয়
রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে শুরু হওয়া ‘জাতীয় ঐকমত্য’ প্রক্রিয়া তার শেষের দিকে এগিয়ে চলেছে, কিন্তু এখনো দেখা যাচ্ছে, প্রক্রিয়ার শুরুর জায়গাটিই ভালোভাবে গড়ে ওঠেনি। একদিকে রয়েছে ১৬৬টি প্রস্তাব, অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমতের পাহাড়। গত আট মাসের আলোচনার ভিত্তিতে জুলাইয়ের মধ্যে ‘জাতীয় সনদ’ নামে একটি যৌথ দলিল প্রস্তুত করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত দলগুলো মাত্র ৪২টি বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। সংখ্যাটা স্পষ্টভাবে বলে দেয়: একে জাতীয় ঐকমত্য বলা যায় না।
এই যে ঐকমত্যের অভাব, তা কোনো কৌশলগত ভুল নয়—এটি হলো রাজনীতিতে অবিশ্বাস, স্বার্থ এবং স্বতন্ত্র অবস্থানের প্রতিফলন। সংলাপের প্রতিটি ধাপে আমরা দেখেছি—আসনবিন্যাস নিয়ে ক্ষোভ, অতিরিক্ত সময় পাওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, নিবন্ধনহীন দলের অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন, জামায়াতের বয়কট, আবার ফিরে আসা—সব মিলিয়ে একটি অবিচলিত ভিত্তির ওপর নয়, বরং একটি নড়বড়ে ভেতরগত দ্বন্দ্বের ওপর দাঁড়িয়ে আছে এ প্রক্রিয়া।
রাষ্ট্র সংস্কার কোনো দল বা সরকারের একক অ্যাজেন্ডা হতে পারে না। এটি হতে হয় সর্বসম্মত জাতীয় প্রতিশ্রুতি। কিন্তু আমরা দেখছি, কোনো দল ভোটের আগে সংস্কারের কথা বলছে, কেউ বলছে নির্বাচনের পরে। কেউ বলছে ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন ছাড়া কথা নয়, কেউ আবার বলছে, নির্বাচনপদ্ধতি বদলানো ছাড়া সবই বৃথা। এমন ভিন্নমত থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু যদি এসব মতকে একত্রে গেঁথে সামনের দিকে এগোনোর সদিচ্ছা না থাকে, তবে এই প্রক্রিয়া কেবল কাগজে সীমাবদ্ধ থাকে, বাস্তবে নয়।
জাতীয় ঐক্য গঠনের নামে যে সনদ প্রস্তুত হচ্ছে, সেটিকে আমরা অবশ্যই স্বাগত জানাতে চাই কিন্তু সেটা ঐকমত্যের ভিত্তিতে হচ্ছে বা হবে, সেটাও তো আমাদের নিশ্চিত হতে হবে। আমাদের আশঙ্কা, শেষ পর্যন্ত এটি একটা নিষ্ফল বৈঠকের স্মৃতি হয়ে থাকবে না তো? যদি ৭৫ শতাংশ প্রস্তাবেই দলগুলো একমত না হয়, তাহলে সনদের নাম ‘জাতীয়’ হলেও এর বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। কেননা, জনগণের কাছে এটি কেবল তখনই অর্থবহ হবে, যখন তারা জানবে—এখানে কোনো গোপন অ্যাজেন্ডা নেই, এখানে সত্যিকার অর্থেই মতানৈক্যের মধ্যেও মতামতকে সম্মান করা হয়েছে।
এই মুহূর্তে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব হলো, সব রাজনৈতিক দলকে সমান গুরুত্ব দেওয়া, ভিন্নমতের পরিসরকে ভয় না পেয়ে তা আলোচনার অংশ করে তোলা এবং যদি সম্ভব হয়, আংশিক নয়, পূর্ণাঙ্গ রাজনৈতিক চুক্তির পথ রচনা করা।
জাতীয় ঐক্য রাতারাতি আসে না। তাতে সময় লাগে, ধৈর্য লাগে। সবচেয়ে বড় কথা, লাগে একে অন্যকে গ্রহণ করার মানসিকতা। যদি কোনো দল নিজেকে বাদ দিয়ে অন্যদের মধ্যে ঐক্য গঠনের চেষ্টা করে, তবে সেই ঐক্য হবে দলীয়, জাতীয় নয়।
আমরা চাই, এ দেশের রাজনীতি আর ‘ভবিষ্যতের জন্য ঝুলে থাকা সংস্কার’ নিয়ে না চলে। আমরা চাই, এখনই একটি বিশ্বাসযোগ্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং গ্রহণযোগ্য ঐক্যের পথে হাঁটুক বাংলাদেশ। শেষ ভালো যার, সব ভালো তার।
রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে শুরু হওয়া ‘জাতীয় ঐকমত্য’ প্রক্রিয়া তার শেষের দিকে এগিয়ে চলেছে, কিন্তু এখনো দেখা যাচ্ছে, প্রক্রিয়ার শুরুর জায়গাটিই ভালোভাবে গড়ে ওঠেনি। একদিকে রয়েছে ১৬৬টি প্রস্তাব, অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমতের পাহাড়। গত আট মাসের আলোচনার ভিত্তিতে জুলাইয়ের মধ্যে ‘জাতীয় সনদ’ নামে একটি যৌথ দলিল প্রস্তুত করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত দলগুলো মাত্র ৪২টি বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। সংখ্যাটা স্পষ্টভাবে বলে দেয়: একে জাতীয় ঐকমত্য বলা যায় না।
এই যে ঐকমত্যের অভাব, তা কোনো কৌশলগত ভুল নয়—এটি হলো রাজনীতিতে অবিশ্বাস, স্বার্থ এবং স্বতন্ত্র অবস্থানের প্রতিফলন। সংলাপের প্রতিটি ধাপে আমরা দেখেছি—আসনবিন্যাস নিয়ে ক্ষোভ, অতিরিক্ত সময় পাওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, নিবন্ধনহীন দলের অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন, জামায়াতের বয়কট, আবার ফিরে আসা—সব মিলিয়ে একটি অবিচলিত ভিত্তির ওপর নয়, বরং একটি নড়বড়ে ভেতরগত দ্বন্দ্বের ওপর দাঁড়িয়ে আছে এ প্রক্রিয়া।
রাষ্ট্র সংস্কার কোনো দল বা সরকারের একক অ্যাজেন্ডা হতে পারে না। এটি হতে হয় সর্বসম্মত জাতীয় প্রতিশ্রুতি। কিন্তু আমরা দেখছি, কোনো দল ভোটের আগে সংস্কারের কথা বলছে, কেউ বলছে নির্বাচনের পরে। কেউ বলছে ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন ছাড়া কথা নয়, কেউ আবার বলছে, নির্বাচনপদ্ধতি বদলানো ছাড়া সবই বৃথা। এমন ভিন্নমত থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু যদি এসব মতকে একত্রে গেঁথে সামনের দিকে এগোনোর সদিচ্ছা না থাকে, তবে এই প্রক্রিয়া কেবল কাগজে সীমাবদ্ধ থাকে, বাস্তবে নয়।
জাতীয় ঐক্য গঠনের নামে যে সনদ প্রস্তুত হচ্ছে, সেটিকে আমরা অবশ্যই স্বাগত জানাতে চাই কিন্তু সেটা ঐকমত্যের ভিত্তিতে হচ্ছে বা হবে, সেটাও তো আমাদের নিশ্চিত হতে হবে। আমাদের আশঙ্কা, শেষ পর্যন্ত এটি একটা নিষ্ফল বৈঠকের স্মৃতি হয়ে থাকবে না তো? যদি ৭৫ শতাংশ প্রস্তাবেই দলগুলো একমত না হয়, তাহলে সনদের নাম ‘জাতীয়’ হলেও এর বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। কেননা, জনগণের কাছে এটি কেবল তখনই অর্থবহ হবে, যখন তারা জানবে—এখানে কোনো গোপন অ্যাজেন্ডা নেই, এখানে সত্যিকার অর্থেই মতানৈক্যের মধ্যেও মতামতকে সম্মান করা হয়েছে।
এই মুহূর্তে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব হলো, সব রাজনৈতিক দলকে সমান গুরুত্ব দেওয়া, ভিন্নমতের পরিসরকে ভয় না পেয়ে তা আলোচনার অংশ করে তোলা এবং যদি সম্ভব হয়, আংশিক নয়, পূর্ণাঙ্গ রাজনৈতিক চুক্তির পথ রচনা করা।
জাতীয় ঐক্য রাতারাতি আসে না। তাতে সময় লাগে, ধৈর্য লাগে। সবচেয়ে বড় কথা, লাগে একে অন্যকে গ্রহণ করার মানসিকতা। যদি কোনো দল নিজেকে বাদ দিয়ে অন্যদের মধ্যে ঐক্য গঠনের চেষ্টা করে, তবে সেই ঐক্য হবে দলীয়, জাতীয় নয়।
আমরা চাই, এ দেশের রাজনীতি আর ‘ভবিষ্যতের জন্য ঝুলে থাকা সংস্কার’ নিয়ে না চলে। আমরা চাই, এখনই একটি বিশ্বাসযোগ্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং গ্রহণযোগ্য ঐক্যের পথে হাঁটুক বাংলাদেশ। শেষ ভালো যার, সব ভালো তার।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৬ সালের ২৩ জুন। দীর্ঘ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। বর্তমানে ইমেরিটাস অধ্যাপক। মার্ক্সবাদী চিন্তাচেতনায় উদ্বুদ্ধ অধ্যাপক চৌধুরী নতুন দিগন্ত পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক।
১১ ঘণ্টা আগেলেখার শিরোনাম দেখেই যদি কেউ ভেবে থাকেন, এখানে অমূল্য রতন পেয়ে যাবেন, তাহলে ভুল করবেন। ফেব্রুয়ারি আর এপ্রিল নিয়ে এমন এক গাড্ডায় পড়েছে নির্বাচন যে, কোনো ধরনের ভবিষ্যদ্বাণী করার শক্তি কারও নেই। বিএনপির হাতে মুলা ধরিয়ে দিয়ে এই সরকারই আরও অনেক দিন ক্ষমতায় থাকার বাসনা পোষণ করছে কি না...
১ দিন আগেবিশ্বে পরিবেশদূষণকারী হিসেবে ১৫টি প্রধান দূষক চিহ্নিত করা হয়েছে। পয়লা নম্বরে আছে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার। বিশ্বব্যাপী পরিবেশদূষণে ৫ নম্বর দূষণকারী এখন প্লাস্টিক। দূষণের মাত্রা অনুযায়ী এই অবস্থান নির্ধারিত হয়েছে।
১ দিন আগেবাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত ‘সিটিজেন পারসেপশন সার্ভে (সিপিএস) ২০২৫’-এর প্রাথমিক প্রতিবেদন আমাদের সামনে একটি হতাশাজনক বাস্তবতা তুলে ধরেছে।
১ দিন আগে