Ajker Patrika

বাংলাদেশি শ্রমিকদের ভিড়ে হিমশিম খাচ্ছে মালয়েশিয়া বিমানবন্দর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০১ জুন ২০২৪, ১৩: ৫৯
Thumbnail image

বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিকদের ভিড়ে হিমশিম খাচ্ছে মালয়েশিয়া কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-১। উপচে পড়া যাত্রীদের চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। যাত্রীদের বাড়তি চাপ সামাল দিতে বিমানবন্দরের নিয়মিত কর্মীদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা (NADMA)। তবু যাত্রীদের ব্যবস্থাপনায় লেগে যাচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। 

সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় ঢুকতে দেড়-দুই হাজার যাত্রী বিমানবন্দরে অপেক্ষমাণ রয়েছেন। এসব যাত্রীদের বেশির ভাগই বাংলাদেশি শ্রমিক। 

কুয়ালালামপুরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশি আমানুল হক মৃধা আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত তিন-চার দিন ধরে বিমানবন্দরে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। যাত্রীদের সামাল দিতে কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বেকায়দায় পড়ে গেছে। 

মালয়েশিয়া সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে আজ শুক্রবারের পর বাংলাদেশসহ ১৫টি দেশ থেকে কোনো কর্মীকে দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। ফলে শেষ মুহূর্তে ওই ১৫টি দেশের শ্রমিকেরা মালয়েশিয়ায় ঢুকতে মরিয়া হয়ে পড়েছে। 

মালয়েশিয়ায় ঢুকতে দেড়-দুই হাজার যাত্রী কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে অপেক্ষমাণ রয়েছেনবাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় নিয়মিত যাত্রী পরিবহন করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও ইউএস বাংলা এয়ারলাইনস। এই দুটো এয়ারলাইনসের তথ্য অনুসারে, তারা প্রতিদিন নিয়মিত ফ্লাইটের পাশাপাশি বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। 

শুক্রবার শেষ দিনে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে মাত্র এক হাজার ৫০০ জন কর্মীর। তাঁরা কে কোনো ফ্লাইটে, কোন উড়োজাহাজে যাবেন, তা আগে থেকে ঠিক করা আছে। এর বাইরে আরও ৩১ হাজার ৭০১ জন বাংলাদেশি কর্মী চাকরি নিয়ে মালয়েশিয়ার যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন, কিন্তু টিকিট জটিলতায় তাঁরা বিপদে পড়েছেন। 

তবে মালয়েশিয়া কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ ছাড়াও অন্য কয়েকটি দেশের প্রবাসী শ্রমিকেরাও ভিড় করেছেন। ওই বিমানবন্দরের একটি সূত্র জানিয়েছে, স্বাভাবিক সময়ে বিমানবন্দরটিতে ৫০০-এর মতো যাত্রী হয়। অথচ গত তিন দিন ধরে দিনে ৪-৫ হাজার যাত্রী ভিড় করছে। 

জানতে চাইলে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়ে যা হচ্ছে তা দুর্বৃত্তপনা। এখানে সিন্ডিকেটের জয়জয়কার। এটা কোনো নিয়ম হতে পারে না। ভিসার মেয়াদ থাকার পরেও ওই দেশে ঢুকতে পারবে না। দুই দেশের এখানে দায় রয়েছে। এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।’ 

এ ঘটনায় স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট জয় হয়েছে, হেরেছে প্রবাসী শ্রমিকেরা। অথচ এই প্রবাসী শ্রমিকদের টাকায় দেশ চলে। আমরা চাই সরকার এ ঘটনায় স্বাধীন তদন্ত কমিশন করে প্রকৃত সত্য খতিয়ে দেখুক, সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিক।’ 

সরকারের উদাসীনতায় এই সংকট তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাসোসিয়েশন অব ট্র্যাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা হয়েছে সরকারের উদাসীনতার কারণে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানো নিয়ে সরকারের কোনো প্রস্তুতি নেই, আলোচনা নেই। ভিসা থাকা সত্ত্বেও অনেক প্রবাসী শ্রমিক আটকা পড়েছে। এটা আমাদের মালয়েশিয়াগামী প্রবাসী শ্রমিকদের দুর্ভাগ্য।’ 

বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার মালয়েশিয়া। দেশটিতে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মী আছেন। গত বছর সেখানে গেছেন ৩ লাখ ৫১ হাজার ৬৮৩ জন কর্মী। এ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত গেছেন ৪৪ হাজার ৭২৭ জন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত