Ajker Patrika

‘আমার একমাত্র মেয়ে, আল্লাহ যেন বাঁচিয়ে দেয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ জুলাই ২০২৫, ২২: ৩১
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

রক্ত, চিৎকার আর কান্না—এই তিন শব্দে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সোমবারের চিত্র আঁকা যায়। রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় একের পর এক আহত শিশু-কিশোর আসছে এখানে। অ্যাম্বুলেন্স থামার শব্দের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে স্বজনদের আর্তনাদ। একের পর এক স্ট্রেচারে করে আসছে দগ্ধ ছোট্ট ছোট্ট দেহ, তাদের কেউ নিথর, কেউ ব্যথায় কাতরাচ্ছে।

বার্ন ইনস্টিটিউটে ঢোকার মুখে শুধু একটাই শব্দ ঘুরপাক খাচ্ছে—‘রক্ত চাই! রক্ত!’ কেউ ‘ও নেগেটিভ’, কেউবা ‘বি পজিটিভ’ রক্তের জন্য আকুতি জানাচ্ছেন। একজন বাবা কাঁপা কণ্ঠে বললেন, ‘রক্ত না পেলে আমার ছেলেটা বাঁচবে না।’

হাসপাতালের ষষ্ঠ তলায় উঠে দেখা যায়, ওয়ার্ডের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন এক মা। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে নুরে জান্নাত ইউশা, যার শরীরের ৬ শতাংশ পুড়ে গেছে; তার পাশে দাঁড়িয়ে মা ছটফট করছেন। তিনি বলছিলেন, ‘আমার একমাত্র মেয়ে, আল্লাহ ওকে যেন বাঁচিয়ে দেয়।’

হাসপাতালের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে একজন বাবা চিৎকার করছেন, ‘আমার ছেলেটা কোথায়? এই অ্যাম্বুলেন্সে আমার ছেলেটা আছে? ওর সামি’—এই চিৎকার এখনো হাসপাতালের বাতাসে দুলছে। কিন্তু তিনি তার ছেলের দেখা পাননি। ছুটে গেলেন অন্য হাসপাতালে।

সোমবার বিকেল গড়াতে না গড়াতেই বার্ন ইনস্টিটিউটের দেয়ালগুলো হয়ে উঠেছে কান্নার প্রাচীর। ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়। কিন্তু তখনো তাদের স্বজনেরা জানেন না, প্রিয় মানুষটি চলে গেছে।

রাতে হাসপাতাল ৭০৫ নম্বর ওয়ার্ডের সামনে দাঁড়িয়ে কথা হয় আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে। তিনি বলেন, তাঁর মেয়ে মুনতাহা তোয়া মাইলস্টোন স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। দুর্ঘটনার খবর শুনে ছুটে যান ঘটনাস্থলে। তখনো ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছায়নি।

কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, গিয়ে দেখেন, ১০-১৫টা লাশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। সব পুড়ে ছাই। দেড় ঘণ্টা পোড়া লাশের পাশে দাঁড়িয়ে মেয়ের খোঁজ করেছেন। একসময় একজন শিক্ষক ফোন করে বলেন, মেয়েকে জীবিত পাওয়া গেছে। এরপর এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছুটতে থাকেন। শেষে বার্ন ইনস্টিটিউটে মেয়েকে পান। এই বাবা বলেন, এসে দেখি সোনা মুখটা পুড়ে কালো হয়ে গেছে। একবার চোখ মেলে দেখলেও বাবা ডাকতে পারেনি। ”

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তৃতীয়বার বিধ্বস্ত হলো বিমানবাহিনীর এফ-৭, এই চীনা যুদ্ধবিমানের বৈশিষ্ট্য কী

উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত: পাইলটসহ নিহত ২১, আহত দেড় শতাধিক, মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় শোক

৯ লাখ টন চাল কিনবে বাংলাদেশ, আশায় বুক বাঁধছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা

উত্তরায় বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত

পাইলটের মা-বাবাকে বিমানবাহিনীর উড়োজাহাজে নেওয়া হলো ঢাকায়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত