Ajker Patrika

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখাই চ্যালেঞ্জ: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৭ জুন ২০২৪, ২৩: ৩৯
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখাই চ্যালেঞ্জ: প্রধানমন্ত্রী

আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখাকে চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ রাখা, বিশেষ করে খাদ্যমূল্য, সেখানে উৎপাদন এবং সরবরাহ বৃদ্ধি করতে হবে। বৃষ্টির কারণে যেমন আলুর বীজ নষ্ট হয়ে গেছে, তো এই রকম অনেক কিছু আছে। আমরা এখনো উৎপাদনমুখী হলে খাদ্যে কোনো দিন অভাব হবে না।’ 

আজ শুক্রবার তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ছয় দফা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব পরিস্থিতি মাথায় রেখে আমাদের পরিকল্পনা নিয়ে চলতে হবে। আমাদের দেশে যারা হচ্ছে...কিছু ভালো লাগে না। তাদের ভালো না লাগাই থাক, কান দেয়ার দরকার নাই।’ 

মানুষের চাহিদা পূরণের ভাবনা থেকেই এই বাজেট দেওয়া হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেকে বসে বসে হিসাব কষে, আগে এত পার্সেন্ট বেড়েছে, এবার কম পার্সেন্ট বাড়ল কেন?’ 

সরকারপ্রধান বলেন, ‘সীমিতভাবে, খুব সংরক্ষিতভাবেই আমরা এগোতে চাই। যেটা আমাদের দেশের মানুষের কষ্ট না হয়, মানুষের যে চাহিদাটা সেটা যেন পূরণ করতে পারি, সে দিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা বাজেট করেছি।’ 

তিনি বলেন, ‘পারিবারিক কার্ড আমরা দিচ্ছি। কারণ, এখন মূল্যস্ফীতি বেশি। সব থেকে অবাক কাণ্ড—আমাদের উৎপাদন বেড়েছে! চাল উৎপাদনই আমরা চার গুণ বাড়িয়েছি। প্রত্যেকটা জিনিস আমরা উৎপাদন বাড়িয়েছি। মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা বেড়েছে, মানুষের খাদ্য গ্রহণের পরিমাণও বেড়েছে। এখন আর দিনের পর দিন না খেয়ে থাকতে হয় না। কমপক্ষে দুইবেলা খাবার তো পাচ্ছে মানুষ। সেখানে গ্রহণটাও বেড়েছে, চাহিদাটাও বেড়েছে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদনও বাড়িয়েছি।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেহেতু মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, নিম্ন আয়ের মানুষ যারা, সীমিত আয়ের মানুষ যারা, তাদের জন্য আমরা পারিবারিক কার্ড করে দিয়েছি। যারা একেবারে হতদরিদ্র, তাদের তো একেবারে বিনা পয়সায় খাবার দিচ্ছি। আর সামাজিক নিরাপত্তা তো বিনা পয়সায় দিয়ে যাচ্ছি।’ 

বাজেটে এবার মৌলিক চাহিদাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা গতকাল (বৃহস্পতিবার) বাজেট দিয়েছি। বিএনপির আমলে সবশেষ বাজেট মাত্র ৬২ হাজার কোটি টাকার বাজেট ছিল। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছিল ৬৮ হাজার কোটি টাকা। সেখানে আমরা ৭ লাখ ৯৮ হাজার কোটি টাকা বাজেট প্রস্তাব করেছি। এই বাজেটে এবার কতগুলো মৌলিক চাহিদা...মানুষের মৌলিক যে অধিকার, সেটাকে নিশ্চিত করার জন্য যেমন— শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য, তারপর দেশীয় শিল্প, সেগুলো এবং সামাজিক নিরাপত্তা, এইগুলোকে সব থেকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যা মানুষের জীবনটাকে উন্নত করবে, নিশ্চয়তা দেবে।’ 

তিনি বলেন, ‘তার কারণ হচ্ছে—আমরা এগিয়ে যাচ্ছিলাম, কোভিড ১৯-এর অতিমারি দেখা দিয়েছে। এই অতিমারির ফলে সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা হয়েছে, আমরাও সেই মন্দায় পড়ে গেলাম। সারা বিশ্বে প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেল। এরপর আসল ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, এরপর স্যাংশন, পাল্টা-স্যাংশন, স্যাংশনের ফলে প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।’ 

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের মানুষকে খাওয়াতে হবে আগে। আমাদের রিজার্ভ কত আছে না আছে, সেটার চেয়ে বেশি দরকার, আমার দেশের মানুষের চাহিদাটা পূরণ করা। সে দিকে লক্ষ্য রেখে আমরা পানির মতো টাকা খরচ করেছি। বাংলাদেশ একমাত্র দেশ, যেটা কোনো উন্নত দেশ করে নাই যে বিনা পয়সায় কোভিড ১৯-এর ভ্যাকসিন দিয়েছি, বিনা পয়সায় টেস্ট করিয়েছি। সেটা করেছি কেন? মানুষ বাঁচাতে। চিকিৎসা বিনা পয়সায়, যে ডাক্তার চিকিৎসা করেছে তাদের প্রতিদিন আলাদা ভাতা দিতে হতো, তারা যে চিকিৎসা দিচ্ছে—এভাবে পানির মতো টাকা খরচ হয়েছে। তারপর যখন দাম বেড়েছে, তখন ২০০ ডলারের গম ৬০০ ডলার করেও আমি কিনে নিয়ে এসেছি।’ 

তিনি বলেন, ‘ঠিক সেইভাবে তেল, ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে, উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। তারপরেও আমরা যে এবার বাজেট দিতে পারলাম।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত