
দেশের মহাসড়কগুলোতে এখন আতঙ্কের নাম ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান। এসব নিষিদ্ধ যানবাহন প্রায়ই দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে। অনেক সড়কে উল্টো পথে চলছে বেপরোয়া গতিতে। ফলে দূরপাল্লার যানবাহনের গতি কমার পাশাপাশি প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ। হাইওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব পালনে গাফিলতির কারণে এসব অবৈধ গাড়িতে মহাসড়ক ভরে যাচ্ছে বলে যাত্রীসহ সচেতন নাগরিকেরা অভিযোগ করেছেন।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এবং বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘আমরা গতি বাড়ানোর জন্যই কিন্তু এত টাকা বিনিয়োগ করে মহাসড়ক করছি। কিন্তু সেই মহাসড়কের যে প্রোডাকটিভিটি থাকার কথা, সেটা তো আমরা পাচ্ছি না। কারণ, এই ধরনের বিশৃঙ্খল, ফিটনেসবিহীন, অবৈজ্ঞানিক, অননুমোদিত এবং অনিয়ন্ত্রিত যানবাহন মহাসড়কে চলছে।’
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬ হাজার ৯২৭টি। এগুলোর মধ্যে মহাসড়কে ঘটেছে ২ হাজার ৩৫৭টি, যা মোট সংখ্যার ৩৪ শতাংশ। তিন চাকার যানবাহনে দুর্ঘটনার সংখ্যা (ইজিবাইক-সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-অটো ভ্যান-মিশুক ইত্যাদি) ২ হাজার ১৮৫টি। দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যায় শীর্ষ অবস্থানে আছে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের মতো যানবাহন, যা মোট সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ। এ ছাড়া অন্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ৬৩৭টি। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এই অঞ্চলে ১ হাজার ৫৮২টি দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৮৪০ জন নিহত হয়েছে।
গত ২৭ মার্চ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গাবতলী থেকে নবীনগর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়ে দেখা যায়, একমুখী রাস্তায় উভয় দিকেই গাড়ি চলাচল করছে; বিশেষ করে ব্যাটারিচালিত রিকশা, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও মোটরসাইকেলগুলোকে উল্টো সড়কে চলতে দেখা যায় বেশি। মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন নিষিদ্ধ হলেও সড়কজুড়ে ব্যাটারিচালিত রিকশার দৌরাত্ম্য রয়েছে। রাস্তার ওপর যত্রতত্র গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলোকে কখনো কখনো রাস্তার মাঝ ধরেই উল্টো পথে আসতে দেখা যায়। আমিনবাজার থেকে সাভার পর্যন্ত এমন অনিয়ম বেশি দেখা যায়।
হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন এলাকায় একজন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক জানান, ইউটার্ন দূরে হওয়ার কারণে উল্টো পথ দিয়েই আসেন তাঁরা। এতে সময় বেঁচে যায়।
রিকশাচালক আলাউদ্দিন বলেন, ‘মহাসড়কে রিকশা অবৈধ, এটা আমি জানি না। আমি তো একা চালাই না, অনেকেই চালায়। তা ছাড়া আমরা তো পুলিশের সামনেই চালাচ্ছি। পুলিশ তো কিছু বলে না।’ পুলিশকে কোনো টাকা দিতে হয় কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘না।’
ঢাকা-উত্তরবঙ্গ
জানা যায়, টাঙ্গাইল সড়ক বিভাগের অধীনে ১৩৩ দশমিক ২৫ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক, ৫৭ দশমিক ৯০ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং ৩৮৭ দশমিক ৪০ কিলোমিটার জেলা মহাসড়ক রয়েছে। এই মহাসড়কগুলোতে বাস, ট্রাকসহ ভারী যানবাহনের পাশাপাশি ব্যাটারিচালিত রিকশা, নছিমন চলাচল করছে অবাধে।
সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের আশেকপুর বাইপাসে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া গ্রামের প্রদীপ পাল। টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুরের গোলাবাড়ী নামক স্থানে বেপরোয়া ট্রাকের চাপায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক আব্দুল গফুর, শিক্ষার্থী রুহুল আমিন রনি ও রুহুল আমিন নিহত হন।
বগুড়া-ঢাকা, বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের বগুড়া জেলায় ছয় লেনের মহাসড়ক রয়েছে ৬৮ কিলোমিটার। এই মহাসড়কে সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচলের জন্য পৃথক লেন রয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে, সেই লেনে চলাচল না করে এসব যান মূল মহাসড়কেই চলছে। এ ছাড়া বগুড়া-নাটোর মহাসড়ক ও বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কেও একই চিত্র। মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনের চেয়ে নিষিদ্ধ এসব যানবাহনের সংখ্যাই বেশি। বগুড়ার শেরপুর ও নন্দীগ্রামে দুটি হাইওয়ে থানা থাকলেও হাইওয়ে পুলিশের তেমন তৎপরতা দেখা যায় না নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে। অনেক সময় দেখা যায়, হাইওয়ে পুলিশের সামনে দিয়েই এসব যানবাহন চলাচল করছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম
বুধবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঘুরে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড, চিটাগাং রোড, কাঁচপুর, মদনপুর পর্যন্ত সড়কে দাপটের সঙ্গে চলাচল করছে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক। পুলিশের নজরদারি না থাকায় ইজিবাইকের এমন বেপরোয়া চলাচল।
চার লেনের মহাসড়কের সাইড লেন ছেড়ে দিতে হচ্ছে ইজিবাইকচালকদের জন্য। ফলে প্রশস্ত সড়ক পেয়েও তা ব্যবহার করতে পারছে না দ্রুতগতির যানবাহন। এ ছাড়া বিভিন্ন শাখা সড়কের মোড়ে যাত্রীর অপেক্ষায় ইজিবাইক দাঁড় করিয়ে রাখা এবং যাত্রী ওঠানো-নামানো হচ্ছে।
মনজিল বাসের চালক আজিজ বলেন, ‘মহাসড়কে আমরা চলি অনেক দ্রুত। আর ইজিবাইক চলে আস্তে আস্তে। এর মধ্যে কয়েকটা উল্টো পথে চালায়। ওদের জন্য আমাদের চলাচলে সমস্যা হয়। রাস্তায় বারবার ব্রেক করা লাগে। দিনের বেলা দেখা যায়, রাতে তো অ্যাক্সিডেন্ট হয় প্রায়ই।’

গত ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর ব্রিজে উল্টো পথে আসা ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ হয়। এতে ইজিবাইক চালকসহ যাত্রী মা ও ছেলে নিহত হন। ৮ এপ্রিল রাত ৯টায় ঢাকাগামী ইম্পেরিয়াল এক্সপ্রেসের সঙ্গে উল্টো পথে আসা ইজিবাইকের সংঘর্ষ হয় ৷ এতে ইজিবাইকচালকসহ ৬ জন গুরুতর আহত হয়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কুমিল্লার ১০৪ কিলোমিটার। দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল প্লাজা থেকে চৌদ্দগ্রামে আমজাদের বাজার পর্যন্ত এই অংশে ব্যস্ততম বাইপাস, চৌমুহনী, বাজার এবং বাস স্টপেজগুলোতে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ তিন চাকার গাড়ির সংখ্যাই বেশি। কোনো নিয়মনীতি ছাড়াই মহাসড়ক দাবড়ে বেড়াচ্ছে মহাসড়কে।
কুমিল্লা জেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটি জেলার তিন চাকার যানবাহনপ্রবণ ১২টি স্থান চিহিত করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাজার, ইলিয়টগঞ্জ বাজার, বলদা খাল, গোমতী-মেঘনা সেতুর টোল পয়েন্ট, শহীদ নগর; চান্দিনা উপজেলার মাদাইয়া বাজার ও চান্দিনা বাগুর বাসস্ট্যান্ড; বুড়িচং উপজেলার নিমসার বাজার; আদর্শ সদর উপজেলার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট মোড় ও আলেখারচর; সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড, সুয়াগাজী বাজার ও কোটবাড়ি ইউটার্ন; চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চৌদ্দগ্রাম বাজার, চিওড়া বাজার, মিয়াবাজার ও বাবুর্চি বাজার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়কের ওই সব এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নিষিদ্ধ যান। অনেক সময় চলন্ত গাড়ি সংকেত দিয়ে দাঁড় করিয়ে মহাসড়কে পারাপার হচ্ছে এসব যান।
ঢাকা-ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ বিআরটিএ কার্যালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ৩২৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬৫ জন প্রাণ হারিয়েছে এবং আহত হয়েছে ৪৫৯ জন। বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটেছে বাসের সঙ্গে থ্রি-হুইলারের।
গতকাল রোববার দিনভর মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায়, ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ, ঢাকা বাইপাস, দীঘারকান্দা, চুরখাই, বইলর, ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড, রাঘামারা, ভরাডোবা, ভালুকা বাসস্ট্যান্ড, সীডস্টোর, মাস্টারবাড়ী, জয়নাবাজারসহ বেশ কয়েকটি স্থানে রয়েছে অটোরিকশার জট। বাইপাস ও চরপাড়া মোড় থেকে ত্রিশাল অভিমুখে ছেড়ে যেতে দেখা যায় তিন চাকার সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মাহিন্দ্র নামে পরিচিত (কালো) অটোরিকশা। এসবের চালকেরা দূরপাল্লার বাস ও ট্রাকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাঁদের বাহনটি চালাচ্ছেন মহাসড়কে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শ্রীপুর উপজেলার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি বাজার থেকে জৈনা বাজার পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়কে গিজগিজ করে চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। বিশেষ করে জৈনা বাজার, নয়নপুর, এমসি, মাওনা, গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি, মাধখলা বাজার বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকে শত শত তিন চাকার যান। মহাসড়কের একটি লেন সব সময় অটোরিকশাচালকদের দখলে থাকে। সড়কের পুরোটাজুড়ে দূরপাল্লার পরিবহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলাচল করে। সামনে অটোরিকশা পড়ায় দূরপাল্লার পরিবহনগুলোকে ধীরগতিতে চলাচল করতে দেখা যায়। অনেক বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো হয়।
প্রভাতী পরিবহনের বাসচালক আব্দুল হাই বলেন, ‘আমরা সব সময় ভয়ে থাকি অটোরিকশার জন্য। ওদের নাই কোনো প্রশিক্ষণ। যত্রতত্র এদিক-সেদিক ঘুরিয়ে ফেলার কারণে দুর্ঘটনার শিকার হয়।’
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী ব্রিজ থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশে ৩০টি অটোরিকশার স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। মহাসড়ক পেরিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় ঠাসা থাকে শাখা সড়কগুলো। টঙ্গী বাজার, স্টেশন রোড, টঙ্গী পূর্ব থানার প্রধান ফটকে, চেরাগ আলী, কলেজ গেট, হোসেন মার্কেট, এরশাদ নগর, খাঁ পাড়া সড়ক, গাজীপুরা বাসস্ট্যান্ড, তারগাছ, বোর্ডবাজার, কলমেশ্বর, ভোগড়া বাইপাস, চৌরাস্তা এলাকা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত থেমে থেমে এসব যানবাহনের জটলা দেখা যায়।
প্রযুক্তি নেই, সরাসরি নজরদারিও নেই
মহাসড়কে অব্যবস্থাপনা নিয়ে জানতে চাইলে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, মহাসড়কের অনিয়মগুলো পর্যবেক্ষণ করার জন্য সার্ভিল্যান্স ক্যামেরা থাকতে হয়, স্পিড ক্যামেরা থাকতে হয়। প্রযুক্তির সাহায্য নিলে এগুলো সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু আমাদের মহাসড়কগুলোতে এর ব্যবস্থা খুব একটা নেই। তিনি বলেন, এখন প্রযুক্তিগত নজরদারিও হচ্ছে না, সরাসরি নজরদারিও করছে না পুলিশ। ফলে মানুষের মধ্যে আইন ভাঙার প্রবণতা বেশি। ফলে দুর্ঘটনা বাড়ছে। অতএব প্রযুক্তিগত নজরদারির ব্যবস্থা নিতে হবে, সে অনুযায়ী আইনও প্রয়োগ করতে হবে। আইন আসলে মানার বিষয়, মানুষ আইন মানতে চায় না। আইন মানার বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা যা বলেন
শুধু অবকাঠামো তৈরি করে আসলেই দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব নয় জানিয়ে বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ করতে আমাদের অবশ্যই সমন্বিত পদক্ষেপ লাগবে। কারণ, দুর্ঘটনা কোনো একক কারণে হয় না। যানবাহন থেকে শুরু করে যারা সড়কের ব্যবহারকারী আছে, সবাইকে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি আমি সবচেয়ে বড় কথা বলব, সড়ক আমি যতই প্রশস্ত করি না কেন, সড়কের দুই পাশে ভূমি ব্যবস্থাপনার ওপর যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারি, এই সড়ক সাময়িক কিছুটা স্বস্তি দিলেও এটা খুব দ্রুত ব্ল্যাক স্পটে পরিণত হয়ে যাবে। সেটা যেন না হতে পারে, তার জন্য অবশ্যই আমাদের পলিসি লাগবে। ভূমি ব্যবহারের ওপরে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। নতুবা শুধু সড়ক নড়াচড়া করে আসলে এই দুর্ঘটনা কমবে না।’
হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. দেলোয়ার হোসেন মিঞা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান থাকার কথা না। যদি থাকে, তাহলে এসব গাড়ি উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্টো পথে গাড়ি চালালেই মামলা দেওয়া হবে।’
[প্রতিবেদন তৈরি করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা এবং টাঙ্গাইল, বগুড়া, ময়মনসিংহ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রায়পুরা, টঙ্গী ও শ্রীপুর প্রতিনিধি]

দেশের মহাসড়কগুলোতে এখন আতঙ্কের নাম ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান। এসব নিষিদ্ধ যানবাহন প্রায়ই দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে। অনেক সড়কে উল্টো পথে চলছে বেপরোয়া গতিতে। ফলে দূরপাল্লার যানবাহনের গতি কমার পাশাপাশি প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ। হাইওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব পালনে গাফিলতির কারণে এসব অবৈধ গাড়িতে মহাসড়ক ভরে যাচ্ছে বলে যাত্রীসহ সচেতন নাগরিকেরা অভিযোগ করেছেন।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এবং বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘আমরা গতি বাড়ানোর জন্যই কিন্তু এত টাকা বিনিয়োগ করে মহাসড়ক করছি। কিন্তু সেই মহাসড়কের যে প্রোডাকটিভিটি থাকার কথা, সেটা তো আমরা পাচ্ছি না। কারণ, এই ধরনের বিশৃঙ্খল, ফিটনেসবিহীন, অবৈজ্ঞানিক, অননুমোদিত এবং অনিয়ন্ত্রিত যানবাহন মহাসড়কে চলছে।’
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬ হাজার ৯২৭টি। এগুলোর মধ্যে মহাসড়কে ঘটেছে ২ হাজার ৩৫৭টি, যা মোট সংখ্যার ৩৪ শতাংশ। তিন চাকার যানবাহনে দুর্ঘটনার সংখ্যা (ইজিবাইক-সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-অটো ভ্যান-মিশুক ইত্যাদি) ২ হাজার ১৮৫টি। দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যায় শীর্ষ অবস্থানে আছে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের মতো যানবাহন, যা মোট সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ। এ ছাড়া অন্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ৬৩৭টি। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এই অঞ্চলে ১ হাজার ৫৮২টি দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৮৪০ জন নিহত হয়েছে।
গত ২৭ মার্চ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গাবতলী থেকে নবীনগর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়ে দেখা যায়, একমুখী রাস্তায় উভয় দিকেই গাড়ি চলাচল করছে; বিশেষ করে ব্যাটারিচালিত রিকশা, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও মোটরসাইকেলগুলোকে উল্টো সড়কে চলতে দেখা যায় বেশি। মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন নিষিদ্ধ হলেও সড়কজুড়ে ব্যাটারিচালিত রিকশার দৌরাত্ম্য রয়েছে। রাস্তার ওপর যত্রতত্র গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলোকে কখনো কখনো রাস্তার মাঝ ধরেই উল্টো পথে আসতে দেখা যায়। আমিনবাজার থেকে সাভার পর্যন্ত এমন অনিয়ম বেশি দেখা যায়।
হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন এলাকায় একজন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক জানান, ইউটার্ন দূরে হওয়ার কারণে উল্টো পথ দিয়েই আসেন তাঁরা। এতে সময় বেঁচে যায়।
রিকশাচালক আলাউদ্দিন বলেন, ‘মহাসড়কে রিকশা অবৈধ, এটা আমি জানি না। আমি তো একা চালাই না, অনেকেই চালায়। তা ছাড়া আমরা তো পুলিশের সামনেই চালাচ্ছি। পুলিশ তো কিছু বলে না।’ পুলিশকে কোনো টাকা দিতে হয় কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘না।’
ঢাকা-উত্তরবঙ্গ
জানা যায়, টাঙ্গাইল সড়ক বিভাগের অধীনে ১৩৩ দশমিক ২৫ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক, ৫৭ দশমিক ৯০ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং ৩৮৭ দশমিক ৪০ কিলোমিটার জেলা মহাসড়ক রয়েছে। এই মহাসড়কগুলোতে বাস, ট্রাকসহ ভারী যানবাহনের পাশাপাশি ব্যাটারিচালিত রিকশা, নছিমন চলাচল করছে অবাধে।
সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের আশেকপুর বাইপাসে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া গ্রামের প্রদীপ পাল। টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুরের গোলাবাড়ী নামক স্থানে বেপরোয়া ট্রাকের চাপায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক আব্দুল গফুর, শিক্ষার্থী রুহুল আমিন রনি ও রুহুল আমিন নিহত হন।
বগুড়া-ঢাকা, বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের বগুড়া জেলায় ছয় লেনের মহাসড়ক রয়েছে ৬৮ কিলোমিটার। এই মহাসড়কে সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচলের জন্য পৃথক লেন রয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে, সেই লেনে চলাচল না করে এসব যান মূল মহাসড়কেই চলছে। এ ছাড়া বগুড়া-নাটোর মহাসড়ক ও বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কেও একই চিত্র। মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনের চেয়ে নিষিদ্ধ এসব যানবাহনের সংখ্যাই বেশি। বগুড়ার শেরপুর ও নন্দীগ্রামে দুটি হাইওয়ে থানা থাকলেও হাইওয়ে পুলিশের তেমন তৎপরতা দেখা যায় না নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে। অনেক সময় দেখা যায়, হাইওয়ে পুলিশের সামনে দিয়েই এসব যানবাহন চলাচল করছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম
বুধবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঘুরে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড, চিটাগাং রোড, কাঁচপুর, মদনপুর পর্যন্ত সড়কে দাপটের সঙ্গে চলাচল করছে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক। পুলিশের নজরদারি না থাকায় ইজিবাইকের এমন বেপরোয়া চলাচল।
চার লেনের মহাসড়কের সাইড লেন ছেড়ে দিতে হচ্ছে ইজিবাইকচালকদের জন্য। ফলে প্রশস্ত সড়ক পেয়েও তা ব্যবহার করতে পারছে না দ্রুতগতির যানবাহন। এ ছাড়া বিভিন্ন শাখা সড়কের মোড়ে যাত্রীর অপেক্ষায় ইজিবাইক দাঁড় করিয়ে রাখা এবং যাত্রী ওঠানো-নামানো হচ্ছে।
মনজিল বাসের চালক আজিজ বলেন, ‘মহাসড়কে আমরা চলি অনেক দ্রুত। আর ইজিবাইক চলে আস্তে আস্তে। এর মধ্যে কয়েকটা উল্টো পথে চালায়। ওদের জন্য আমাদের চলাচলে সমস্যা হয়। রাস্তায় বারবার ব্রেক করা লাগে। দিনের বেলা দেখা যায়, রাতে তো অ্যাক্সিডেন্ট হয় প্রায়ই।’

গত ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর ব্রিজে উল্টো পথে আসা ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ হয়। এতে ইজিবাইক চালকসহ যাত্রী মা ও ছেলে নিহত হন। ৮ এপ্রিল রাত ৯টায় ঢাকাগামী ইম্পেরিয়াল এক্সপ্রেসের সঙ্গে উল্টো পথে আসা ইজিবাইকের সংঘর্ষ হয় ৷ এতে ইজিবাইকচালকসহ ৬ জন গুরুতর আহত হয়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কুমিল্লার ১০৪ কিলোমিটার। দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল প্লাজা থেকে চৌদ্দগ্রামে আমজাদের বাজার পর্যন্ত এই অংশে ব্যস্ততম বাইপাস, চৌমুহনী, বাজার এবং বাস স্টপেজগুলোতে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ তিন চাকার গাড়ির সংখ্যাই বেশি। কোনো নিয়মনীতি ছাড়াই মহাসড়ক দাবড়ে বেড়াচ্ছে মহাসড়কে।
কুমিল্লা জেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটি জেলার তিন চাকার যানবাহনপ্রবণ ১২টি স্থান চিহিত করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাজার, ইলিয়টগঞ্জ বাজার, বলদা খাল, গোমতী-মেঘনা সেতুর টোল পয়েন্ট, শহীদ নগর; চান্দিনা উপজেলার মাদাইয়া বাজার ও চান্দিনা বাগুর বাসস্ট্যান্ড; বুড়িচং উপজেলার নিমসার বাজার; আদর্শ সদর উপজেলার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট মোড় ও আলেখারচর; সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড, সুয়াগাজী বাজার ও কোটবাড়ি ইউটার্ন; চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চৌদ্দগ্রাম বাজার, চিওড়া বাজার, মিয়াবাজার ও বাবুর্চি বাজার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়কের ওই সব এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নিষিদ্ধ যান। অনেক সময় চলন্ত গাড়ি সংকেত দিয়ে দাঁড় করিয়ে মহাসড়কে পারাপার হচ্ছে এসব যান।
ঢাকা-ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ বিআরটিএ কার্যালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ৩২৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬৫ জন প্রাণ হারিয়েছে এবং আহত হয়েছে ৪৫৯ জন। বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটেছে বাসের সঙ্গে থ্রি-হুইলারের।
গতকাল রোববার দিনভর মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায়, ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ, ঢাকা বাইপাস, দীঘারকান্দা, চুরখাই, বইলর, ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড, রাঘামারা, ভরাডোবা, ভালুকা বাসস্ট্যান্ড, সীডস্টোর, মাস্টারবাড়ী, জয়নাবাজারসহ বেশ কয়েকটি স্থানে রয়েছে অটোরিকশার জট। বাইপাস ও চরপাড়া মোড় থেকে ত্রিশাল অভিমুখে ছেড়ে যেতে দেখা যায় তিন চাকার সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মাহিন্দ্র নামে পরিচিত (কালো) অটোরিকশা। এসবের চালকেরা দূরপাল্লার বাস ও ট্রাকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাঁদের বাহনটি চালাচ্ছেন মহাসড়কে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শ্রীপুর উপজেলার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি বাজার থেকে জৈনা বাজার পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়কে গিজগিজ করে চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। বিশেষ করে জৈনা বাজার, নয়নপুর, এমসি, মাওনা, গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি, মাধখলা বাজার বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকে শত শত তিন চাকার যান। মহাসড়কের একটি লেন সব সময় অটোরিকশাচালকদের দখলে থাকে। সড়কের পুরোটাজুড়ে দূরপাল্লার পরিবহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলাচল করে। সামনে অটোরিকশা পড়ায় দূরপাল্লার পরিবহনগুলোকে ধীরগতিতে চলাচল করতে দেখা যায়। অনেক বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো হয়।
প্রভাতী পরিবহনের বাসচালক আব্দুল হাই বলেন, ‘আমরা সব সময় ভয়ে থাকি অটোরিকশার জন্য। ওদের নাই কোনো প্রশিক্ষণ। যত্রতত্র এদিক-সেদিক ঘুরিয়ে ফেলার কারণে দুর্ঘটনার শিকার হয়।’
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী ব্রিজ থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশে ৩০টি অটোরিকশার স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। মহাসড়ক পেরিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় ঠাসা থাকে শাখা সড়কগুলো। টঙ্গী বাজার, স্টেশন রোড, টঙ্গী পূর্ব থানার প্রধান ফটকে, চেরাগ আলী, কলেজ গেট, হোসেন মার্কেট, এরশাদ নগর, খাঁ পাড়া সড়ক, গাজীপুরা বাসস্ট্যান্ড, তারগাছ, বোর্ডবাজার, কলমেশ্বর, ভোগড়া বাইপাস, চৌরাস্তা এলাকা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত থেমে থেমে এসব যানবাহনের জটলা দেখা যায়।
প্রযুক্তি নেই, সরাসরি নজরদারিও নেই
মহাসড়কে অব্যবস্থাপনা নিয়ে জানতে চাইলে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, মহাসড়কের অনিয়মগুলো পর্যবেক্ষণ করার জন্য সার্ভিল্যান্স ক্যামেরা থাকতে হয়, স্পিড ক্যামেরা থাকতে হয়। প্রযুক্তির সাহায্য নিলে এগুলো সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু আমাদের মহাসড়কগুলোতে এর ব্যবস্থা খুব একটা নেই। তিনি বলেন, এখন প্রযুক্তিগত নজরদারিও হচ্ছে না, সরাসরি নজরদারিও করছে না পুলিশ। ফলে মানুষের মধ্যে আইন ভাঙার প্রবণতা বেশি। ফলে দুর্ঘটনা বাড়ছে। অতএব প্রযুক্তিগত নজরদারির ব্যবস্থা নিতে হবে, সে অনুযায়ী আইনও প্রয়োগ করতে হবে। আইন আসলে মানার বিষয়, মানুষ আইন মানতে চায় না। আইন মানার বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা যা বলেন
শুধু অবকাঠামো তৈরি করে আসলেই দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব নয় জানিয়ে বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ করতে আমাদের অবশ্যই সমন্বিত পদক্ষেপ লাগবে। কারণ, দুর্ঘটনা কোনো একক কারণে হয় না। যানবাহন থেকে শুরু করে যারা সড়কের ব্যবহারকারী আছে, সবাইকে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি আমি সবচেয়ে বড় কথা বলব, সড়ক আমি যতই প্রশস্ত করি না কেন, সড়কের দুই পাশে ভূমি ব্যবস্থাপনার ওপর যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারি, এই সড়ক সাময়িক কিছুটা স্বস্তি দিলেও এটা খুব দ্রুত ব্ল্যাক স্পটে পরিণত হয়ে যাবে। সেটা যেন না হতে পারে, তার জন্য অবশ্যই আমাদের পলিসি লাগবে। ভূমি ব্যবহারের ওপরে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। নতুবা শুধু সড়ক নড়াচড়া করে আসলে এই দুর্ঘটনা কমবে না।’
হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. দেলোয়ার হোসেন মিঞা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান থাকার কথা না। যদি থাকে, তাহলে এসব গাড়ি উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্টো পথে গাড়ি চালালেই মামলা দেওয়া হবে।’
[প্রতিবেদন তৈরি করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা এবং টাঙ্গাইল, বগুড়া, ময়মনসিংহ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রায়পুরা, টঙ্গী ও শ্রীপুর প্রতিনিধি]

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন। বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।
৪১ মিনিট আগে
টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
৩ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ।
৩ ঘণ্টা আগে
মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন।
বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনের সার্বিক প্রস্তুতি ও তফসিল ঘোষণা বিষয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে আলোচনা করতে বঙ্গভবনে গেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। সিইসি দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে বঙ্গভবনে পৌঁছান।
এর আগে ১০টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবন থেকে বঙ্গভবনের উদ্দেশে রওনা হন তিনি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে রয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ (অবসরপ্রাপ্ত), তাহমিদা বেগম, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও আব্দুর রহমানেল মাছউদ এবং ইসি সচিব আখতার আহমেদ।
উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে। তফসিল-সংক্রান্ত ভাষণ রেকর্ড করতে ইতিমধ্যে বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারকে চিঠিও দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন।
বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনের সার্বিক প্রস্তুতি ও তফসিল ঘোষণা বিষয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে আলোচনা করতে বঙ্গভবনে গেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। সিইসি দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে বঙ্গভবনে পৌঁছান।
এর আগে ১০টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবন থেকে বঙ্গভবনের উদ্দেশে রওনা হন তিনি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে রয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ (অবসরপ্রাপ্ত), তাহমিদা বেগম, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও আব্দুর রহমানেল মাছউদ এবং ইসি সচিব আখতার আহমেদ।
উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে। তফসিল-সংক্রান্ত ভাষণ রেকর্ড করতে ইতিমধ্যে বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারকে চিঠিও দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

দেশের মহাসড়কগুলোতে এখন আতঙ্কের নাম ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান। এসব নিষিদ্ধ যানবাহন প্রায়ই দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে। অনেক সড়কে উল্টো পথে চলছে বেপরোয়া গতিতে। ফলে দূরপাল্লার যানবাহনের গতি কমার পাশাপাশি প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ। হাইওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ
১৪ এপ্রিল ২০২৫
টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
৩ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ।
৩ ঘণ্টা আগে
মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
৩ ঘণ্টা আগেবাসস, ঢাকা

টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই কনভেনশনের আওতায় এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠ একক নিবন্ধন। সভায় প্রথমবারের মতো সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর বিগত চার বছরে এটি দ্বিতীয় নিবন্ধন।
সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান এবং ইউনেসকো সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য অসামান্য গৌরবের বিষয়। দীর্ঘ দুই শতকের বেশি সময় ধরে টাঙ্গাইলের তাঁতিদের অনবদ্য শিল্পকর্মের বৈশ্বিক স্বীকৃতি এটি।’
তিনি আরও বলেন, ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের সকল নারীর নিত্য পরিধেয়, যা এই শাড়ি বুনন শিল্পের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।’
এই অর্জনকে বাংলাদেশের সকল তাঁতি ও নারীদের প্রতি উৎসর্গ করেছেন রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা।
বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সামগ্রিক সুরক্ষায় এই স্বীকৃতি নতুন মাত্রা যোগ করবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত তালহা বলেন, ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেসকোর স্বীকৃতি অর্জনের মতো বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক উপাদান রয়েছে।
নথি প্রস্তুত করার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কনভেনশন সংক্রান্ত অভিজ্ঞ জনবল তৈরি করার মাধ্যমে আরও অনেক ঐতিহ্যের ইউনেসকো-স্বীকৃতি অর্জনের সুযোগ রয়েছে।
এর আগে, গত ৭ ডিসেম্বর আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের চলমান ২০তম সভা উদ্বোধন করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শংকর। অনুষ্ঠানে ইউনেসকোর নবনিযুক্ত মহাপরিচালক খালেদ এল. এনানি উপস্থিত ছিলেন।

টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই কনভেনশনের আওতায় এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠ একক নিবন্ধন। সভায় প্রথমবারের মতো সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর বিগত চার বছরে এটি দ্বিতীয় নিবন্ধন।
সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান এবং ইউনেসকো সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য অসামান্য গৌরবের বিষয়। দীর্ঘ দুই শতকের বেশি সময় ধরে টাঙ্গাইলের তাঁতিদের অনবদ্য শিল্পকর্মের বৈশ্বিক স্বীকৃতি এটি।’
তিনি আরও বলেন, ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের সকল নারীর নিত্য পরিধেয়, যা এই শাড়ি বুনন শিল্পের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।’
এই অর্জনকে বাংলাদেশের সকল তাঁতি ও নারীদের প্রতি উৎসর্গ করেছেন রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা।
বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সামগ্রিক সুরক্ষায় এই স্বীকৃতি নতুন মাত্রা যোগ করবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত তালহা বলেন, ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেসকোর স্বীকৃতি অর্জনের মতো বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক উপাদান রয়েছে।
নথি প্রস্তুত করার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কনভেনশন সংক্রান্ত অভিজ্ঞ জনবল তৈরি করার মাধ্যমে আরও অনেক ঐতিহ্যের ইউনেসকো-স্বীকৃতি অর্জনের সুযোগ রয়েছে।
এর আগে, গত ৭ ডিসেম্বর আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের চলমান ২০তম সভা উদ্বোধন করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শংকর। অনুষ্ঠানে ইউনেসকোর নবনিযুক্ত মহাপরিচালক খালেদ এল. এনানি উপস্থিত ছিলেন।

দেশের মহাসড়কগুলোতে এখন আতঙ্কের নাম ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান। এসব নিষিদ্ধ যানবাহন প্রায়ই দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে। অনেক সড়কে উল্টো পথে চলছে বেপরোয়া গতিতে। ফলে দূরপাল্লার যানবাহনের গতি কমার পাশাপাশি প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ। হাইওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ
১৪ এপ্রিল ২০২৫
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন। বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।
৪১ মিনিট আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ।
৩ ঘণ্টা আগে
মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তোড়জোড়ের মধ্যে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
সমসাময়িক বিষয়ে আজ বুধবার বেলা ৩টায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলনকক্ষে আসিফ মাহমুদের সংবাদ সম্মেলন হবে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
সমসাময়িক কোন বিষয়ে আসিফ মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলবেন, মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণপত্রে তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন তিনি।
আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার পর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য ভাষণের রেকর্ড করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। আজ সন্ধ্যায় বা আগামীকাল বৃহস্পতিবার এই তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও আজ পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে।
উপদেষ্টার পদে থেকে নির্বাচন করতে আইনি বাধা না থাকলেও তফসিল ঘোষণার আগে সরকারে থাকা দুজন ছাত্র উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ। তাঁদের আন্দোলন একপর্যায়ে সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে রূপ নেয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর ওই বছরের ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন আসিফ মাহমুদ।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তোড়জোড়ের মধ্যে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
সমসাময়িক বিষয়ে আজ বুধবার বেলা ৩টায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলনকক্ষে আসিফ মাহমুদের সংবাদ সম্মেলন হবে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
সমসাময়িক কোন বিষয়ে আসিফ মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলবেন, মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণপত্রে তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন তিনি।
আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার পর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য ভাষণের রেকর্ড করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। আজ সন্ধ্যায় বা আগামীকাল বৃহস্পতিবার এই তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও আজ পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে।
উপদেষ্টার পদে থেকে নির্বাচন করতে আইনি বাধা না থাকলেও তফসিল ঘোষণার আগে সরকারে থাকা দুজন ছাত্র উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ। তাঁদের আন্দোলন একপর্যায়ে সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে রূপ নেয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর ওই বছরের ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন আসিফ মাহমুদ।

দেশের মহাসড়কগুলোতে এখন আতঙ্কের নাম ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান। এসব নিষিদ্ধ যানবাহন প্রায়ই দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে। অনেক সড়কে উল্টো পথে চলছে বেপরোয়া গতিতে। ফলে দূরপাল্লার যানবাহনের গতি কমার পাশাপাশি প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ। হাইওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ
১৪ এপ্রিল ২০২৫
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন। বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।
৪১ মিনিট আগে
টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
৩ ঘণ্টা আগে
মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
সেতু বিধ্বস্ত হওয়ায় ১০ ডিসেম্বর রায়পুরা অঞ্চলে ১৪টি হেলিকপ্টারের সাহায্যে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর অগ্রবর্তী অংশ তখনকার বিশাল, প্রশস্ত মেঘনা পার হয়। স্থানীয় জনসাধারণ ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় শত শত নৌকার সাহায্যে অবশিষ্ট সেনা ও যুদ্ধ-সরঞ্জাম পরিবহনে সহায়তা করে।
প্রচণ্ড চাপে পড়ে আগের দিন ঢাকায় পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব ও গভর্নর মালেক সৈন্যসহ পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সেদিন দাউদকান্দির পতনের পর তাঁরা বুঝে গিয়েছিলেন, ঢাকাই যৌথ বাহিনীর পরবর্তী লক্ষ্য। পাকিস্তানিদের সম্পূর্ণ পশ্চাদপসরণের সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের পূর্ণ অনুমোদন লাভ করে।
সহায়তাকারী ভারতীয় বাহিনীর রায়পুরায় অবতরণের পর প্রায় ৩ ঘণ্টা ঢাকার পাকিস্তানি সামরিক লক্ষ্যবস্তুগুলোর ওপর বিমান হামলা চলে। তখন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা, গণহত্যার অন্যতম সহযোগী রাও ফরমান আলী ঢাকায় অবস্থানকারী জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব পল মার্ক হেনরিকে ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির’ আয়োজন করার আবেদন জানান। বাঙালিদের ওপর ৯ মাস হত্যাযজ্ঞ চলার পর এত দিনে এসে তিনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা এবং এই অঞ্চলে থাকা পাকিস্তানি বাহিনীকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা সম্পন্ন করার আহ্বান জানান। জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এ প্রস্তাব জাতিসংঘ সদর দপ্তরে পাঠিয়ে দেন।
নিরাপত্তা পরিষদে রাও ফরমান আলীর এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ চলার সময় হঠাৎ খবর আসে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া প্রস্তাবটি নাকচ করে দিয়েছেন। ঘটনা হচ্ছে, খবরটি ওয়াশিংটনে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন সরকার ইয়াহিয়াকে জানান, পাকিস্তানি বাহিনীকে সাহায্য করার জন্য সপ্তম নৌবহর ইতিমধ্যেই বঙ্গোপসাগরের দিকে রওনা হয়েছে। এ কারণেই ইয়াহিয়ার মত বদলে যায়। পাকিস্তান নিজে থেকে ‘সম্মানজনকভাবে’ সেনা প্রত্যাহারের জন্য উদ্যোগী হলেও সেই উদ্যোগকে সমর্থন না করে মার্কিন সরকার বরং তা রদ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তার ওপর ভারতকে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মত করানোর তাগিদ দিয়ে ৯ ও ১০ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট নিক্সন সোভিয়েত নেতা ব্রেজনেভকে দুই দফা বার্তা পাঠান। যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার ব্যাপারে ভারতকে সম্মত করতে ব্রেজনেভের ওপর চাপের মাত্রা বাড়ানো হয়। তাঁকে জানানো হয়, ভারত যদি এরপরও সম্মত না হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র নিজে এ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে।
উপমহাদেশের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ‘শক্ত ব্যবস্থা’ গ্রহণ করতে পারে, তা সোভিয়েত ইউনিয়নের ভালো করেই জানা ছিল। সোভিয়েত সরকার তাদের নৌবাহিনীকে সতর্ক রাখে। মার্কিন সপ্তম নৌবহরের যাত্রারম্ভের আগেই সোভিয়েতরা তাদের ভারত মহাসাগরীয় নৌবহরের শক্তি বৃদ্ধি শুরু করে।
১০ ডিসেম্বর মার্কিন সপ্তম নৌবহর চীন সাগর ও ভারত মহাসাগরকে সংযোগকারী পাঁচ শ’ মাইল দীর্ঘ মালাক্কা প্রণালির ওপারে ছিল। ভারত মহাসাগরে সোভিয়েত নৌবহরের সমাবেশ তখন সম্পূর্ণ হয়নি। এই অবস্থায় জানা যায়, মার্কিন সপ্তম নৌবহরের গতিবিধি জানার জন্যই সোভিয়েত সরকার কসমস নামের নজরদারি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে।
এদিকে চূড়ান্ত পর্বের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের আশঙ্কায় ঢাকা ছেড়ে চলে যেতে থাকেন অনেক সাধারণ মানুষ। আগের দিন সরকার স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছিল। গুজব ছড়িয়ে পড়ে, রাস্তায় রাস্তায় পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে লড়াই হবে বলে মুক্তিযোদ্ধারা লোকজনকে শহর ছেড়ে চলে যেতে বলেছেন। অনেক লোককে দেখা যায়, পরিবার-পরিজন, পোঁটলাপুঁটলি নিয়ে রিকশা বা বেবিট্যাক্সিতে (সিএনজি অটোর আগের সংস্করণ) করে শহর থেকে বাইরে চলে যাচ্ছে। কেউ কেউ লটবহর মাথায় নিয়ে হেঁটেই চলেছেন। এ যেন ২৫ মার্চের গণহত্যার পর ঢাকা ছাড়ার যে ঢল নেমেছিল কিছুটা প্রতিচ্ছবি।

মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
সেতু বিধ্বস্ত হওয়ায় ১০ ডিসেম্বর রায়পুরা অঞ্চলে ১৪টি হেলিকপ্টারের সাহায্যে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর অগ্রবর্তী অংশ তখনকার বিশাল, প্রশস্ত মেঘনা পার হয়। স্থানীয় জনসাধারণ ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় শত শত নৌকার সাহায্যে অবশিষ্ট সেনা ও যুদ্ধ-সরঞ্জাম পরিবহনে সহায়তা করে।
প্রচণ্ড চাপে পড়ে আগের দিন ঢাকায় পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব ও গভর্নর মালেক সৈন্যসহ পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সেদিন দাউদকান্দির পতনের পর তাঁরা বুঝে গিয়েছিলেন, ঢাকাই যৌথ বাহিনীর পরবর্তী লক্ষ্য। পাকিস্তানিদের সম্পূর্ণ পশ্চাদপসরণের সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের পূর্ণ অনুমোদন লাভ করে।
সহায়তাকারী ভারতীয় বাহিনীর রায়পুরায় অবতরণের পর প্রায় ৩ ঘণ্টা ঢাকার পাকিস্তানি সামরিক লক্ষ্যবস্তুগুলোর ওপর বিমান হামলা চলে। তখন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা, গণহত্যার অন্যতম সহযোগী রাও ফরমান আলী ঢাকায় অবস্থানকারী জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব পল মার্ক হেনরিকে ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির’ আয়োজন করার আবেদন জানান। বাঙালিদের ওপর ৯ মাস হত্যাযজ্ঞ চলার পর এত দিনে এসে তিনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা এবং এই অঞ্চলে থাকা পাকিস্তানি বাহিনীকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা সম্পন্ন করার আহ্বান জানান। জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এ প্রস্তাব জাতিসংঘ সদর দপ্তরে পাঠিয়ে দেন।
নিরাপত্তা পরিষদে রাও ফরমান আলীর এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ চলার সময় হঠাৎ খবর আসে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া প্রস্তাবটি নাকচ করে দিয়েছেন। ঘটনা হচ্ছে, খবরটি ওয়াশিংটনে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন সরকার ইয়াহিয়াকে জানান, পাকিস্তানি বাহিনীকে সাহায্য করার জন্য সপ্তম নৌবহর ইতিমধ্যেই বঙ্গোপসাগরের দিকে রওনা হয়েছে। এ কারণেই ইয়াহিয়ার মত বদলে যায়। পাকিস্তান নিজে থেকে ‘সম্মানজনকভাবে’ সেনা প্রত্যাহারের জন্য উদ্যোগী হলেও সেই উদ্যোগকে সমর্থন না করে মার্কিন সরকার বরং তা রদ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তার ওপর ভারতকে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মত করানোর তাগিদ দিয়ে ৯ ও ১০ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট নিক্সন সোভিয়েত নেতা ব্রেজনেভকে দুই দফা বার্তা পাঠান। যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার ব্যাপারে ভারতকে সম্মত করতে ব্রেজনেভের ওপর চাপের মাত্রা বাড়ানো হয়। তাঁকে জানানো হয়, ভারত যদি এরপরও সম্মত না হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র নিজে এ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে।
উপমহাদেশের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ‘শক্ত ব্যবস্থা’ গ্রহণ করতে পারে, তা সোভিয়েত ইউনিয়নের ভালো করেই জানা ছিল। সোভিয়েত সরকার তাদের নৌবাহিনীকে সতর্ক রাখে। মার্কিন সপ্তম নৌবহরের যাত্রারম্ভের আগেই সোভিয়েতরা তাদের ভারত মহাসাগরীয় নৌবহরের শক্তি বৃদ্ধি শুরু করে।
১০ ডিসেম্বর মার্কিন সপ্তম নৌবহর চীন সাগর ও ভারত মহাসাগরকে সংযোগকারী পাঁচ শ’ মাইল দীর্ঘ মালাক্কা প্রণালির ওপারে ছিল। ভারত মহাসাগরে সোভিয়েত নৌবহরের সমাবেশ তখন সম্পূর্ণ হয়নি। এই অবস্থায় জানা যায়, মার্কিন সপ্তম নৌবহরের গতিবিধি জানার জন্যই সোভিয়েত সরকার কসমস নামের নজরদারি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে।
এদিকে চূড়ান্ত পর্বের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের আশঙ্কায় ঢাকা ছেড়ে চলে যেতে থাকেন অনেক সাধারণ মানুষ। আগের দিন সরকার স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছিল। গুজব ছড়িয়ে পড়ে, রাস্তায় রাস্তায় পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে লড়াই হবে বলে মুক্তিযোদ্ধারা লোকজনকে শহর ছেড়ে চলে যেতে বলেছেন। অনেক লোককে দেখা যায়, পরিবার-পরিজন, পোঁটলাপুঁটলি নিয়ে রিকশা বা বেবিট্যাক্সিতে (সিএনজি অটোর আগের সংস্করণ) করে শহর থেকে বাইরে চলে যাচ্ছে। কেউ কেউ লটবহর মাথায় নিয়ে হেঁটেই চলেছেন। এ যেন ২৫ মার্চের গণহত্যার পর ঢাকা ছাড়ার যে ঢল নেমেছিল কিছুটা প্রতিচ্ছবি।

দেশের মহাসড়কগুলোতে এখন আতঙ্কের নাম ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান। এসব নিষিদ্ধ যানবাহন প্রায়ই দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে। অনেক সড়কে উল্টো পথে চলছে বেপরোয়া গতিতে। ফলে দূরপাল্লার যানবাহনের গতি কমার পাশাপাশি প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ। হাইওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ
১৪ এপ্রিল ২০২৫
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন। বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।
৪১ মিনিট আগে
টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
৩ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ।
৩ ঘণ্টা আগে