Ajker Patrika

নিষিদ্ধ যানে বিশৃঙ্খল মহাসড়ক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০: ১২
অলিগলি ছাড়িয়ে এখন মহাসড়কেও দাপিয়ে বেড়াছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ সব ধরনের থ্রি-হুইলার। এসব যানের কারণে ভেঙে পড়েছে সড়কের শৃঙ্খলা। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। গতকাল ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার মানিকনগর এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
অলিগলি ছাড়িয়ে এখন মহাসড়কেও দাপিয়ে বেড়াছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ সব ধরনের থ্রি-হুইলার। এসব যানের কারণে ভেঙে পড়েছে সড়কের শৃঙ্খলা। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। গতকাল ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার মানিকনগর এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশের মহাসড়কগুলোতে এখন আতঙ্কের নাম ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান। এসব নিষিদ্ধ যানবাহন প্রায়ই দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে। অনেক সড়কে উল্টো পথে চলছে বেপরোয়া গতিতে। ফলে দূরপাল্লার যানবাহনের গতি কমার পাশাপাশি প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ। হাইওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব পালনে গাফিলতির কারণে এসব অবৈধ গাড়িতে মহাসড়ক ভরে যাচ্ছে বলে যাত্রীসহ সচেতন নাগরিকেরা অভিযোগ করেছেন।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এবং বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘আমরা গতি বাড়ানোর জন্যই কিন্তু এত টাকা বিনিয়োগ করে মহাসড়ক করছি। কিন্তু সেই মহাসড়কের যে প্রোডাকটিভিটি থাকার কথা, সেটা তো আমরা পাচ্ছি না। কারণ, এই ধরনের বিশৃঙ্খল, ফিটনেসবিহীন, অবৈজ্ঞানিক, অননুমোদিত এবং অনিয়ন্ত্রিত যানবাহন মহাসড়কে চলছে।’

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬ হাজার ৯২৭টি। এগুলোর মধ্যে মহাসড়কে ঘটেছে ২ হাজার ৩৫৭টি, যা মোট সংখ্যার ৩৪ শতাংশ। তিন চাকার যানবাহনে দুর্ঘটনার সংখ্যা (ইজিবাইক-সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-অটো ভ্যান-মিশুক ইত্যাদি) ২ হাজার ১৮৫টি। দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যায় শীর্ষ অবস্থানে আছে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের মতো যানবাহন, যা মোট সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ। এ ছাড়া অন্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ৬৩৭টি। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এই অঞ্চলে ১ হাজার ৫৮২টি দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৮৪০ জন নিহত হয়েছে।

গত ২৭ মার্চ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গাবতলী থেকে নবীনগর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়ে দেখা যায়, একমুখী রাস্তায় উভয় দিকেই গাড়ি চলাচল করছে; বিশেষ করে ব্যাটারিচালিত রিকশা, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও মোটরসাইকেলগুলোকে উল্টো সড়কে চলতে দেখা যায় বেশি। মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন নিষিদ্ধ হলেও সড়কজুড়ে ব্যাটারিচালিত রিকশার দৌরাত্ম্য রয়েছে। রাস্তার ওপর যত্রতত্র গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলোকে কখনো কখনো রাস্তার মাঝ ধরেই উল্টো পথে আসতে দেখা যায়। আমিনবাজার থেকে সাভার পর্যন্ত এমন অনিয়ম বেশি দেখা যায়।

হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন এলাকায় একজন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক জানান, ইউটার্ন দূরে হওয়ার কারণে উল্টো পথ দিয়েই আসেন তাঁরা। এতে সময় বেঁচে যায়।

রিকশাচালক আলাউদ্দিন বলেন, ‘মহাসড়কে রিকশা অবৈধ, এটা আমি জানি না। আমি তো একা চালাই না, অনেকেই চালায়। তা ছাড়া আমরা তো পুলিশের সামনেই চালাচ্ছি। পুলিশ তো কিছু বলে না।’ পুলিশকে কোনো টাকা দিতে হয় কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘না।’

ঢাকা-উত্তরবঙ্গ

জানা যায়, টাঙ্গাইল সড়ক বিভাগের অধীনে ১৩৩ দশমিক ২৫ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক, ৫৭ দশমিক ৯০ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং ৩৮৭ দশমিক ৪০ কিলোমিটার জেলা মহাসড়ক রয়েছে। এই মহাসড়কগুলোতে বাস, ট্রাকসহ ভারী যানবাহনের পাশাপাশি ব্যাটারিচালিত রিকশা, নছিমন চলাচল করছে অবাধে।

সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের আশেকপুর বাইপাসে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া গ্রামের প্রদীপ পাল। টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুরের গোলাবাড়ী নামক স্থানে বেপরোয়া ট্রাকের চাপায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক আব্দুল গফুর, শিক্ষার্থী রুহুল আমিন রনি ও রুহুল আমিন নিহত হন।

বগুড়া-ঢাকা, বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের বগুড়া জেলায় ছয় লেনের মহাসড়ক রয়েছে ৬৮ কিলোমিটার। এই মহাসড়কে সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচলের জন্য পৃথক লেন রয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে, সেই লেনে চলাচল না করে এসব যান মূল মহাসড়কেই চলছে। এ ছাড়া বগুড়া-নাটোর মহাসড়ক ও বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কেও একই চিত্র। মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনের চেয়ে নিষিদ্ধ এসব যানবাহনের সংখ্যাই বেশি। বগুড়ার শেরপুর ও নন্দীগ্রামে দুটি হাইওয়ে থানা থাকলেও হাইওয়ে পুলিশের তেমন তৎপরতা দেখা যায় না নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে। অনেক সময় দেখা যায়, হাইওয়ে পুলিশের সামনে দিয়েই এসব যানবাহন চলাচল করছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম

বুধবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঘুরে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড, চিটাগাং রোড, কাঁচপুর, মদনপুর পর্যন্ত সড়কে দাপটের সঙ্গে চলাচল করছে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক। পুলিশের নজরদারি না থাকায় ইজিবাইকের এমন বেপরোয়া চলাচল।

চার লেনের মহাসড়কের সাইড লেন ছেড়ে দিতে হচ্ছে ইজিবাইকচালকদের জন্য। ফলে প্রশস্ত সড়ক পেয়েও তা ব্যবহার করতে পারছে না দ্রুতগতির যানবাহন। এ ছাড়া বিভিন্ন শাখা সড়কের মোড়ে যাত্রীর অপেক্ষায় ইজিবাইক দাঁড় করিয়ে রাখা এবং যাত্রী ওঠানো-নামানো হচ্ছে।

মনজিল বাসের চালক আজিজ বলেন, ‘মহাসড়কে আমরা চলি অনেক দ্রুত। আর ইজিবাইক চলে আস্তে আস্তে। এর মধ্যে কয়েকটা উল্টো পথে চালায়। ওদের জন্য আমাদের চলাচলে সমস্যা হয়। রাস্তায় বারবার ব্রেক করা লাগে। দিনের বেলা দেখা যায়, রাতে তো অ্যাক্সিডেন্ট হয় প্রায়ই।’

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ থ্রি-হুইলারগুলো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মহাসড়ক, মানছে না কোনো নিয়মকানুন। এসব যান চলতে থাকে সড়কের উল্টো পথে। সম্প্রতি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সানারপাড় এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ থ্রি-হুইলারগুলো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মহাসড়ক, মানছে না কোনো নিয়মকানুন। এসব যান চলতে থাকে সড়কের উল্টো পথে। সম্প্রতি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সানারপাড় এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

গত ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর ব্রিজে উল্টো পথে আসা ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ হয়। এতে ইজিবাইক চালকসহ যাত্রী মা ও ছেলে নিহত হন। ৮ এপ্রিল রাত ৯টায় ঢাকাগামী ইম্পেরিয়াল এক্সপ্রেসের সঙ্গে উল্টো পথে আসা ইজিবাইকের সংঘর্ষ হয় ৷ এতে ইজিবাইকচালকসহ ৬ জন গুরুতর আহত হয়।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কুমিল্লার ১০৪ কিলোমিটার। দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল প্লাজা থেকে চৌদ্দগ্রামে আমজাদের বাজার পর্যন্ত এই অংশে ব্যস্ততম বাইপাস, চৌমুহনী, বাজার এবং বাস স্টপেজগুলোতে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ তিন চাকার গাড়ির সংখ্যাই বেশি। কোনো নিয়মনীতি ছাড়াই মহাসড়ক দাবড়ে বেড়াচ্ছে মহাসড়কে।

কুমিল্লা জেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটি জেলার তিন চাকার যানবাহনপ্রবণ ১২টি স্থান চিহিত করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাজার, ইলিয়টগঞ্জ বাজার, বলদা খাল, গোমতী-মেঘনা সেতুর টোল পয়েন্ট, শহীদ নগর; চান্দিনা উপজেলার মাদাইয়া বাজার ও চান্দিনা বাগুর বাসস্ট্যান্ড; বুড়িচং উপজেলার নিমসার বাজার; আদর্শ সদর উপজেলার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট মোড় ও আলেখারচর; সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড, সুয়াগাজী বাজার ও কোটবাড়ি ইউটার্ন; চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চৌদ্দগ্রাম বাজার, চিওড়া বাজার, মিয়াবাজার ও বাবুর্চি বাজার।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়কের ওই সব এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নিষিদ্ধ যান। অনেক সময় চলন্ত গাড়ি সংকেত দিয়ে দাঁড় করিয়ে মহাসড়কে পারাপার হচ্ছে এসব যান।

ঢাকা-ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহ বিআরটিএ কার্যালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ৩২৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬৫ জন প্রাণ হারিয়েছে এবং আহত হয়েছে ৪৫৯ জন। বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটেছে বাসের সঙ্গে থ্রি-হুইলারের।

গতকাল রোববার দিনভর মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায়, ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ, ঢাকা বাইপাস, দীঘারকান্দা, চুরখাই, বইলর, ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড, রাঘামারা, ভরাডোবা, ভালুকা বাসস্ট্যান্ড, সীডস্টোর, মাস্টারবাড়ী, জয়নাবাজারসহ বেশ কয়েকটি স্থানে রয়েছে অটোরিকশার জট। বাইপাস ও চরপাড়া মোড় থেকে ত্রিশাল অভিমুখে ছেড়ে যেতে দেখা যায় তিন চাকার সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মাহিন্দ্র নামে পরিচিত (কালো) অটোরিকশা। এসবের চালকেরা দূরপাল্লার বাস ও ট্রাকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাঁদের বাহনটি চালাচ্ছেন মহাসড়কে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শ্রীপুর উপজেলার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি বাজার থেকে জৈনা বাজার পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়কে গিজগিজ করে চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। বিশেষ করে জৈনা বাজার, নয়নপুর, এমসি, মাওনা, গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি, মাধখলা বাজার বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকে শত শত তিন চাকার যান। মহাসড়কের একটি লেন সব সময় অটোরিকশাচালকদের দখলে থাকে। সড়কের পুরোটাজুড়ে দূরপাল্লার পরিবহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলাচল করে। সামনে অটোরিকশা পড়ায় দূরপাল্লার পরিবহনগুলোকে ধীরগতিতে চলাচল করতে দেখা যায়। অনেক বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো হয়।

প্রভাতী পরিবহনের বাসচালক আব্দুল হাই বলেন, ‘আমরা সব সময় ভয়ে থাকি অটোরিকশার জন্য। ওদের নাই কোনো প্রশিক্ষণ। যত্রতত্র এদিক-সেদিক ঘুরিয়ে ফেলার কারণে দুর্ঘটনার শিকার হয়।’

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী ব্রিজ থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশে ৩০টি অটোরিকশার স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। মহাসড়ক পেরিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় ঠাসা থাকে শাখা সড়কগুলো। টঙ্গী বাজার, স্টেশন রোড, টঙ্গী পূর্ব থানার প্রধান ফটকে, চেরাগ আলী, কলেজ গেট, হোসেন মার্কেট, এরশাদ নগর, খাঁ পাড়া সড়ক, গাজীপুরা বাসস্ট্যান্ড, তারগাছ, বোর্ডবাজার, কলমেশ্বর, ভোগড়া বাইপাস, চৌরাস্তা এলাকা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত থেমে থেমে এসব যানবাহনের জটলা দেখা যায়।

প্রযুক্তি নেই, সরাসরি নজরদারিও নেই

মহাসড়কে অব্যবস্থাপনা নিয়ে জানতে চাইলে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, মহাসড়কের অনিয়মগুলো পর্যবেক্ষণ করার জন্য সার্ভিল্যান্স ক্যামেরা থাকতে হয়, স্পিড ক্যামেরা থাকতে হয়। প্রযুক্তির সাহায্য নিলে এগুলো সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু আমাদের মহাসড়কগুলোতে এর ব্যবস্থা খুব একটা নেই। তিনি বলেন, এখন প্রযুক্তিগত নজরদারিও হচ্ছে না, সরাসরি নজরদারিও করছে না পুলিশ। ফলে মানুষের মধ্যে আইন ভাঙার প্রবণতা বেশি। ফলে দুর্ঘটনা বাড়ছে। অতএব প্রযুক্তিগত নজরদারির ব্যবস্থা নিতে হবে, সে অনুযায়ী আইনও প্রয়োগ করতে হবে। আইন আসলে মানার বিষয়, মানুষ আইন মানতে চায় না। আইন মানার বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি।

বিশেষজ্ঞরা যা বলেন

শুধু অবকাঠামো তৈরি করে আসলেই দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব নয় জানিয়ে বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ করতে আমাদের অবশ্যই সমন্বিত পদক্ষেপ লাগবে। কারণ, দুর্ঘটনা কোনো একক কারণে হয় না। যানবাহন থেকে শুরু করে যারা সড়কের ব্যবহারকারী আছে, সবাইকে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি আমি সবচেয়ে বড় কথা বলব, সড়ক আমি যতই প্রশস্ত করি না কেন, সড়কের দুই পাশে ভূমি ব্যবস্থাপনার ওপর যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারি, এই সড়ক সাময়িক কিছুটা স্বস্তি দিলেও এটা খুব দ্রুত ব্ল্যাক স্পটে পরিণত হয়ে যাবে। সেটা যেন না হতে পারে, তার জন্য অবশ্যই আমাদের পলিসি লাগবে। ভূমি ব্যবহারের ওপরে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। নতুবা শুধু সড়ক নড়াচড়া করে আসলে এই দুর্ঘটনা কমবে না।’

হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. দেলোয়ার হোসেন মিঞা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান থাকার কথা না। যদি থাকে, তাহলে এসব গাড়ি উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্টো পথে গাড়ি চালালেই মামলা দেওয়া হবে।’

[প্রতিবেদন তৈরি করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা এবং টাঙ্গাইল, বগুড়া, ময়মনসিংহ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রায়পুরা, টঙ্গী ও শ্রীপুর প্রতিনিধি]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গলাধাক্কার পর ছোট্ট মেয়েটিকে লাঠি দিয়ে পেটালেন কফিশপের কর্মচারী

বিশ্বব্যাংকে সিরিয়ার ঋণ পরিশোধ করে দিচ্ছে সৌদি আরব

মাত্র তিনজনের জন্য লাখ লাখ মানুষ মরছে, কাদের কথা বললেন ট্রাম্প

‘চরিত্র হননের চেষ্টা’: গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পর দুদককে পাল্টা আক্রমণ টিউলিপের

জুয়ার বিজ্ঞাপনের প্রচার: আলোচিত টিকটকার জান্নাতের স্বামী তোহা কারাগারে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত