Ajker Patrika

ঘুরে আসুন পটুয়াখালী-কুয়াকাটা

মীর মহিবুল্লাহ, পটুয়াখালী
আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৭: ৫৭
Thumbnail image

সমুদ্রসৈকত, দ্বীপ এবং বদলে যাওয়া শহর একসঙ্গে দেখতে চাইলে এই ঈদে পটুয়াখালী হতে পারে দারুণ ভ্রমণের গন্তব্য। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে পটুয়াখালীর চেহারা। লোহালিয়া ও লাউকাঠি নদীর তীরের ছোট্ট এ শহর এখন দেশের ‘দ্বিতীয় সুন্দরতম’ শহর হিসেবে পরিচিত। তাই এই ঈদের লম্বা ছুটি কিংবা ঝটিকা সফরের জন্য বেছে নেওয়া যেতে পারে পটুয়াখালী।

কুয়াকাটাই এখন আর পটুয়াখালীর ট্রেডমার্ক ভ্রমণ গন্তব্য নয়। এটি তো আছেই, এর সঙ্গে আছে ১০টি ছোট-বড় দ্বীপ। তবে দ্বীপ হিসেবে নয়, চর হিসেবে এগুলোকে চেনে সবাই। প্রতিটি চরে আছে অপূর্ব সৈকত। অধিকাংশ সৈকত থেকে দেখা যাবে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত। দেখা যাবে দেশি-বিদেশি পাখি, পূর্ণিমায় অপূর্ব জোছনা, লাল কাঁকড়ার ছোটাছুটি। কুয়াকাটাকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এই ১০টি দ্বীপ বা চর যেন ১০ বোন! এগুলো হলো কাউয়ারচর, চর বিজয়, চর তুফানিয়া, জাহাজমারা, সোনারচর, চর হেয়ার, লেম্বুরচর, ফাতরারচর, নিদ্রা সৈকত, শুভ সন্ধ্যা। তবে আবহাওয়াগত কারণে এ সময় সব দ্বীপে যাওয়া সম্ভব নয়। এ সময় যাওয়া যাবে কাউয়ারচর বা গঙ্গামতি সৈকত, লেম্বুরচর ও ফাতরারচর।  

কাউয়ারচর।কাউয়ারচর
ভোরবেলা কুয়াকাটা থেকে মোটরসাইকেল কিংবা অটোরিকশা অথবা বিচ কার নিয়ে সড়কপথে যাওয়া যাবে গঙ্গামতি বা কাউয়ারচর। এখান থেকে সূর্যোদয় দেখা যায়। এখানে আছে বন বিভাগের নয়নাভিরাম ঝাউবন। সকালে সৈকতের বালুকাবেলায় সাজানো থাকে জেলেদের নৌকার বহর। শেষ বিকেলে সেগুলো সাগরে ভাসে মাছ শিকারের জন্য। এখান থেকে দেখা যায় সাগরসংগ্রামী জেলেদের জীবনযাত্রা। 

লেম্বুরচরলেম্বুরচর
কুয়াকাটা থেকে পাঁচ কিলোমিটার পূর্বে লেবুর বনে ঘেরা দ্বীপ লেম্বুরচর বা নেম্বুরচর। তিন নদীর মোহনায় এর সৈকত থেকে মনোরম সূর্যাস্ত দেখা যায়। এক হাজার একর আয়তনের লেম্বুরচরে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ আছে। কুয়াকাটা সৈকতসংলগ্ন বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল, ভ্যান কিংবা যেকোনো যানবাহনে সড়কপথে যাওয়া যায় এই দ্বীপে। চাইলে হেঁটেও যাওয়া যায়। এ ছাড়া কুয়াকাটা সৈকত থেকে স্পিডবোট কিংবা ট্রলারেও যাওয়া যায়।

 ফাতরারচর
কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে পশ্চিমে ১০ কিলোমিটার গেলে চোখে পড়বে নীল জলরাশির ওপর সবুজে ঘেরা ফাতরার বন বা ফাতরারচর নামের সংরক্ষিত ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। এ যেন সাগরের বুকে ভাসমান অরণ্য। ট্রলার জেটি পেরিয়ে ভেতরে ঢুকলেই চোখ পড়বে একটি সাইনবোর্ডে। তাতে লেখা আছে ‘টেংরাগিরি অরণ্য’। এর ভেতরে আছে শানবাঁধানো একটি পুকুর ও বন বিভাগের রেস্টহাউস। আছে অসংখ্য পাখি। চরের পূর্ব অংশে রয়েছে একটি ছোট সমুদ্রসৈকত। ভাটার সময় নামা যাবে সৈকতটিতে। কুয়াকাটা থেকে প্রতিদিন সকালে ট্যুরিস্ট বোট পর্যটকদের নিয়ে যায় বনে। চাইলে বোট রিজার্ভ করেও যাওয়া যায়। তাঁবুতে রাত যাপন করা যায়। নয়তো ফিরে যেতে হবে কুয়াকাটায়।

পটুয়াখালী মানেই কুয়াকাটা নয়, বিষয়টি মনে রাখতে হবে। শহর থেকে কুয়াকাটার দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। ফলে আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনা যদি শুধু পটুয়াখালী ও কুয়াকাটাকে কেন্দ্র করে হয়, তাহলে দুভাবে পরিকল্পনা করতে পারেন। প্রথমটি পটুয়াখালী শহর ঘুরে তারপর কুয়াকাটা; অন্যটি কুয়াকাটা ও অন্যান্য দ্বীপ ভ্রমণ করে ফিরতি পথে পটুয়াখালী শহরের জন্য বাড়তি সময় বের করা।

আর যদি আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনা পটুয়াখালী ও অন্যান্য দ্বীপ ভ্রমণ হয়ে থাকে, তবে অবশ্যই আপনাকে কুয়াকাটাকে কেন্দ্র করে গন্তব্যগুলো সাজিয়ে নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে ফিরতি পথে সময় বের করে পটুয়াখালী শহর ঘুরে দেখতে পারেন।

শহরের দর্শনীয় জায়গা
চার লেনের দৃষ্টিনন্দন সড়ক, সেলফি রোড, শিশুদের বিনোদনের জন্য শেখ রাসেল শিশু পার্ক, শহরের বুকে দুটি মনোরম লেক ও একটি পুকুর, হাতিরঝিলের আদলে সেতু ও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহীদ মিনার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত