Ajker Patrika

স্মৃতিবিজড়িত মং রাজবাড়ি

আবদুল মান্নান, মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি)
স্মৃতিবিজড়িত মং রাজবাড়ি

পার্বত্য চট্টগ্রামে মং সার্কেল বা মং রাজার শাসনামলের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি মং রাজবাড়ি। পার্বত্য চট্টগ্রামের মং সার্কেলের ইতিহাস অনেক পুরোনো।

প্রথম রাজা কংজয়ের মৃত্যুর পর বড় রাজপুত্র কিওজা সেইন ১৮৬১ সালে মানিকছড়ি রাজবাড়ি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর রাজকুমারী নানুমা দেবী (১৯২৯-১৯৫৪) তাঁর নাম অনুসারে মানিকছড়ি রাজবাড়িতে ‘নানুমা দেবী হল’ নির্মাণ করে তাঁর প্রয়াত পিতা নিপ্রুসাইন বাহাদুরের নামে উৎসর্গ করেন। এভাবেই মং সার্কেলের প্রাচীন নিদর্শনগুলো কালের সাক্ষী হয়ে আছে এই প্রজন্মের মানুষের কাছে।

রানি নানুমা দেবীর একমাত্র পুত্র সপ্তম রাজা মংপ্রু সেইন (১৯৫৪-১৯৮৪) তাঁর রাজত্বকালে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধে নিজের ধন-সম্পদ বিলিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি যুদ্ধাহত মানুষের জন্য নানুমা দেবী হলে প্রতিষ্ঠা করেন চিকিৎসালয়। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের সময় মং রাজবাড়ির রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস। খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে গেলে এই ঐতিহাসিক রাজবাড়ি দেখা যাবে।

সম্প্রতি প্রয়াত রাজা মংপ্রু সেইনের দৌহিত্ররা নিজ উদ্যোগে মহামুনি টিলার স্মৃতিময় জাদি ও বিহার সংস্কার শেষ করেন। অন্যদিকে পার্বত্য জেলা পরিষদ খাগড়াছড়ির অর্থায়নে সংস্কার শেষ হয় রাজবাড়ির বিভিন্ন স্থাপনার। সংস্কার করে আগের রূপ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে নানুমা দেবী হলের কারুকাজগুলো। সে জন্য এখন এসব ঐতিহ্য ও পুরাকীর্তি অনুমতি সাপেক্ষে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। প্রয়াত রাজা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মংপ্রু সাইন বাহাদুর ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কুমার সুইচিংপ্রু জানিয়েছেন এ তথ্য।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রক্তিম চৌধুরী জানিয়েছেন, এমনিতেই সবুজ বনাঞ্চলে ঘেরা খাগড়াছড়ির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পর্যটকেরা জেলার ঐতিহ্যবাহী ও দর্শনীয় স্থানে এসে স্বস্তিবোধ করেন। শত বছরের ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত রাজবাড়ির দর্শনীয় কাঠামোগুলো সংস্কার হওয়ায় এবং তা ভ্রমণপিয়াসীদের দেখার সুযোগ করে দেওয়ায় পর্যটকদের পদচারণে রাজবাড়িতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে।

সামনের যেকোনো ছুটিতে আপনিও যেতে পারেন মানিকছড়ির এই বিখ্যাত রাজবাড়ি দেখতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত