Ajker Patrika

বাড়ছে বয়স? ত্বকের যত্ন নিন এভাবে

অলকানন্দা রায়
আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৬: ১৬
Thumbnail image

বার্ধক্য হলো তা-ই, যা শরীরকে একটু বুড়িয়ে দেয়। বার্ধক্যের প্রথম ছাপ কিন্তু পড়ে আমাদের ত্বকে। তাই সঠিক সময়ে সচেতন হলে এবং একটু যত্নআত্তি নিলে সেই বার্ধক্য পালিয়ে যেতে বাধ্য অনেকাংশে। ত্বকের বার্ধক্য দূর করতে বা ধীরগতির করতে অনেকেই নানা রকম ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন। যেমন কেউ হন বোটক্সের শরণাপন্ন, আবার কেউ বেছে নেন নামীদামি প্রসাধনী।

তবে এগুলো একটা সময় ত্বকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ফেলতে পারে। এতে ক্ষতি হতে পারে ত্বকের। সেই ক্ষতির পরিমাণ কখনো সাময়িক, আবার কখনো দীর্ঘমেয়াদিও হতে পারে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের যত্ন কেমন হবে, সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন হার্বস আয়ুর্বেদিক ক্লিনিকের রূপ বিশেষজ্ঞ আফরিন মৌসুমী

৩০ পেরোলেই সচেতন হোন
বয়স ৩০ পেরোলেই মানুষ একটু একটু করে ত্বক নিয়ে ভাবতে শুরু করে। কারণ এ সময় থেকেই ত্বক তার লাবণ্য হারাতে শুরু করে, ত্বকের টান টান ভাব উধাও হতে থাকে ধীরে ধীরে। চোখের নিচে, কপালে, চিবুকে ভাঁজের যাত্রা শুরু হতে থাকে। মুখের ত্বকে ছোপ ছোপ দাগ পড়ে। আমাদের ত্বকে প্রতিদিন নতুন কোষ তৈরি হয় এবং ত্বকের উপরিভাগে মৃত কোষ জমতে থাকে। পাশাপাশি ত্বক প্রতিদিন ধুলোবালু, ময়লার সংস্পর্শে আসে। এতে ত্বক নিস্তেজ হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে বার্ধক্যের লক্ষণ প্রতিফলিত হতে থাকে। এসব বন্ধ করতে হলে চাই ত্বকের ধরন বুঝে একটু যত্নআত্তি। ত্বকের প্রয়োজন অনুসারে শরীরে জোগান দিতে হবে কিছু পুষ্টিরও। আর এসব বিষয়ে উদাসীন হলে কিংবা এগুলো অনীহা, আলস্য, অবহেলায় এড়িয়ে গেলে ত্বকে তো বটেই, মনেও বয়স চেপে বসে বেশ আয়েশি ভঙ্গিতেই।

ত্বকের যত্নে করণীয়
ত্বকের সুস্থতার জন্য পরিচ্ছন্নতার রুটিন মেনে চলা সবচেয়ে বেশি জরুরি। ত্বকে ঘাম, ধুলোবালুসহ নানা ময়লা জমে চিটচিটে হয়ে থাকে। তাই ত্বকের সঙ্গে মানানসই ফেসওয়াশ দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে নিতে হবে। পাশাপাশি এক্সফোলিয়েশন করে নিতে হবে সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন। সে জন্য চিনি, কফি বা বেসন দিয়ে তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে স্ক্র্যাব। এই উপকরণগুলো হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে নিয়ে ত্বকে মেখে আঙুল দিয়ে আলতো হাতে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করে মুখ পরিষ্কার করে নিতে হবে। এতে ত্বক থেকে ময়লা, মৃত কোষ পরিষ্কার হয়ে যাবে এবং ত্বক সজীব হয়ে উঠবে। 

যত কম রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা যাবে, ততই ভালো থাকবে ত্বক। ক্রমাগত প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট হয়ে যায়। ত্বকের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে শসা, অ্যালোভেরা, মধু, দুধের মতো প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা যেতে পারে। 

সকালে ঘুম থেকে উঠে এক টুকরো বরফ মুখে ঘষে নেওয়া যেতে পারে। এতে ত্বকের ফোলাভাব কমবে, ত্বক তৈলাক্ত হলে সেটিও কমে যাবে। এ ছাড়া ত্বকে কোনো ধরনের র‍্যাশ বা রোদে পোড়া দাগ হলে ধীরে ধীরে সেগুলোও কমে যাবে। এতে ত্বক পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠবে।

একটা কথা জেনে রাখা ভালো। নানা রকম বা একাধিক প্রসাধনী ব্যবহার করলে কিংবা কেবল পারলারেই ফেসিয়াল করালে ত্বক ভালো থাকবে, বিষয়টি এমন নয়। ত্বককে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল রাখতে হলে খাবারদাবার বা ডায়েটের দিকেও নজর দিতে হবে। খাবারে নিয়মিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। পাকা পেঁপে, গাজর, গ্রিন টি, সামুদ্রিক ও বাদামের মতো খাবার ভেতর থেকে ত্বককে সুন্দর রাখে। এ ছাড়া অতিরিক্ত তেল-ঝালযুক্ত খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা ভালো।

ত্বকের বার্ধক্য ধীরগতির করতে নিয়মিত করা চাই মুখের ব্যায়াম। ব্যায়াম ত্বকের প্রতিটি কোষে রক্ত ​​সঞ্চালন বাড়িয়ে পৌঁছে দেয় প্রয়োজনীয় পুষ্টি। এতে ত্বকের বার্ধক্যের লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে কমে যাবে। ত্বক হয়ে উঠবে টান টান ও সতেজ।

সবশেষে জীবন যাপনেও আনতে হবে নিয়মমাফিক ধারাবাহিকতা। সময়মতো ঘুম, স্নান ও স্বাস্থ্যকর খাবার শরীর-মনকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত