Ajker Patrika

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ভাবনায় বঙ্গবন্ধু

আপডেট : ১৫ আগস্ট ২০২৩, ১৩: ১৬
Thumbnail image

আজীবন সংগ্রামী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে শিক্ষা আন্দোলন, ঐতিহাসিক ছয় দফা আন্দোলন, সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, সর্বোপরি সত্তরের নির্বাচনে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। তাঁর বলিষ্ঠ সুযোগ্য সুদৃঢ় অনমনীয় অকুতোভয়, সর্বোপরি দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতিকে পৌঁছে দিয়েছেন স্বাধীনতার সুবর্ণ তোরণে। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সপরিবারে শহীদ হলেও সেই শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে অমিত সম্ভাবনা আর প্রাণশক্তিতে ভরপুর তারুণ্যদীপ্ত যুবসমাজকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়নসহ বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভাবনার কথা শুনেছেন মো. আশিকুর রহমান

স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হলে এবং বিশ্বমানচিত্রে বাংলাদেশের অবস্থান দৃঢ় করতে হলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই। আজ থেকে ১৯ বছর আগে শোকের মাস আগস্টে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি সায়েন্স ক্লাব শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানচর্চায় উদ্বুদ্ধ করার জন্য এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেই থেকে বর্তমান পর্যন্ত দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞানের আশীর্বাদ ছড়িয়ে দিতে আমরা যেভাবে কাজ করছি, সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক অনুপ্রেরণার নাম। শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতকে সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস অব্যাহত থাকবে। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের সম্মিলিত প্রয়াসেই আমরা একদিন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব।

শাকিল ইসলাম, সভাপতি, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি সায়েন্স ক্লাব

মাহবুব এ রহমানবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একটি আন্দোলনের নাম। একটি জাতির ইতিহাসের নাম। একটি দেশের মানচিত্রের নাম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাঙালি জাতির অন্ধকার দিনের এক জ্বলন্ত পিদিম। একটি দিশেহারা জাতিকে দেখিয়েছেন আশার প্রদীপ। যিনি তাঁর সারাটা জীবন ব্যয় করেছেন পরোপকারে। অন্যায়ভাবে বারবার জেল-জুলুমের মাধ্যমেও শত্রুরা পরাভূত করতে পারেনি যাঁকে। জীবনের শেষাবধি লড়েছেন অন্ধকার আর কালোর বিরুদ্ধে। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন কীভাবে নিজের অধিকার আদায় করে নিতে হয়। কীভাবে জালিমের হুংকারকে ছাপিয়ে সত্যকণ্ঠ সমুন্নত রাখতে হয়। দেশ স্বাধীনের পর একটি সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন ছিল বঙ্গবন্ধুর। কিন্তু ঘাতকেরা সে আশা পূর্ণ হতে দেয়নি। সপরিবারে তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। সেদিনের সে নির্মমতাকে এখনো ভোলেনি জাতি। বঙ্গবন্ধুর শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে এগিয়ে চলেছে দেশ। বিশ্বের বুকে আজ একটি সমৃদ্ধ নাম বাংলাদেশ।

মাহবুব এ রহমান, সভাপতি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।

নূর নাহার সুকন্যাজাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির মুক্তির প্রতীক। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে তিনি সর্বোচ্চ জোর দেন। যার সুফল দ্রুতই এ দেশের মানুষ পেতে থাকে। কিন্তু কতিপয় বিপথগামী মানুষের কারণে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রচিত হয় বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম কালো অধ্যায়। বঙ্গবন্ধু যে দুর্বার গতিতে বাংলাদেশকে সামনে নিয়ে যাচ্ছিলেন তা থামিয়ে দেওয়াই ছিল তাদের উদ্দেশ্য; কিন্তু এ দেশের জনগণ তা হতে দেয়নি। বঙ্গবন্ধু কন্যার হাত ধরে বাংলাদেশের প্রতি কোনায় সঞ্চারিত হয় উন্নয়ন। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পর চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশ আজ স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আর এই অগ্রযাত্রায় ১৫ আগস্টের শোক আমাদের শক্তি হিসেবে অনুপ্রাণিত করে।

নূর নাহার সুকন্যা, সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পিস ক্যাফে

জি এম মেহেদী হাসানস্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু উচ্চশিক্ষার শিক্ষার্থীদের কল্যাণ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে নানাবিধ কর্মসূচি শুরু করেন। আমরা তাঁকে সপরিবারে ’৭৫-এর ১৫ আগস্টে হারিয়েছিলাম। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হিসেবে মনে করি, আমাদের এই শোককে আমাদের শক্তি হিসেবে তৈরি করা উচিত। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের স্মার্ট ও উন্নত বাংলাদেশ গড়তে তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করার বার্তা বহন করার জন্য সিনেমা একটি শক্তিশালী মাধ্যম। আমরা ফিল্ম এবং ফটোগ্রাফি ক্লাবের মাধ্যমে চিন্তাভাবনা এবং সংস্কৃতি বিকাশের জন্য কাজ করছি। এরই ধারাবাহিকতায়, আমরা সিনেমা নির্মাণ কর্মশালা, কিউরেটিং এবং প্রদর্শনীর আয়োজন করছি নিয়মিত। আমি মনে করি, সিনেমা বাংলাদেশকে বিগত কয়েক বছরে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমাদৃত করেছে, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সিনেমা অঙ্গনে নেতৃত্ব দেবে।

জি এম মেহেদী হাসান, সভাপতি, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ক্লাব, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়

অনিমা জামান প্রমাশেখ মুজিব মানেই বাঙালির মৃত্যুঞ্জয়ী চেতনা। শেখ মুজিব মানেই সাম্য-অধিকার-গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। শেখ মুজিব মানেই বাঙালির দিশা-আলোর দিশারী। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি নাম নয়—বঙ্গবন্ধুর আদর্শই বাঙালির অর্থনৈতিক, সামাজিক মুক্তির উপায়। বঙ্গবন্ধু শুধু বাঙালির নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন সারা বিশ্বের সব শোষিত-বঞ্চিত মানুষের পক্ষের শক্তি। শেখ মুজিবুর রহমান মানেই আত্মত্যাগের মহিমা। দেশের মানুষের মুক্তির জন্য, স্বাধীনতার জন্য জীবন-যৌবনের ১৪টি বছর জেলে কাটিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু আমাদের শিখিয়েছেন অন্যায়ের সঙ্গে আপস না করতে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হোক আমাদের চলার পথের শক্তি।

অনিমা জামান প্রমা, সাধারণ সম্পাদক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় সাইবারনেটিকস ক্লাব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত