মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ

হজরত খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রহ.) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম প্রধান সুফি সাধক ও ইসলামের এক নিবেদিতপ্রাণ দাঈ। তাঁর প্রচারিত চিশতিয়া তরিকা শুধু ভারতবর্ষেই নয়, সমগ্র বিশ্বের সুফি চিন্তাধারায় গভীর প্রভাব ফেলেছে। মানবপ্রেম, সহনশীলতা ও পরোপকারিতার মাধ্যমে তিনি অসংখ্য মানুষকে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় দিয়েছেন। তাঁর আধ্যাত্মিক শক্তি ও অসামান্য নৈতিকতার কারণে তিনি ‘গরিবে নেওয়াজ’ (গরিবদের বন্ধু) উপাধিতে ভূষিত হন।
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা
খাজা মইনুদ্দিন চিশতি (রহ.) ১১৪১ খ্রিষ্টাব্দে (৫৩৬ হিজরি) ইরানের সিস্তান প্রদেশের সিজিস্তান অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন এবং মাতার নাম সৈয়দা উম্মুল ওয়ারা মাহে নুর। তিনি ছিলেন মহান সাহাবি হজরত আলি (রা.)–এর বংশধর। শৈশবে খাজা মইনুদ্দিন পারিবারিক স্নেহ-মমতার মধ্যে বেড়ে উঠলেও মাত্র ১৫ বছর বয়সে পিতা–মাতাকে হারান। উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত ফলের বাগান ও একটি বাতচক্র ছিল তাঁর জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম। কিন্তু এই পার্থিব সম্পদ তাঁকে আধ্যাত্মিক তৃষ্ণা থেকে নিবৃত্ত করতে পারেনি।
আধ্যাত্মিকতার দুনিয়ায় আগমন
একদিন তিনি তাঁর বাগানে কাজ করছিলেন। তখন এক সুফি দরবেশ, হজরত ইব্রাহিম কুন্দুজি (রহ.) সেখানে আসেন। খাজা মইনুদ্দিন তাঁর সঙ্গ পেয়ে এক নতুন আধ্যাত্মিক দিগন্তের সন্ধান পান। দরবেশের পরামর্শে তিনি তাঁর সম্পদ দান করে দেন এবং জ্ঞানার্জনের উদ্দেশে বুখারায় যাত্রা করেন। বুখারা ও সমরখন্দের মতো জ্ঞানকেন্দ্রে তিনি কোরআন, হাদিস, তাফসির, ফিকহ, যুক্তিবিদ্যা ও অন্যান্য ইসলামি শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। পরবর্তীতে তিনি নিশাপুরে গিয়ে বিখ্যাত সুফি সাধক হজরত উসমান হারুনির শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। এই সময় দীর্ঘ ২০ বছর ধরে গুরুর সঙ্গে থেকে আত্মশুদ্ধি, ত্যাগ ও কঠোর ইবাদতের মাধ্যমে সুফি মারেফাতে গভীর দক্ষতা অর্জন করেন খাজা মইনুদ্দিন।
ভারতে আগমন ও ইসলাম প্রচার
মদিনায় অবস্থানকালে তিনি স্বপ্নে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–কে দেখতে পান, যিনি তাঁকে হিন্দুস্তানে ইসলামের দাওয়াত প্রচারের নির্দেশ দেন। মহানবী (সা.)-এর নির্দেশনা অনুযায়ী, খাজা মইনুদ্দিন চিশতি ভারতবর্ষে আগমন করেন। তিনি প্রথমে লাহোর, পরে দিল্লি হয়ে আজমিরে পৌঁছান। আজমির তখন ছিল অত্যাচারী রাজা পৃথ্বীরাজ চৌহানের অধীনে। তাঁর আগমনে শাসক শ্রেণি অসন্তুষ্ট হলেও, সাধারণ জনগণ তাঁর আধ্যাত্মিক শক্তি, মানবিকতা ও ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে ইসলামের দিকে ধাবিত হয়। তিনি ধনীদের থেকে দূরে থেকে গরিব-দুঃখীদের সেবা করতেন, তাঁদের মুখে খাবার তুলে দিতেন। তাঁর দরবারে অসংখ্য হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে মানুষের ভিড় জমত, কারণ তিনি সব ধর্মের মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান প্রদর্শন করতেন। তিনি ভোগবিলাস, বৈষয়িক সম্পদের প্রতি আসক্তি এবং ক্ষমতার মোহ থেকে মুক্ত থাকার শিক্ষা দিতেন।
তাঁর বিখ্যাত শিষ্যদের মধ্যে রয়েছেন, হজরত কুতুবুদ্দিন বখতিয়ার কাকি (রহ.), হজরত বাবা ফরিদ গঞ্জে শকর (রহ.), হজরত নিজামুদ্দিন আউলিয়া (রহ.) প্রমুখ।
তাঁর মানবপ্রেমের অসংখ্য ঘটনা রয়েছে। একটি শিক্ষণীয় ঘটনা হলো—একদিন এক দরিদ্র লোক তাঁর দরবারে এসে বলল, ‘হুজুর, আমি ক্ষুধার্ত।’ খাজা মইনুদ্দিন (রহ.) তখন নিজের ঘরে কিছুই পাননি, তাই তিনি নিজের একমাত্র জামাটি খুলে দিয়ে বললেন, ‘এটি বিক্রি করে যা পাও, তা দিয়ে খেয়ে নাও।’ এই ঘটনার মাধ্যমে তিনি দেখিয়ে দিয়েছিলেন, প্রকৃত সুফির কাছে ধন-সম্পদ নয়, বরং মানবসেবা ও আত্মত্যাগই সবচেয়ে মূল্যবান।
খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রহ.) ছিলেন এক মহৎপ্রাণ সুফি, যিনি প্রেম, সহানুভূতি ও মানবতার বার্তা প্রচার করেছেন। তাঁর দরবার আজমির শরিফে অবস্থিত এবং লাখ লাখ মানুষ সেখানে তাঁর বরকত লাভের আশায় সমবেত হয়। তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা হলো—মানবপ্রেম, বিনয়, এবং আল্লাহর প্রতি সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ। তিনি আমাদের শেখান, প্রকৃত ইসলাম ভালোবাসা, করুণা এবং অন্যের কল্যাণে আত্মনিবেদন করা।
তথ্যসূত্র
১. তাজকিরাতুল আওলিয়া, শেখ ফরিদুদ্দিন আত্তার।
২. সিয়ারুল আওলিয়া, নিজামুদ্দিন আউলিয়া।
৩. গরীবে নেওয়াজ: খাজা মইনুদ্দিন চিশতির জীবন ও শিক্ষাসমূহ, ড. জাকারিয়া আনসারি
৪. অন্যান্য।

হজরত খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রহ.) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম প্রধান সুফি সাধক ও ইসলামের এক নিবেদিতপ্রাণ দাঈ। তাঁর প্রচারিত চিশতিয়া তরিকা শুধু ভারতবর্ষেই নয়, সমগ্র বিশ্বের সুফি চিন্তাধারায় গভীর প্রভাব ফেলেছে। মানবপ্রেম, সহনশীলতা ও পরোপকারিতার মাধ্যমে তিনি অসংখ্য মানুষকে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় দিয়েছেন। তাঁর আধ্যাত্মিক শক্তি ও অসামান্য নৈতিকতার কারণে তিনি ‘গরিবে নেওয়াজ’ (গরিবদের বন্ধু) উপাধিতে ভূষিত হন।
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা
খাজা মইনুদ্দিন চিশতি (রহ.) ১১৪১ খ্রিষ্টাব্দে (৫৩৬ হিজরি) ইরানের সিস্তান প্রদেশের সিজিস্তান অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন এবং মাতার নাম সৈয়দা উম্মুল ওয়ারা মাহে নুর। তিনি ছিলেন মহান সাহাবি হজরত আলি (রা.)–এর বংশধর। শৈশবে খাজা মইনুদ্দিন পারিবারিক স্নেহ-মমতার মধ্যে বেড়ে উঠলেও মাত্র ১৫ বছর বয়সে পিতা–মাতাকে হারান। উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত ফলের বাগান ও একটি বাতচক্র ছিল তাঁর জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম। কিন্তু এই পার্থিব সম্পদ তাঁকে আধ্যাত্মিক তৃষ্ণা থেকে নিবৃত্ত করতে পারেনি।
আধ্যাত্মিকতার দুনিয়ায় আগমন
একদিন তিনি তাঁর বাগানে কাজ করছিলেন। তখন এক সুফি দরবেশ, হজরত ইব্রাহিম কুন্দুজি (রহ.) সেখানে আসেন। খাজা মইনুদ্দিন তাঁর সঙ্গ পেয়ে এক নতুন আধ্যাত্মিক দিগন্তের সন্ধান পান। দরবেশের পরামর্শে তিনি তাঁর সম্পদ দান করে দেন এবং জ্ঞানার্জনের উদ্দেশে বুখারায় যাত্রা করেন। বুখারা ও সমরখন্দের মতো জ্ঞানকেন্দ্রে তিনি কোরআন, হাদিস, তাফসির, ফিকহ, যুক্তিবিদ্যা ও অন্যান্য ইসলামি শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। পরবর্তীতে তিনি নিশাপুরে গিয়ে বিখ্যাত সুফি সাধক হজরত উসমান হারুনির শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। এই সময় দীর্ঘ ২০ বছর ধরে গুরুর সঙ্গে থেকে আত্মশুদ্ধি, ত্যাগ ও কঠোর ইবাদতের মাধ্যমে সুফি মারেফাতে গভীর দক্ষতা অর্জন করেন খাজা মইনুদ্দিন।
ভারতে আগমন ও ইসলাম প্রচার
মদিনায় অবস্থানকালে তিনি স্বপ্নে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–কে দেখতে পান, যিনি তাঁকে হিন্দুস্তানে ইসলামের দাওয়াত প্রচারের নির্দেশ দেন। মহানবী (সা.)-এর নির্দেশনা অনুযায়ী, খাজা মইনুদ্দিন চিশতি ভারতবর্ষে আগমন করেন। তিনি প্রথমে লাহোর, পরে দিল্লি হয়ে আজমিরে পৌঁছান। আজমির তখন ছিল অত্যাচারী রাজা পৃথ্বীরাজ চৌহানের অধীনে। তাঁর আগমনে শাসক শ্রেণি অসন্তুষ্ট হলেও, সাধারণ জনগণ তাঁর আধ্যাত্মিক শক্তি, মানবিকতা ও ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে ইসলামের দিকে ধাবিত হয়। তিনি ধনীদের থেকে দূরে থেকে গরিব-দুঃখীদের সেবা করতেন, তাঁদের মুখে খাবার তুলে দিতেন। তাঁর দরবারে অসংখ্য হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে মানুষের ভিড় জমত, কারণ তিনি সব ধর্মের মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান প্রদর্শন করতেন। তিনি ভোগবিলাস, বৈষয়িক সম্পদের প্রতি আসক্তি এবং ক্ষমতার মোহ থেকে মুক্ত থাকার শিক্ষা দিতেন।
তাঁর বিখ্যাত শিষ্যদের মধ্যে রয়েছেন, হজরত কুতুবুদ্দিন বখতিয়ার কাকি (রহ.), হজরত বাবা ফরিদ গঞ্জে শকর (রহ.), হজরত নিজামুদ্দিন আউলিয়া (রহ.) প্রমুখ।
তাঁর মানবপ্রেমের অসংখ্য ঘটনা রয়েছে। একটি শিক্ষণীয় ঘটনা হলো—একদিন এক দরিদ্র লোক তাঁর দরবারে এসে বলল, ‘হুজুর, আমি ক্ষুধার্ত।’ খাজা মইনুদ্দিন (রহ.) তখন নিজের ঘরে কিছুই পাননি, তাই তিনি নিজের একমাত্র জামাটি খুলে দিয়ে বললেন, ‘এটি বিক্রি করে যা পাও, তা দিয়ে খেয়ে নাও।’ এই ঘটনার মাধ্যমে তিনি দেখিয়ে দিয়েছিলেন, প্রকৃত সুফির কাছে ধন-সম্পদ নয়, বরং মানবসেবা ও আত্মত্যাগই সবচেয়ে মূল্যবান।
খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রহ.) ছিলেন এক মহৎপ্রাণ সুফি, যিনি প্রেম, সহানুভূতি ও মানবতার বার্তা প্রচার করেছেন। তাঁর দরবার আজমির শরিফে অবস্থিত এবং লাখ লাখ মানুষ সেখানে তাঁর বরকত লাভের আশায় সমবেত হয়। তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা হলো—মানবপ্রেম, বিনয়, এবং আল্লাহর প্রতি সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ। তিনি আমাদের শেখান, প্রকৃত ইসলাম ভালোবাসা, করুণা এবং অন্যের কল্যাণে আত্মনিবেদন করা।
তথ্যসূত্র
১. তাজকিরাতুল আওলিয়া, শেখ ফরিদুদ্দিন আত্তার।
২. সিয়ারুল আওলিয়া, নিজামুদ্দিন আউলিয়া।
৩. গরীবে নেওয়াজ: খাজা মইনুদ্দিন চিশতির জীবন ও শিক্ষাসমূহ, ড. জাকারিয়া আনসারি
৪. অন্যান্য।
মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ

হজরত খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রহ.) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম প্রধান সুফি সাধক ও ইসলামের এক নিবেদিতপ্রাণ দাঈ। তাঁর প্রচারিত চিশতিয়া তরিকা শুধু ভারতবর্ষেই নয়, সমগ্র বিশ্বের সুফি চিন্তাধারায় গভীর প্রভাব ফেলেছে। মানবপ্রেম, সহনশীলতা ও পরোপকারিতার মাধ্যমে তিনি অসংখ্য মানুষকে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় দিয়েছেন। তাঁর আধ্যাত্মিক শক্তি ও অসামান্য নৈতিকতার কারণে তিনি ‘গরিবে নেওয়াজ’ (গরিবদের বন্ধু) উপাধিতে ভূষিত হন।
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা
খাজা মইনুদ্দিন চিশতি (রহ.) ১১৪১ খ্রিষ্টাব্দে (৫৩৬ হিজরি) ইরানের সিস্তান প্রদেশের সিজিস্তান অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন এবং মাতার নাম সৈয়দা উম্মুল ওয়ারা মাহে নুর। তিনি ছিলেন মহান সাহাবি হজরত আলি (রা.)–এর বংশধর। শৈশবে খাজা মইনুদ্দিন পারিবারিক স্নেহ-মমতার মধ্যে বেড়ে উঠলেও মাত্র ১৫ বছর বয়সে পিতা–মাতাকে হারান। উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত ফলের বাগান ও একটি বাতচক্র ছিল তাঁর জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম। কিন্তু এই পার্থিব সম্পদ তাঁকে আধ্যাত্মিক তৃষ্ণা থেকে নিবৃত্ত করতে পারেনি।
আধ্যাত্মিকতার দুনিয়ায় আগমন
একদিন তিনি তাঁর বাগানে কাজ করছিলেন। তখন এক সুফি দরবেশ, হজরত ইব্রাহিম কুন্দুজি (রহ.) সেখানে আসেন। খাজা মইনুদ্দিন তাঁর সঙ্গ পেয়ে এক নতুন আধ্যাত্মিক দিগন্তের সন্ধান পান। দরবেশের পরামর্শে তিনি তাঁর সম্পদ দান করে দেন এবং জ্ঞানার্জনের উদ্দেশে বুখারায় যাত্রা করেন। বুখারা ও সমরখন্দের মতো জ্ঞানকেন্দ্রে তিনি কোরআন, হাদিস, তাফসির, ফিকহ, যুক্তিবিদ্যা ও অন্যান্য ইসলামি শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। পরবর্তীতে তিনি নিশাপুরে গিয়ে বিখ্যাত সুফি সাধক হজরত উসমান হারুনির শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। এই সময় দীর্ঘ ২০ বছর ধরে গুরুর সঙ্গে থেকে আত্মশুদ্ধি, ত্যাগ ও কঠোর ইবাদতের মাধ্যমে সুফি মারেফাতে গভীর দক্ষতা অর্জন করেন খাজা মইনুদ্দিন।
ভারতে আগমন ও ইসলাম প্রচার
মদিনায় অবস্থানকালে তিনি স্বপ্নে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–কে দেখতে পান, যিনি তাঁকে হিন্দুস্তানে ইসলামের দাওয়াত প্রচারের নির্দেশ দেন। মহানবী (সা.)-এর নির্দেশনা অনুযায়ী, খাজা মইনুদ্দিন চিশতি ভারতবর্ষে আগমন করেন। তিনি প্রথমে লাহোর, পরে দিল্লি হয়ে আজমিরে পৌঁছান। আজমির তখন ছিল অত্যাচারী রাজা পৃথ্বীরাজ চৌহানের অধীনে। তাঁর আগমনে শাসক শ্রেণি অসন্তুষ্ট হলেও, সাধারণ জনগণ তাঁর আধ্যাত্মিক শক্তি, মানবিকতা ও ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে ইসলামের দিকে ধাবিত হয়। তিনি ধনীদের থেকে দূরে থেকে গরিব-দুঃখীদের সেবা করতেন, তাঁদের মুখে খাবার তুলে দিতেন। তাঁর দরবারে অসংখ্য হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে মানুষের ভিড় জমত, কারণ তিনি সব ধর্মের মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান প্রদর্শন করতেন। তিনি ভোগবিলাস, বৈষয়িক সম্পদের প্রতি আসক্তি এবং ক্ষমতার মোহ থেকে মুক্ত থাকার শিক্ষা দিতেন।
তাঁর বিখ্যাত শিষ্যদের মধ্যে রয়েছেন, হজরত কুতুবুদ্দিন বখতিয়ার কাকি (রহ.), হজরত বাবা ফরিদ গঞ্জে শকর (রহ.), হজরত নিজামুদ্দিন আউলিয়া (রহ.) প্রমুখ।
তাঁর মানবপ্রেমের অসংখ্য ঘটনা রয়েছে। একটি শিক্ষণীয় ঘটনা হলো—একদিন এক দরিদ্র লোক তাঁর দরবারে এসে বলল, ‘হুজুর, আমি ক্ষুধার্ত।’ খাজা মইনুদ্দিন (রহ.) তখন নিজের ঘরে কিছুই পাননি, তাই তিনি নিজের একমাত্র জামাটি খুলে দিয়ে বললেন, ‘এটি বিক্রি করে যা পাও, তা দিয়ে খেয়ে নাও।’ এই ঘটনার মাধ্যমে তিনি দেখিয়ে দিয়েছিলেন, প্রকৃত সুফির কাছে ধন-সম্পদ নয়, বরং মানবসেবা ও আত্মত্যাগই সবচেয়ে মূল্যবান।
খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রহ.) ছিলেন এক মহৎপ্রাণ সুফি, যিনি প্রেম, সহানুভূতি ও মানবতার বার্তা প্রচার করেছেন। তাঁর দরবার আজমির শরিফে অবস্থিত এবং লাখ লাখ মানুষ সেখানে তাঁর বরকত লাভের আশায় সমবেত হয়। তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা হলো—মানবপ্রেম, বিনয়, এবং আল্লাহর প্রতি সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ। তিনি আমাদের শেখান, প্রকৃত ইসলাম ভালোবাসা, করুণা এবং অন্যের কল্যাণে আত্মনিবেদন করা।
তথ্যসূত্র
১. তাজকিরাতুল আওলিয়া, শেখ ফরিদুদ্দিন আত্তার।
২. সিয়ারুল আওলিয়া, নিজামুদ্দিন আউলিয়া।
৩. গরীবে নেওয়াজ: খাজা মইনুদ্দিন চিশতির জীবন ও শিক্ষাসমূহ, ড. জাকারিয়া আনসারি
৪. অন্যান্য।

হজরত খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রহ.) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম প্রধান সুফি সাধক ও ইসলামের এক নিবেদিতপ্রাণ দাঈ। তাঁর প্রচারিত চিশতিয়া তরিকা শুধু ভারতবর্ষেই নয়, সমগ্র বিশ্বের সুফি চিন্তাধারায় গভীর প্রভাব ফেলেছে। মানবপ্রেম, সহনশীলতা ও পরোপকারিতার মাধ্যমে তিনি অসংখ্য মানুষকে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় দিয়েছেন। তাঁর আধ্যাত্মিক শক্তি ও অসামান্য নৈতিকতার কারণে তিনি ‘গরিবে নেওয়াজ’ (গরিবদের বন্ধু) উপাধিতে ভূষিত হন।
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা
খাজা মইনুদ্দিন চিশতি (রহ.) ১১৪১ খ্রিষ্টাব্দে (৫৩৬ হিজরি) ইরানের সিস্তান প্রদেশের সিজিস্তান অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন এবং মাতার নাম সৈয়দা উম্মুল ওয়ারা মাহে নুর। তিনি ছিলেন মহান সাহাবি হজরত আলি (রা.)–এর বংশধর। শৈশবে খাজা মইনুদ্দিন পারিবারিক স্নেহ-মমতার মধ্যে বেড়ে উঠলেও মাত্র ১৫ বছর বয়সে পিতা–মাতাকে হারান। উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত ফলের বাগান ও একটি বাতচক্র ছিল তাঁর জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম। কিন্তু এই পার্থিব সম্পদ তাঁকে আধ্যাত্মিক তৃষ্ণা থেকে নিবৃত্ত করতে পারেনি।
আধ্যাত্মিকতার দুনিয়ায় আগমন
একদিন তিনি তাঁর বাগানে কাজ করছিলেন। তখন এক সুফি দরবেশ, হজরত ইব্রাহিম কুন্দুজি (রহ.) সেখানে আসেন। খাজা মইনুদ্দিন তাঁর সঙ্গ পেয়ে এক নতুন আধ্যাত্মিক দিগন্তের সন্ধান পান। দরবেশের পরামর্শে তিনি তাঁর সম্পদ দান করে দেন এবং জ্ঞানার্জনের উদ্দেশে বুখারায় যাত্রা করেন। বুখারা ও সমরখন্দের মতো জ্ঞানকেন্দ্রে তিনি কোরআন, হাদিস, তাফসির, ফিকহ, যুক্তিবিদ্যা ও অন্যান্য ইসলামি শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। পরবর্তীতে তিনি নিশাপুরে গিয়ে বিখ্যাত সুফি সাধক হজরত উসমান হারুনির শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। এই সময় দীর্ঘ ২০ বছর ধরে গুরুর সঙ্গে থেকে আত্মশুদ্ধি, ত্যাগ ও কঠোর ইবাদতের মাধ্যমে সুফি মারেফাতে গভীর দক্ষতা অর্জন করেন খাজা মইনুদ্দিন।
ভারতে আগমন ও ইসলাম প্রচার
মদিনায় অবস্থানকালে তিনি স্বপ্নে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–কে দেখতে পান, যিনি তাঁকে হিন্দুস্তানে ইসলামের দাওয়াত প্রচারের নির্দেশ দেন। মহানবী (সা.)-এর নির্দেশনা অনুযায়ী, খাজা মইনুদ্দিন চিশতি ভারতবর্ষে আগমন করেন। তিনি প্রথমে লাহোর, পরে দিল্লি হয়ে আজমিরে পৌঁছান। আজমির তখন ছিল অত্যাচারী রাজা পৃথ্বীরাজ চৌহানের অধীনে। তাঁর আগমনে শাসক শ্রেণি অসন্তুষ্ট হলেও, সাধারণ জনগণ তাঁর আধ্যাত্মিক শক্তি, মানবিকতা ও ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে ইসলামের দিকে ধাবিত হয়। তিনি ধনীদের থেকে দূরে থেকে গরিব-দুঃখীদের সেবা করতেন, তাঁদের মুখে খাবার তুলে দিতেন। তাঁর দরবারে অসংখ্য হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে মানুষের ভিড় জমত, কারণ তিনি সব ধর্মের মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান প্রদর্শন করতেন। তিনি ভোগবিলাস, বৈষয়িক সম্পদের প্রতি আসক্তি এবং ক্ষমতার মোহ থেকে মুক্ত থাকার শিক্ষা দিতেন।
তাঁর বিখ্যাত শিষ্যদের মধ্যে রয়েছেন, হজরত কুতুবুদ্দিন বখতিয়ার কাকি (রহ.), হজরত বাবা ফরিদ গঞ্জে শকর (রহ.), হজরত নিজামুদ্দিন আউলিয়া (রহ.) প্রমুখ।
তাঁর মানবপ্রেমের অসংখ্য ঘটনা রয়েছে। একটি শিক্ষণীয় ঘটনা হলো—একদিন এক দরিদ্র লোক তাঁর দরবারে এসে বলল, ‘হুজুর, আমি ক্ষুধার্ত।’ খাজা মইনুদ্দিন (রহ.) তখন নিজের ঘরে কিছুই পাননি, তাই তিনি নিজের একমাত্র জামাটি খুলে দিয়ে বললেন, ‘এটি বিক্রি করে যা পাও, তা দিয়ে খেয়ে নাও।’ এই ঘটনার মাধ্যমে তিনি দেখিয়ে দিয়েছিলেন, প্রকৃত সুফির কাছে ধন-সম্পদ নয়, বরং মানবসেবা ও আত্মত্যাগই সবচেয়ে মূল্যবান।
খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রহ.) ছিলেন এক মহৎপ্রাণ সুফি, যিনি প্রেম, সহানুভূতি ও মানবতার বার্তা প্রচার করেছেন। তাঁর দরবার আজমির শরিফে অবস্থিত এবং লাখ লাখ মানুষ সেখানে তাঁর বরকত লাভের আশায় সমবেত হয়। তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা হলো—মানবপ্রেম, বিনয়, এবং আল্লাহর প্রতি সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ। তিনি আমাদের শেখান, প্রকৃত ইসলাম ভালোবাসা, করুণা এবং অন্যের কল্যাণে আত্মনিবেদন করা।
তথ্যসূত্র
১. তাজকিরাতুল আওলিয়া, শেখ ফরিদুদ্দিন আত্তার।
২. সিয়ারুল আওলিয়া, নিজামুদ্দিন আউলিয়া।
৩. গরীবে নেওয়াজ: খাজা মইনুদ্দিন চিশতির জীবন ও শিক্ষাসমূহ, ড. জাকারিয়া আনসারি
৪. অন্যান্য।

নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
২ ঘণ্টা আগে
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
৪ ঘণ্টা আগে
আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগেসাকী মাহবুব

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। আর নামাজ হলো এই ব্যবস্থার প্রাণ। নামাজ শুধু একটি ধর্মীয় কর্তব্য নয়, এটি মানুষের আত্মার প্রশান্তি, নৈতিকতার ভিত্তি এবং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যম। তাই সন্তানের চরিত্র গঠনের প্রথম পাঠই হওয়া উচিত নামাজের শিক্ষা।
প্রশ্ন হলো, কীভাবে মা-বাবা সন্তানকে নামাজপ্রিয় ও নামাজি হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন?
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ।’ (জামে তিরমিজি)। আরেকটি হাদিসে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের ৭ বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দাও, আর ১০ বছর বয়সে তা না পড়লে শাসন করো।’ (সুনানে আবু দাউদ)
অতএব ছোটবেলা থেকে সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তোলার নির্দেশ ইসলাম দিয়েছে।
সন্তান কখনো এক দিনে নামাজি হয় না। এটি একটি ধৈর্য, ভালোবাসা ও উদাহরণের দীর্ঘ যাত্রা। এই যাত্রার প্রথম ধাপ হলো, নিজে নামাজি হওয়া। শিশুরা অনুকরণপ্রিয়; তারা যা দেখে, তা-ই শেখে। মা-বাবার নিয়মিত নামাজ তাদের চোখে সবচেয়ে বড় শিক্ষা। একটি পরিবারে নামাজের পরিবেশ গড়ে তুলতে কিছু কার্যকর উপায় হলো, ঘরে নামাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা।
আজানের সময় আজান দেওয়া এবং সবাইকে একত্রে নামাজে আহ্বান করা। ছোটদের জন্য আলাদা জায়নামাজ, টুপি ও ওড়না দেওয়া, যাতে তারা উৎসাহ পায়। নামাজ শেষে সবাই মিলে দোয়া করা, এতে শিশুর মনে নামাজের প্রতি ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি হয়। শিশুর কাছে নামাজ যেন ভয় বা শাস্তি নয়, বরং আনন্দের একটি অভ্যাস হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’ এইভাবে ভালোবাসা ও পুরস্কারের ভাষায় সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তুলুন।
সন্তান যে পরিবেশে বড় হয়, তা তার চরিত্রে গভীর প্রভাব ফেলে। তাই নামাজি বন্ধু ও সঙ্গ তৈরি করুন। মসজিদভিত্তিক শিশু কার্যক্রম বা ইসলামিক সংগঠনে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন। স্কুল ও সমাজে নামাজবান্ধব পরিবেশের জন্য উদ্যোগ নিন। সন্তানকে নামাজি বানানো মানে শুধু তাকে নামাজ শেখানো নয়; বরং তার হৃদয়ে আল্লাহভীতি, নৈতিকতা ও আত্মিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, ভালোবাসা ও সঠিক দিকনির্দেশনা।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে মা-বাবাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমার পরিবারকে নামাজের নির্দেশ দাও এবং নিজেও এতে স্থির থাকো।’ (সুরা তোহা: ১৩২)
সুতরাং মা-বাবা যদি নিজের ঘরে নামাজের আলো জ্বালান, তবে সেই আলো একদিন পুরো সমাজকে আলোকিত করবে নামাজি প্রজন্মের মাধ্যমে। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের সন্তানদের নামাজি হিসেবে কবুল করে নিন।
লেখক: সহকারী শিক্ষক, নাদির হোসেন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পাংশা, রাজবাড়ী।

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। আর নামাজ হলো এই ব্যবস্থার প্রাণ। নামাজ শুধু একটি ধর্মীয় কর্তব্য নয়, এটি মানুষের আত্মার প্রশান্তি, নৈতিকতার ভিত্তি এবং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যম। তাই সন্তানের চরিত্র গঠনের প্রথম পাঠই হওয়া উচিত নামাজের শিক্ষা।
প্রশ্ন হলো, কীভাবে মা-বাবা সন্তানকে নামাজপ্রিয় ও নামাজি হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন?
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ।’ (জামে তিরমিজি)। আরেকটি হাদিসে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের ৭ বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দাও, আর ১০ বছর বয়সে তা না পড়লে শাসন করো।’ (সুনানে আবু দাউদ)
অতএব ছোটবেলা থেকে সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তোলার নির্দেশ ইসলাম দিয়েছে।
সন্তান কখনো এক দিনে নামাজি হয় না। এটি একটি ধৈর্য, ভালোবাসা ও উদাহরণের দীর্ঘ যাত্রা। এই যাত্রার প্রথম ধাপ হলো, নিজে নামাজি হওয়া। শিশুরা অনুকরণপ্রিয়; তারা যা দেখে, তা-ই শেখে। মা-বাবার নিয়মিত নামাজ তাদের চোখে সবচেয়ে বড় শিক্ষা। একটি পরিবারে নামাজের পরিবেশ গড়ে তুলতে কিছু কার্যকর উপায় হলো, ঘরে নামাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা।
আজানের সময় আজান দেওয়া এবং সবাইকে একত্রে নামাজে আহ্বান করা। ছোটদের জন্য আলাদা জায়নামাজ, টুপি ও ওড়না দেওয়া, যাতে তারা উৎসাহ পায়। নামাজ শেষে সবাই মিলে দোয়া করা, এতে শিশুর মনে নামাজের প্রতি ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি হয়। শিশুর কাছে নামাজ যেন ভয় বা শাস্তি নয়, বরং আনন্দের একটি অভ্যাস হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’ এইভাবে ভালোবাসা ও পুরস্কারের ভাষায় সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তুলুন।
সন্তান যে পরিবেশে বড় হয়, তা তার চরিত্রে গভীর প্রভাব ফেলে। তাই নামাজি বন্ধু ও সঙ্গ তৈরি করুন। মসজিদভিত্তিক শিশু কার্যক্রম বা ইসলামিক সংগঠনে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন। স্কুল ও সমাজে নামাজবান্ধব পরিবেশের জন্য উদ্যোগ নিন। সন্তানকে নামাজি বানানো মানে শুধু তাকে নামাজ শেখানো নয়; বরং তার হৃদয়ে আল্লাহভীতি, নৈতিকতা ও আত্মিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, ভালোবাসা ও সঠিক দিকনির্দেশনা।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে মা-বাবাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমার পরিবারকে নামাজের নির্দেশ দাও এবং নিজেও এতে স্থির থাকো।’ (সুরা তোহা: ১৩২)
সুতরাং মা-বাবা যদি নিজের ঘরে নামাজের আলো জ্বালান, তবে সেই আলো একদিন পুরো সমাজকে আলোকিত করবে নামাজি প্রজন্মের মাধ্যমে। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের সন্তানদের নামাজি হিসেবে কবুল করে নিন।
লেখক: সহকারী শিক্ষক, নাদির হোসেন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পাংশা, রাজবাড়ী।

হজরত খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রহ.) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম প্রধান সুফি সাধক ও ইসলামের এক নিবেদিতপ্রাণ দাঈ। তাঁর প্রচারিত চিশতিয়া তরিকা শুধু ভারতবর্ষেই নয়, সমগ্র বিশ্বের সুফি চিন্তাধারায় গভীর প্রভাব ফেলেছে।
১৮ মার্চ ২০২৫
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
৪ ঘণ্টা আগে
আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের গৌরব ছড়িয়ে দেওয়া তিনবারের বিশ্বজয়ী হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকী।
আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
জানা যায়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর হাফেজ ত্বকীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
বিশ্বজয়ী এই হাফেজ জর্ডান, কুয়েত ও বাহরাইনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন। দেশে-বিদেশে অসংখ্য কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি অর্জন করেন অসামান্য সাফল্য।
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
প্রতিভাবান এই হাফেজ ২০০০ সালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ডালপা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করছিলেন। তাঁর বাবা মাওলানা বদিউল আলম একজন মাদ্রাসাশিক্ষক।
হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকীর মৃত্যুতে দেশজুড়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকেই শোক প্রকাশ করছেন তরুণ এই হাফেজের জন্য।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের গৌরব ছড়িয়ে দেওয়া তিনবারের বিশ্বজয়ী হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকী।
আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
জানা যায়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর হাফেজ ত্বকীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
বিশ্বজয়ী এই হাফেজ জর্ডান, কুয়েত ও বাহরাইনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন। দেশে-বিদেশে অসংখ্য কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি অর্জন করেন অসামান্য সাফল্য।
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
প্রতিভাবান এই হাফেজ ২০০০ সালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ডালপা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করছিলেন। তাঁর বাবা মাওলানা বদিউল আলম একজন মাদ্রাসাশিক্ষক।
হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকীর মৃত্যুতে দেশজুড়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকেই শোক প্রকাশ করছেন তরুণ এই হাফেজের জন্য।

হজরত খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রহ.) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম প্রধান সুফি সাধক ও ইসলামের এক নিবেদিতপ্রাণ দাঈ। তাঁর প্রচারিত চিশতিয়া তরিকা শুধু ভারতবর্ষেই নয়, সমগ্র বিশ্বের সুফি চিন্তাধারায় গভীর প্রভাব ফেলেছে।
১৮ মার্চ ২০২৫
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
২ ঘণ্টা আগে
আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগেমুফতি খালিদ কাসেমি

আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার আমানতদারি নেই, তার ইমানও নেই; যার কাছে অঙ্গীকারের মূল্য নেই, তার দ্বীনদারি নেই।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ)
আমানত রক্ষা করার অনেক ফজিলত কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এখানে কয়েকটি তুলে ধরা হলো—
এক. আল্লাহ তাআলা এবং তাঁর রাসুল (সা.)-এর নির্দেশ পালন: এরশাদ হচ্ছে, ‘(হে মুসলিমগণ) নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আদেশ করছেন, তোমরা আমানতসমূহ তার হকদারকে আদায় করে দেবে এবং যখন মানুষের মধ্যে বিচার করবে, তখন ইনসাফের সঙ্গে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদের যে বিষয়ে উপদেশ দেন, তা কতই-না উৎকৃষ্ট! নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শোনেন, সবকিছু দেখেন।’ (সুরা নিসা: ৫৮) মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘কেউ তোমার কাছে আমানত রাখলে তা তাকে ফেরত দাও। যে ব্যক্তি তোমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তার সঙ্গে তুমি বিশ্বাসঘাতকতা কোরো না।’ (জামে তিরমিজি)
দুই. রাসুলগণের গুণে গুণান্বিত হওয়া: রাসুলগণ আপন সম্প্রদায়ের লোকজনকে লক্ষ করে বলতেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসুল।’ (সুরা শুআরা: ১০৭)
তিন. ইমানদার ও সফলদের গুণ অর্জন: যারা আমানত রক্ষা করে, মহান আল্লাহ তাদের ‘সফলকাম’ আখ্যা দিয়েছেন। এবং তাদের জন্য জান্নাতুল ফেরদাউসের সুসংবাদ দিয়েছেন। এরশাদ হচ্ছে, ‘...এবং যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। এবং যারা নিজেদের নামাজের প্রতি যত্নবান থাকে। এরাই হলো সেই ওয়ারিশ, যারা জান্নাতুল ফেরদাউসের অধিকারী হবে। তারা তাতে সর্বদা থাকবে।’ (সুরা মুমিনুন: ৮-১১)

আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার আমানতদারি নেই, তার ইমানও নেই; যার কাছে অঙ্গীকারের মূল্য নেই, তার দ্বীনদারি নেই।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ)
আমানত রক্ষা করার অনেক ফজিলত কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এখানে কয়েকটি তুলে ধরা হলো—
এক. আল্লাহ তাআলা এবং তাঁর রাসুল (সা.)-এর নির্দেশ পালন: এরশাদ হচ্ছে, ‘(হে মুসলিমগণ) নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আদেশ করছেন, তোমরা আমানতসমূহ তার হকদারকে আদায় করে দেবে এবং যখন মানুষের মধ্যে বিচার করবে, তখন ইনসাফের সঙ্গে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদের যে বিষয়ে উপদেশ দেন, তা কতই-না উৎকৃষ্ট! নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শোনেন, সবকিছু দেখেন।’ (সুরা নিসা: ৫৮) মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘কেউ তোমার কাছে আমানত রাখলে তা তাকে ফেরত দাও। যে ব্যক্তি তোমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তার সঙ্গে তুমি বিশ্বাসঘাতকতা কোরো না।’ (জামে তিরমিজি)
দুই. রাসুলগণের গুণে গুণান্বিত হওয়া: রাসুলগণ আপন সম্প্রদায়ের লোকজনকে লক্ষ করে বলতেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসুল।’ (সুরা শুআরা: ১০৭)
তিন. ইমানদার ও সফলদের গুণ অর্জন: যারা আমানত রক্ষা করে, মহান আল্লাহ তাদের ‘সফলকাম’ আখ্যা দিয়েছেন। এবং তাদের জন্য জান্নাতুল ফেরদাউসের সুসংবাদ দিয়েছেন। এরশাদ হচ্ছে, ‘...এবং যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। এবং যারা নিজেদের নামাজের প্রতি যত্নবান থাকে। এরাই হলো সেই ওয়ারিশ, যারা জান্নাতুল ফেরদাউসের অধিকারী হবে। তারা তাতে সর্বদা থাকবে।’ (সুরা মুমিনুন: ৮-১১)

হজরত খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রহ.) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম প্রধান সুফি সাধক ও ইসলামের এক নিবেদিতপ্রাণ দাঈ। তাঁর প্রচারিত চিশতিয়া তরিকা শুধু ভারতবর্ষেই নয়, সমগ্র বিশ্বের সুফি চিন্তাধারায় গভীর প্রভাব ফেলেছে।
১৮ মার্চ ২০২৫
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
২ ঘণ্টা আগে
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
৪ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১২ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৫ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৬ মিনিট | ০৬: ০১ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৫ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৬ মিনিট | ০৫: ২১ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৩ মিনিট | ০৬: ৩৭ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৮ মিনিট | ০৪: ৪৫ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১২ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৫ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৬ মিনিট | ০৬: ০১ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৫ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৬ মিনিট | ০৫: ২১ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৩ মিনিট | ০৬: ৩৭ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৮ মিনিট | ০৪: ৪৫ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

হজরত খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রহ.) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম প্রধান সুফি সাধক ও ইসলামের এক নিবেদিতপ্রাণ দাঈ। তাঁর প্রচারিত চিশতিয়া তরিকা শুধু ভারতবর্ষেই নয়, সমগ্র বিশ্বের সুফি চিন্তাধারায় গভীর প্রভাব ফেলেছে।
১৮ মার্চ ২০২৫
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
২ ঘণ্টা আগে
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
৪ ঘণ্টা আগে
আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগে