Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রে স্নাতক করা বিদেশি শিক্ষার্থীদের গ্রিন কার্ড দিতে চান ট্রাম্প 

আপডেট : ২৩ জুন ২০২৪, ২১: ৫২
যুক্তরাষ্ট্রে স্নাতক করা বিদেশি শিক্ষার্থীদের গ্রিন কার্ড দিতে চান ট্রাম্প 

অভিবাসীদের তীব্র বিরোধী হিসেবেই পরিচিত সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এ বছর হতে চলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দিয়ে অভিবাসনের বিষয়ে তাঁর ভিন্ন সুরই দেখা গেল। ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করা বিদেশি শিক্ষার্থীদের ‘স্বয়ংক্রিয়ভাবে’ গ্রিন কার্ড দিতে চান তিনি। 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক দিন আগেই মার্কিন নাগরিকদের পাঁচ লাখ অবৈধ অভিবাসী স্বামী বা স্ত্রীকে বৈধতা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর এবার ট্রাম্প এমন কথা বললেন। 

গত বৃহস্পতিবার অল-ইন নামের একটি পডকাস্ট শোতে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ থেকে কেউ স্নাতক হলে দেশে থাকার জন্য তার গ্রিন কার্ড পাওয়া উচিত। আমি যা করতে চাই এবং আমি যা করব তা হলো, আপনি একটি কলেজ থেকে স্নাতক পাস করুন। আমি মনে করি, আপনার ডিপ্লোমা অনুসারে দেশে থাকার জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবেই আপনার গ্রিন কার্ড পাওয়া উচিত।’ 

তা ছাড়া, জুনিয়র কলেজ থেকেও কেউ দুই বা চার বছরের গ্র্যাজুয়েশন করতে পারলে কিংবা গ্র্যাজুয়েট হলে বা কোনো কলেজ থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি নিলে তাঁদেরও দেশে থাকার জন্য গ্রিন কার্ড পাওয়া উচিত বলে ট্রাম্প উল্লেখ করেন। 

পডকাস্টে সিলিকন ভ্যালি টেক বিনিয়োগকারী এবং আমেরিকার অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টর ইন্টারনেট উদ্যোক্তা জেসন ক্যালাকানিস ট্রাম্পকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের দরকার উচ্চদক্ষতাসম্পন্ন কর্মীদের বৈধভাবে ধরে রাখা। দেশের প্রযুক্তি শিল্পের জন্য এটি বড় ব্যাপার। 

এরপর ট্রাম্পের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি বিশ্বের সেরা এবং চৌকস শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে আনতে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দেবেন কি না। জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’ 

যুক্তরাষ্ট্রে গ্রিন কার্ড স্থায়ী আবাসন কার্ড নামেও পরিচিত। এর ফলে বিদেশিরা যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস এবং কাজ করার এখতিয়ার পান। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পাওয়ারও একটি ধাপ এই গ্রিন কার্ড। 

তবে ওই পডকাস্টে এটি স্পষ্ট হয়নি যে ট্রাম্প সব বিদেশিকে গ্রিন কার্ড দিতে চেয়েছেন কি না। যার মধ্যে যাঁরা অবৈধভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন বা যাঁদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, না কি শুধু স্টুডেন্ট ভিসাধারীদের। 

এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য রয়টার্স অনুরোধ করলে ট্রাম্পের প্রচারাভিযান দল একটি বিবৃতিতে বলেছে, শুধু ‘মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে কড়া যাচাইকরণ প্রক্রিয়ার’ পরে ‘সবচেয়ে দক্ষ স্নাতক যারা আমেরিকার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে’ তাঁরা থাকতে পারবেন। 

এদিকে বাইডেনের প্রচারাভিযান দল ট্রাম্পের আগের মেয়াদে (২০১৭—২০২১) গৃহীত কঠোর অভিবাসন নীতির উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, নতুন এই প্রস্তাবটি ট্রাম্প বাস্তবে কার্যকর করবেন কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

বাইডেনের প্রচার দলের মুখপাত্র কেভিন মুনোজ বলেছেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প যতবারই ক্ষমতায় এসেছেন, ততবারই তিনি রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য অভিবাসী পরিবারগুলোকে ছিন্নভিন্ন করেছেন। হওয়ার ওপর দেওয়া ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি একাধারে মিথ্যা এবং অপমানসূচক। বিশেষ করে সেসব মানুষের জন্য, যাঁরা তাঁর প্রথম মেয়াদে গৃহীত নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।’ 

অভিবাসন আইনজীবীরাও ট্রাম্পের প্রস্তাবে আস্থা রাখতে পারছেন না। আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের পলিসি ডিরেক্টর অ্যারন রেইচলিন-মেলনিক বলেছেন, ‘এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে আমার হাসি পাবে। কারণ, এর আগে তাঁর প্রশাসন স্টুডেন্ট ভিসা সীমিত করতে একাধিক নীতি গ্রহণ করেছে এবং স্নাতক হওয়ার পরে লোকেদের আমেরিকায় থাকা কঠিন করে তুলেছে।’ 

প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প প্রশাসন মার্কিন কোম্পানিগুলোকে এইচ-১বি ভিসায় দক্ষ বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ ঠেকাতে পদক্ষেপ নিয়েছিল, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে চাওয়া আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য মূল ভিসার বিকল্প। 

করোনাভাইরাস মহামারি সময় ট্রাম্প প্রশাসন হাজার হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করার চেষ্টা করেছিল। অনেক মামলা এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তীব্র বিরোধিতার মুখে প্রশাসন পরে আদেশটি প্রত্যাহার করে। 

আসন্ন নভেম্বরের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনকে হারাতে পারলে ট্রাম্প বড় ক্র্যাকডাউনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি অবৈধভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী অভিবাসীদের অনুমোদন দিতে বাইডেনের প্রচেষ্টার নিন্দা করেছেন। 

উল্লেখ্য, অল-ইন পডকাস্টের দুই উপস্থাপক ডেভিড স্যাকস এবং চামাথ পালিহাপিটিয়া এই মাসের শুরুতে সান ফ্রান্সিসকোতে ট্রাম্পের জন্য একটি বড় তহবিল সংগ্রহের আয়োজন করেন। ট্রাম্পের প্রচারণার জন্য তাঁরা প্রায় ১২ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘প্রতারণার শাস্তি’: কানাডার ওপর বাড়তি ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ট্রাম্পের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৩৬
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি কানাডার রপ্তানি পণ্যের ওপর আরও ১০ শতাংশ শুল্ক বাড়াচ্ছেন। এই শুল্ক এর আগে আরোপিত শুল্কের সঙ্গে যুক্ত হবে। ট্রাম্প বলেছেন, ‘ওরা এখন যা দিচ্ছে, তার ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ।’ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ট্রাম্পের শুল্কের সমালোচনা করে কানাডার অন্টারিও প্রদেশ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের কণ্ঠ ব্যবহার করে একটি বিজ্ঞাপন বানায়। যেখানে রিগ্যান যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন। মূলত, এই বিজ্ঞাপনের প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প এই বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ওই বিজ্ঞাপনকে কেন্দ্র করে কানাডার সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনাও স্থগিত করেন। তার দাবি, বিজ্ঞাপনটি ‘ভ্রান্ত ও বিভ্রান্তিকর।’ ট্রাম্প নিজ মালিকানাধীন ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে নতুন শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দেন। সেই পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন বিজ্ঞাপনটির কথা। ভিডিওটিতে রিগ্যানকে বলতে শোনা যায়, শুল্ক আরোপ বাণিজ্য যুদ্ধ ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণ।

অন্টারিও প্রিমিয়ার (মুখ্যমন্ত্রীর সমতুল্য) ডগ ফোর্ড শুক্রবার জানান, কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত হয়েছে সোমবার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রচারিত বিজ্ঞাপনটি স্থগিত করা হবে, যাতে বাণিজ্য আলোচনাগুলো আবার শুরু করা যায়।

ট্রাম্প লেখেন, ‘তাদের বিজ্ঞাপনটি সঙ্গে সঙ্গে সরিয়ে নেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ওরা তা প্রচার করেছে গতরাতে ওয়ার্ল্ড সিরিজ চলাকালীন—জেনেও যে এটা সম্পূর্ণ প্রতারণা।’ তিনি আরও লেখেন, ‘তাদের তথ্য বিকৃতি ও বৈরী আচরণের কারণে, কানাডার ওপর আরোপিত শুল্ক আরও ১০ শতাংশ বাড়াচ্ছি।’

এদিকে, ট্রাম্প ঘোষিত নতুন শুল্ক কোন কোন পণ্যের ওপর প্রভাব ফেলবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। কানাডার অধিকাংশ রপ্তানি পণ্য যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডা চুক্তির আওতায় থাকায় সেগুলো শুল্কমুক্ত। তবে ট্রাম্প প্রশাসন গত আগস্টে এই চুক্তির বাইরে থাকা কানাডীয় পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। তার ওপর চলতি বছর ট্রাম্প বিশ্বব্যাপী স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছেন, যা কানাডার অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

শুক্রবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী কার্নি জানান, কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পুনরায় বাণিজ্য আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। ট্রাম্প ও কার্নি দুজনই মালয়েশিয়ায় আয়োজিত আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দেবেন। তবে এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের কোনো পরিকল্পনা রাখেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাজার নতুন আতঙ্ক ইসরায়েলের অবিস্ফোরিত বোমা, নেই নিরাপদে মাথা গোঁজার ঠাঁই

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গাজাবাসীর এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে বের করা। ছবি: আনাদোলু
গাজাবাসীর এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে বের করা। ছবি: আনাদোলু

গাজার ফিলিস্তিনিদের জন্য এখন এক নতুন আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী ফেলা অবিস্ফোরিত বোমা। গত ১০ অক্টোবর কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর অনেকেই নিজ নিজ এলাকায়, বাড়িতে ফিরছেন। সেখানে অবশ্য কোনো স্থাপনা অবশিষ্ট নেই। তাই বাধ্য হয়েই খোলা আকাশের নিচে তাঁবু গেড়ে থাকতে হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের। তবে সেখানেও বিপত্তি। কারণ, আবাসিক এলাকার বেশির ভাগ অংশেই ইসরায়েলে ফেলা বোমা ও অন্যান্য বিস্ফোরক অবিস্ফোরিত অবস্থায় রয়ে গেছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হওয়া গাজার খান ইউনিসে নিজের বাড়িতে ফিরে এসে এক ফিলিস্তিনি একটি বিস্ফোরক বোঝাই অবিস্ফোরিত কিন্তু বিধ্বস্ত সাঁজোয়া যান দেখতে পান। ধ্বংসস্তূপে আশ্রয়হীন ওই ব্যক্তি বাধ্য হয়ে সেই সাঁজোয়া যানটির ওপরই পরিবার নিয়ে তাঁবু ফেলেছেন।

যুদ্ধবিরতি শুরুর পর গাজার দক্ষিণের এই শহরে ফিরতে শুরু করেছেন বাস্তুচ্যুত বহু পরিবার। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে দক্ষিণের ত্রাণ শিবিরগুলো থেকে ৪ লাখ ৩৫ হাজারেরও বেশি মানুষ উত্তরাঞ্চলের ধ্বংসপ্রাপ্ত এলাকায় ফিরে গেছেন।

ফিরে এসে অনেকে দেখছেন, বসতবাড়ি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। কোথাও মাটির নিচে লুকানো বিস্ফোরক, কোথাও পড়ে আছে দাহ্য কোনো অস্ত্র–বোমা। খান ইউনিসের বাসিন্দা আয়মান কাদুরা জানান, নিজের বাড়ির ধ্বংসাবশেষের ভেতর তিনি খুঁজে পান একটি দূরনিয়ন্ত্রিত সাঁজোয়া বিস্ফোরক রোবট, যা ইসরায়েলি সেনারা গাজা জুড়ে ব্যবহার করেছিল পুরো ভবন উড়িয়ে দিতে।

কাদুরা বলেন, তাঁর প্রতিবেশীর বাড়িতেও এমন আরেকটি যন্ত্র ছিল। দু’টি বাড়ির মাঝখানে এফ-১৬ বিমানের ক্ষেপণাস্ত্রে তিন মিটার গভীর গর্ত তৈরি হয়েছে। তিনি আশঙ্কা করছেন, যদি এসব অবিস্ফোরিত যন্ত্র সক্রিয় হয়, পুরো এলাকা ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই তিনি নিয়মিত যন্ত্রগুলো বালি দিয়ে ঢেকে রাখেন।

জাতিসংঘের স্যাটেলাইট বিশ্লেষণ কেন্দ্র ইউনোস্যাট জানিয়েছে, শুধু খান ইউনিস গভর্নরেটেই ৪২ হাজারের বেশি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে শহর এলাকায় অন্তত ১৯ হাজার ভবন ধ্বংস বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত। পুরো গাজা উপত্যকায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যা ২ লাখ ২৭ হাজার ছাড়িয়েছে।

জাতিসংঘের মাইন অ্যাকশন সার্ভিস জানিয়েছে, গাজাজুড়ে অবিস্ফোরিত অস্ত্রের ঝুঁকি ‘অবিশ্বাস্যভাবে বেশি’। সংস্থাটি এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৬০টি বিস্ফোরক বস্তু শনাক্ত করেছে, তবে প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি। গত অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত এসব অবিস্ফোরিত অস্ত্রের কারণে ৩২৮ জন নিহত বা আহত হয়েছেন।

কাদুরা জানান, ধ্বংসস্তূপ থেকে পাওয়া পুরোনো কাপড় পরে তাঁর সন্তানদের চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। কিন্তু থাকার মতো জায়গা না থাকায় তিনি বাধ্য হয়েই ওই ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাস করছেন। মানবিক সংস্থাগুলো যুদ্ধবিরতির পর খাদ্য, তাঁবু, ওষুধ ও জ্বালানি সরবরাহ বাড়ালেও ইসরায়েল এখনো সহায়তা প্রবাহ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক সহায়তা গাজায় প্রবেশের যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা এখনো অর্জন সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফিলিস্তিন সংকট: অবশেষে গাজার ক্ষমতা হস্তান্তরে সম্মত হামাস

এএফপি, কায়রো
টানা দুই বছরের ইসরায়েলি আগ্রাসনে ধ্বংস হয়ে গেছে গাজার সরবরাহ ব্যবস্থা। জাতিসংঘ বলছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকাটিতে অন্তত ১৫ লাখ মানুষের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন। পাত্র নিয়ে পানির খোঁঁজে বেরিয়েছে শিশুরা। গতকাল গাজার খান ইউনিস এলাকায়। ছবি: এএফপি
টানা দুই বছরের ইসরায়েলি আগ্রাসনে ধ্বংস হয়ে গেছে গাজার সরবরাহ ব্যবস্থা। জাতিসংঘ বলছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকাটিতে অন্তত ১৫ লাখ মানুষের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন। পাত্র নিয়ে পানির খোঁঁজে বেরিয়েছে শিশুরা। গতকাল গাজার খান ইউনিস এলাকায়। ছবি: এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত টেকনোক্র্যাট কমিটির কাছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার শাসনভার হস্তান্তরে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। গাজায় সক্রিয় অন্য সংগঠনগুলোও কায়রো বৈঠকের এই সমঝোতার বিষয়ে একমত হয়েছে।

হামাসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্বাধীন টেকনোক্র্যাটদের নিয়ে গঠিত অস্থায়ী এই কমিটি আরব দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তায় কাজ করবে। যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকায় যেন প্রশাসনিক কোনো শূন্যতা না থাকে, সে জন্য অবিলম্বে কাজ শুরু করবে তারা।

গত শুক্রবার প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের সামনে আসা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে আলোচনা হয়েছে। সেখানে সব গোষ্ঠীকে নিয়ে একটি জাতীয় সম্মেলন আহ্বানের প্রস্তাব এসেছে। ওই সম্মেলনে জাতীয় কৌশল নির্ধারণ এবং ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থার (পিএলও) পুনরুজ্জীবনের পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে।

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে কায়রোতে হামাস ও ফাতাহর প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। উভয় পক্ষ আগামী দিনগুলোতেও বৈঠক চালিয়ে যাবে এবং ইসরায়েলি চাপ মোকাবিলা করে অভ্যন্তরীণ ঐক্য জোরদারে কাজ করবে।

এই আলোচনার সমান্তরালে মিসরের গোয়েন্দাপ্রধান হাসান রাশাদ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। এর মধ্যে হামাসের মিত্র ইসলামিক জিহাদ, পিএলওর অন্তর্ভুক্ত ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ও পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের প্রতিনিধিরাও ছিলেন।

এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে হামাস ও ফাতাহ যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা যৌথভাবে পরিচালনার জন্য একটি কমিটি গঠনে রাজি হয়েছিল। তবে ফাতাহর অনেক নেতা তখন সেই চুক্তির সমালোচনা করেন। এখন ট্রাম্প-সমর্থিত প্রস্তাব ঘিরে নতুন করে আশার আলো দেখছেন পর্যবেক্ষকেরা।

গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার মুখে দীর্ঘদিন থেকে হামাস বলে আসছে, যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে তারা আর সরাসরি উপত্যকার শাসনকাজ পরিচালনায় আগ্রহী নয়। তবে পশ্চিমাদের দাবি অনুযায়ী নিজেদের যোদ্ধাদের নিরস্ত্র করার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে দলটি। তারা বলছে, একমাত্র স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠিত হলেই তাদের যোদ্ধারা অস্ত্র সমর্পণ করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে অস্ত্র সমর্পণের পর তাঁদের সামরিক বাহিনীতে যুক্ত করা হবে।

এদিকে গাজায় স্থিতিশীলতা ফেরাতে পাঁচ হাজার সদস্যের একটি বাহিনী গঠনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পরিকল্পনায় নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়েছে। এ বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হতে তুরস্কের আগ্রহ থাকলেও তাতে আপত্তি জানিয়েছে ইসরায়েল। তাদের আপত্তির মুখে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, এই বহুজাতিক বাহিনীর জাতীয়তা নিয়ে ইসরায়েলের স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করা একটি আবশ্যকীয় শর্ত।

ইসরায়েলের অভিযোগ, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান মুসলিম ব্রাদারহুড ও হামাসের সঙ্গে অতিমাত্রায় ঘনিষ্ঠ। ফলে গাজায় স্থিতিশীলতা ফেরানোর বাহিনী থেকে তুরস্ককে অবশ্যই বাদ দিতে হবে। অন্যদিকে এই বাহিনীতে তুরস্কের উপস্থিতি চায় হামাস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জোহরান মামদানি পতিতাবৃত্তির সমর্থক, অভিযোগ অ্যান্ড্রু কুমোর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ১৯
নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নর ও মেয়র পদপ্রার্থী অ্যান্ড্রু এম. কুমো। ছবি: সংগৃহীত
নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নর ও মেয়র পদপ্রার্থী অ্যান্ড্রু এম. কুমো। ছবি: সংগৃহীত

নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নর ও মেয়র পদপ্রার্থী অ্যান্ড্রু এম কুমো আসন্ন নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী জোহরান মামদানির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। তিনি দাবি করেছেন, মামদানি বহু বছর ধরে পতিতাবৃত্তিকে বৈধতা দেওয়ার আইন প্রণয়নের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। কুমোর মতে, এটি ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক উদ্যোগ’।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে কুমো বলেন, ‘জোহরান মামদানি পতিতাবৃত্তিকে বৈধ করার জন্য প্রস্তাবিত আইনের উদ্যোক্তা। এই আইন পাস হলে সমাজের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ আরও শোষণের শিকার হবেন এবং মানব পাচারকারীরা, গ্যাং সদস্যরা ও সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র আরও শক্তিশালী হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গভর্নর হিসেবে আমি এই বিলের বিরুদ্ধে বহু বছর লড়াই করেছি।’

কুমো অভিযোগ করেন, নিউইয়র্ক সিটি এরই মধ্যে কুইন্সে ‘মার্কেট অব সুইটহার্টস’-এর মতো এলাকাগুলোতে পতিতাবৃত্তি, অপরাধ ও সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। এই আইন পাস হলে শহরের প্রতিটি কোণে আবারও পতিতাবৃত্তি শুরু হবে।

তিনি বলেন, ‘এটি জননিরাপত্তার জন্য হুমকি। তবে মামদানির অতীত কর্মকাণ্ড বিবেচনায় এটি আশ্চর্যের কিছু নয়। তিনি এনওয়াইপিডির অর্থায়ন কমানোর পক্ষে ছিলেন, এমনকি পুলিশ যেন গার্হস্থ্য পারিবারিক সহিংসতার ঘটনায় হস্তক্ষেপ না করতে পারে, সেটির পক্ষপাতী ছিলেন। তিনি পুলিশকে বর্ণবাদী, সমকামবিরোধী এবং জননিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।’

কুমো বলেন, ‘মামদানি যে ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্টস অব আমেরিকার সদস্য, এই সংগঠনও একই নীতির সমর্থক।’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘আমার কথা মনে রাখুন, বাস্তব জগতে এই আইন পাস হলে বিপদের দরজা খুলে যাবে। মামদানি হয়তো নিউইয়র্ক সিটির পুরোনো অন্ধকার সময়টা মনে রাখেন না, যখন টাইমস স্কয়ার ছিল অপরাধপ্রবণ, পতিতাবৃত্তির কেন্দ্র এবং মানুষ জানত, কোন এলাকাগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। আমরা সেই সময়ের ভয়াবহতা জানি এবং কেউই সেই যুগে ফিরে যেতে চায় না।’

কুমো বলেন, ‘আমাদের আরও বেশি সাহায্য করতে হবে সেই মানুষদের, যারা জোরপূর্বক বা শোষণের শিকার হয়ে পতিতাবৃত্তিতে জড়িত হয়েছে। নিউইয়র্ককে মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিতে হবে—তাদের জন্য পথ সহজ করা নয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত